হানাফী ও ভূঁয়া আহলে হাদীসদের মধ্যকার বিরোধপূর্ণ নামাযের মাসআলা ও তার প্রামাণিক পর্যালোচনা
بسم الله الرحمن الرحيم
الحمد لله رب العالمين- والصلاة و السلام على سيد الأنبياء والمرسلين- أما بعد قال الله تعالى فى كلامه المجيد ( فاسألوا أهل الذكر إن كنتم لا تعلمون- سورة النحل٤٣) و فى آية آخر (يا أيها الذين آمنوا أطيعوا الله و أطيعوا الرسول وأولي الأمر منكم- سوؤة النساء - ٥٩)
وقال النبي صلى الله عليه و سلم عن حذيفة رضي الله عنه قال: كنا جلوسا عند النبي صلى الله عليه و سلم فقال: إني لا أدري ما بقائي فيكم فاقتدوا بالذين من بعدي وأشار إلى أبي بكر و عمر رضي الله عنهما (رواه الترمذي-٣٦٦٣)

প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  ইরশাদ করেন :
لا تجتمع أمتي علي الضلالة
অর্থাৎ : "আমার উম্মত কোন গোমরাহীর ব্যাপারে একমত হবে না।
সুতরাং একটি দল সদা ক্বুরআনুল কারিম, সুন্নাহ ও হকের উপর সীরত্বল মুস্তাকিমে অটল থাকবে।
তাদের নিদর্শন হলো, তারা ক্বুরআনুল কারিম, সুন্নাহ এবং দ্বীনের যাবতীয় বিষয়কে সাহাবায়ে কেরাম ও আকাবীর আসলাফের সহীহ ব্যাখ্যার আলোকে বুঝে থাকেন।
এবং ক্বুরআনুল কারিম, সুন্নাহ্ বুঝার ক্ষেত্রে স্বীয় যুক্তি ও অপব্যাখ্যার আশ্রয় নেন না।
এবং তাদের যুক্তি ও ব্যাখ্যা ইজমায়ে উম্মতের খেলাফ নয়।
তাঁদেরই একজন হলেন, ইমাম আযম আবু হানীফা রহ.।
যিনি কোরআন হাদীসকে সাহাবাদের আমল ও ব্যাখ্যার আলোকে বুঝেছেন। এবং উক্ত ব্যাখ্যার নীতিমালার আলোকে ক্বুরআন ও হাদীস থেকে মাসআলা  উদ্ঘাটন করেছেন।
আর উক্ত মাসআলা র সমন্বয়ে গঠিত মাযহাবকে হানাফী মাযহাব বলা হয়।
অপর শ্রেনী হলো স্বার্থান্নেষী ইংরেজ বেনিয়াদের হীন চক্রান্তের জাল স্বরূপ সমগ্র বিশ্বে ব্রিটিশ উপনিবেশকালে গঠিত ভ্রান্ত ফেরকা।
তাদের অন্যতম হলো আহলে হাদীস ফেরকা। যারা ক্বুরআন সুন্নাহকে সাহাবায়ে কেরাম ও আকাবীরদের সহীহ ব্যাখ্যা ব্যতিরেকে নিজস্ব যুক্তির আলোকে বুঝে থাকে।
এবং এ ক্ষেত্রে অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকে। আর এটাই হলো ভ্রান্তির প্রথম আলামত।
প্রত্যেক ভ্রান্তির সূচনা جزئي বিষয় নিয়ে হলেও পরিশেষে তা মারাত্মক রূপ ধারণ করে।

মূল আলোচনার প্রারম্ভে উভয় শ্রেনীর উৎপত্তি ও পরিচয় তুলে ধরা হলো :
আবু হানীফা রহ. এর পরিচয়
নাম নো’মান, কুনিয়ত আবু হানীফা, উপাধি ইমাম আযম। ৮০ হিজরীতে ইরাকে জন্মগ্রহণ করেন। ১৫০ হিজরীতে খলীফা মানসুরের হাতে বিষ প্রয়োগে কারাবন্দী অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
তিনি যখন বিষের ক্রিয়া অনুভব করলেন তখন তিনি সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন। এবং সেজদারত অবস্থায় পরকালে গমন করলেন।
সেই যুগে এই মহান তািবয়ীর জানাযায় প্রায় পাঁচ লক্ষ লোক হয়েছিলো। তাঁর অসিয়ত মোতাবেক খিজরানের কবরস্থানে তাঁকো দাফন করা হয়।

তাঁর মাযহাবের উৎপত্তি :
ইমাম আবু হানীফা রহ. এর জন্মস্থান কূফা নগরীতে, যেখানে ১৫ শত সাহাবী আগমন করেছেন এবং ইলম বিতরণ করেছেন।
ফলে কূফা নগরী ছিলো ক্বুরআন, সুন্নাহের ইলমের একটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র।
ইবনে সা’দ রহ. طبقات গ্রন্থে কূফা অধিবাসী প্রসিদ্ধ সাহাবীগনের নাম উল্লেখ করেছেন।
তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেনঃ
* আলী ইবনে আবী তালিব
* সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাস
*সায়ীদ ইবনে যায়েদ            
* আবু কাতাদা
*আবু মূসা আশ’আরী             
* বারা ইবনে আ’যেব
* আম্মার ইবনে ইয়াসির           
* আবু মূসা আনসারী
* সালমান ফারসী               
* যায়েদ ইবনে আরকাম
* ওয়ায়েল ইবনে হুজর প্রমুখ সাহাবী
এই বিশিষ্ট সাহাবীগনের মাধ্যমে কূফা ও তাঁর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে ক্বুরআন সুন্নাহর ইলম প্রচারিত হয়েছে।
বিশেষতঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস’উদ রাযি. এর অবস্থান কূফা নগরীকে স্বতন্ত্র মর্যাদা প্রদান করেছিলো।
এই নগরীর বিশিষ্ট সাত ফকীহ তাঁরই শাগরেদ ছিলেন।
��এর মধ্যে আলকামা রহ. এর অবস্থান ছিলো সর্বশীর্ষে।
��ইবরাহীম নাখয়ী তার পরে এই অবস্থানে ছিলেন।
��এরপর হাম্মাদ ইবনে আবী সুলাইমান
��সর্বশেষে ইমাম আবু হানীফা রহ.

ইমাম আবূ হানিফা রহ.ঃ
তিনি ১৫০ হিজরী সময়কাল পর্যন্ত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস’উদ রাযি. এর ইলম ও ফিকহের এই ধারাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেন।
তৎকালীন ইসলামী বিশ্বে ক্বুর’আন সুন্নাহের ইলমের কেন্দ্ররূপে কূফা নগরীর অবস্থান ছিলো অন্যতম।

আবু হানীফা রহ. ইলমী মাকামঃ
এই জ্ঞান কেন্দ্রের অন্যতম প্রদীপ ইমাম আবু হানীফা রহ. এর সম্পর্কে ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইমাম ইয়াহইয়া ইবনে আদম রহ. বলেন, কূফা নগরীর ইলম ইমাম আবু হানীফা রহ. এর আত্মস্থ ছিলো।
এবং তাঁর বিশেষ মনোযোগ ঐ সকল হাদীসের দিকে ছিলো যাতে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  এঁর ওফাত পূর্ববর্তী জীবনকালের আমল সংরক্ষিত হয়েছে।
ইমাম আবু ইউসুফ রহ. বলেন : একদা আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, হাদীস সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান আপনি কিভাবে অর্জন করেছেন?
তিনি উত্তরে বলেন : কূফা নগরীর জ্ঞান ভাণ্ডার আমার কাছে রক্ষিত আছে।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুহাম্মদ আওয়ামা প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৮৬, ৮৮।
আবু হানীফা রহ. শুধু কূফা নগরীর জ্ঞানই আত্মস্থ করেছেন এমন নয়।
বরং তিনি মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওরাহ এর আলিমদের নিকট থেকেও ইলম অর্জন করেছেন।
উল্লেখ্য যে, তিনি জীবনে পঞ্চান্ন বার হজ্জ করেছেন।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুহাম্মদ আওয়ামা প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা-৮৫, ৮৯।
তার উস্তাদগনের সংখ্যাধিক্যের তাৎপর্য এখান থেকে বোঝা যায়। উস্তাদ ব্যতীত ইলম অর্জনের কোনো পথ নেই।
আল্লামা সালেহী রহ. “উকূদুল জুমান” কিতাবে এবং ইবনে হাজার হায়সামী রহ. “আল খায়রাতুল হিসান” কিতাবে উল্লেখ করেছেন যে, ইমাম আবু হানীফা রহ. এর উস্তাদের সংখ্যা ৪ হাজার।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* মুহাম্মদ আওয়ামা, প্রাগুক্ত নতুন সংস্করণ, পৃষ্ঠা-১৭৬।
ইমাম আবু হানীফা রহ. যদি প্রত্যেক উস্তাদ থেকে একটি করেও হাদীস সংগ্রহ করে থাকেন তবুও ৪-(চার) হাজার হাদীস জানা থাকার কথা। তিনি যে একজন মুজতাহিদ ছিলেন এই বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর ইজমা’ রয়েছে। আর সতেরটি হাদীস জানা ব্যক্তিকে মুসলিম উম্মাহ্ একজন মুজতাহিদ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে গেলেন তা চিন্তা করাও বাতুলতা।  
ফিকহে হানাফীর উৎস সাতটিঃ
��  কিতাবুল্লাহ
��  সুন্নাতে রাসূলুল্লাহ সা.
��  আকওয়ালে সাহাবা
��  ইজমা’
��  কিয়াস
��  ইস্তিহসান
��  উ’রফ

আবু হানীফা রহ. এর ফিকহ মজলিসঃ
জ্ঞান সমুদ্রে অবগাহনকারী ইমাম আবু হানীফা রহ. উক্ত সাত উৎস হতে গৃহীত মূলনীতির আলোকে মাসআলা উদ্ভাবন করে উদ্ভাবিত মাসআলা তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত একটি উচ্চাঙ্গের ফিকহ গবেষণা বোর্ডে পর্যালোচনার জন্য উত্থাপন করতেন।
এ থেকে বুঝা যায় তিনি ফিকহ সংকলনে তার ব্যক্তিগত জ্ঞান ও প্রজ্ঞার উপর নির্ভর করেন নি।
বরং চল্লিশ জন শীর্ষ স্থানীয় ফকীহ ও মুহাদ্দিসের সমন্বয়ে একটি মজলিস গঠন করেছিলেন। যেখানে এক এক মাসআলার উপর দীর্ঘ আলোচনা ও পর্যালোচনা হতো। সবশেষে যে সিদ্ধান্ত দলীলের আলোকে স্থির হতো তা লিপিবদ্ধ করা হতো।
কখনো এক মাসআলাতে তিনদিন পর্যন্ত আলোচনা অব্যহত থাকতো। সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে এতটা সাবধানতা অবলম্বন করা হতো যে, মজলিসের একজন সদস্যও অনুপস্থিত থাকলে তাঁর জন্য অপেক্ষা করা হতো।
এবং তাঁর মতামত উপস্থাপিত হওয়ার পর চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হতো।
সে সময়ের বড় বড় মুফাসসির, মুহাদ্দিস ও ফকীহ এই ফিকহ মজলিসের সদস্য ছিলেন।
আর এই বোর্ডের তত্ত্বাবধানে পর্যালোচনার মাধ্যমে তাঁর জীবদ্দশায় ৮০,০০০ মাসআলা সংকলন করে যান।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* আবু যাহরা আবু হানীফা দারুল ফিকহ, পৃষ্ঠা-২১৩।
আর উক্ত ফিকাহকেই "ফিকহে হানাফী" বলা হয়। এবং তিনিই সর্বপ্রথম ফিকহ সংকলনকারী।
আর যারা তাঁর সংকলিত ফিকহের অনুসরণ করেন তাদেরকে হানাফী বলা হয়।
তাই এই কথা দৃঢ়তার সাথেই বলা যায় যে, হানাফী ফিকাহ পরিপূর্ণভাবে ক্বুরআন, সুন্নাহ, ইজমা’ ও কিয়াসের উপর ভিত্তিশীল এবং যা ইসলামের স্বর্ণযুগে যুগশ্রেষ্ঠ মনিষীদের তত্ত্বাবধানে সংকলিত হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা’য়ালা পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যার ব্যাপক গ্রহনযোগ্যতা (Acceptance) দান করেছেন।
তার স্থায়িত্ব ও উপযোগীতা প্রশ্নাতীত এবং তা পরবর্তী যুগের লোকদের সমর্থন (Certifying) এর মুখাপেক্ষী নয়।
অতএব, কিছু মানুষের অস্বীকৃতি (refusal) ও বিরোধীতা এর গ্রহনযোগ্যতাকে বিন্দুমাত্র হ্রাস করতে পারবেনা।

আহলে হাদীস ও লা মাযহাবীদের মাযহাব ও তার পরিচিতিঃ
পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত হক্ক ও বাতিলের সংগ্রাম চলছে এবং চলবে। ইসলাম ও মুসলমানদের সাথে বাতিলের কোন আপোষ নেই।
সুতরাং ইয়াহুদী এবং নাসারারা কখনো মুসলমানের বন্ধু হতে পারেনা। যদিও কোনো অঞ্চলের অবৈধ দখলকারী শাষক ইয়াহুদী এবং নাসারাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখে।
হিজরী ১৩ শতাব্দীতে সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ লোলুপ দৃষ্টি নিয়ে ভারত উপমহাদেশে আগমন করেছিলো।
কিন্তু তাওহিদী জনতার ঈমান ও দুর্বার আন্দোলনে টিকতে না পেরে লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলো।
আর তাদের মূল দর্শন হলো “Devide & Rule The Muslims অর্থাৎ মুসলমানদের পরস্পরের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটানো এবং তাদের মাঝে কর্তৃত্ব করা”।
তারা চলে গেছে ঠিক, কিন্তু তাদের দর্শন অনুযায়ী মুসলমানদের পরস্পরের মাঝে বিচ্ছেদ সৃষ্টির জন্য তাদের বীজ হিসাবে অসংখ্য বাতিল ফিরকা প্রতিষ্ঠা করে যায়।
তারই ফলশ্রুতিতে জন্ম দেয় তথাকথিত "লা মাযহাবী" মাযহাব।
তাদের অন্যতম হলো আহলে হাদীস ফিরকা। যারা নিজেদেরকে কখনো মোহাম্মদী কখনো আহলে হাদীস আবার কখনো সালাফী দাবী করে আসছে।
আর মুসলিম উম্মাহ তাদেরকে গাইরে মুকাল্লিদ বা লা মাযহাবী হিসাবে পরিচয় দিচ্ছে। তারা চার মাযহাবের কোন মাযহাবই মানে না। এবং কোন ইমামের তাকলীদ করেনা। বিধায় তাদেরকে গাইরে মুকাল্লিদ বলা হয়।
কিন্তু মূলত তারাও মুকাল্লিদ-মাযহাবী।
কেননা ফিরকায়ে আহলে হাদীস তো একটা নির্দিষ্ট দল ও একটা মতাদর্শের নাম।
সুতরাং যেই ব্যক্তি “আহলে হাদীস” হয় সে সকল বিষয়ে আহলে হাদীস আলেমেরই শরনাপন্ন হয়ে থাকে। যেমনিভাবে একজন হানাফী ব্যক্তি শরয়ী সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে হানাফী আলেমেরই শরনাপন্ন হয়ে থাকে।
বরং তাদের তাকলীদ চার মাযহাবের অনুসারীদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়।
কেননা চার মাযহাবের অনুসারীগন তো পরষ্পর সম্মান প্রদর্শন করে থাকে। সকল মাযহাবের ইমামগনকেই মূল্যায়ন করেন ও দ্বীনের একনিষ্ঠ খাদেম মনে করেন। প্রত্যেকটি মাযহাবের ভিত্তি হক্কের উপর বলে জানেন এবং বিশেষ প্রয়োজনে এক মাযহাবের লোক অন্য মাযহাবের উপর আমলও করে থাকেন।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আহলে হাদীস ফিরকা নিজেদেরকে ব্যতীত সবাইকে পথভ্রষ্ট মনে করে। সবাইকে কাফীর ফাতাওয়া দেয়।
চার মাযহাবের ইমামদেরকে চারটি ভূত বলে আখ্যায়িত করে। তাকলীদ করাকে শিরকের অন্তর্ভুক্ত বলে।
আর কেবল তাদেরই আনুগত্য ও তাদের দলের তাকলীদ করার প্রতি সবাইকে আহবান করে।
ভারতের হেসার জেলার প্রসিদ্ধ গাইরে মুকাল্লিদ আলিম মওলভী আব্দুশ শাকুর লিখেছে : “সত্য মাযহাব একমাত্র আহলে হাদীস। আর বাকী সব মাযহাব মিথ্যা ও জাহান্নামী। সুতরাং আহলে হাদীসদের জন্য আবশ্যক হলো ঐ সকল বাতিল ফিরকা (চার মাযহাব)থেকে বেঁচে থাকা”।
��গ্রন্থ সূত্র :
*_* সিয়াহাতুল জানান, পৃষ্ঠা ৪।
তাদের অপর একজন আলিম নবাব সিদ্দীক হাসান খান লিখেছে : "আমাদের নিকট বিশ্লেষণধর্মী কথা হলো সারা পৃথিবীর মুসলমান দুই ভাগে বিভক্ত।
এক. প্রকৃত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত যাদেরকে আহলে হাদীসও বলা হয়।
দুই. হলো নির্দিষ্ট মাযহাবের মুকাল্লিদ। তারা মোট চারটি দলে বিভক্ত।
০১.   হানাফী
০২.   শাফেয়ী
০৩.   মালেকী
০৪.   হাম্বলী
তাই পৃথিবীর সকল আহলে হাদীস একই মতাদর্শ ও একই নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত। তাদের কাজ কথা ও আমলের কোন মতপার্থক্য নেই। এবং নামাজ, রোযা, হজ্জ,যাকাত সালাম, মুসাফা, তথা শরীয়তের সর্বক্ষেত্রে দুনিয়ার সব আহলে হাদীস একই পদাঙ্ক অনুসরণ করে।
সুতরাং পাঠক মহলের বোঝা উচিত তারা কি গাইরে মুকাল্লিদ না চূড়ান্ত পর্যায়ের (Absolutely) মুকাল্লিদ?
এ বিষয়টির উদাহরণ হলো যে, যে ফলের রস বেশী সে ফলের নাম আনারস, আর যে ফলের মাঝে দানা বেশী সে ফলের নাম বেদানা। আর যে দলে তাকলীদ বেশী সে দলের নাম গাইরে মুকাল্লিদ।
তারা দাবী করে যে, তারা হলো আহলে হাদীস।
অথচ তারাই সবচেয়ে বেশী হাদীস অস্বীকারকারী।
কাজেই আনারস আর বেদানার নামের ন্যায় যাদের মধ্যে সালাফীউ সালেহীনের অনুসরণ মোটেই নেই তারা নাম ধরেছে সালাফী।
নামটি মুসলিম উম্মাহকে ধোঁকা দেয়ার জন্যে তারা ব্যবহার করে থাকে।

 
Top