❏ প্রশ্ন-২১০: কখন থেকে চন্দ্র হিসেবে বছরে বার মাস গণনা করা শুরু হয় এবং সূর্য হিসেবে মাস ও হিন্দী মাসের মধ্যে গণনা কিভাবে সাদৃশ্য ও মিলানো হয়? বর্ণনা কর।


✍ উত্তর: هو المستعان চন্দ্র বর্ষ এটি তিনশত চুয়ান্ন দিন এবং আরও দিনের এক তৃতীয়াংশে চন্দ্র বছর হয়। সে হিসেব অনুযায়ী সূর্য বৎসর চন্দ্র বৎসরের চেয়ে এগার দিন এবং দিনের একুশাংশের একভাগের সমপরিমাণ বেশি। উক্ত বর্ষ গণনা আরম্ভ হয় হুযূর সৈয়্যদুল মুরসালীন (ﷺ) -এর হিজরতের তারিখ থেকে।

سَنَةٌ (সানাতুন) এটি আরবি শব্দ, অর্থ-বছর, বহুবচনে سنوات ,سنون আসে এবং আরবিতে বছরকে حَوْلٌ এবং عَامٌ বলা হয়। অন্ধকার যুগেও বছরের হিসেব চন্দ্র হিসেবে বার মাস গণনা করা হতো। যেমনিভাবে ইসলামেও নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্ভবতঃ ইসলামের দু’শো বছর পূর্বে কোন শহরে এ নিয়ম প্রচলিত ছিল এবং প্রত্যেক তৃতীয় বছরে এক মাস বর্ধিত করা হতো, যেমন- হিন্দী লোকদের মাস হয়ে থাকে। যাতে সূর্যের হিসেবের সাথে চন্দ্রের হিসেব মিলে যায়। সে কারণে তাদের হজ্ব প্রত্যেক বছর একই সময়ে হয়ে থাকে এবং তাদের রীতি-নীতি ও আধুনিকতায় কোন পার্থক্য সৃষ্টি হয় না।

উক্ত হিসেবের নিয়ম পদ্ধতি হচ্ছে, কতেক দিন মাসের খুচরা হিসাবের ওপর বাড়িয়ে দেয়া। যার ফলে তিন বছরে পূর্ণ একমাস বেরিয়ে আসে। এ হিসাব বর্তমানেও মিশরীয় আরবদের মধ্যে প্রচলিত আছে। কিন্তু ইসলাম এটাকে অনর্থক বলেছে, শুধুমাত্র চাঁদ দেখানুপাতে চন্দ্র হিসেব চালু রেখেছেন। ইসলামের সকল দল সাধারণত শরয়ী বিধানসমূহের হিসাব-নিকাশ চাঁদ দেখানুপাতে সম্পাদন করে থাকেন। যেমন কোরআন মজিদে আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন,


إِنَّ عِدَّةَ الشُّهُورِ عِنْدَ اللهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِي كِتَابِ اللهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَلِكَ الدِّينُ الْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا فِيهِنَّ أَنْفُسَكُمْ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِينَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُونَكُمْ كَافَّةً .


‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা যেদিন আসমান-যমিন সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকে আল্লাহর কিতাব অর্থাৎ লওহে মাহফুযে ও গণনায় মাস বারটি লিখে আসছে। তন্মধ্যে সম্মানিত মাস চারটি। এটিই দ্বীন-ধর্মের সঠিক পথ। হে মুসলমানেরা! এর মধ্যে তোমরা নিজেদের সত্তার প্রতি যুলুম-অত্যাচার করো না। আর তোমরা মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করো সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেত ভাবে।’ 

274. সূরা তাওবা, আয়াত: ৩৬


ইসলামী বর্ষ মুহররম মাস থেকে শুরু হয় এবং পূর্ণ সংখ্যা বার মাস হয়। এটাই পবিত্র কোরআন ও হাদীস শরীফ দ্বারাও প্রমাণিত।

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরবানীর দিন খুৎবা প্রদানকালে ইরশাদ করেন যে, যামানা বা বছর তার মূল ভিত্তির ওপর এসে পৌঁছেছে। যেমনি আল্লাহ তা‘আলা আসমান-যমিন সৃষ্টি করার দিন ছিল। অর্থাৎ বছর, বার মাসের গণনা হয়েছিল। তন্মধ্যে চার মাস হচ্ছে সম্মানিত।

এর মধ্যে তিন মাস হচ্ছে লাগাতার ও মিলানো যিলকদ, যিলহজ্জ ও মুহরর্ম এবং রজব মাস হচ্ছে জমাদিউস সানি ও শাবান মাসের মাঝখানে। 

275. ইসলামী মালুমাত কা মাখ্যান, খন্ড-১, পৃষ্ঠা-৪১৫।

 
Top