কপালে তিলক ব্যবহারের কুফল


কপালে তিলক পরাটা কোনো কোনো নারী ফ্যাশন মনে করে থাকে। বিশেষত যুবতি, তরুণীদের মাঝে এর প্রকোপ অধিক হারে লক্ষ্য করা যায়। এ কথা সন্দেহাতীতভাবেই বলা চলে যে, কপালে সিঁদুর বা তিলক পরা বিধর্মী বিবাহিত সারীর সংস্কৃতি বা প্রতীক। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, অনেক মুসলমান নারীর মধ্যেও কপালে তিলক পরার ব্যাধি আছে। তারা ভেবে থাকে যে, কপালে তিলক না দিলে জাতে ওঠা যায় না। এটা যেন গর্বের প্রতীক তাদের।


আজকাল নানা রঙের তিলক বাজারে পাওয়া যায়। মেয়েদের গায়ের শাড়ি কিংবা অন্যান্য পোশাকের সাথে মিলিয়ে তিলক ব্যবহার করে। অথচ তা বেদ্বীনদের ধর্মীয় রীতির অনুসরণ। সে কারণে তা সম্পূর্ণ হারাম।


নবী করীম   ইরশাদ করেছেন- من تشبه بقوم فهو منهم‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে।’ ২৯০

২৯০.সুনানু আবি দাউদ, হাদীস নং ৪০৩১


কথিত রূপপূজারী ফ্যাশনবাদী নারীদের মনে সংশয় জাগে, এই চাঁদনিমুখে কারো কুদৃষ্টি পড়বে না তো! তাই তারা ‘বদ-নজর’ থেকে রক্ষার জন্যে চেহারায় একখানা ‘তিলকচিহ্ন’ বসিয়ে দেয়। এই তিলক চিহ্নের নামই ‘বিউটি স্পট’। এই তিলক চিহ্ন নাকি সৌন্দর্যও বাড়াল আবার কুদৃষ্টিকেও প্রতিহত করল। 


পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা কি ঘুর্ণাক্ষরেও ভেবে দেখেছি যে, এই কি মুসলিম নারীর জীবন? তুচ্ছ এই দু’দিনের পান্থশালা! যেসব মুসলিম নারী দিবানিশি সৌন্দর্য চর্চায় নিমজ্জিত তারা যেন মনেই করতে পারে না যে, নামাজ-রোযাও তার কাজ। তারা ভেবেই দেখে না যে, তাকে এই জীবন ও অর্পিত কর্তব্য সম্পর্কে একদা জবাবদিহি করতে হবে হরফে হরফে।


তাছাড়া যারা সৌন্দর্যের তিলক এঁকে পথে-প্রান্তরে, পার্কে, মার্কেটে ঘুরে বেড়ায় আর তাদের প্রতি হাজার বছরের রূপতৃষ্ণা নিয়ে তাকিয়ে থাকে রূপপাগল যে পুরুষের দল; তাদের উভয় শ্রেণি সম্পর্কে রাসূলে কারীম (ﷺ) অভিশাপ করেছেন এভাবে-

لعن الله الناظر والمظور اليه

‘ঘুরে ঘুরে রূপদর্শনকারী পুরুষ আর রূপ প্রদর্শনকারী নারীদের প্রতি আল্লাহ তায়ালার লানত হোক।’ ২৯১

২৯১.গাযযুল বাছার, পৃষ্ঠা ১৫ পৃ.

 

আমেরিকার এক বিখ্যাত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ তার দীর্ঘজীবনের গবেষণায় বলেন, যে কোনো কেমিক্যাল জাতীয় রং শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষত স্পর্শকাতর কোনো স্থানে যদি এ জাতীয় রঙের ব্যবহার হয় তবে এর শরীরে চর্ম জাতীয় রোগ বাসা বাঁধে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সারের মতো বড় ধরনের রোগও হয়ে থাকে। মেয়েরা কপালে সাধারণত যে তিলক ব্যবহার করে থাকে তা অনেক কেমিক্যালযুক্ত বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ। আর কপাল হলো মুখের একটা অংশ এবং মুখ হলো শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর স্থান। এটি নারীর সৌন্দর্যের মূল কেন্দ্রবিন্দু। সুতরাং কেউ যদি কপালে সর্বদা তিলক ব্যবহার করে আর এটি যদি তার ত্বকের সাথে এডজাস্ট না হয় তবে এলার্জিসহ যে কোনো চর্ম রোগ দেখা দিতে পারে। এমনকি ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগও তার মুখে, কপালে বাসা বাঁধতে পারে।


বিশেষত ৮ থেকে ২৫ বছর বয়সের মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি বেশি আশঙ্কা হয়ে থাকে। আমাদের উচিত যথাসম্ভব এ জাতীয় কেমিক্যাল শরীরে ব্যবহার থেকে বেঁচে থাকার যথাসাধ্য চেষ্টা করা।

Top