❏ প্রশ্ন : আপনার উল্লিখিত আলোচনা থেকে জানা গেলো, মিথ্যা সত্তাগতভাবে অসম্ভব। তাহলে এরপরও পথিবীতে মিথ্যার অস্থিত্ব কেন?


✍ জবাব : যেই মিথ্যা সত্তাগতভাবে অসম্ভব তার তো অস্থিত্বই নেই। নতুবা সত্তাগতভাবে অসম্ভব হলো কিভাবে? আর সেটা চিরস্থায়ী সত্তার মিথ্যা। আর যে মিথ্যার অস্থিত্ব আছে, সেটা অন্যের দ্বারা অস্থিত্ববানের জন্য সম্ভব। সঅস্থিত্বে অস্থিত্ববান এবং খালেকের জন্য নয়। এরপর এর দ্বারা এটা প্রমাণ হলো যে, নবীগণের সা. ক্ষেত্রে মিথ্যা সম্ভব। কারণ তারাও মোমকেনাতের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। অথচ তাদের থেকে মিথ্যা অসম্ভব।


এর জবাব হলো, ভাইসব, এসব কিছু ভিন্ন কারণে অসম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ সত্তাগতভাবে সম্ভব হয়ে বাস্তবায়ন অসম্ভব। এই মিথ্যার বাস্তবায়ন অসম্ভবের পিছনে আল্লাহর কালাম কারণ। যার মধ্যে মিথ্যা সত্তাগত অসম্ভব। নতুবা যদি মুমকিন বা সম্ভব হয়, তাহলে আরেক মুমকিনকে মুমতানা‘ বা অনম্ভব কিভাবে বানাবে। এ কারণে নবীগণকে সিদ্দীক গুণে ভূষিত করছেন। যা আসদাক বা অধিক সত্যবাদীর চেয়ে কম স্তরের। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন,  وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَبِيًّا ‘তুমি কিতাবের মধ্যে ইবরাহীমের কথা স্মরণ করো। নিশ্চয় সে সত্য নবী ছিলো।’ وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِسْمَاعِيلَ إِنَّهُ كَانَ صَادِقَ الْوَعْدِ وَكَانَ رَسُولًا نَبِيًّا ‘তুমি কিতাবের মধ্যে ইসমাঈলকে স্মরণ করো। নিশ্চয় সে প্রতিশ্রæতিতে সত্য ও রাসূল নবী ছিলো।’


উক্ত আলোচনার দ্বারা জানা গেলো, এই কালামের কারণে যার মধ্যে মিথ্যার অবকাশ সম্ভাবনা হিসেবেও নেই, ঐ মিথ্যার বাস্তবায়ন এবং প্রকাশ মুমতানা‘ বিল গায়র বা ভিন্ন কারণে অসম্ভব হয়ে গেলো।


এখন বোঝা গেলো, মিথ্যা তিন প্রকার।

১। যে মিথ্যা কুদরতের অধীনে নেই। এটা চিরস্থায়ী সত্তার মিথ্যা এবং সত্তাগতভাবে অসম্ভব।

২। যে মিথ্যা কুদরতের আওতাধীন। তবে তার সাথে ইচ্ছা সম্পৃক্ত নয় যে, তার বাস্থবায়ন হবে। এটা নবীগণ ও ফেরেশতাগণের মিথ্যা। যাদের শান হলো মা‘সুম বা নিস্পাপ। তাদের এই নিস্পাপত্ব ঐ কালামের কারণে হয়েছে, যার মধ্যে মিথ্যা সত্তাগত অসম্ভব। তাই এই মিথ্যা অন্যের কারণে অসম্ভব হলো।

৩। ঐ মিথ্যা যা কুদরতের আওতাধীন হওয়ার পাশাপাশি ইচ্ছা সংগঠনেরও আওতাধীন। এটা নবীগণ ও ফেরেশতা ছাড়া অন্যদের মিথ্যা। এই মিথ্যা বাস্তবায়ন সম্ভব। এ কারণে পৃথিবীতে এর অস্থিত্ব আছে।

বুঝো, মুর্খদের অন্তর্ভুক্ত হও না।

 
Top