Latest News

তহুর বা পবিত্রাবস্থার সময়সীমা


দুই হায়িযের মধ্যবর্তী তহুর অর্থাৎ পবিত্রাবস্থার সর্বনিম্ন সময়সীমা পনের দিন। এবং তহুরের সর্বোচ্চ সময়সীমা নির্ধারিত নেই। এমনকি যদি কোন মহিলা বহু বছর রক্তস্রাব বিহীনভাবে অতিবাহিত করে তবে তাকে পরিত্রাবস্থার যেরূপ সময় কাটাতে হয় সেভাবেই কাটাতে হবে। এ ব্যাপারে ইমামগণের মত পার্থক্য নেই।


তবে যদি কোন মহিলার বালিগা হওয়ার সময় থেকে অনবরত রক্তস্রাব শুরু হয় তাহলে তাকে প্রতি মাসে দশদিন হায়িয ও বিশ দিন তাহুর গণ্য করতে হবে। আর যদি হায়িয ও তাহুরের পূর্ব নির্ধারিত কোন অভ্যাস থাকে তা হলে তাকে সেই অভ্যাস অনুযায়ী অনবরত রক্তস্রাবের সময় হায়িয ও তাহুর গণ্য করতে হবে। আর যদি কোন মহিলার অনবরত রক্তস্রাব শুরু হয় কিন্তু তার হায়িয ও তাহুরের বিষয়ে পূর্ব নির্ধারিত অভ্যাস ভুলে যায় এক্ষেত্রে সেই মহিলা তার অভ্যাসের ব্যাপারে গভীর চিন্তা ভাবনা করে তার দিনগুলি নির্ণয় করার চেষ্টা করবে। যদি এও সম্ভব না হয় তাহলে এমতাবস্থায় সেই মহিলার হায়িয ও তহুরের নির্ণয় জটিল বিধায় বিজ্ঞ আলিম থেকে জেনে নিবে। ৩১৩

৩১৩.আলমগীরী, ১ম খণ্ড


তাহুরে মুতাখাল্লাল বা অন্তবর্তীকালীন সাময়িক পবিত্রতা একটি পূর্ণাঙ্গ তহুরের সর্বনিন্ম সময়সীমা পনের দিন। অতএব যদি তাহুর অর্থাৎ স্রাববিহীন সময়ের পরিমাণ তিন দিন থেকে কম হয় তাহলে হানাফী ইমামদের সর্বসম্মত মত অনুসারে এই খণ্ডকালীন তাহুরকে হায়িযের অন্তর্ভুক্ত বলেই গণ্য করা হবে। কিন্তু অন্তবর্তীকালীন তাহুরের পরিমাণ যদি তিন দিন বা তার চেয়ে অধিক হয় এমন কি দশ দিনের অধিক হলেও তা পনের দিনের কম হলে ইমাম আবূ ইউসুফ (رحمة الله) -এর মতে এ তাহুরকে হায়িযের অন্তর্ভুক্ত বলেই গণ্য করা হবে। এটি মূলত ইমাম আবূ হানীফা (رحمة الله) -এর সর্বশেষ মত। এর উপরই ফাত্ওয়া।


কোন মহিলার হায়িযের পূর্ব অভ্যাস ছিল দশ দিন। তার হায়িয সাধারণত যে দিন শুরু হয় তার পূর্বদিন স্রাব দেখতে পেল, তারপর এগার দিন স্রাববিহীন অতিবাহিত করার পর পূনরায় সে স্রাব দেখতে পেল। এই অবস্থায় অন্তবর্তীকালীন স্রাববিহীন দিনগুলিকে স্রাবের অন্তর্ভুক্ত বলেই ধরা হবে। ফলে তার পূর্ব নির্ধারিত দশ দিন হায়িয বলে গণ্য হবে। অথচএই অবস্থায় সে তার হায়িযের প্রথম দিন স্রাব পাওয়া যায় অতপর দশদিন স্রাববিহীন অতিবাহিত হওয়ার পর আবার স্রাব দেখা দেয় তাহলে এ অবস্থায় হায়িযের সূচনা স্রাবের সাথে হলেও শেষ হবে স্রাববিহীন অবস্থা কিংবা যদি হায়িয শুরু হওয়ার নির্ধারিত দিনের পূর্বদিন স্রাব দেখতে পায় অতপর সেই দিন স্রাববিহীন অতিবাহিত করে তারপর আবার স্রাব দেখতে পায় তাহলে তার হায়িযের সূচনা পবিত্রাবস্থায় হবে। কিন্তু শেষ হবে স্রাব চলাকালীন সময়ে। ফাত্ওয়ায়ে হিন্দিয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যদি দুই প্রান্তের স্রাব ও মধ্যবর্তী তাহুরের সময় মিলে দশ দিনের বেশী না হয় তাহলে মহিলা প্রথম হায়িযওয়ালী হউক বা পূর্ব অভ্যাসে অভ্যস্ত হোক উভয়ের ক্ষেত্রেই দুই দিনের স্রাব ও মধ্যবর্তী পবিত্রতার সময় স্রাবের অন্তর্ভুক্ত হায়িয বলে গণ্য হবে। আর যদি দুই দিনের স্রাব ও মধ্যবর্তী তাহুর মিলে দশ দিন অতিক্রম করে তাহলে যাদের এইমাত্র হায়িযের সূচনা হয়েছে এমন মহিলাদের দশদিন হায়িয বলে গণ্য হবে। আর যাদের পূর্ব থেকে হায়িযের সময়ের পরিমাণ নির্ধারিত আছে তাদের বেলায় পূর্ব নির্ধারিত সময়ের সমপরিমাণ হায়িয বলে গণ্য হবে আর অবশিষ্ট স্রাববিহীন দিনগুলো তাহুর হিসাবে গণ্য হবে (আলমগীরী)।


যদি মধ্যবর্তী তাহুরের পরিমাণ পনের দিন কিংবা তার চেয়ে বেশী হয় তাহলে কোনক্রমেই তা স্রাবের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা যাবে না। বরং তখন তাকে একটি পূর্ণাঙ্গ তাহুর বলে গণ্য করা হবে। এমতাবস্থায় হায়িয বলে গণ্য করা সম্ভব হয় (অর্থাৎ যদি উভয় দিনের স্রাব পৃথক পৃথকভাবে তিন দিন বা তার চেয়ে দীর্ঘ হয়) তাহলে দুই দিনের স্রাবের দিনগুলোকে দু’টি পৃথক হায়িয বলে গণ্য করা হবে। আর যদি এক প্রান্তের স্রাবকে হায়িয বলে গণ্য করা সম্ভব হয় তাহলে তাই করা হবে (আলমগীরী)।

Top