▆ প্রসঙ্গ- রাসূলে কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم) এঁর "উসিলা বা তাওয়াস্সুল"
______
নোটঃ ০১.
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1794725324176238
নোটঃ ০৩.
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1892045067777596
_________
স্বয়ং নবী করিম (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) তাওয়াস্সুলের ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন।
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী হতে বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি বলেন:
« كان رسول الله� يقول: وسّلوا بمحبّتنا الي الله و استشفعوا بنا ».
অর্থাৎ : রাসুল (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) বলেন: আমাদের ভালবাসার মাধ্যমে খোদার কাছে তাওয়াস্সুল কর এবং শাফাআত চাও।
*_* হুসাইনি, সৈয়দ নুরুল্লা, এহকাকুল হক, মাকতাবাতু আয়াতুল্লাহ মার’আশি, ১৮তম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৫২১।
ইমাম মালেকও নবী করিম (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এর মাযারে মানসুর দাউয়ানেকিকে বললেন:
« هو وسيلتك و وسيلة ابيك آدم ».
হযরত মোহাম্মদ (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) হচ্ছেন তোমার জন্য উসিলা যেরূপ তোমার পিতা হযরত আদম (আ.) এর জন্য উসিলা ছিলেন।
*_* যাইনি দাহলান, প্রকাশ কাল: ১৩৬৪, পৃষ্ঠা: ১৫৭।
মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাবের পর তার ভাই, শিফাউস সিকাম বইতে সাবকি এবং তাকে অনুসরণ করে ওয়াফাউল ওয়াফা বইতে সামহুদি প্রথম বারের মত আব্দুল ওয়াহাবের বিশ্বাস ও তার চিন্তা নিয়ে আলোচনা করেন।
সাবকি সুন্দরভাবে আলোচনা করেছে। তিনি যে কোন অবস্থাতে নবী করিমকে (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) উসিলা করাকে জায়েয বলে মনে করে। আর তাকে তিন ভাগে ভাগ করেন:
ক) প্রয়োজনীয় ব্যক্তি নবী করিমকে (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) উসিলা করে আল্লাহর কাছে ইচ্ছা কামনা করা।
খ) প্রয়োজনকারী ব্যক্তি নিজের জন্য আল্লাহর রাসুল (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এর দোয়া চাওয়ার জন্য হযরত নবী করিমকে (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) মধ্যস্থতা বানিয়ে নেয়।
গ) তাওয়াস্সুলকারী স্বয়ং নিজেই রাসুলের (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) কাছে নিজেদের চাওয়া চাইবে।
*_* সাবকি, তাকিউদ্দিন আস সাবকি, শিফাউস সিকাম, আল মুজামুল আকায়েদি।
_____
হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বুখারী শরীফে বর্ণিত হাদীছে কুদসী - তে রাসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরমানঃ
অর্থাৎ “অবশ্যই আল্লাহ্ বলেন আমার যে বান্দা সর্বদা নাওয়াফেলের (রুহানী সাধনা) দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করেথাকে, এমনকি আমি তাকে বন্ধু রূপে গ্রহণ করে থাকি। আমি যখন তাকে স্বীয় বন্ধুরূপে (ওলী) গ্রহণ করে নেই তখন আমি তার কর্ণ হয়ে যাই যা দ্বারা সে শুনে, আমি তার চক্ষু হয়ে যাই যা দ্বারা সে দেখে, আমি তার হাত হয়ে যাই যাদ্বারা সে ধরে, আমি তার পা হয়ে যাই যা দ্বারা সে চলে এবং সে আমার নিকট যা চায় তা আমি নিশ্চয়ই তাকে দিয়ে থাকি; আমি তার হৃদয় (কলব্) হয়ে যাই যা হতে সে জ্ঞান লাভ করে এবং আমি তার জিহ্বা হয়ে যাই যা দ্বারা সেকথা বলে।”
*_* সহীহ বুখারী : কিতাবুর রিক্বাক।
*_* সহীহ ইবনে মাজাহ - ২য় খন্ড, ২১৯ পৃষ্ঠা।
অর্থাৎ তাঁদের কর্ণ আল্লাহর ‘সামীউন’-এর শ্রবনশক্তির, তাঁদের চক্ষু আল্লাহর ‘বাছীরুন’-এর দৃষ্টিশক্তির, তাঁদের হাত‘ইয়াদুল্লাহের’ এবং তাঁদের পা ‘রেযলুল্লাহের’ বা আল্লাহর পদশক্তির বিকাশ স্থলে পরিণত হয়।
তাই উল্লেখিত প্রমাণাদির নিরীখে আল্লাহ্ পাকের এরুপ বান্দাদের নিকট সাহায্য চাওয়া কুফুরী বা শিরক্ হতে পারে না। কারণ তাদের কাছে চাওয়া, প্রকৃত অর্থে আল্লাহরই কাছে চাওয়া।
যেহেতু আল্লাহ্পাকের এরুপ খাস বান্দাগণ অমর অবিনশ্বর এবং জাহেরী মৃত্যুর মাধ্যমে জড়দেহ হতে আত্মিক মুক্তিলাভের পর তাঁরা বিশ্বভূবনের সর্বত্র স্বাধীন ভাবে বিচরণ করতে এবং চাক্ষুষ সব দেখতে ও শুনতে সক্ষম।
এরশাদ হচ্ছেঃ
অর্থাৎ, “যখন পবিত্র আত্মা শারীরিক বন্ধন হতে মুক্ত হন, তখন তাঁরা উর্দ্ধজগতের ফেরেশ্তাদের সাথে মিশে যান এবং স্বীয় ইচ্ছা অনুযায়ী আসমান ও যমীনের সর্বত্র বিচরণ করেন এবং জীবিত ব্যক্তিদের ন্যায় চাক্ষুষ সবকিছু দেখতে পানও শুনতে পান।”
*_* মোল্লা আলী কারীর মীরকাত : ২য় খন্ড - ৭ পৃষ্ঠা।
*_* আরও দেখুন, আল্লামা মানভীর তায়ছির।
যেহেতু জাহেরী মৃত্যু বা বেছালে হক প্রাপ্তির পরেও তাঁদের রুহানী ক্ষমতা বিদ্যমান থাকে, জাহেরী মৃত্যু তাঁদের রুহানী শক্তির উপর কোন প্রকার প্রভাব বিস্তার বা বিঘ্নতা সৃষ্টি করতে পারে না।
এরশাদ হচ্ছেঃ
অর্থাৎ : জাহেরী মৃত্যু কেরামতে আউলিয়ার মধ্যে কোন প্রকার বিঘ্নতা সৃষ্টি করতে পারে না। অতএব, আউলিয়াগণ জাহেরী মৃত্যুর পরেও স্বীয় কেরামত প্রকাশ করে থাকেন। (কাশফেন্ নূর গ্রন্থ দ্রষ্টব্য)
এরশাদ হচ্ছেঃ
অর্থাৎ : “নিশ্চয়ই আম্বিয়া ও আউলিয়াগণের জীবন হাকীকতের মধ্যে (প্রকৃতপক্ষে) অবিনশ্বর। এবং তাঁদের অমরজীবনকে জাহেরী মৃত্যু বিনষ্ট করতে পারে না। কেননা, জাহেরী মৃত্যু রুহের বিচ্ছিন্নতা দ্বারা শরীরের উপর সংঘটিত হয়ে থাকে। তাঁদের দেহ মাটি ভক্ষণ করে না, তাঁরা সশরীরে জীবিতদের ন্যায়, তাই তাঁরা ইন্তেকালের বা জাহেরী মৃত্যুর পরেও মানুষকে সাহায্য করতে সক্ষম। তাঁদের কবর শরীফ হতে সদা সর্বদা ফয়েজ জারী থাকে।”
*_* তাফসীরেরুহুল বায়ান, ‘সূরা - আদ্ দোখান’, ২য় খন্ড, ৩২৩ পৃষ্ঠা।
*_* তাফসীরে হাক্বক্বী - ১৩তম খন্ড, ২৮১ পৃষ্ঠা।
প্রকারভেদঃ
ওসীলা মৌলিকভাবে দুই প্রকার। যথা-
০১-কোন নেক আমলের ওসীলা গ্রহণ।
০২-কোন ব্যক্তিত্বের ওসীলা গ্রহণ।
০১-প্রথম প্রকার ওসীলা তথা নেক আমলের ওসীলা সর্বসম্মত মতানুসারে জায়েজ। যা বনী ইসরাঈলের তিন ব্যক্তি পাহাড়ের গুহায় আটকে যাবার পর স্বীয় আমলের উসীলা দিয়ে দুআ করার দ্বারা সুষ্পষ্টরূপে প্রমাণিত।
*_* দ্রষ্টব্য- বুখারী-১/১৩৭।
০২-ব্যক্তির উসীলা গ্রহণের হুকুম এবং এর হাকীকত :
হযরত আম্বিয়ায়ে কেরাম এবং আওলিয়ায়ে কেরাম এবং বুজুর্গানে দ্বীনের ওসীলা দিয়ে দুআ করা ইসলামী শরীয়ত মোতাবিক জায়েজ।
বরং দুআ কবুলের সহায়ক হওয়ার দরূন তা প্রশংসনীয় ও উত্তমও।
কুরআনে কারীমের আয়াত, হাদীসের বর্ণনা এবং জমহুর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর বক্তব্য দ্বারা একথা সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত।
অতএব, পবিত্র কোরআন ও হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হল ওসীলা তালাশ করা সম্পূর্ণরুপে বৈধ।
আসুন, দেখা যাক;
হযরত আবু হুরায়রা (রা:) একবার আরয করেন,
"ইয়া রাসূলাল্লাহ (দরুদ), আমি আপনার কাছ থেকে অসংখ্য হাদীস শুনি, কিন্তু তা ভুলে যাই; মনে রাখতে পারিনা। আমি কামনা করি আপনার পবিত্র মুখ নিঃসৃত বাণী যেন আর কখনোই না ভুলি।”
তখন হুজূর (ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম ) বললেন, "তোমার চাদর বিছিয়ে দাও।” অতঃপর হযরত আবু হুরায়রা (রা:) তা বিছিয়ে দিলেন। তখন আকা (ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম ) তাঁর হাত মুবারকে শূন্য থেকে কী যেন ওই চাদরের মধ্যে রাখেন, অতঃপর বলেন, "চাদর ভাঁজ করে ফেলো।”
তিনি তা ভাঁজ করে নিলেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, ”এরপর আর কোনো দিন কিছু ভুলিনি।”
☆ অধ্যায়: কিতাবুল ইলম, বোখারী শরীফ।
সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ :
এখানে হযরত আবু হুরায়রা (রা:)-এর মতো প্রসিদ্ধ সাহাবী, যিনি অধিক হাদিস রেওয়ায়েতকারী এবং আহলে সুফফার একজন আল্লাহ পাগল, রাসূল-প্রেমিক।
তিনিও নবী করীম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম থেকে ভুলে যাওয়ার ব্যাপারে পরিত্রাণ চাচ্ছেন। তাঁর চাওয়াতে রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম এর কোনো অভিযোগ ছিলনা, মুশরিকও আখ্যা দেননি।
আসুন, এবার নিচের হাদিস পাক দেখা যাক;
হযরত উসমান ইবনে হানীফ রা. থেকে বর্ণিত আছে, এক অন্ধ ব্যক্তি রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম'র মহান দরবারে উপস্থিত হয়ে অন্ধত্ব দূর হবার জন্যে তাঁর দোয়াপ্রার্থী হয়েছিলেন।
রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম তাঁকে শিখিয়ে দিলেন এ দু’আটি :
اَلَّهُمَّاِنِّىْ اَسْئَلُك
َ وَاَتَوَ جَّهُ اِلَيْكَ بِمُحَمَّدٍ نَّبِىِّ الرَّحْمَةِ يَا مُحَمَّدُ اِنِّىْ قَدْتَوَجَّهْتُ بِكَ اِلَى رَبِّىْ فِيْ حَاجَتِىْ هذِه لِتَقْضِىَ اَللَّهُمَّ فَشَفِّعْهُ فِىَّ قَالُ اَبُوْا اِسْحقَ هذَا حَدِيْثٌ صَحِيْحٌ
অর্থাৎ : হে আল্লাহ, আমি অাপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি রহমতের নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) মারফত; আপনার দিকে মনোনিবেশ করছি। হে মুহাম্মদ (প্রশংশিত-ছাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া ছাাল্লাম), আমি আপনার মাধ্যমে আপন প্রতিপালকের দিকে আমার এ উদ্দেশ্য (অন্ধত্ব মোচন) পূরণ করার উদ্দেশ্যে মনোনিবেশ করলাম, যাতে আপনি আমার এ উদ্দেশ্য পূরণ করে দেন। হে আল্লাহ, আমার অনুকূলে রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম'র সুপারিশ কবুল করুন।
রেফারেন্স:
ইবনে মাজা শরীফ'র সালাতুল ‘হাজত’ শীর্ষক অধ্যায়।
এ হাদীসটির বিশুদ্ধতা প্রসঙ্গে হযরত আবু ইসহাক রহ. বলেন, এ হাদীসটি বিশুদ্ধ (সহীহ)।
লক্ষ করুন,
দু’আটি কিয়ামত পর্যন্ত ধরাপৃষ্ঠে আগমনকারী মুসলমানদের জন্যে শিক্ষার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়।
এখানে রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লামকে আহবান করা হয়েছে এবং তাঁর সাহায্য ও প্রার্থনা করা হয়েছে।
এখানে দুটো শব্দ সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, "বি মুহাম্মাদিন" ও "বিকা"।
এই শব্দ দুটো সুষ্পষ্টভাবেই রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম'র অসীলা উল্লেখ করে। তাতে কন্টেক্সট্ ও কনটেক্সট্ দিয়ে ভুল ব্যাখ্যার সুযোগ নেই।
শিক্ষা :
আল্লাহর কাছে অনুগ্রহপ্রাপ্ত ও সম্মানিত কোনো পুণ্যাত্মার অসীলায় কোনো কিছু চাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্নিহিত আকীদা থাকে,
"তিনি যেহেতু আল্লাহর দরবারে সম্মানিত ও অনুগ্রহপ্রাপ্ত, তাই আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তিনি সাহায্য-সহযোগিতা করতে সক্ষম, বিপদ থেকে উদ্ধার করতেও সমর্থ।"
এতে শিরকের গন্ধ যারা খুঁজে, তাদের জ্ঞান সন্দেহযুক্ত।
অস্পষ্ট আয়াত ও যে আয়াত মূর্তিদের ব্যাপারে নাজিল হয়েছে, তার রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম ও ওলী রহ.'দের প্রতি আরোপ করে আমাদের মুসলিম ভাইদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম'র বেসালের পর চাওয়া শিরক শিরোনামে যারা বিরোধিতা করার প্রয়াস পায় তাদের বলছি,
প্রতি খলিফার আমলে অনেক রেওয়ায়াতে এই আচার প্রমাণিত, যা অতি বিশুদ্ধ।
অনেক হাদীস থেকে মাত্র একটি এখানে পেশ করা হল :
اصاب الناس قحط في زمان عمرفجاء رجل الئ قبرالنبئ صلي الله عليه وسلم فقال يا رسول الله استسف لامتك فانهم قد هلكوا فاتي الرجل فى المنام فقيل له اءت عمر فاقرأه السلام واخبره انكم مستقيمون
☆ আল মুসান্নাফ, খণ্ড১২, নং ১২০৫১;
☆ ফাতহুল বারী, শরহে বোখারী, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪১২, ৪৯৫
হাযরাত উমার রা.'র সময়কালে অনাবৃষ্টিতে মুসলমানবৃন্দ আক্রান্ত হলে এক ব্যক্তি (বিলাল বিন হারিস) রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম'র রওযা শরীফে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি বৃষ্টির জন্যে দোয়া করুন, আপনার উম্মত ধ্বংসপ্রায়।
অতঃপর ওই সাহাবী রা.কে স্বপ্নে রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম জানান, উমর রা.'র কাছে যাও, সালাম জানাও, অতঃপর তাঁকে এই খবর দাও যে, নিশ্চয় তোমাদের বৃষ্টি দেয়া হবে।
এই হাদিসটির শুদ্ধতা সম্পর্কে ইমাম ইবনে আবি শাইবা ও আল্লামা ইবনে হাজার আস্কালানি (রা:) বলেন, হাদীসটি সনদে বিশুদ্ধ।
দেখুন, এখানে কয়েকটি বৈধ বিষয় উল্লেখ্য।
☆ হুজুর (দ:)-এঁর বেসালের পর হযরত বিলাল বিন হারিস (রা:)-এঁর দ্বারা তাঁর রওযায় যাওয়া।
☆ ইয়া রাসূলাল্লাহ বলে ডাকা।
☆ সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিত পাওয়া রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম থেকে।
উপরেল্লেখিত হাদীস সমূহ সুরা আল মায়িদার ৩৫ নং আয়াতের সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা, যাতে ইরশাদ হয়েছে:
يا ايها الذين امنوا اتقواالله وابتغوا اليه الوسيلة
হে মুমিনগণ, তোমরা খোদা-ভীরুতা অবলম্বন করো এবং আল্লাহর প্রতি (নৈকট্যের জন্যে) অসীলা তালাশ করো (গহণ করো)।
উছিলা সমর্থনে নিম্নে উল্লেখিত দলিল সমূহ দেখুনঃ
روى سيدنا عبد الله بن عمر رضي الله عنهما قال: قال رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم (لما اقترف آدم الخطيئة قال يا رب أسألك بحق محمد إلا غفرت لي فقال الله تعالى يا آدم كيف عرفت محمدا ولم أخلقه؟ قال: يا رب إنك لما خلقتني رفعت رأسي فرأيت علي قوائم العرش مكتوبا لا إله إلا الله محمد رسول الله فعلمت أنك لم تضف إلى اسمك إلا أحب الخلق إليك فقال الله تعالى صدقت يا آدم إنه لأحب الخلق إلى وإذ سألتني بحقه فقد غفرت لك ولو لا محمد ما خلقتك
অর্থাৎ : হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন আদম আলাইহিস সালামের নিকট তাঁর নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফল ভক্ষণের বিষয়টি ধরা পড়ল, তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ, আমি মুহাম্মাদের ওয়াসীলা নিয়ে তোমার দরবারে ফরিয়াদ করছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও। অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম, তুমি মুহাম্মাদকে কীভাবে চিনলে, এখনো যাকে সৃষ্টি করি নাই? তিনি বললেন, হে আল্লাহ, তুমি যখন আমাকে সৃষ্টি করেছিলে, আমি তখন আমার মাথা উঠিয়েছিলাম। তখন দেখতে পেয়েছিলাম, আরশের খুটিগুলোর উপর লেখা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম, সমগ্র সৃষ্টির মধ্য সবচেয়ে প্রিয় না হলে তুমি তাঁর নাম তোমার নামের সাথে মিলাতে না। অতঃপর আল্লাহ বললেন, হে আদম তুমি ঠিকই বলেছ। নিশ্চয়ই সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে সে আমার সবচেয়ে প্রিয়, আর যেহেতু তুমি তাঁর ওয়াসীলা নিয়ে আমার নিকট দোয়া করেছ, তাই তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। আর(জেনে রাখ) মুহাম্মাদকে সৃষ্টি না করলে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না।
*_* দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাকী ৫/৪৮৯;
*_* আল মুস্তাদরাক লিল হাকিম-২/৬১৫;
*_* আল মু’জামুল আওসাত লিত তাবারানী- ৬৪৯৮।
যে সকল মুহাদ্দিসীন এ হাদীসটিকে সহীহ বলেছেনঃ
০১- ইমাম হাকিম বলেছেন হাদিসটি সহীহ। আল মুস্তাদরাক-২/৬১৫
০২- ইমাম তকি উদ্দীন সুবকী বলেন, হাদিসটি হাসান। শিফাউস সিকাম, পেইজ-১২০
০৩- ইমাম তকী উদ্দীন দামেশকী বলেন, হাদীসটি বিশুদ্ধ। দাফউ শুবহাহঃ ১/৭২
০৪- ইমাম কস্তল্লানী বলেন, হাদিসটি বিশুদ্ধ। মাওয়াহিবুল লাদুনিয়াহঃ১/১৬
০৫- ইমাম সামহুদী বলেন, হাদিসটি সহীহ। ওয়াফাউল ওয়াফাঃ২/৪১৯
০৬- ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতী বলেন, বিভিন্ন সনদে বর্ণিত এ হাদিসটি বিশুদ্ধ। আল খাসাইসঃ১/৮
০৭- ইবনু তাইমিয়্যাহ এ হাদীসটি দলীল হিসাবে তাঁর কিতাবে উল্লেখ করেছেন। মাজমাউল ফাতাওয়া; ২/১৫৯
কুরআ'নুল কারিম'র আলোকেঃ
(এক নজরে কতিপয় অায়াত)
১। অছিলা তালাশ করার হুকুম; সুরা মায়েদা, আয়াত ৩৫
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ وَابْتَغُواْ إِلَيهِ الْوَسِيلَةَ وَجَاهِدُواْ فِي سَبِيلِهِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُون
َ
২। নবী করিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম এর অছিলায় আল্লাহর ক্ষমার অঙ্গিকার; সুরা নিসা, আয়াত ৬৪।
وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلاَّ لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللّهِ وَلَوْ أَنَّهُمْ إِذ ظَّلَمُواْ أَنفُسَهُمْ جَآؤُوكَ فَاسْتَغْفَرُواْ اللّهَ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمُ الرَّسُولُ لَوَجَدُواْ اللّهَ تَوَّابًا رَّحِيمًا
৩। সামেরির তৈরী স্বর্ণের ঘোড়ার হাযরাত জিবরিল (আঃ) এর পায়ের নিচের মাটির অছিলায় প্রাণ সঞ্চার এর ঘটনা; সুরা ত্ব-হা, আয়াত ৯৬।
৪। তাবুতে সকিনার অছিলায় প্রশান্তি, যুদ্ধ জয় ও দোয়া কবুল হওয়া; সুরা বাকারা, আয়াত ২৪৮।
৫। হাযরাত ইউসুফ (আঃ) এর জামার অছিলায় এয়াকুব (আঃ) এর দৃষ্টি ফিরে পাওয়া; সুরা ইউসুফ, আয়াত ৯৩।
৬। হাযরাত মরিয়ম (আঃ) এর মেহরাবে দাঁড়িয়ে জাকারিয়্যা (আঃ) এর কৃত দোয়া কবুল।
হাদীসে রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম'র আলোকেঃ
(এক নজরে কতিপয় হাদিস)
১। নফল নামাযের ওয়াছিলা; সহীহি বুখারী শরীফের কিতাবুর রিকাক ২য় খন্ড, হাদীস নং ৬০২১।
২। নেক আমলের ওয়াছিলা; হাদীসে গার-সহীহ বুখারী ২য় খন্ড ৭৭৩ পৃ.।
৩। হাযরাত আদম (আঃ) এর দোয়া; আশশেফা বি তারিফি হুকুকিল মুসতাফা নামক কিতাবের ১ম খন্ডের ২২১।
৪। অন্ধ সাহাবী নবীর জাতের ওয়াছিলা;
*_* সুনানে তিরমিযি কিতাবুদ দাওয়াত, হাদীস নাম্বার ৩৫৯৮, ৫ম খন্ড পৃষ্ট ৩৩৬;
*_* সহীহ ইবনে হুযায়মা ২য় খন্ড পৃষ্টা ২৬;
*_* আলমুজামুল কাবির ৯ম খন্ড, পৃ ১৮;
*_* মুসতাদরাক লিল হাকেম ১ম খন্ড পৃ ৩১৩;
*_* দালায়েলুন নবুওয়াত লিলবায়হাকি ৬ষ্ট খন্ড পৃষ্টা ১৬৬।
৫। নবীর বেছাল এর পর ও ওয়াছিলা;
*_* তাফসিরে মাদারেকুত তানজিল ওয়া হাকায়েকুত তাবিল; সুরা নিসা, আয়াত ৬৩ পৃষ্ঠা ১৩৬।
৬। নবীজির কবর মোবারক ও অছিলা;
*_* সুনানে দারেমী ১ম খন্ড হাদীস নং ৯২ পৃষ্ঠা ৫৬।
৭। হযরত বেলাল এর অছিলা;
*_* ইনজাহুল হাজাত, সুনানে ইবনে মাজাহ এর হাশিয়া ৯৯ পৃষ্ঠা।
৮। হযরত ওমর এর খেলাফতকালে নবীজির চাচা হযরত আব্বাস এর অছিলায় দোয়া কবুল;
*_* সহীহ বুখারী ৪র্থ খন্ড ৯৯ পৃষ্ঠায় ৯৫৪ নং হাদীস।
৯। ইমাম তাজ উদ্দীন সুবকী তার কিতাব শিফাউস ছিকাম এর ১২৮পৃষ্ঠায়।
১০। নবীজির জুব্বা মুবারক ধৌত পানির অছিলায় রোগমুক্তি;
*_* সহীহ মুসলিম ১০ খন্ড ৪১১ পৃ হাদীস নং ৩৮৫৫।
১১। হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এর অছিয়ত নবীজির নখ ও চুল যেন কাফনের সাথে দেয়।
১২। হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ এর পাগড়িতে নবীজির চুল মুবারক থাকত যার বরকতে তিনি সকল যুদ্ধে বিজয় লাভ করতেন।
উসিলার সমর্থনে নিম্নের হাদিসটি দেখুন,
হযরত আলী রাঃ এঁর সূত্রে রাসুলে পাক ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম পৃথিবীর বুকে বিচরণকারী চল্লিশ (৪০) জন
আবদাল সম্পর্কে এরশাদ করেনঃ
"তাঁদের ওসীলায় বৃষ্টি বর্ষন করা হয় এবং তাদের মাধ্যমে শত্রুদের উপর বিজয় লাভে সাহায্য দেয়া হয়, আর তাঁদের (বরকত ও ওসীলা ) দ্বারা শামবাসীদের থেকে আযাব দূরীভূত করা হয়।"
*_* মিশকাত ২য় অধ্যায়, কিতাবুল ফিতন ফী যিকরিল ইয়ামান ওয়াশ সাম।
যুগে যুগে ক্বুরআ'ন, হাদিস ও ফিকহের ইমামগণের দৃষ্টিভঙ্গী জানতে পড়ুনঃ
দলিল নং 1
ইমাম যাহাবী বর্ণনা করেন: একবার সমরকন্দ অঞ্চলে খরা দেখা দেয়। মানুষজন যথাসাধ্য চেষ্টা করেন; কেউ কেউ সালাত আল-এস্তেসক্কা (বৃষ্টির জন্যে নামায-দোয়া) পড়েন, কিন্তু তাও বৃষ্টি নামে নি। এমতাবস্থায় সালেহ নামের এক প্রসিদ্ধ নেককার ব্যক্তি শহরের কাজী (বিচারক)-এর কাছে উপস্থিত হন এবং বলেন, আমার মতে আপনার এবং মুসলমান সর্বসাধারণের ইমাম বোখারী (রহ:)-এর মাযার শরীফ যেয়ারত করা উচিত। তাঁর মাযার শরীফ খারতাংক এলাকায় অবস্থিত। ওখানে মাযারের কাছে গিয়ে বৃষ্টি চাইলে আল্লাহ হয়তো বৃষ্টি মঞ্জুর করতেও পারেন। অতঃপর বিচারক ওই পুণ্যবান ব্যক্তির পরামর্শে সায় দেন এবং মানুষজনকে সাথে নিয়ে ইমাম সাহেব (রহ:)-এর মাযারে যান। সেখানে (মাযারে) বিচারক সবাইকে সাথে নিয়ে একটি দোয়া পাঠ করেন; এ সময় মানুষেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং ইমাম সাহেব (রহ:)-কে দোয়ার মধ্যে অসীলা হিসেবে গ্রহণ করেন। আর অমনি আল্লাহতা’লা মেঘমালা পাঠিয়ে ভারি বর্ষণ অবতীর্ণ করেন। সবাই খারতাংক এলাকায় ৭ দিন যাবত অবস্থান করেন এবং তাঁদের কেউই সামারকান্দ ফিরে যেতে চাননি। অথচ এই দুটি স্থানের দূরত্ব মাত্র ৩ মাইল।
*_* ইমাম যাহাবী কৃত সিয়্যার আল-আ’লম ওয়ান্ নুবালাহ, ১২তম খণ্ড, ৪৬৯ পৃষ্ঠা।
দলিল নং 2
ইমাম ইবনুল হাজ্জ্ব (রহ:) বলেন: সালেহীন তথা পুণ্যবানদের মাযার-রওযা হতে বরকত আদায় (আশীর্বাদ লাভ) করার লক্ষ্যে যেয়ারত করতে বলা হয়েছে। কেননা, বুযূর্গদের হায়াতে জিন্দেগীর সময় যে বরকত আদায় করা যেতো, তা তাঁদের বেসালের পরও লাভ করা যায়। উলেমাবৃন্দ ও মোহাক্কিক্কীন (খোদার নৈকট্যপ্রাপ্তজন) এই রীতি অনুসরণ করতেন যে তাঁরা আউলিয়াবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারত করে তাঁদের শাফায়াত (সুপারিশ) কামনা করতেন......কারো কোনো হাজত বা প্রয়োজন থাকলে তার উচিত আউলিয়া কেরামের মাযার-রওযা যেয়ারত করে তাঁদেরকে অসীলা করা। আর এ কাজে (বাধা দিতে) এই যুক্তি দেখানো উচিত নয় যে মহানবী (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম ) তিনটি মসজিদ (মসজিদে হারাম, মসজিদে নববী ও মসজিদে আকসা) ছাড়া অন্য কোথাও সফর করতে নিষেধ করেছিলেন। মহান ইমাম আবূ হামীদ আল-গাযযালী (রহ:) নিজ ‘এহইয়া’ পুস্তকের ’আদাব আস্ সফর’ অধ্যায়ে উল্লেখ করেন যে হজ্জ্ব ও জেহাদের মতো এবাদতগুলোর ক্ষেত্রে সফর করা বাধ্যতামূলক। অতঃপর তিনি বলেন, ‘এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে আম্বিয়া (আ:), সাহাবা-এ-কেরাম (রা:), তাবেঈন (রহ:) ও সকল আউলিয়া ও হক্কানী উলেমাবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর। যাঁর কাছে তাঁর যাহেরী জীবদ্দশায় সাহায্য চাওয়া জায়েয ছিল, তাঁর কাছে তাঁর বেসালের পরও (যেয়ারত করে) সাহায্য চাওয়া জায়েয’।
*_* ইমাম ইবনুল হাজ্জ্ব প্রণীত আল-মাদখাল, ১ম খণ্ড, ২১৬ পৃষ্ঠা।
দলিল নং 3
ইমাম আবূ আবদিল্লাহ ইবনিল হাজ্জ্ব আল-মালেকী (রহ:) আউলিয়া ও সালেহীনবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারত সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ অধ্যায় রচনা করেন। তাতে তিনি লেখেন: মুতা’লিম (শিক্ষার্থী)-দের উচিত আউলিয়া ও সালেহীনবৃন্দের সান্নিধ্যে যাওয়া; কেননা তাঁদের দেখা পাওয়াতে অন্তর জীবন লাভ করে, যেমনিভাবে বৃষ্টি দ্বারা মাটি উর্বর হয়। তাঁদের সন্দর্শন দ্বারা পাষাণ হৃদয়ও নরম বা বিগলিত হয়। কারণ তাঁরা আল্লাহ পাকেরই বরগাহে সর্বদা উপস্থিত থাকেন, যে মহাপ্রভু পরম করুণাময়। তিনি কখনােই তাঁদের এবাদত-বন্দেগী বা নিয়্যতকে প্রত্যাখ্যান করেন না, কিংবা যারা তাঁদের মাহফিলে হাজির হন ও তাঁদেরকে চিনতে পারেন এবং তাঁদেরকে ভালোবোসেন, তাদেরকেও প্রত্যাখ্যান করেন না। এটি এ কারণে যে তাঁরা হলেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর পরে রহমতস্বরূপ, যে রহমত আল্লাহ-ওয়ালাদের জন্যে অবারিত। অতএব, কেউ যদি এই গুণে গুণান্বিত হন, তাহলে সর্বসাধারণের উচিত ত্বরিত তাঁর কাছ থেকে বরকত আদায় করা। কেননা, যারা এই আল্লাহ-ওয়ালাদের দেখা পান, তারা এমন রহমত-বরকত, জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও স্মৃতিশক্তি লাভ করেন যা ব্যাখ্যার অতীত। আপনারা দেখবেন ওই একই মা’আনী দ্বারা যে কেউ অনেক মানুষকে জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও জযবা (ঐশী ভাব)-এর ক্ষেত্রে পূর্ণতা লাভ করতে দেখতে পাবেন। যে ব্যক্তি এই রহমত-বরকতকে শ্রদ্ধা বা সম্মান করেন, তিনি কখনোই তা থেকে দূরে থাকেন না (মানে বঞ্চিত হন না)। তবে শর্ত হলো এই যে, যাঁর সান্নিধ্য তলব করা হবে, তাঁকে অবশ্যই সুন্নাতের পায়রুবী করতে হবে এবং সুন্নাহ’কে হেফাযত তথা সমুন্নত রাখতে হবে; আর তা নিজের কর্মেও প্রতিফলিত করতে হবে।
*_* ইবনুল হাজ্জ্ব রচিত আল-মাদখাল, ২য় খণ্ড, ১৩৯ পৃষ্ঠা।
দলিল নং - 4 [হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাযযালী (রহ:)-এর ভাষ্য]
ইমাম গাযযালী (রহ:) বলেন এবং এটি কোনো হাদীস নয়: “কারো যখন কোনো অসুবিধা (তথা পেরেশানি) হয়, তখন তার উচিত মাযারস্থ আউলিয়াবৃন্দের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা; এঁরা হলেন সে সকল পুণ্যাত্মা যাঁরা দুনিয়া থেকে বেসাল হয়েছেন। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ-ই নেই, যে ব্যক্তি তাঁদের মাযার যেয়ারত করেন, তিনি তাঁদের কাছ থেকে রূহানী মদদ (আধ্যাত্মিক সাহায্য) লাভ করেন এবং বরকত তথা আশীর্বাদও প্রাপ্ত হন; আর বহুবার আল্লাহর দরবারে তাঁদের অসীলা পেশ হবার দরুন মসিবত বা অসুবিধা দূর হয়েছে।”
*_* তাফসীরে রূহুল মা’আনী, ৩০তম খণ্ড, ২৪ পৃষ্ঠা।
দলিল নং 5
ইমাম আবূ হানিফা (রহ:)-এর মাযারে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনাকালে ইমাম শাফেঈ (রহ:) বলেন, “আমি ইমাম আবু হানিফা (রা:) হতে বরকত আদায় করি এবং তাঁর মাযার শরীফ প্রতিদিন যেয়ারত করি। আমি যখন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হই, তখন-ই দুই রাকআত নফল নামায পড়ে তাঁর মাযার শরীফ যেয়ারত করি; আর (দাঁড়িয়ে) সমাধানের জন্যে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করি। ওই স্থান ত্যাগ করার আগেই আমার সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।”
রেফারেন্সঃ
খতীব বাগদাদী সহীহ সনদে এই ঘটনা বর্ণনা করেন তাঁর কৃত ‘তারিখে বাগদাদ’ গ্রন্থে (১:১২৩)।
দলিল নং 6
(ইবনে কাইয়্যেম ‘সালাফী’দের গুরু। সে তার শিক্ষক ইবনে তাইমিয়্যার ধ্যান-ধারণার গোঁড়া সমর্থক, যার দরুন সে তার ইমামের সেরা শিষ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করে)
ইবনে কাইয়্যেম লিখেন:
“প্রথম অধ্যায় - ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ তাঁদের কবর যেয়ারতকারীদেরকে চিনতে পারেন কি-না এবং তাঁদের সালামের উত্তর দিতে পারেন কি-না?
”হযরত ইবনু আবদিল বার (রহ:) থেকে বর্ণিত: নবী করীম (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এরশাদ ফরমান, কোনো মুসলমান যখন তাঁর কোনো পূর্ব-পরিচিত ভাইয়ের কবরের পাশে যান এবং তাঁকে সালাম জানান, তখন আল্লাহতা’লা ওই সালামের জবাব দেয়ার জন্যে মরহুমের রূহকে কবরে ফিরিয়ে দেন এবং তিনি সে সালামের জবাব দেন। এর দ্বারা বোঝা গেল যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তি যেয়ারতকারীকে চিনতে পারেন এবং তাঁর সালামের জবাবও দিয়ে থাকেন।
দলিল নং 7
”হযরত ফযল (রা:) ছিলেন হযরত ইবনে উবায়না (রা:)-এর মামাতো ভাই। তিনি বর্ণনা করেন, যখন আমার পিতার ইন্তেকাল হলো, তখন আমি তাঁর সম্পর্কে খুবই ভীত-সন্ত্রস্ত ও চিন্তিত হয়ে পড়লাম। আমি প্রত্যহ তাঁর কবর যেয়ারত করতাম। ঘটনাক্রমে আমি কিছুদিন তাঁর কবর যেয়ারত করতে যেতে পারিনি। পরে একদিন আমি তাঁর কবরের কাছে এসে বসলাম এবং ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুমের মধ্যে আমি দেখলাম, আমার পিতার কবরটি যেন হঠাৎ ফেটে গেলো। তিনি কবরের মধ্যে কাফনে আবৃত অবস্থায় বসে আছেন। তাঁকে দেখতে মৃতদের মতোই মনে হচ্ছিলো। এ দৃশ্য দেখে আমি কাঁদতে লাগলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, প্রিয় বৎস, তুমি এতোদিন পরে এলে কেন? আমি বল্লাম, বাবা, আমার আসার খবর কি আপনি জানতে পারেন? তিনি বল্লেন, তুমি যখন-ই এখানে আসো, তোমার খবর আমি পেয়ে যাই। তোমার যেয়ারত ও দোয়ার বরকতে আমি শুধু উপকৃত হই না, আমার আশপাশে যাঁরা সমাহিত, তাঁরাও উল্লসিত, আনন্দিত এবং উপকৃত হন। এ স্বপ্ন দেখার পর আমি সব সময় আমার পিতার কবর যেয়ারত করতে থাকি।”
*_* প্রাগুক্ত, ৯-১০ পৃষ্ঠা।
দলিল নং 8
ইবনে কাইয়্যেম আল-জাওযিয়্যা নিজ ‘কিতাবুর রূহ’ পুস্তকে ইবনে আবিদ্ দুনইয়া (রহ:)-এর সূত্রে সাদাকাহ ইবনে সুলাইমান (রা:)-এর কথা উদ্ধৃত করেন, যিনি বর্ণনা করেন: একবার তিনি (সাদাকাহ) একটি কুৎসিত চারিত্রিক দোষে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইতোমধ্যে তাঁর পিতা ইন্তেকাল করেন। পিতার ইন্তেকালের পরে তিনি তাঁর কৃতকর্মের জন্যে লজ্জিত হন। অতঃপর তিনি তাঁর পিতাকে স্বপ্নে দেখেন। তাঁর পিতা বলেন, প্রিয় পুত্র, আমি তোমার নেক আমলের কারণে কবরে শান্তিতে ছিলাম। তোমার নেক আমল আমাদেরকে দেখানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি তুমি যা করেছ, তা আমাকে আমার ইন্তেকালপ্রাপ্ত সঙ্গিদের কাছে অত্যন্ত শরমিন্দা (লজ্জিত) করেছে। আমাকে আর তুমি আমার ইন্তেকালপ্রাপ্ত সঙ্গিদের সামনে লজ্জিত করো না।
*_* কিতাবুর রূহ, বাংলা সংস্করণ, ১১ পৃষ্ঠা, ১৯৯৮।
দলিল নং 9
ইবনে তাইমিয়াকে জিজ্ঞেস করা হয় ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানবৃন্দ তাঁদের যেয়ারতকারীদেরকে চিনতে পারেন কি-না। সে জবাবে বলে: “যেয়ারতকারীদেরকে যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানবৃন্দ চিনতে পারেন, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ-ই নেই।” তার কথার সমর্থনে সে নিম্নের হাদীসটি পেশ করে, “ইন্তেকালপ্রাপ্তদের সচেতনতার পক্ষে প্রামাণিক দলিল হচ্ছে বোখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত একখানা হাদীস, যা’তে রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লহু 'আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেন যে কোনো ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানকে দাফনের পরে ঘরে প্রত্যাবর্তনকারী মানুষের পায়ের জুতোর শব্দ ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তি শুনতে পান।”
*_* ইবনে তাইমিয়ার ‘মজমুয়া’ আল-ফাতাওয়া’, ২৪তম খণ্ড, ৩৬২ পৃষ্ঠা।
দলিল নং 10
ইবনুল জাওযী এ বিষয়ে একখানা বই লেখেন, যেখানে তিনি আউলিয়া কেরাম (রহ:)-এর জীবনীর বিস্তারিত বিবরণ দেন।
তিনি লেখেন:
হযরত মা’রূফ কারখী (বেসাল: ২০০ হিজরী): ”তাঁর মাযার শরীফ বাগদাদে অবস্থিত; আর তা থেকে মানুষেরা বরকত আদায় করেন। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ:)-এর সাথী হাফেয ইবরাহীম আল-হারবী (বেসাল: ২৮৫ হিজরী) বলতেন, হযরত মা’রূফ কারখী (রহ:)-এর মাযার শরীফ হচ্ছে পরীক্ষিত আরোগ্যস্থল” (২:২১৪)।
ইবনে জাওযী আরও বলেন, “আমরা নিজেরাই ইবরাহীম আল-হারবী (রহ:)-এর মাযার যেয়ারত করে তা থেকে বরকত আদায় করে থাকি।” [২:৪১০]
হাফেয যাহাবীও হযরত ইবরাহীম আল-হারবী (রহ:)-এর উপরোক্ত কথা (হযরত মা’রূফ কারখী (রহ:)-এর মাযার শরীফ হচ্ছে পরীক্ষিত আরোগ্যস্থল) বর্ণনা করেন।
*_* ‘সিয়্যার আ’লম আল-নুবালা’, ৯:৩৪৩।
ইবনে আল-জাওযী নিজ ‘মুতির আল-গারাম আস্ সাকিন ইলা আশরাফ আল-আমাকিন’ গ্রন্থে লেখেনঃ
দলিল নং - 11 [হযরত আবূ আউয়ুব আনসারী (রা:)-এর মাযার শরীফ]
হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (রহ:) মহান সাহাবীদের একজন। তিনি কনস্টিনটিনোপোল-এর যুদ্ধে অংশ নেন। শত্রু সীমানায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অসুখ বেড়ে গেলে তিনি অসিয়ত (উইল) করেন, “আমার বেসালের পরে তোমরা আমার মরদেহ সাথে নিয়ে যাবে, আর শত্রুর মোকাবেলা করতে যখন তোমরা সারিবদ্ধ হবে, তখন তোমাদের কদমের কাছে আমাকে দাফন করবে।”
* ইবনে আব্দিল বার, ‘আল-এসতেয়াব ফী মা’রিফাত-ইল-আসহাব’ (১:৪০৪-৫)
অতঃপর ইসলামের সৈনিকবৃন্দ তাঁর অসিয়ত অনুসারে তাঁকে দুর্গের দ্বারপ্রান্তে দাফন করেন এবং শত্রুদের সতর্ক করেন যেন তারা তাঁর মাযারের প্রতি অসম্মান না করে; তা করলে ইসলামী রাজ্যের কোথাও তাদের উপাসনালয়গওলো নিরাপদ থাকবে না। ফলে এমন কি শত্রুরাও তাঁর মাযারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বাধ্য হয়েছিল। আর মানুষেরাও সত্বর তাঁর মাযার থেকে প্রবাহিত খোদায়ী আশীর্বাদ-ধারা সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন। তাঁরা মাযারে এসে যা-ই প্রার্থনা করতেন, তা-ই তৎক্ষণাৎ মঞ্জুর হয়ে যেতো।
”আর হযরত আবূ আইয়ুব (রা:)-এর মাযার কেল্লার কাছে অবস্থিত এবং তা সবাই জানেন....যখন মানুষেরা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা জানায়, বৃষ্টিপাত আরম্ভ হয়।”
* ইবনে আব্দিল বারর, প্রাগুক্ত ‘আল-এস্তেয়াব ফী মা’রিফাত-ইল-আসহাব’ (১:৪০৫)
মুজাহিদ বলেন, “দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে মানুষেরা মাযারের ছাদ খুলে দেন, আর বৃষ্টি নামে।”
দলিল নং 12
[হাফেয ইবনে হিব্বান (রহ:)]
ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ:) নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনাকালে আল-রেযা (রহ:)-এর মাযারে তাঁর তাওয়াসসুলের বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন এবং বলেন, “তুস্ নগরীতে অবস্থান করার সময় যখনই আমি কোনো সমস্যা দ্বারা পেরেশানগ্রস্ত হয়েছি, তৎক্ষণাৎ আমি হযরত আলী ইবনে মূসা রেযা (তাঁর নানা তথা হুযূর পাক ও তাঁর প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক)-এর মাযার শরীফ যেয়ারত করতাম এবং আল্লাহর কাছে সমাধান চাইতাম। এতে আমার দোয়া কবুল হতো এবং পেরেশানিও দূর হতো। আমি এটি-ই করতাম এবং বহুবার এর সুফল পেয়েছি।”
*_* ইবনে হিব্বান প্রণীত ‘কিতাবুস্ সিকাত’, ৮ম খণ্ড, ৪৫৬-৭ পৃষ্ঠা, # ১৪৪১১।
দলিল নং 13
ইবনে তাইমিয়া তার মাজমুয়াতুল ফাতাওয়া-এ মু'মিন এর চূড়ান্ত স্থর সম্পর্কে লিখেছেন,
” একটি আছার বর্ণিত আছে, হে আমার বান্দা, আমি যখন কিছুকে হও বলি, তা হয়ে যায়। তুমি আমার আনুগত্য কর। আমি তোমাকে এমন বানাব যে, তুমি কিছুকে হও বললে তা হয়ে য়াবে। হে আমার বান্দা। আমি চিরঞ্জীব যে কখনও মৃত্যুবরণ করবে না। তুমি আমার আনুগত্য কর, আমিও তোমাকে এমন জীবন দান করব যে, তুমি মৃত্যুবরণ করবে না।”
অপর একটি বর্ণনায় রয়েছে,
“মু’মিনের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে হাদিয়া এসে থাকে। এমন সত্ত্বার কাছ থেকে হাদিয়া আসে যিনি চিরঞ্জীব, কখনও মৃত্যুবরণ করবে না। এমন বান্দার কাছে হাদিয়া আসে যে কখনও মৃত্যুবরণ করবে না। “
একজন মু’মিনের এটিই চূড়ান্ত স্তর। এরপরে কোন উদ্দিষ্ট স্তর নেই। এটা কেন হবে না? সে আল্লাহর মাধ্যমে শ্রবণ করে, আল্লাহর মাধ্যমে দেখে, আল্লাহর মাধ্যমে ধরে, আল্লাহর মাধ্যমে হাঁটে, সুতরাং আল্লাহর শক্তিতে কী সে বলিয়ান হবে না?”
*_* মাজমুয়াতুল ফাতাওয়া, খ.৪, পৃ.২৩০-২৩১।
ব্যক্তির মাধ্যমে ওসীলা গ্রহণ দেওবন্দী মৌলাভী আশরাফ আলী থানবী'র দৃষ্টিতেঃ
"তাওয়াসসুল তথা ওসীলা গ্রহণ এর হাকীকত হল যে, হে আল্লাহ! ওমুক আমার কাছে আপনার প্রিয়ভাজন। আর আপনার প্রিয়ভাজনদের সাথে মোহাব্বত যারা রাখেন তাদেরকে আপনি মোহাব্বত করেন মর্মে আপনার ওয়াদা রয়েছে।
হাদীসে এসেছে যে, المرء مع من احب তথা ব্যক্তি তার
সাথেই থাকবে যাকে সে মোহাব্বত করে।
*_* সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৮১৮।
আর আমি আপনার কাছে উক্ত রহমতটিই চাই।
এভাবে ব্যক্তি তার মোহাব্বতকে ওলীদের সাথে প্রকাশ করে, উক্ত মোহাব্বত এর উপর রহমত ও সওয়াবের প্রত্যাশী হয়। আর ওলী বুজুর্গদের মোহাব্বত করাটা রহমাত ও সওয়াবের কারণ হওয়ার বিষয়টি কুরআন হাদীস দ্বারা প্রমানিত"।
*_* আনফাসে ঈসা বহাওয়ালায়ে তাহকীকে মাসআলায়ে তাওয়াসসুল-৭।
তিনি আরো বলেনঃ
والثالث دعاء الله ببركاته هذا المخلوق المقبول وهذا قد جوزه الجمهور الخ
তথা আর তাওয়াসসুলের তৃতীয় পদ্ধতি হল, কোন মকবুল বান্দার বরকতের সাথে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। আর জমহুর ওলামাগণ এটাকে জায়েজ বলেছেন।
[সূত্রঃ বাওয়াদেরুন নাওয়াদের-৭৬১।]