▆ নামাযে পুরুষের "বুকের উপর হাত বাঁধা" পদ্ধতি ভিত্তিহীন ▆

আসলে কথিত আহলে হাদীস / লা মাযহাবীরা তাদের উদ্ভাবিত থিউরী “কুরআন ও সহীহ হাদীসই দলীলযোগ্য” একথার দাবিতে অটল থেকে নামাযে পুরুষের ক্ষেত্রে "বুকের উপর হাত বাঁধা" এর স্বপক্ষে কোন দলীল পেশ করতে সক্ষম নয়।
তাই এক্ষেত্রে চালাকীর আশ্রয় নিয়ে থাকে।

কুরআন ও সহীহ হাদীসই যদি কেবল দলীলযোগ্য হয়, কুরআন ও সহীহ হাদীসের দলীল ছাড়া কোন উম্মতীর বক্তব্যের অনুসরণ যদি শিরক পর্যায়ের তাকলীদ হয়ে থাকে, তাহলে সহীহ ইবনে খুজাইমার উক্ত হাদীসটি তাদের দাবি অনুযায়ী আল্লাহ ও প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم) থেকে কি সহীহ সাব্যস্ত করিয়েছে?
যদি না করে থাকে,
তাহলে আল্লাহ ও প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  যে হাদীসকে সহীহ বলেননি, সে হাদীসকে কুরআন ও সহীহ হাদীসের রেফারেন্স ছাড়া কোন উম্মতীর বক্তব্য দিয়ে সহীহ বলাটা কি উক্ত মুহাদ্দিসের অন্ধ তাকলীদ নয়?

আমরা মাযহাবী আহলুস সূন্নাহ্ বিজ্ঞ মুজতাহিদের তাকলীদ করলে শিরক, আর তারা করলে সেটি কুরআন ও সহীহ হাদীসের উপর আমল হয় কি করে?

মুখে মুখে কুরআন ও সহীহ হাদীসের দলীল মানার স্লোগান, আর কাজেকর্মে উম্মতীর বক্তব্য ক্বুরআ'নুল কারিম ও সহীহ হাদীস ছাড়াই অন্ধভাবে মেনে নেয়ার নাম আর যাই কিছু হোক, ক্বুরআনুল কারিম ও সহীহ হাদীসের অনুসরণ নয়, বরং ধোঁকাবাজী।

"বুকের উপর হাত বাঁধা"-র কোন দলীল যখন কথিত লা মাযহাবীরা কোথাও পেলো না নিজেদের উদ্ভাবিত থিউরী “কুরআন ও সহীহ হাদীসই দলীলযোগ্য” অনুপাতে তখন প্রথমেতো ক্বুরআ'ন ও হাদীসের দলীল ছাড়াই মুহাদ্দিসীনে কেরামের তাকলীদ করে সহীহ ইবনে খুজাইমার হাদীসটিকে সহীহ বলা শুরু করলো।
কিন্তু
যখনি তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া হলো যে, যে ইমাম বুখারী রহঃ এর সকল মন্তব্যকেই চূড়ান্ত ও হক বলে বিশ্বাস করে থাকে, তিনি উক্ত বর্ণনাটির একজন রাবী মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈলকে “মুনকারুল হাদীস বলে মন্তব্য করেছেন, তখন তাদের টনক নড়ল।

নতুন বুদ্ধি বের করলো।
সেটি হলো, মুয়াম্মাল ইবনে ইসমাঈলকে "মুয়াম্মাল বিন সাঈদ" বানিয়ে দেয়া।
এ এক আজীব চালাকী!

চলুন, দেখি ইমাম বুখারী রহঃ মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈল রহঃ কেই কি “মুনকারুল হাদীস” বলে মন্তব্য করেছেন! নাকি না?
দেখুন, সে ব্যাপারে মুহাদ্দিসীনে কেরাম তাদের স্বীয় কিতাবে কি লিখেছেন?


আল্লামা মিজ্জী রহঃ লিখেছেন-  وقَال البُخارِيُّ: منكر الحديث. তথা ইমাম বুখারী রহঃ বলেছেন, তিনি [মুআম্মাল বিন ইসমাঈল রহঃ] মুনকারুল হাদীস।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* তাহযীবুল কামাল ফী আসমায়ির রিজাল, বর্ণনা নং-৬৩১৯।

ইমাম যাহাবী রহঃ বলেন, ইমাম বুখারী রহঃ বলেছেন, মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈল মুনকারুল হাদীস।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* আলমুগনী ফিজ জুআফা, বর্ণনা নং-৬৫৪৭,
*_* তারীখুল ইসলাম, বর্ণনা নং-৩৮০,
*_* সিয়ারু আলামিন নুবালা, বর্ণনা নং-১৫৪৬,
*_* জিকরু মান তাকাল্লামা ফীহি, বর্ণনা নং-৩৪৭,
*_* মিযানুল ইতিদাল, বর্ণনা নং-৮৯৪৯।

ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ বলেন, ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* তাহযীবুত তাহযীব, বর্ণনা নং-৬৮,
*_* লিসানুল মিযান, বর্ণনা নং-৪৯৮৭।

আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রহঃ বলেন, ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* মাগানিয়ুল আখয়ার, বর্ণনা নং-২৪১৯।

আহমাদ বিন আব্দুল্লাহ ইয়ামানী রহঃ বলেন, ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* খুলাসাতুল তাহযীবু তাহযীবিল কামাল।
এতগুলো গ্রহণযোগ্য জারাহ তাদীলের ইমামগণ এতসব কিতাবে ইমাম বুখারী রহঃ এর মন্তব্যটি নকল করেছেন।
ইমাম বুখারী রহঃ মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈলকে নয়, মুয়াম্মাল বিন সাঈদ সম্পর্কে এ মন্তব্য করেছেন, এমন কথা কোন পূর্ববর্তী কোন গ্রহণযোগ্য জারাহ তাদীলের ইমাম কি বলেছেন?
কেউ বলেননি।
সবাই মুআম্মাল বিন ইসমাঈল সম্পর্কেই ইমাম বুখারীর মন্তব্যটির নিসবত করেছেন।
মুআম্মাল বিন সাঈদের কথা কেউ বলেননি।

একথা স্পষ্টভাবেই প্রমাণ করে যে, বর্তমানের নামধারী আহলে হাদীস / লা মাযহাবীরা নিজেদের "দলীলহীন মাসআলা" প্রমাণের জন্য এতসব গ্রহণযোগ্য জারাহ তাদীলের ইমামগণের অবস্থানকে ভুল সাব্যস্ত করার হীন কর্মকান্ডে নেমেছে।

আল্লাহ তাআলা কথিত আহলে হাদীস নামধারী এসব ভ্রান্তদের চক্রান্ত থেকে সরলপ্রাণ মুসলমানদের হিফাযত করুন। আমীন।

�� একটি মজার কথা ♻

একই ব্যক্তি যখন কথিত আহলে হাদীস / লা মাযাহাবীদের মাসআলার খেলাফ হন, তখন তিনি জঈফ ও অগ্রণযোগ্য সাব্যস্ত হয়ে যান, আবার উক্ত ব্যক্তিই যখন নিজেদের পক্ষের কোন মাসআলার দলীল হন, তখন তিনি কি করে গ্রহণযোগ্য হয়ে যান সেটি আমাদের বোধগম্য নয়।♻

✴ নিচে উল্লেখিত হাদীসটির সনদটির দিকে সুপ্রিয় পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিঃ
مؤمل عن سفيان عن عاصم بن كليب عن ابيه عن وائل بن حجر
অনুবাদ : মুআম্মাল সুফিয়ান ছাওরী রাহ থেকে, তিনি আসেম ইবনে কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল ইবনে হুজর রা. থেকে বর্ণনা করেছেন।

এবার আসুন, কথিত আহলে হাদীসদের কয়েকটি ধোঁকাবাজী লক্ষ্য করি।
��ধোঁকাবাজী নং-১
সহীহ ইবনে খুজাইমায় বর্ণিত হাদীসটির সূত্রে মুআম্মাল হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, সুফিয়ান সওরী রহঃ থেকে, আর সুফিয়ান সওরী রহঃ আসেম বিন কুলাইব থেকে বর্ণনা করেছেন।
আর এ সূত্রটিকে কথিত আহলে হাদীসেরা সহীহ সনদ বলে প্রচার করছে।
অথচ
একই ধরণের সনদ তথা সুফিয়ান সওরী রহঃ আসেম বিন কুলাইব থেকে বর্ণনা সম্বলিত রফয়ে ইয়াদাইন রুকুতে গমণ ও উঠার সময় ছেড়ে দেয়ার বর্ণনা যখন আমরা আবু দাউদ, তিরমিজী ও নাসায়ী থেকে পেশ করি। তখন তারা বলে এ সনদ দুর্বল। কারণ সুফিয়ান সওরী রহঃ নাকি মুদাল্লিস। আর তিনি “আন” শব্দ দিয়ে বর্ণনা করেছেন, তাই হাদীসটি দুর্বল।
অথচ
সহীহ ইবনে খুজাইমার মাঝে সেই সুফিয়ান সওরী রহঃ যখন “আন” শব্দের মাধ্যমে আসেম বিন কুলাইব থেকে বর্ণনা করছেন তখন এ হাদীস তাদের "গলার মালা" হয়ে গেলো।
এখন কোথায় গেলো “আন” বললে জঈফ হয়, বা সুফিয়ান সওরী রহঃ মুদাল্লিস সম্বলিত বক্তব্য?

��ধোঁকাবাজী নং-২
রুকুতে গমণ ও উঠার সময় রফয়ে ইয়াদাইন ছেড়ে দেয়ার তিরমিজী, আবু দাউদ ও নাসায়ীর হাদীসটিকে তারা পরিত্যাজ্য আরেকটি কারণে বলে থাকে, সেটি হলো, উক্ত হাদীসটির সনদে আসেম বিন কুলাইবন “মুনফারিদ” তথা একাকী বর্ণনাকারী। আর আসেম বিন কুলাইব যখন মুনফারিদ হন, তখন তিনি দলীলযোগ্য হন না।
কিন্তু মজার বিষয় হল,
সহীহ ইবনে খুজাইমায় বর্ণিত উক্ত সনদটিতেও আসেম বিন কুলাইব মুনফারিদ। এরকম বর্ণনা ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে আর কারো সূত্রে নেই।
তাহলে তিরমিজী, নাসায়ী ও আবু দাউদের রফয়ে ইয়াদাইন ছেড়ে দেয়ার হাদীস আসেম বিন কুলাইব মুনফারিদ হওয়ার কারণে দলীলযোগ্য না থাকলে সহীহ ইবনে খুজাইমাতে মুনফারিদ হওয়া সত্বেও দলীলযোগ্য হয়ে গেলেন কিভাবে?
বড়ই অবাক করা মনপুঁজারী লা মাযাহাবীদের মানসিকতা!

��ধোঁকাবাজী নং-৩
সহীহ ইবনে খুজাইমায় বর্ণিত উক্ত হাদীসটির পরেই বর্ণিত হয়েছে কাছাকাছি সূত্রে-
عَاصِمُ بْنُ كُلَيْبٍ الْجَرْمِيُّ، حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّ وَائِلَ بْنَ حُجْرٍ أَخْبَرَهُ قَالَ: قُلْتُ: ” لَأَنْظُرَنَّ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَيْفَ يُصَلِّي قَالَ: فَنَظَرْتُ إِلَيْهِ، قَامَ فَكَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى حَاذَتَا أُذُنَيْهِ،
আসেম বিন কুলাইব তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ বর্ণনা করেন, ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ বলেন, আমি প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  কে দেখছিলাম তিনি কিভাবে নামায আদায় করেন, তখন আমি দেখলাম, তিনি দাঁড়ালেন, তারপর তাকবীর দিলেন, তারপর উভয় হাত উঠালেন কানের লতি পর্যন্ত।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪৮০।
আসেম বিন কুলাইব, তার পিতা, তিনি হযরত ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ এর সূত্রে প্রশ্নে বর্ণিত যে হাদীসটি উল্লেখ করা হলো, সেটির নং হলো, ৪৭৯, আর একই সূত্র তথা কুলাইব তার পিতা, পিতা হযরত ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  নামাযে কান পর্যন্ত হাত উঠাতেন।
অথচ
কথিত আহলে হাদীসেরা মহিলাদের মত কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠায়। কান পর্যন্ত হাত উঠায় না। এ হাদীসটির মুখালাফাত করে থাকে।
এক সূত্রে বর্ণিত হাদীসকে গলার মালা বানানো, আরেক সূত্রে বর্ণিত হাদীসকে বাদ দিয়ে দেয়ার নাম কি সহীহ হাদীসের উপর আমল নাকি মনের পূজা?

❇ ইমাম বুখারী রহঃ মুআম্মাল বিন ইসমাঈলকে মুনকারুল হাদীস না বললেও উক্ত হাদীস কথিত আহলে হাদীসদের দলীল হতে পারে না।
কারণ ২টি।
যথা-
✴ ১ম কারণঃ
মুআম্মাল বিন ইসমাঈল মুনফারিদ
আসেম বিন কুলাইব, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি হযরত ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে। এ সূত্রের মাধ্যমে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  এঁর নামায সংক্রান্ত একাধিক সূত্র এসেছে।
কয়েকটি সূত্র উল্লেখ করছি-

عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنِي سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ
আব্দুল্লাহ বিন ওয়ালীদ, তিনি সুফিয়ান থেকে, তিনি আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৭১।

حَدَّثَنَا شَرِيكٌ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ،
শারীক বর্ণনা করেন আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৬৮।

حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ
আব্দুর রাজ্জাক তিনি সুফিয়ান থেকে, তিনি আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৫৮।

عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ،
আব্দুল্লাহ বিন ইদরীস আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৯১২।

حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ،
বিশর বিন মুফাদ্দাল আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭২৬।

عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ عَنْ عَاصِم بْنِ كُلَيْبٍ، عَن أَبيهِ، عَن وَائِلِ بْنِ حُجْر، رَضِي اللَّهُ عَنْهُ،
মুসা বিন আবী আয়শা থেকে, তিনি আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৪৪৮৯।

قُتَيْبَةُ، قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ،
কুতাইবা আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-১২৬৩।

ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ
ইবনে ফুযাইল আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪৭৮।

شُعْبَةُ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ
শুবা আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪৭৮।
১০
عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ
আবু ইসহাক আসেম বিন কুলাইব থেকে, তিনি তার পিতা থেকে, তিনি ওয়াইল বিন হুজুর রাঃ থেকে…..।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-১৭০৫।
মাত্র ১০টি সূত্র উল্লেখ করলাম। এরকম আরো অসংখ্য সূত্রে উক্ত বর্ণনাটি এসেছে। কিন্তু কোথাও বুকের উপর হাত বাঁধার কথা উল্লেখ করা হয়নি। একমাত্র মুআম্মাল বিন ইসমাঈলের সূত্রে এসেছে বুকের উপর কথাটি।
তাই তিনি বুকের উপর হাত বাঁধা বলার ক্ষেত্রে মুনফারিদ।
আর সমস্ত জরাহ তাদীলের ইমামগণ একমত যে মুআম্মাল বিন ইসমাঈল প্রচুর ভুল করতেন।
সুতরাং একথা সহজেই বুঝা যায় যে, উক্ত বর্ণনাটিতে বুকের উপর কথাটি তিনি হয়তো ভুলেই বলেছেন।
নতুবা আর কারো সূত্রে একথা আসেনি কেন?


❇ মুয়াম্মাল বিন ইসমাঈল রহঃ ভুল করে উক্ত বর্ণনাটি আনতে পারেন।
দলীল মুহাদ্দিসীনে কেরামের বক্তব্য দ্বারা স্পষ্ট :
১-  ইবনে সাদ রহঃ বলেন,  তথা তিনি সিকা তবে প্রচুর ভুল করেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* আততাবকাতুল কুবরা, বর্ণনা নং-১৬৫৬।
২-   মুহাম্মদ বিন হিব্বান রহঃ বলেন, তিনি প্রায় ভুল করতেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* আসসিকাতুল লিইবনে হিব্বান, বর্ণনা নং-১৫৯১৫।
৩-  আল্লামা খতীব বাগদাদী রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর করতেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* তারীখে বাগদাদ-৬।
৪-   ইমাম আবু হাতেম রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* আলজারহু ওয়াততাদীল, বর্ণনা নং-১৭০৯।
৫-  আল্লামা যাহাবী রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* আলকাশশাফ, বর্ণনা নং-৫৭৪৭।
৬-  ইমাম আবূ জুরআ রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করতেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* আলমুগনী ফিজ জুআফা, বর্ণনা নং-৬৫৪৭।
৭-   ইমাম দারা কুতনী রহঃ বলেন, তিনি প্রচুর ভুল করেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* তাহযীবুত তাহযীব, বর্ণনা নং-৬৮।

✴ ২য় কারণঃ
হাদীসটির বর্ণনাকারীই উক্ত হাদীসের বিপরীত আমল করেন
একথা সহজেই অনুমেয় যে, যিনি কোন কথা বর্ণনা করার পর উক্ত কথার বিপরীত কাজ করে থাকেন, তার কাছে তার বর্ণিত কথাটি আমলযোগ্য বা জরুরী নয় বলেই পরিস্কার বুঝা যায়।
আর সহীহ ইবনে খুজাইমার উক্ত হাদীসের সূত্রের একজন রাবী হলেন, হযরত সুফিয়ান সওরী রহঃ। আর খোদ তিনিই বুকের উপর হাত বাঁধার মতকে গ্রহণ করেননি। বরং তিনি নাভির নিচে হাত বাঁধতেন।
দেখুন,
ইমাম নববী রহঃ শরহে মুসলিমে উল্লেখ করেছেন- وقال ابو حنيفة وسفيان واسحاق بن راهوية وابو اسحاق المروازى من اصحابنا يجعلهما تحت سرته
তথা : ইমাম আবু হানীফা রহঃ, সুফিয়ান সওরী রহঃ, ইসহাক বিন রাহুয়া রহঃ এবং আমাদের আসহাবদের মাঝে আবু ইসহাম মারওয়াজী রহঃ বলেন যে, উভয় হাতকে নাভির নিচে বাঁধতে হবে।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* শরহে মুসলিম লিননববী-১/৭৩।
আর বর্ণনাকারী খোদ নিজেই যখন স্বীয় বর্ণনার খেলাফ আমল করেন, তখন উক্ত বর্ণনা আমলহীন তা স্পষ্টতই বুঝে আসে।

সুতরাং একথা পরিস্কার হয়ে গেলো যে, আসলে বুকের উপর হাত বাঁধার কোন দলীলই নেই।

যা কিছু কথিত আহলে হাদীস / লা মাযাহাবীরা প্রচার করে বেড়ায়, তা সবই তাদের নিজেদের তৈরীকৃত থিউরী অনুপাতেই ধোঁকাবাজী সাব্যস্ত হয়।

আল্লাহ তাআলা আমাদের কথিত লা মাযহাবী / আহলে হাদীসদের ফিতনা থেকে সরলপ্রাণ মুসলমানদের হিফাযাত করুন।
আমীন।

 
Top