ইস্তিহাযা


হায়িয-নিফাসের রক্ত ছাড়া মেয়েদের গুপ্তাঙ্গ হতে রক্ত নির্গত হলে তার নাম ইস্তিহাযা।  কোনো মহিলার যদি দীর্ঘদিন ধরে রক্ত নির্গত হয়, তখন মহিলার প্রতি মাসে স্বাভাবিক মাসিকের সময়টাকে ঋতুকালীন সময় বলে গণ্য করা হবে। কোনো মেয়ের যদি প্রথমবার মাসিক শুরু হয়ে থাকে এবং তার মাসিকের স্বাভাবিক কোন মিয়াদকাল নির্দিষ্ট না হয়ে থাকে, তবে মাসিকের সর্বোচ্চ মুদ্দত তথা দশদিন পর্যন্ত নিজেকে ঋতুবতী গণ্য করবে। বাকী দিনগুলোতে মহিলা নিজেকে ‘মুস্তাহাযা’ বা কুরক্তের রোগী মনে করবে।


ইস্তিহাযা রোগীর পবিত্র হওয়ার পদ্ধতি


মুস্তাহাযা রোগী একবার গোসল করে পবিত্রতা অর্জন করা জরুরি। হায়িযের মুদ্দত শেষ যখন বুঝবে কিংবা অনুভব করবে, তখন সে পবিত্রতা অর্জন করবে। কোনো কোনো ফকীহ’র মতে এরূপ মহিলা প্রত্যেক নামাযে নতুন উযূ করা আবশ্যক। অপর দলের মতে মুস্তাহাব। অর্থাৎ মহিলা ইচ্ছা করলে প্রত্যেক নামাযের জন্য উযূ করতে পারে ইচ্ছা করলে এক উযূতে সব নামায পড়তে পারে। বুখারী, মুসলিম শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত আয়িশা  (رضي الله عنه)  বলেন, ফাতিমা বিনতে আবি হুবাইশ  (رضي الله عنه)  নবী করিম  ’র নিকট এসে আবেদন করলেন, “আমি ইস্তিহাযা বা কুরক্তের রোগী। সবসময় রক্ত বের হয়, কখনো পবিত্র হইনা। এমতাবস্তায় আমি কি নামায ত্যাগ করব?” উত্তরে তিনি বললেন, না। নামায ত্যাগ করবে না, কারণ তা অন্য কোনো শিরা বা উপশিরা থেকে আগত রক্ত, হায়িয নয়। সুতরাং যে ক’দিন হায়িযের রক্ত নির্গত হবে, কেবল সে ক’দিনই নামায ত্যাগ করবে। আর যখন হায়িয বন্ধ হয়ে যাবে, তখন শরীর থেকে রক্ত ধুয়ে ফেলে নামায পড়বে।” আবু দাউদের বর্ণনায় একথাটি বেশী আছে যে, “এবং প্রত্যেক নামাযের জন্য উযূ করবে।”



ইস্তিহাযা রোগীর করণীয়


ইস্তিহাযা রোগীর করণীয় হলো- উযূ করার পূর্বে স্বীয় গুপ্তাঙ্গ ভালোভাবে ধুয়ে শক্তভাবে নেকড়া বেঁধে নিবে। তারপর উযূ করে বিলম্ব না করে নামায আদায় করে নিবে।



ইস্তিহাযা রোগীর আহকাম


ইস্তিহাযা রোগী নামায, রোযা, কুরআন তিলাওয়াত,  কুরআন স্পর্শ, মসজিদে প্রবেশ, ই’তিকাফ, বায়তুল্লাহ’র তাওয়াফ এবং সহবাস করা বৈধ। এ রোগীর বিধান হলো ফোঁটা ফোঁটা পেশাব নির্গত হওয়া এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়ার রোগীর বিধানের ন্যায়। যেসব ফকীহগণ এসময় নামায পড়াকে ঐচ্ছিক বিষয় মনে করেছেন, তাদের মতে এ অবস্থায় সহবাস করা বৈধ নয়। পক্ষান্তরে যারা মনে করে ইস্তিহাযা অবস্থায় মহিলারা আইনগতভাবে পবিত্র থাকে এবং নামায পড়াও আবশ্যক, তাদের মতে এ সময় সহবাস করা বৈধ।

Top