❏ প্রশ্ন-১৬১: وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ ...... فَأَصْبَحَ مِنَ الْخَاسِرِينَ   (সূরা মায়েদা, পারা নং-৬) আয়াতটির তাফসীর কী?


✍ উত্তর: হে হাবিব! ওই সব লোকদেরকে হযরত আদমের দু’পুত্র হাবিল ও কাবিল এর বাস্তব ঘটনা ও কাহিনী পড়ে শোনান। যখন তারা আল্লাহর সমীপে উৎসর্গ নিবেদন করে তখন তাদের মধ্যে একজনের অর্থাৎ হাবিলের উৎসর্গ কবুল হয় এবং অন্যজনের অর্থাৎ কাবিলের উৎসর্গ কবুল হয়নি, তখন কাবিল হিংসার ক্রোধে বলতে লাগলো যে, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করবো। উত্তরে সে বললো, আল্লাহ কেবল পরহেযগারদের উৎসর্গ কবুল করেন। যদি তুমি আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার দিকে হাত প্রসারিত করো, তবে আমি কিন্তু তোমার দিকে হাত প্রসারিত করবো না, কেননা আমি আল্লাহকে ভয় করি। আমি তো চাই তুমি আমার ও তোমার নিজের উভয়ের পাপের বোঝা বহন করো এবং জাহান্নামীদের সাথে গিয়ে মিলো। আর এটাই হচ্ছে যালিমদের শাস্তি।

একথা বলা সত্ত্বেও তার মন নিজ ভাইকে হত্যার প্রতি প্ররোচিত করলো। অবশেষে তাকে হত্যা করে নিজের আস্তানায় চলে আসলো। এরপর আল্লাহ তা‘আলা একটি কাক পাঠালেন। কাকটি মাটি খুঁড়তে লাগলো যাতে নিজের ভাইয়ের লাশ কিভাবে দাফন করতে হয় তা ওই ঘাতককে দেখিয়ে দেওয়া হয়। কাকটি কর্তৃক মাটি খোঁড়ার বিষয়টি দেখে সে আফসোসের স্বরে বলে ওঠলো, হায় বদ-নসীব! আমি এই কাকটির চেয়ে অধম, যদি আমি এই কাকটির মতোও বুদ্ধিমান হতাম! তাহলে নিজের ভাইয়ের লাশটি দাফন করতে পারতাম।

হাবিল শব্দটি হিব্রু ভাষার শব্দ এবং হযরত আদম (عليه السلام)’র পুত্রের নাম। হাবিল ও কাবিল দু’জন ছিলো ভাই। কাবিল করতো ক্ষেত-খামার এবং হাবিল ছাগল পালন করতো। তারা উভয়ে আল্লাহর সমীপে উৎসর্গ নিবেদন করে। কাবিল তার উৎসর্গের মধ্যে দিলো নিম্নমানের নিকৃষ্ট মাল এবং হাবিল দিলো তার বকরী পালের মধ্য হতে সর্বোত্তমটি। কাবিলের উৎসর্গ নামঞ্জুর হলো। ফলে কাবিলের মধ্যে প্রচন্ড ঘৃণাবোধ সৃষ্টি হলো। এই হিংসার আগুন তার মনে জ্বলতে রইলো। এক পর্যায়ে হযরত আদম (عليه السلام) হজ্বে গেলে সুযোগ পেয়ে সে নিজের ভাইকে হত্যা করলো এবং নিহত ভাইয়ের লাশ কাঁধে নিয়ে ঘুরতে লাগলো। কেননা পৃথিবীর বুকে এটা ছিলো সর্বপ্রথম মৃত্যুর ঘটনা। অবশেষে সে কাকের নিকট হতে দাফনের বিষয়টি জেনে নিলো। সে নিজের কাজ, অবস্থা ও পরিস্থিতির ব্যাপারে খুবই লজ্জিত হলো। কোরআন মজিদে এই কাহিনীটি এসব শব্দে বর্ণনা করা হয়েছে।


❏ প্রশ্ন-১৬২: شهنشاه ‘শাহিনশাহ’ শব্দটির অর্থ কী, তার ব্যবহার জায়েয নাকি না-জায়েয?


✍ উত্তর: شهنشاه শাহিনশাহ শব্দটির অর্থ হচ্ছে রাজাধিরাজ। এটি শাহান শাহ শব্দদ্বয়ের সংক্ষিপ্ত রূপ। এ নামটি ধরে কাউকে ডাকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। সুতরাং রাসূলুল্লাহ   বলেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট যাবতীয় নাম সমূহের মধ্যে সর্বাধিক অপছন্দনীয় ও নিকৃষ্ট নাম হচ্ছে ‘মালাকুল আমলাক’ অর্থাৎ শাহিনশাহ নামটি। তার কারণ হচ্ছে এই নামটির সঠিক প্রয়োগস্থল কেবল আল্লাহ ছাড়া আর কেউ হতে পারে না। তিনিই রাজাধিরাজ, শাসকদের শাসক এবং আসমান-জমিনের অধিপতি।

وهو احكم الحاكمين له الملك فى السمٰوٰت والارض . 


Next
This is the most recent post.
Previous
Older Post
 
Top