শিয়াদের ভ্রান্ত আক্বিদা

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">#শিয়াদের_১২_টি_ভ্রান্ত_আক্বীদা<br />______________________<br />📖🖎সায়্যিদী হাফেজ ইমাম আব্দুল জলিল রহঃ<br /><br />শাহআবদুল     আজীজ  দেহলভী       রহমাতুল্লাহি          আলাইহি তোহফায়ে ইসনা  আশারিয়া  গ্রন্থে শিয়া   ফির্কা সমূহের কতিপয়   গোমরাহ    আক্বীদা   উল্লেখ   করেছেন।      যথা:<br /><br />১।শিয়াদের মতে: যুগে   যুগে  নবী  প্রেরণ করা       আল্লাহর উপর       ওয়াজিব বা     বাধ্যতামূলক।   আহলে   সুন্নাতের মতে,      ইহা আল্লাহর  অনুগ্রহ   -   বাধ্যতামূলক         নয়। কেননা এমন যুগও ছিল - যখন কোন  নবী  ছিলেন না। যেমন হযরত  ইছা    ও আমাদের নবীর   মধ্যবর্তী  ৫৭০ বৎসরের      যুগ।   কোন   কাজ  আল্লাহর  উপর  ওয়াজিব হলে তা  করতে   আর    একজন আল্লাহর   প্রয়োজন (নাউযুবিল্লাহ)।    সুতরাং           কোন  কাজ   খোদার  উপর ফরয,  ওয়াজিব, সুন্নাত - ইত্যাদি হতে পারেনা। এসব হুকুম বান্দার বেলায় প্রযোজ্য।<br /><br />২।ইমামপন্থী     শিয়াগণ বলে:       হযরত  আদম  আলাইহিস সালামসহ     সাতজন          উচ্চস্তরের   পয়গাম্বর         ব্যতিত অন্যান্য    নবীগণের  চেয়ে   হযরত  আলী   রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু উত্তম (নাউযুবিল্লাহ)।<br /><br />আহলেসুন্নাত     ওয়াল জামায়াতের মতে, নবীগণ  ফেরেস্তাদের চেয়েও উত্তম।    হযরত  আলী নায়েবে নবী    ও       উম্মত মাত্র।      উম্মত      কোন   দিনই নবীর     চেয়ে    উত্তম  হতে পারেনা।<br /><br />৩।ইমামিয়া শিয়াদের    মতে, নবীগণের পক্ষে কোন কোন সময় মিথ্যা   কথা বলা বা কারও   উপর  মিথ্যা অপবাদ দেওয়া  জায়েয      -   বরং  ওয়াজিব     হয়ে পড়ে। তাদের পরিভাষায় ইহাকে ”তুকইয়া”বলে।<br /><br />আহলেসুন্নাতের মতে,  নবীগণ    জন্ম হতে  মৃত্যু পর্যন্ত  মনগড়া কথা,     মিথ্যা   কথা    ও মিথ্যা অপবাদ  দেয়া -  ইত্যাদি দোষ  -  ত্রুটি  থেকে সম্পূর্ণ           মুক্ত।    ইচ্ছাকৃত     কিংবা অনিচ্ছাকৃত    কোন   পাপই   তাঁদেরকে        স্পর্শ      করতে পারেনা। কেননা নবীগণের সমস্ত কাজই অনুসরন করা উম্মতের  উপর    ফরয।  যদি তাঁরা  মিথ্যা কথা বলতেন বা গুনাহ করতেন - তাহলে এটাও উম্মতের উপর ফরয হয়ে যেতো।<br /><br />৪।ইমামিয়া         শিয়াদের মতে:  নবীগণ নবুয়্যতের   দায়িত্ব লাভের সময় -   এমনকি আল্লাহর  সাথে   কালাম করার সময়ও    ঈমান    এবং         আকায়িদের     মৌল নীতিমালা সম্পর্কে অবগত থাকেন না। সুস্পষ্ট ধারণা দেয়ার পরই তাঁরা  ঈমান ও আকায়িদের মৌলিক   ধারণা  লাভ করে থাকেন (নাউযুবিল্লাহ)।<br /><br />সুন্নীমুসলমানদের ঐক্যমতে - নবীগণ জন্ম সূত্রেই ঈমানের জরুরী     বিষয়   সমূহ  অবগত   হয়ে জন্ম   গ্রহণ  করেন। কেননা আকায়িদ ও ঈমান সম্পর্কে অজ্ঞতার অর্থ হলো - কুফর।   আর  কুফরী  অবস্থায় নবুয়তের দায়িত্ব অর্পন করা  অবৈধ।  শরীয়তের  খুঁটি -       নাটি বিস্তারিত   বিষয় নবুয়ত         লাভের পরেই   ওহীর    মাধ্যমে      অর্জিত হয়ে থাকে। মোদ্দা কথা - ঈমানী বিষয়ে সকল নবগণই জন্ম সুত্রে  অবগত    এবং  বিধি    বিধানের  বিস্তারিত তফসীল তাঁরা ওহীর মাধ্যমে অবগত হন।<br /><br />কুরআনেরআয়াত     ”মা  - কুনতা      তাদরী    মাল  কিতাবু  ওয়ালাল ঈমান” - (অর্থ - হে নবী, আপনি কিতাব   ও শরীয়তের তফসীলী বর্ণনা সম্পর্কে পূর্বে  অবগত ছিলেননা) - এর সারমর্ম ইহাই।  শিয়াদের    অনুরূপ     আক্বীদা         পোষণ করেন  জামাতে    ইসলামীর  কোন      এক  নেতা।    তিনি ”ইসলামে নবীর   মর্যাদা”   প্রবন্ধে  সিরাতুন্নাবী  সংকলন পুস্তকে         লিখেছেন:    ”নবিগণ       নবুয়ত   লাভের     পূর্বে জানতেন        না          যে,         তিনি একজন ভবিষ্যত    নবী” (নাউযুবিল্লাহ)। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: আমি মায়ের গর্ভে থাকতেই লওহে মাহফুজে কলমের   লেখনীর     আওয়াজ শুনতাম। আমি শিশুকালে    চাঁদের        সাথে    কথা বলতাম    -    ইত্যাদি। দেওবন্দী আলিমগণও শিয়াদের অনুরূপ ধারণা পোষণ করে থাকেন।<br /><br />৫।ইমামিয়া শিয়াদের মতে: কোন কোন নবী থেকে গুনাহ প্রকাশ         পেয়েছে।       যেমন,        হযরত   আদম,  হযরত ইব্রাহীম,   হযরত   ইউনুছ ও  হযরত   মুছা   আলাইহিমুস সালাম প্রমূখ গুনাহ   করেছিলেন  (নাউযুবিল্লাহ)। একই আক্বীদা           পোষণ  করেন  মাওলানা  মওদুদী     ও  তার অনুসারী     জামাতে  ইসলামী।  (”তাফহীমুল কোরআন” দেখুন)।<br /><br />আহলেসুন্নাত   ওয়াল জামায়াত - এর আক্বীদা হচ্ছে  - নবীগণ নবুয়তের পূর্বে      ও       পরে ছোট বড় সব ধরনের গুনাহ হতে নিস্পাপ - মাসুম। হযরত আদম, হযরত ইব্রাহীম, হযরত ইউনুছ  ও   হযরত মুছা  আলাইহিমুস    সালামের যেসব  কার্যাবলীকে শিয়া, মুতাজেলা ও মউদুদীবাদীরা গুনাহ  বলে    মনে  করে -    ঐগুলো খেলাফে  আওলা বা অনুত্তম      পর্যায়ভূক্ত -    কিন্তু  বৈধ।    শিয়াদের প্রভাবের কারণে   যারা   বলে   -    ”কোন নবীই   অনিচ্ছাকৃত   ত্রুটি থেকে একেবারে মুক্ত ছিলেন না” (নাউযুবিল্লাহ) - তারা এক্ষেত্রে   শিয়া     ও     মউদুদীর         অনুসারী।        (দেখুন - প্রেমাঞ্জলী)<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-EEW31StC77Q/XUAp6jtcsGI/AAAAAAAAG2A/i9CWvZ29kMsEwyTa2xh6hhmplabio6XIQCLcBGAs/s1600/PicsArt_07-30-02.20.36.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1080" data-original-width="1498" height="230" src="https://1.bp.blogspot.com/-EEW31StC77Q/XUAp6jtcsGI/AAAAAAAAG2A/i9CWvZ29kMsEwyTa2xh6hhmplabio6XIQCLcBGAs/s320/PicsArt_07-30-02.20.36.jpg" width="320" /></a></div><br /><br />৬।শিয়াদের নেতা ইবনে বাবুওয়াই স্বীয় ”উয়ুনু  আখবারে রেযা” গ্রন্থে ইমাম রেযা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু - এর বরাতে লিখেন:         যখন       আল্লাহ তায়ালা      ফেরেস্তাদের   দিয়ে আদমকে  সিজদা   করালেন  এবং      বেহেস্তে স্থান   দিয়ে তাঁকে       সম্মানিত     করলেন   -    তখন         হযরত   আদম আলাইহিস          সালাম মনে মনে  ভাবলেন       -       আমিই আল্লাহর    নিকট সবচেয়ে সম্মানিত        ব্যক্তি।  তাঁর      এ অবস্থা  বুঝে আল্লাহ তায়ালা    আরশের  দিকে তাকাবার জন্য  আদমকে    নির্দেশ        দিলেন।    হযরত               আদম আলাইহিস সালাম   মাথা তুলে আরশের  পায়ায়     লেখা দেখলেন - ”আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই ; মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়া    সাল্লাম  তাঁর রাসুল  ;  হযরত আলী  আল্লাহর      ওলী     ও  মুসলমানদের     নেতা,    বিবি ফাতেমা      বিশ্ব       নারীদের  নেত্রী;        ইমাম হাসান এবং হোসাইন      বেহেস্তী যুবকদের         সর্দার”।    তখন আদম আলাইহিস     সালাম    জিজ্ঞাসা  করলেন    - এরা  কারা? আল্লাহ   বললেন - তোমারই   সন্তান এবং তোমার চেয়ে উত্তম।    আমার  সমগ্র সৃষ্টি    হতে   এরা উত্তম। এরা  না হলে  আমি তোমাকে   -   এমনকি      -   বেহেস্ত  -    দোযখ আসমান  -  যমীন  কিছুই   সৃষ্টি   করতাম না। হে আদম, তুমি        এদেরকে  হিংসার        নজরে    দেখোনা।    তাহলে তোমাকে বেহেস্ত থেকে  বের করে দেবো।  কিন্তু  আদম তাঁদের       দিকে  হিংসার  দৃষ্টিতে   দেখলেন  তাই আল্লাহ তায়ালা  আদমের পিছনে শয়তান লাগিয়ে  দিয়ে  তাঁকে বেহেস্ত  হতে বিতাড়িত করলেন”। (নাউযুবিল্লাহ)। উক্ত গ্রন্থে ইমাম  আবু আবদুল্লাহ জাফর  সাদেক  রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু -  এর বরাত দিয়ে আরও উল্লেখ আছে: ”আল্লাহ তায়ালা  আদম ও  হাওয়াকে  সব  বৃক্ষের   ফল ভক্ষণের অনুমতি     দিয়ে একটি  ফল   বৃক্ষ  নিষিদ্ধ করে  দিলেন। আদম ও হাওয়া বেহেস্তে পাক পাঞ্জাতন ও তৎপরবর্তী ইমামদের  মর্তবা    দেখে    হিংসায় জ্বলে  উঠলেন।  তাই তাঁরা লাঞ্চিত হলেন” (নাউযুবিল্লাহ)।<br /><br />আহলেসুন্নাত  ওয়াল     জামায়াত    এবং   সমগ্র       মুসলমানদের ঐক্যমত    হলো  - হযরত  আদম আলাইহিস সালাম  ও বিবি   হাওয়ার শানে      এসব   দোষারূপ       করা    তাঁদের অবমাননার শামিল   এবং কুরআন  হাদীসের  পরিপন্থী। নবীগণের অবমাননা করা কুফরী। তাছাড়া পিতা- মাতা নিজ       সন্তানের সম্মান ও  মর্যাদা  দর্শনে  হিংসায়   জ্বলে উঠতে পারেন   না।   শিয়াদের   কথা মেনে  নিলে আদম আলাইহিস সালাম ও শয়তানের   মধ্যে পার্থক্য  রইলো কোথায়?শয়তান  আদমের     প্রতি  হিংসা করে   অপদস্ত হলো;   আর     আদম     আলাইহিস  সালাম নিজ সন্তানের প্রতি হিংসা  করে   একই      অপরাধে  অপরাধী     হলেন? (নাউযুবিল্লাহ)। আরশের  পায়ায়    নাম  লেখা   ছিল   শুধু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া   সাল্লামের। শিয়ারা জুড়ে  দিলো -  আলী,  ফাতিমা,  হাসান     ও হোসাইনের নাম।       এটা     হলো হাদীসের     বিকৃতি        বা  তাহরীফ। মনগড়া  ব্যাখ্যায়   মউদুদী   সাহেবও    শিয়াদের       মতই পটু। নবীগণের শানে অমর্যাদাকর উক্তি থেকে একমাত্র সুন্নাতপন্থী মুসলমানগণই সদা সতর্ক থাকেন।<br /><br />৭।ইমামিয়াপন্থী  শিয়াদের     মতে: কোন  কোন নবী খোদা প্রদত্ত     দায়িত্ব  পালনে  ওজর      আপত্তি   ও    অপারগতা প্রকাশ করেছিলেন।   প্রমাণ  স্বরূপ    তারা বলে  - খোদা যখন  মুছা    আলাইহিস    সালামকে   বললেন  - হে  মুছা! তুমি   যালিম  বাদশাহ  ফিরাউনের    নিকট  গমন করো। তখন মুছা আলাইহিস সালাম বলেছিলেন - ”হে খোদা! আমি    মনে করি  -  ফিরাউন  ও    তার  প্রজারা   আমাকে সত্য   বলে   স্বীকার       করবে  না।  তদুপরি   আমার  তর্ক করার ক্ষমতা কম এবং আমার কথা অস্পষ্ট। সর্বোপরি -    আমি এক     কিবতী যুবককে  চপেটাঘাত করে  মেরে ফেলেছি।    তাই   ভয়       পাচ্ছি      - তারা   আমাকে   মেরে ফেলবে। সুতরাং হে খোদা, তুমি আমার ভাই হারুনকে আমার  পরিবর্তে    নবুয়ত   দিয়ে  পাঠাও     তিনি    আমার চাইতে বেশী বাগ্মী”।<br /><br />আহলেসুন্নাত      ওয়াল জামায়াতের   আক্বীদা     হলো:    আল্লাহর নির্দেশ  পালনে      কোন   নবীই       ওজর    আপত্তি  করতে পারেন  না।   কেননা, ওজর আপত্তিকারী    ব্যক্তি   বিশ্বস্ত হতে       পারেন না।  শিয়াগণ    কুরআনে   উল্লেখিত    মুছা নবীর ঘটনা  সমূহ অপব্যাখ্যা  সহকারে বিকৃত   করেছে এবং   এই  অপব্যাখ্যা    থেকে    ভুল সিদ্ধান্তে   পৌঁছেছে। উল্লেখ্য   যে,          মউদুদী  সাহেবও     হযরত              ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের বেলায় রাত্রিতে চাঁদ - তারা দর্শন করার আয়াতকে তাঁর স্বীকৃতিমূলক কালাম বলে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস  সালামকে ক্ষণিকের জন্য  মুশরিক সাব্যস্ত      করেছেন (তাফহীমুল  কুরআন)। যারা       কোন নবীকে এক মুহুর্তের জন্য মুশরিক বলে ধারণা করবে - তারা নির্ঘাত     কাফির। শিরিক,        কুফর,       কবিরাহ     - ইত্যাদির গুনাহ নবীদের শানে  আরোপ করা কুফরী  ও বেদ্বীনী।  হযরত  ইব্রাহীম  আলাইহিস   সালামের     উক্তি ছিল  প্রশ্নবোধক    ও  তিরষ্কারমূলক     -          স্বীকৃতিমূলক ছিলনা।<br /><br />৮।গোরাবিয়া    শিয়ারা     বলে:      হযরত  আলী     রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু   এর   শারিরিক   গঠন     নবী   করিম             সাল্লাল্লাহু আলাইহি   ওয়া  সাল্লাম   এর মত ছিল। আলাহ   তায়ালা জিব্রাইলকে      রিছালাতের ওহী  দিয়ে      হযরত     আলীর নিকট পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু জিব্রাইল আলাইহিস সালাম ভুল  করে  মোহাম্মাদ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি   ওয়া   সাল্লাম এর              নিকট               রিছালাত বানী       পৌছিয়ে              দেন (নাউযুবিল্লাহ)।<br /><br />ইসলামীআক্বীদা হচ্ছে   -   হযরত   মোহাম্মাদ মোস্তফা  সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই  শেষ নবী - হযরত আলী  নবী নন।  জিব্রাইল    আমীন  আমানতদারীর      সাথেই সঠিক পাত্রে    ওহী  পৌঁছিয়ে   দিয়েছেন।    তাঁর       ভূল      হয়নি। কেননা,    জিব্রাইলের   ভূল    হয়ে   থাকলে   খোদা কেনো জেনে    শুনেও    তা সংশোধন      করেননি?   মূলত:     এই শিয়াগণ   চরমপন্থী।   আর চরমপন্থী   শিয়ারা       কাফির। কাদিয়ানী ফির্কাকেও এরা হার মানিয়েছে।<br /><br />৯।ইসমাইলী, মোয়ামারী  ও মনসুরিয়া শিয়া গোত্রত্রয় মূল মেরাজকেই অস্বীকার করে। মনসুরিয়া শিয়াগণ বলে  - মেরাজ শুধু একা নবী করিম  সাল্লাল্লাহু     আলাইহি ওয়া সাল্লামের হয়নি। তাদের নেতা আবুল মনসুর আজালিও মিরাজ  গমন করেছিল বলে  তারা বিশ্বাস করে। আবুল মনসুর নাকি  সামনা সামনি খোদার সাথে কথা বলেছে এবং   খোদাও  আবুল        মনসুরের  মাথায়     হাত বুলিয়ে দিয়েছেন।    ইমামিয়া    শিয়াদের একদল বলে - হযরত আলীও  ঐ   মিরাজে    রাসুল  করিম   সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া   সাল্লাম    এর সাথে শরীক  ছিলেন।   আর   একদল বলে - হযরত আলী আরশে গমন করেননি - তবে তিনি পৃথিবীতে থেকেই ঐসব কিছু অবলোকন করেছিলেন - যা    অবলোকন           করেছিলেন      নবী   করিম   সাল্লাল্লাহু আলাইহি   ওয়া সাল্লাম     ওখানে  গিয়ে     (নাউযুবিল্লাহ)।<br /><br />ইসলামীআক্বীদা  হচ্ছে:   আকাশে  ও  উর্দ্ধ      জগতে    নবী   করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মিরাজে অন্য কেউ তাঁর   সাথে        শরীক   ছিলেন  না।  তিনি     ছিলেন একা। জিব্রাইল    আলাইহিস সালাম   ছিলেন  সাথী। কোরআন মজীদে    'বি  -    আবদিহী'   শব্দ    দ্বারা    একক    নবীকেই মিরাজে     গমনের     মালিক  বলে   উল্লেখ  করা   হয়েছে। পৃথিবীতে থেকে যদি উর্দ্ধ জগতের সব কিছু অবলোকন করা যেতো   -   তবে  এত আয়োজন করে        নবী করিম সাল্লাল্লাহু    আলাইহি  ওয়া     সাল্লামকে     নেয়া      হয়েছিল কেন? এতে তো হযরত আলীরই শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হয় - এটা  কুফরী। শিয়াদের  এই মিথ্যা  অপবাদ মনগড়া ও ইসলাম বিরুধী আক্বীদা।<br /><br />১০।শিয়াদের     অনেক    উপদলই        শরীয়তের   বিধি বিধান রহিত  হয়ে গেছে বলে বিশ্বাস  করে। যেমন      সাবইয়া, খাত্তাবিয়া,       মানসুরিয়া,                  মুয়াম্মারীয়া,   বাতিনীয়া, কারামাতা,  রেজামিয়া - প্রভৃতি     শিয়াগণ এই  আক্বীদা পোষণ করে যে,  বর্তমানে    শরীয়তের  সব বিধি বিধান রহিত হয়ে গেছে। এরা আরও বলে - নামায রোযা হজ্ব যাকাত     দ্বারা  প্রচলিত    ইবাদত      বুঝায়  না। এগুলোর একটি      গোপন অর্থ   আছে -  যার অর্থ  একমাত্র  ইমাম মাসুম জানেন - অন্য কেউ নয়।<br /><br />কুরআনহাদীসের     বানী সমূহ      প্রকাশ্য     অর্থেই গ্রহন             করা মুসলমানদের  আক্বীদা। কুরআন হাদীসের বিধি বিধান স্পষ্ট ও চিরস্থায়ী।<br /><br />১১।ইমামিয়া শিয়ারা  বলে:   হযরত            আলী         রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর নিকটেও  ফেরেস্তা ওহী নিয়ে আসতো। নবী ও হযরত আলীর  ওহীর মধ্যে  শুধু   পার্থক্য  এতটুকু যে   - নবী  করিম  সাল্লাল্লাহু  আলাইহি   ওয়া সাল্লাম     ফেরেস্তা দেখতেন,      কিন্তু   আলী     শুধু  কথা    শুনতেন - ফেরেস্তা দেখতেন    না। আর   একদল শিয়া বলে   -    নবী  করিম সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ইনতিকালের   পর বিবি    ফাতিমা  রাদ্বিয়াল্লাহু      আনহা        এর   নিকট    ওহী আসতো।   এ ওহী   জমা   করে রাখা   হয়েছে   এবং  এর নাম    মাসহাফে  ফাতিমা।  ভবিষ্যতে    সংঘটিত  অনেক ঘটনা  ও    ফিৎনা ঐ  ফাতিমী   মাসহাফে   লিখা    আছে। তাদের  ইমামগণ  ঐ           মাসহাফ    দেখে দেখে  গায়েবী সংবাদ প্রকাশ করে থাকেন।<br /><br />ইসলামীআক্বীদা   হচ্ছে:  নবী     করিম    সাল্লাল্লাহু  আলাইহি  ওয়া সাল্লামের   পর আল্লাহর বানী নিয়ে আর  কোন ফেরেস্তা দুনিয়াতে আসেননি। তাদের এই  ধারণা পবিত্রাত্বাদের প্রতি অপবাদ মাত্র।<br /><br />১২।শিয়ারা  বলে:    ইমামের      এই  ক্ষমতা আছে  যে,    তিনি যখন   মনে   করেন,  তখন  যে    কোন  শরীয়তী       বিধান পরিবর্তন বা বাতিল করে দিতে পারেন (নাউযুবিল্লাহ)।<br /><br />মুসলমানদেরকোন ধর্মীয়   ইমাম বা  নেতার এই   অধিকার নেই    যে, সে শরীয়তের   কোন    বিধান মানসুখ   বা বাতিল     করে দিতে   পারেন    বা  পরিবর্তন করতে  পারেন।        ইহা একমাত্র    নবীর  শান।   তিনি    ছাহেবে     শরীয়ত।  তিনি পারেন রহিত করতে বা পরিবর্তন করতে।</div>

শিয়াদের ভ্রান্ত আক্বিদা

#শিয়াদের_১২_টি_ভ্রান্ত_আক্বীদা ______________________ 📖🖎সায়্যিদী হাফেজ ইমাম আব্দুল জলিল রহঃ শাহআবদুল     আজীজ  দেহলভী       রহমাতুল্লাহি  ...

Read more »

যেনার শাস্তির বিধান

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">জেনাসহ নানা যৌন অপরাধের শাস্তির ইসলামী বিধান<br />(ব্যাখ্যা এবং প্রমাণসহ ১২ ধরণের শাস্তির বর্ণনা)<br />*****<br />ভূমিকা: আরবী জেনা زِنَى ، زِنَاء শব্দের অর্থ হলো পুরুষ-নারী উভয়ের সম্মতিতে বিধিবহির্ভূত পন্থায় যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হওয়া। তবে বৈধ সঙ্গমকে আরবীতে নিহাক نِكاح, জিমা جِماع, ওয়াতী وَطْئٌ ও মুবাশারা مُبَاشَرة বলা হয়।<br />জেনার দুইটি প্রতিশব্দ রয়েছে। যথাঃ ইহর/আহর عِهْرٌ ، عَهْرٌ ও দাআর دَعَرٌ ।<br />জেনাকারীকে বলা হয় জানী زاني, আহির عاهِر ও দায়ির دَعِر । তবে কোরআন মজীদে নারী জেনাকারীকে বাগী بَغِيٌّ নামেও আখ্যায়িত করা হয়েছে। অনরুপ হাদীছে মুমিস مُومِس শব্দটিও এসেছে নারী জেনাকারীর ক্ষেত্রে।<br />বেশ্যাবৃত্তিকে আরবী বলা হয় আহারা عَهارَةٌ, দিয়ারা دِعارةٌ ও দাআরা دَعَارَةٌ ইত্যাদি।<br />জোর করে কারো সাথে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হওয়াকে আরবীতে ইগতিছাব اِغْتصَاب বলা হয়। পুরুষের সমকামিতাকে বলা হয় লিওয়াত ও লিওয়াতাহ لِواطُ ، لِواطَة। নারীর সমকামিতাকে বলা হয় সিহাক سِحاق। তবে পুরুষ-নারীর উভয়ে সমকামিতাকে আধুনিক আরবীতে মিসলিয়া مِثلِيَّة বলা হয়। অন্যদিকে অজাচার (মাহরিমের সাথে যৌনমিলন) বা ইনসেস্টকে বলা হয় জিনাল মাহারিম زِنا المَحارم।<br />অজাচার ও পশুর সাথে কৃত জেনাকে ইতয়ান إتيان, উকূ وُقُوع ও ইগতিছাব اِغْتصَاب শব্দ দ্বারা বর্ণনা করা হয়।<br />-<br />বিধান: ইসলামে পুরুষের জন্য স্ত্রী ও বান্দী ছাড়া অন্য কারো সাথে যৌনসঙ্গম নিষিদ্ধ ও গর্হিত কাজ তথা শাস্তিযোগ্য কবীরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত বিষয়। তাছাড়া হস্তমৈতুনও ইসলামে নিষিদ্ধ। তবে হস্তমৈতুন ছগীরা গুনাহের (ছোট পাপ) অন্তর্ভূক্ত হলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে নারীর জন্য স্বামী ছাড়া অন্য কারো সাথে যৌনসঙ্গমের কোনো সুযোগ ইসলামে নেই। অর্থাৎ, বৈধ স্বামী নেই এমন বান্দীর সাথে তার মালিকের জন্য যৌনসঙ্গম বৈধ হলেও নারী মালিকের জন্য নিজের গোলামের সাথে যৌনসঙ্গম বৈধ নয়।<br />প্রসঙ্গত, বর্তমানে গোলাম-বান্দীর প্রথা নেই। তবে তাই বলে কোনো পুরুষের জন্য তার কাজের মেয়ের সাথে বান্দীর মত যৌন আচরণ করা জায়েয হবে না।<br />-<br />দন্ডবিধি<br />নিজের স্বীকারোক্তি অথবা অকাট্য সাক্ষ্য দ্বারা অপরাধ প্রমাণিত হলে ইসলামে অবস্থাভেদে যৌন অপরাধের শাস্তি নিম্নরূপ:<br />১. জেনা: জেনাকারী পুরুষ/নারীর উভয়ে অথবা যে কোনো একজন #অবিবাহিত হলে শাস্তি হিসেবে অবিবাহি পুরুষ/নারীর প্রাপ্য হলো সহনীয় মাত্রায় একশত বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য এলাকা/দেশ ছাড়া করা কিংবা জেলে ভরে রাখা। অন্যদিকে স্ত্রী/স্বামী জীবিত থাকুক বা না থাকুক, উভয় অবস্থায় #বিবাহিত জেনাকারী পুরুষ/নারীর প্রাপ্য শাস্তি হলো পাথর ছুড়ে কিংবা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা। আর অবিবাহিত জেনাকারী পুরুষ/নারীকে সে লোকের সাথে আজীবনের জন্য বিয়ের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে, যে জীবনে কোনো সময় জেনায় লিপ্ত হয়নি ।<br />[প্রমাণপঞ্জীঃ ১. সূরা আন-নূর, আয়াত: ১, ২। ২. ছহীহ বোখারী, হাদীস নম্বর: ৬৪৪৩, ৬৪৪৪]।<br />-<br />২. ধর্ষণ: ধর্ষক বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত হোক এবং একজন হোক বা একাধিক হোক, উভয় অবস্থায় তার/তাদের শাস্তি পাথরছুঁড়ে কিংবা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড। এ ক্ষেত্রে ধর্ষিতার আহত/নিহত হওয়া শর্ত নয়। তবে ধর্ষিতা আহত হলে তার চিকিৎসা খরচ ধর্ষকের অভিভাবক বা ওয়ারিসদেরকেই বহন করতে হবে।<br />প্রসঙ্গত, আমি (আবুল হুসাইন আলেগাজী) ধর্ষণের কেস সংক্রান্ত কোনো হাদীস পাইনি। সম্ভবত আগের যুগে মানব সমাজে ধর্ষণ সংস্কৃতির প্রচলন ছিল না। এখানে আমি ধর্ষণের যে শাস্তি বললাম, সেটি সূরা মায়েদার ৩৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত ফাসাদের (ছিনতাই, ডাকাতি ও জোরপূর্বক চাঁদাবাজি ইত্যাদি) বিধান থেকে নেয়া হয়েছে, যেখানে ছিনতাই-ডাকাতির জন্য শাস্তিস্বরুপ হত্যা, শূলিতে চড়িয়ে মারা, বিপরীত দিক থেকে একটি করে হাত-পা কেটে দেওয়া ও দেশান্তর করার কথা রয়েছে। কারণ, একজন মেয়ের সতীত্ব কিংবা মর্যাদার মূল্য কোনক্রমেই অর্থের চেয়ে কম নয়। তাছাড়া মানুষ ছিনতাই/ডাকাতিও করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আনন্দে থাকার জন্য।<br />-<br />৩. সমাকামিতা: পুরুষ ও নারী উভয় সমকামিতার ক্ষেত্রে শাস্তি হলো, উভয়কে উপর থেকে ফেলে কিংবা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড করা। কোরআন মজীদে বর্ণিত তথ্যমতে সমকামী লূত সম্প্রদায়কে আকাশের উপর তুলে নীচে ফেলে ও পাথরছুঁড়ে নির্মূল করা হয়েছিল। তবে এ ক্ষেত্রে কাউকে যদি জোরপূর্বক ওই কাজে বাধ্য করা হয়, তাহলে ভিকটিমের নাম-ঠিকানা গোপন রেখে শুধুমাত্র অপরাধীকেই মেরে ফেলতে হবে।<br />[প্রমাণপঞ্জীঃ ১. সূরা হূদ, আয়াত: ৮২। ২. সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নম্বর: ৪৪৬২, সুনানে তিরমিযী, হাদীস নম্বর: ১৪৫৬, সুনানে ইবনে মাজা, হাদীস নম্বর: ২৫৬১ ও মুস্তাদরকে হাকেম, হাদীস নম্বর: ৮০৪৭]।<br />-<br />৪. অজাচার: অজাচার তথা স্থায়ী ভাবে বিয়ে হারাম এমন মাহরিমের সাথে জেনার শাস্তি হলো উভয়ের মৃত্যুদন্ড। তবে কেউ যদি নিজের মেয়ে, বোন, ভাতিজী, ভাগিনী ইত্যাদি মাহরিমকে ধর্ষণ করে, তাহলে ধর্ষিতার নাম-ঠিকানা গোপন রেখে শুধুমাত্র অপরাধীকেই মেরে ফেলতে হবে। প্রমাণঃ<br />عَنْ ابْنِ عَبًّاسٍ رضى الله عنه ، قَال: قَالَ رَسُول اللهِ صلى الله عليه وسلم: «مَنْ وَقَعَ عَلَى ذَاتِ مَحْرَمٍ فَاقْتُلُوهُ ، وَمَنْ وَقَعَ عَلَى بَهِيمَةٍ فَاقْتُلُوهُ ، وَاقْتُلُو البَهِيمَةَ». أخرجه ابن ماجه (2/856 ، رقم 2564) ، والبيهقى (8/234 ، رقم 16814) ، والحاكم (4/397 ، رقم 8054) وقال : صحيح الإسناد . وأحمد (1/300 ، رقم 2727) ، وعبد الرزاق (7/364 ، رقم 13492).<br />অর্থঃ হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস –رضي الله عنه- থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে তার কোনো মাহরিমের সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয়েছে, তাকে হত্যা করো। আর যে কোনো পশুর সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয়েছে, তাকেও হত্যা করো এবং পশুটিকে মেরে ফেলো।” [সুনানে ইবনে মাজা (২৫৬৪), সুনানে বাইহাকী কোবরা (১৬৮১৪), মুস্তাদরকে হাকেম (৮০৫৪), মুসনদে আহমদ (২৭২৭) ও মুছন্নফে আবদুর রজ্জাক (১৩৪৯২)]।<br />-<br />৫. পশুচার: কেউ পশুর সাথে যৌনাচারে লিপ্ত হলে তার শাস্তি হলো মৃত্যুদন্ড। এর সাথে ওই পশুটিকেও মেরে ফেলতে হবে, যেমনট পূর্বোক্ত হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। আর পশুটি মেরে ফেলার নির্দেশের কারণ এই হতে পারে যে, যদি পশুটিকে জীবিত রাখা হয়, তাহলে তার পেটে মানব সদৃশ বাচ্চা জন্ম নিবে এবং পশুটিকে মানুষ ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখবে।<br />-<br />৬. পতিতা ব্যবসা: কেউ যদি কোনো ভাবে পতিতাদের নিয়ে ব্যবসা করে, তাহলে তাকে বিজ্ঞ বিচারক মৃত্যুদন্ড অথবা আর্থিক/শারীরিক এক বা একাধিক শাস্তিতে দন্ডিত করতে পারবেন। এ শাস্তিও সূরা মায়েদার ৩৩ নম্বর আয়াতে বর্ণিত ফাসাদের (ছিনতাই, ডাকাতি ও জোরপূর্বক চাঁদাবাজি ইত্যাদি) বিধান থেকে নেয়া হয়েছে। কারণ, পতিতাবৃত্তি সমাজে ফাসাদ/বিকৃতি সৃষ্টির অন্তর্ভূক্ত।<br />-<br />৭. জেনার অপবাদ: কেউ যদি কোনো পুরুষ বা নারীর বিরুদ্ধে জেনা বা সমকামিতার অপবাদ ছড়ায়, তাহলে মূল হোতাসহ যে বা যারা ওই অপবাদ প্রচার করেছে, তাদের প্রত্যেককে আশিটি বেত্রাঘাত করতে হবে। এর সাথে তাকে/তাদেরকে আজীবনের জন্য যে কোনো বিষয়ে সাক্ষ্যদানের অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।<br />[প্রমাণপঞ্জীঃ সূরা আন-নূর, আয়াত: ৩]।<br />-<br />৮. বান্দীর জেনা: জেনার শাস্তির ক্ষেত্রে বিবাহিত ও অবিবাহিত উভয় ধরণের বান্দীর দন্ড হলো আযাদ নারীর অর্ধেক। অর্থাৎ, পঞ্চাশ বেত। কোনো বান্দী যদি বারবার জেনা করে, তাহলে তৃতীয়বারে তাকে চুলের রশির দামে হলেও বিক্রি করে দেওয়ার আদেশ করা হয়েছে মুমিনদেরকে।<br />[প্রমাণপঞ্জীঃ ১. সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৫। ২. ছহীহ বোখারী, হাদীস নম্বর: ৬৪৪৮]।<br />-<br />প্রসঙ্গত, ইসলামে বান্দীর জন্য হেজাব করা ফরজ নয়। আর আগের যুগে কাফির ও মুনাফিকরা গান ও নৃত্যের কাজে ব্যবহার করতো শুধুমাত্র বান্দীদেরকে; আযাদ নারীদেরকে এসব নীচু কাজে ব্যবহার করা হতো না। কিন্তু এখন এই দুইটি কথিত শিল্প হয়ে গেছে এবং সমাজে এসব বান্দীমনা শিল্পী/মেয়েদেরকে কথিত তারকা হিসেবে দেখা হয়।<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-7ZpHjgXc4PE/XSjE5r7LtqI/AAAAAAAAGmc/97-6Rj9UJDgfY_mYIT4X3f_V4CB4xZ0vgCLcBGAs/s1600/PicsArt_07-12-11.34.19.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="794" data-original-width="1080" height="235" src="https://1.bp.blogspot.com/-7ZpHjgXc4PE/XSjE5r7LtqI/AAAAAAAAGmc/97-6Rj9UJDgfY_mYIT4X3f_V4CB4xZ0vgCLcBGAs/s320/PicsArt_07-12-11.34.19.jpg" width="320" /></a></div><br />-<br />৯. স্ত্রীর পায়ুপথে সঙ্গম: স্ত্রীর পায়ু পথে সঙ্গম ইসলামে নিষিদ্ধ। এমনকি এতে স্ত্রীর সম্মতি থাকলেও। কোনো স্ত্রী যদি আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে পায়ুপথে সঙ্গমের অভিযোগ করে, তাহলে বিজ্ঞ বিচারক ওই স্বামীকে মৃত্যুদন্ড ছাড়া অন্য যেকোনো শাস্তি দিতে পারবেন (বেত্রাঘাত ও সশ্রম কারাদন্ডসহ অন্য যেকোনো শাস্তিও দিতে পারবেন)।<br />-<br />১০. ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে সঙ্গম: ইসলামে ঋতুবতী তথা হায়েজ ও নেফাস চলাকালীন স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করা নিষিদ্ধ। কারণ, এতে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের নানা ধরণের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি রয়েছে। সূরা বাকারায় হায়েজকে নারীর জন্য আযা বা কষ্টদায়ক বিষয় বলে অভিহিত করা হয়েছে। তবে কেউ যদি স্ত্রীর সাথে হায়েজ-নেফাসের সময় সঙ্গম করে, তাহলে তাকে কাফফারা স্বরূপ একটি দীনার (সোয়া চার ৪.২৫ গ্রাম সোনা) বা সেটির মূল্য সদকা/দান করতে হবে। হাদীছ শরীফে এসেছেঃ<br />عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله عنه ، عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الَّذِي يَأْتِي امْرَأَتَهُ وَهِيَ حَائِضٌ قَالَ: «يَتَصَدَّقُ بِدِينَارٍ أَوْ بِنِصْفِ دِينَارٍ». أخرجه أبو داود (1/69 ، رقم 264) ، والترمذى (1/244 ، رقم 136) ، والنسائى (1/153 ، رقم 289) ، وابن ماجه (1/213 ، رقم 650) ، والحاكم (1/278 ، رقم 612) وقال : حديث صحيح . ووافقه الذهبى .<br />অর্থঃ হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস –رضي الله عنه- থেকে বর্ণিত, হায়েয অবস্থায় যে লোক স্ত্রীসঙ্গম করে, তার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সে একটি দীনার অথবা অর্ধেক দীনার (কাফফারা স্বরূপ) দান করে দিবে।” [সুনানে আবু দাউদ (২৬৪), সুনানে তিরমিযী (১৩৬), সুনানে ইবনে মাজা (৬৫০) ও মুস্তাদরকে হাকেম (৬১২)]।<br />প্রসঙ্গত, হাদীসটির বর্ণনাকারী ছাহাবী আবদুল্লাহ বিন আব্বাস বলেছেন, হায়েযের প্রথমদিকে সঙ্গম করলে একটি দীনার ও শেষের দিকে করলে অর্ধেক দীনার দান করবে।<br />-<br />১১. নারীর পুরুষের বেশ ধারণ ও পুরুষের নারীর বেশ ধারণ: কোনো নারী যদি পুরুষের বেশ অথবা কোনো পুরুষ যদি নারীর বেশ ধারণ করে, তাহলে তাকে সমাজুচ্যত তথা দেশান্তর অথবা কারান্তরীণ করতে হবে। [প্রমাণপঞ্জীঃ ছহীহ বোখারী, হাদীস নম্বর: ৬৪৪৫]।<br />-<br />প্রসঙ্গত, বর্তমানে হিজড়া নামে যেসব লোককে চাঁদাবাজি করতে দেখা যায়, তাদের অধিকাংশই স্বাভাবিক পুরুষ ও স্বাভাবিক নারী। আর কেউ হিজড়া সেজে মানুষকে ধোকা দিলে তাকে সমাজুচ্যত তথা দেশান্তর অথবা কারান্তরীণ করতে হবে। তবে যেসব মানুষ প্রকৃত হিজড়া, তাদেরকে যদি তাদের পরিবার চালাতে না পারে, তাহলে সরকার তাদেরকে ভাতা দিবে।<br />-<br />১২. যৌনগালি: কেউ যদি কাউকে বিশ্রী কোন যৌনগালি দেয়, তাহলে তার শাস্তি বিশ বেত। হাদীছ শরীফে এসেছেঃ<br />عَنْ عِكْرِمَةَ رضى الله عنه ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله عنه ، عَنِ النَّبِىِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ : «إِذَا قَالَ الرَّجُلُ لِلرَّجُلِ يَا مُخَنَّثُ فَاجْلِدُوهُ عِشْرِينَ ، وَإِذَا قَالَ الرَّجُلُ لِلرَّجُلِ يَا لُوطِىُّ فَاجْلِدُوهُ عِشْرِينَ». أخرجه ابن ماجه (2/857 ، رقم 2568) ، والبيهقى (8/252 ، رقم 16925) .<br />অর্থঃ হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস –رضي الله عنه- থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যদি কোনো পুরুষ অন্য পুরুষকে ‘হে মেয়ে!’ বলে ডাক দেয়, তাহলে তাকে বিশ বেত মারবে। অনুরুপ কানো পুরুষ যদি অন্য পুরুষকে ‘হে সমকামী!’ বলে ডাক দেয়, তাহলে তাকেও বিশ বেত মারবে।” [সুনানে ইবনে মাজা (২৫৬৮) ও সুনানে বাইহাকী কোবরা (১৬৯২৫)]।<br />-<br />প্রসঙ্গত, উক্ত শাস্তিটা কোনো নিরপরাধকে অপবাদ দেয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তবে কেউ যদি সত্যি ওইরকম (সমকামী) হয়, তাহলে শাস্তি প্রযোজ্য হবে না। তবে এ ক্ষেত্রে করণীয় হলো, কোনো লোক যদি নোংরা হয়, তাহলে পারলে তার নোংরামির বিরুদ্ধে যেকোনো আদালতে অভিযোগ করবে এবং তার কাছ থেকে দূরে থাকবে ও অন্যদেরকে সতর্ক করবে। কিন্তু তা না করে তার সাথে গালাগালিতে লিপ্ত হবে না।<br />-<br />১৩. অমুসলিমদের জেনার বিচার: ইসলামী রাষ্ট্রের অমুসলিমদের জেনার বিচার করতে হয় তাদের ধর্মের বিধান দ্বারা। তবে সত্য হলো, জেনার ক্ষেত্রে তাওরাত ও কোরআনের বিচার একই। নবীজি صلى الله عليه وسلم জেনাকারী দুই বিবাহিত #ইহুদী পুরুষ-নারীর বিচার করেছিলেন তাওরাতের বিধান মতে। ওই দুইজনকে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা হয়েছিল। [দ্রষ্টব্যঃ ছহীহ বোখারী, হাদীছ নম্বর: ৬৪৫০]।<br />-<br />***<br />সাক্ষ্যের নিয়মঃ ইসলামে জেনা, ধর্ষণ ও সমকামিতা ইত্যাদিক প্রমাণিত হওয়ার জন্য যে সাক্ষ্যের নিয়ম রয়েছে, তার ব্যাখ্যা নীচে দেয়া হলো:<br />ক. কেউ যদি সজ্ঞানে নিজ থেকে জেনার কথা স্বীকার করে, তাহলে আর কোনো কথা নেই। তবে অভিযুক্ত কেউ যদি তা স্বীকার না করে, তাহলে তার জেনা প্রমাণিত হওয়ার জন্য অন্তত চারজন বিশ্বস্ত পুরুষ/নারীকে সাক্ষ্য দিতে হবে। প্রত্যেক সাক্ষ্যদাতাকে বলতে হবে যে, তিনি নিজ চোখে তাদের উভয়কে কোনো কক্ষে ভিতর থেকে আবদ্ধ অবস্থায় দেখেছেন অথবা তাদেরকে কোনো কক্ষে প্রবেশ করে সেটি ভিতর থেকে বন্ধ করে দিতে দেখেছেন।<br />-<br />খ. পরকীয়া জেনা বা স্বামী যদি স্ত্রীর বিরুদ্ধে অথবা স্ত্রী যদি স্বামীর বিরুদ্ধে জেনার অভিযোগ আনে এবং এ ক্ষেত্রে যদি নিজে ছাড়া অন্যকোনো প্রত্যক্ষদর্শী না থাকে, তাহলে এ ক্ষেত্রে বিচারের নিয়ম হলো নিম্নরূপ:<br />স্বামী যদি স্ত্রীর বিরুদ্ধে জেনার অভিযোগ আনে, তাহলে তাকে সেটি তিনি নিজ চোখে দেখেছেন বলে পরপর চারবার স্বীকারোক্তি দিতে হবে এবং পঞ্চমবারে বলবে, আমি যদি মিথ্যাবাদী হই, তাহলে আমার উপর আল্লাহর #লানত পড়ুক। এতে যদি অভিযুক্ত স্ত্রী জেনার কথা স্বীকার করে নেয়, তাহলে তাকে পাথরছুঁড়ে হত্যা করতে হবে।<br />তবে স্ত্রী যদি অস্বীকার করে, তাহলে তাকে সে জেনা করেনি মর্মে পরপর চারবার স্বীকারোক্তি দিতে হবে এবং পঞ্চমবারে বলতে হবে, ও (স্বামী) যদি সত্যবাদী হয়, তাহলে আমার উপর আল্লাহর #গজব পড়ুক।<br />স্ত্রী যদি জেনার অপবাদ এভাবে অস্বীকার করে, তাহলে তার উপর কোনো শাস্তি আরোপিত হবে না; খালাস পেয়ে যাবে। তবে স্ত্রী যদি সত্যি জেনাকারী হয়, তাহলে স্বামী চাইলে তাকে তালাক দিতে পারবে। ।<br />[প্রমাণপঞ্জীঃ সূরা আন-নূর, আয়াত: ৬-৯]।<br />-<br />গ. ধর্ষক যদি ধর্ষণের কথা সজ্ঞানে স্বীকার করে, তাহলে সাক্ষ্যের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সে যদি ওই অভিযোগ অস্বীকার করে, তাহলে অন্তত চারজন বিশ্বস্ত পুরুষ/নারীকে এই সাক্ষ্য দিতে হবে যে, তারা নিজ চোখেই দেখেছেন ধর্ষক তাকে জোর করে কোনো নির্জন কক্ষে প্রবেশ করিয়েছেন অথবা ধর্ষিতার কক্ষে জোরপূর্বক বা মিথ্যা কথা বলে প্রবেশ করে ভিতর থেকে দরজার বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে ধর্ষিতার পক্ষে সাক্ষ্য না থাকা অবস্থায় যদি ধর্ষণের পক্ষে অকাট্য কোনো ডাক্তারী সার্টিফিকেট পাওয়া যায়, তাহলে ধর্ষককে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করতে হবে (ধর্ষিতার তাকে মাফ করার অধিকার নেই)। কিন্তু ধর্ষক যদি দাবি করে যে, সে ওই নারীর সম্মতিতেই তার সাথে যৌনমিলন করেছে এবং ওই নারীও তা স্বীকার করে নেয়, তাহলে উভয়জনকে জেনার শাস্তি দিতে হবে। তবে ওই নারী যদি তা অস্বীকার করে, তাহলে এ ক্ষেত্রে (ধর্ষকের বিচারে) পূবোল্লিখিত স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর জেনার অভিযোগ প্রমাণি করার পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। অর্থাৎ, সে জেনা করেনি; বরং তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে মর্মে তাকে পরপর চারবার স্বীকারোক্তি দিতে হবে এবং পঞ্চমবারে বলতে হবে, ও (ধর্ষক) যদি সত্যবাদী হয়, তাহলে আমার উপর আল্লাহর #গজব পড়–ক। ধর্ষিতা যদি জেনার অপবাদ এভাবে অস্বীকার করে, তাহলে তার উপর কোনো শাস্তি আরোপিত হবে না; খালাস পেয়ে যাবে। তবে জেনার কথা স্বীকারকারী পুরুষকে বৈবাহিক অবস্থা অনুযায়ী জেনার শাস্তি দিতে হবে।<br />-<br />মহান আল্লাহ আমাদের হারাম যৌনতা থেকে নিরাপদ রাখুন।<br />-<br /><br /></div>

যেনার শাস্তির বিধান

জেনাসহ নানা যৌন অপরাধের শাস্তির ইসলামী বিধান (ব্যাখ্যা এবং প্রমাণসহ ১২ ধরণের শাস্তির বর্ণনা) ***** ভূমিকা: আরবী জেনা زِنَى ، زِنَاء শব্দের অ...

Read more »

হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাকীকত কি

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাকীকত কি!!<br />----------------------<br /><br />এছাড়াও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘তারকা’র আকৃতিতে দীর্ঘকাল ছিলেন। যেমন হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে-<br />عن أبي هريرة رضي الله تعالى عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم سأل جبريل عليه الصلاة والسلام فقال يا جبريل كم عمرت من السنين؟ فقال يا رسول الله لست أعلم، غير أن في الحجاب الرابع نجما يطلع في كل سبعين ألف سنة مرة، رأيته اثنين وسبعين ألف مرة فقال: يا جبريل وعزة ربي جل جلاله أنا ذلك الكوكب<br />‘নিশ্চয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক বার জিব্রাঈল আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার বয়স কত? জিব্রাঈল আরয করলেন, আল্লাহর কসম (আমার বয়সের ব্যাপারে) এটা ছাড়া আমি জানিনা যে, চতুর্থ পর্দায় (আসমানে) একটি তারকা প্রতি সত্তর হাজার বছর পর একবার উদিত হতো আর তা আমি বাহাত্তর হাজার বার দেখেছি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- হে জিব্রাঈল, আমার রবের ইজ্জতের কসম আমি-ই ছিলাম সেই তারকা।’ (আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৩/৫৪৩; ইমাম বুরহানুদ্দীন হালাবী, সিরাতে হালবীয়া: ১/৪৯; আল্লামা ইউসূফ নাবহানী, জাওয়াহিরুল বিহার: ৭৭৬)<br /><br />আবার ইমাম গাযযালী সনদ বিহীন এবং ইমাম আবদুর রাযযাক হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ থেকে মাকতূ‘ সনদে (সাহাবীর বাণী হিসেবে) বর্ণনা করেছেন যে, “নূরে মুহাম্মদীকে আল্লাহ ময়ূরের আকৃতিতে সৃষ্টি করতঃ শ্বেত শুভ্রপাত্রে রেখে চার শাখা বিশিষ্ঠ সাজারাতুল ইয়াক্বিন নামক বৃক্ষে স্থাপন করলেন। এ অবস্থায় তিনি একাধারে সত্তর হাজার বছর আল্লাহর তাসবীহ-তাহলীলে মাশগুল থাকেন।” (ইমাম গাযযালী, দাকায়েকুল আখবার: ৯; ইমাম আবদুর রাযযাক, আল মুসান্নাফ, আল জুযউল মাফকুদ মিনাল জুযইল আউয়াল: ৫১-৫২)<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-Ni86qhI2S5M/XR9ZbJeEBgI/AAAAAAAAGeo/tM57wm1vVfQ97dJaC1eYcjsCJHMijvRlgCLcBGAs/s1600/FB_IMG_1561548152198.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1350" data-original-width="1080" height="320" src="https://1.bp.blogspot.com/-Ni86qhI2S5M/XR9ZbJeEBgI/AAAAAAAAGeo/tM57wm1vVfQ97dJaC1eYcjsCJHMijvRlgCLcBGAs/s320/FB_IMG_1561548152198.jpg" width="256" /></a></div><br />অতঃপর যখন আল্লাহ তা‘আলা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন সেই নূরে মুহাম্মদীকে আদম আলাইহিস সালামের মধ্যে স্থাপন করলেন। তাফসীরে দুররে মানছূরে রয়েছে-<br />اخرج ابن ابى عمر العدنى عن ابن عباس ان قريشا كانت نورا بين يدى الله تعالى قبل ان يخلق الخلق بالفى عام يسبح ذلك النور وتسبح الملائكة بتسبيحه- فلما خلق الله ادم عليه السلام القى ذلك النور فى صلبه- قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: فاهبطنى الله الى الارض فى صلب ادم عليه السلام وجعلنى فى صلب نوح وقذف بى فى صلب ابراهيم ثم لم يزل الله ينقلنى من الاصلاب الكريمة الى الارحام الطاهرة حتى اخرجنى من بين ابوى لم يلتقيا على سفاح قط<br />‘হযরত ইবনু আবী উমর আল-আদনী ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন- নিশ্চয় কুরাইশী নবী (অর্থাৎ কুরাইশ বংশে আগমন করলেও মূলতঃ তিনি) মাখলুক তথা আদম আলাইহিস সালাম সৃষ্টির দু’ হাজার বৎসর পূর্বে আল্লাহর দরবারে নূর ছিলেন। সেই নূর তাসবীহ পাঠ করতো এবং তাঁর তাসবীর সাথে ফেরেশতাগণও তাসবীহ পাঠ করতো। অতঃপর যখন আল্লাহ তা‘আলা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন, তখন আদম আলাইহিস সালাম এর পৃষ্টদেশে সেই নূর মুবারক স্থাপন করলেন। রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা আমাকে হযরত আদম আলাইহিস সালামের পৃষ্টদেশে থাকা অবস্থায় জমিনে পাঠালেন। অতঃপর হযরত নূহ আলাইহিস সালাম এর পৃষ্টদেশে আমাকে স্থাপন করলেন। বংশ পরম্পরায় আমাকে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের পৃষ্ঠে থাকাকালীন নমরূদের তৈরি অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এভাবে স্থানান্তরিত হতে হতে পবিত্র পৃষ্ঠদেশ থেকে পবিত্র রেহেমে স্থানান্তরিত হতে থাকি, এমনকি আমার পিতা-মাতা পর্যন্ত। আমার পূর্ব পুরুষের মধ্যে কখনোই যিনা সংঘটিত হয়নি।’ (ইমাম সুয়ূতী, আদ্ দুররুল মানছূর: ৪/৩২৯, لقد جاء كم رسول من انفسكم আয়াতের ব্যখ্যায়)<br /><br />পবিত্র থেকে পবিত্র ব্যক্তিগণের মাধ্যম হয়ে স্থানান্তর হতে হতে সে নূর সর্বশেষ হযরত আব্দুল্লাহর মাধ্যমে হযরত আমেনা এর রেহেম মুবারকে স্থানান্তর হয়। নবীজী নিজে ইরশাদ করেন-<br />وإن أمي رأت في بطنها نوراً قالت : فجعلت أتبع بصري النور فجعل النور يسبق بصري حتى أضاء لي مشارق الأرض ومغاربها<br />‘আমার আম্মাজান দেখলেন যে তাঁর পেটে নূর অবস্থান করছে। তিনি বলেন, অতঃপর নূরের দিকে আমি চক্ষু ফিরালাম, নূরের প্রখরতা আমার চোখের দৃষ্টিকে ম্লান করে দিচ্ছিল। এমনকি ঐ নূরের আলোতে পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম তথা সারা দুনিয়া আমার নিকট আলোকিত ও প্রকাশিত হয়ে গেল।’ (ইমাম যায়‘আলী, তাখরীজুল আহাদীসি ওয়াল আছার: ৮৩; ইমাম সুয়ূতী, আল-খাসায়েসুল কুবরা)<br /><br />এছাড়াও নবীজীর সুরাত বা আকৃতির ব্যাপারে শায়খ ইসমাইল হাক্কী ‘সূরা মারিয়াম’-এর كهيعص এর ব্যাখ্যায় ইমাম কাশেফীর একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। তিনি বলেন, শায়খ রুকুনুদ্দীন আলাউদ্দৌলা সিমনানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ফরমান-<br />حضرت رسالت را صلی الله عليه وسلم سہ صورتست يكی بشری كقوله تعالی قل انما انا بشر مثلكم (الكهف: ١١٠)دوم ملكی چناكہ فرمودست (لست كأحد ابيت عندی ربی)سيوم حقی كما قال :(لی مع الله وقت لا يسعنی فيه ملك مقرب ولا نبي مرسل)وازين وروشنتر (من رأنی فقد رأي الحق))<br />‘রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তিনটি সুরাত রয়েছে। একটি, বাশারী বা মানবীয় সুরাত। যেমন, আল্লাহর বাণী- قل انما انا بشر مثلكم (আপনি বলুন, নিশ্চয় আমি তোমাদের ন্যায় বাহ্যিক আকৃতিতে একজন মানুষ)। দ্বিতীয়টি হলো, ফেরেশতার সুরাত। যেমন, আল্লাহর হাবীব নিজেই ফরমান- لست كأحد ابيت عندی ربی (আমি তোমাদের কারো মতো নই, আমি আমার রবের নিকট রাত্রি যাপন করি)। তৃতীয়টি হলো, সুরাতে হাক্কী বা প্রকৃত সুরাত। যেমন, হাদীস শরীফে রয়েছে, নবীজী ইরশাদ করেন- لی مع الله وقت لا يسعنی فيه ملك مقرب ولا نبي مرسل (আল্লাহর সাথে আমার এমন একটি বিশেষ সময় রয়েছে যাতে নৈকট্যপ্রাপ্ত কোন ফেরেশতা এবং কোন নবী-রাসূল পৌঁছতে পারেনি)। এর চেয়েও স্পষ্ট বর্ণনা হাদীসে রয়েছে যে, নবীজী বলেন- من رأنی فقد رأي الحق (যে আমাকে দেখল, সে যেন হককেই দেখল) অর্থাৎ তিনি আল্লাহ দেখার আয়না স্বরূপ।’ (আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৫/৩১৪)<br /><br />নূরে মুহাম্মদীকে সৃষ্টির পর আকৃতি প্রদানের ব্যাপারে আল্লামা ইমাম যারকানী বলেন-<br />ثم جسم صورته علي شكل اخص من ذلك النور<br />‘অতঃপর নূরে মুহমাম্মদীকে বিশেষ আকৃতিতে মুজাসসাম (শরীর বিশিষ্ট) করা হয়।’ (ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৯৫)<br /><br />আর আহলে সুন্নাতের সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে হুযুর পাকের যে সুরাতই হোক, সব ক’টিই নূরের; এমনকি মানব আকৃতিও নূরে মুজাসসাম (নূরের শরীর বিশিষ্ট)।<br /><br />হাফিজুল হাদীস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী বর্ণনা করেন-<br />اخرج الحكيم الترمذى عن ذكوان ان رسول الله صلى الله عليه وسلم لم يكن يرى له ظل فى شمس ولاقمر قال ابن سبع: من خصائصه ان ظله كان لا يقع على الارض وانه كان نورا فكان اذا مشى فى الشمس او القمر لا ينظر له ظل- قال بعضهم: ويشهد له حديث قوله صلى الله عليه فى دعائه- واجعلى نورا-<br />‘হাকিম তিরমিযী হযরত যাকওয়ান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম হতে বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ছায়া না সূর্যের আলোতে দেখা যেত, আর না চন্দ্রের আলোতে। ইবনু সাবা‘ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন- রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বৈশিষ্ট্য এ যে, নিশ্চয় তাঁর ছায়া জমিনে পতিত হতো না, কেননা তিনি ছিলেন নূর। অতএব, তিনি যখন সূর্যের আলোতে অথবা চন্দ্রের আলোতে চলতেন, তখন তাঁর ছায়া দেখা যেত না। কেউ কেউ বলেন, রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার ছায়া না থাকার বিষয়টি ঐ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত, যা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দু‘আয় বলেছেন- হে আল্লাহ! আমাকে নূর করে দাও।’ (ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী, আল-খাসায়েসুল কুবরা: ১/১১৬)<br /><br />ইমাম যারকানী বলেন-<br />لم يكن له صلى الله عليه وسلم ظل فى شمس ولاقمر لانه كان نورا<br />‘সূর্য চন্দ্রের আলোতে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দেহ মুবারকের ছায়া পড়ত না। কেননা তিনি ছিলেন অপাদমস্তক নূর।’ (ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ৪/২২০)<br /><br />অনুরূপ বর্ণনা ইমাম কাদ্বী আয়াদ্ব তার ‘কিতাবুশ শিফা বি তা‘রীফি হুকুকিল মুস্তফা’য়ও বর্ণনা করেছেন।<br /><br />** জ্ঞাতব্য যে, মানুষের সৃষ্টিগত ধাতু বা মাদ্দা সৃষ্টি হয় তাদের বাবা-মা’র মধ্যে। তাদের বাবা-মা যখন অপ্রাপ্ত বয়স্ক থাকেন তখনও এই মূল উপাদান তাদের মধ্যে থাকেনা বরং প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর তা তৈরি হয়। আর দাদা থেকে পূর্ব পুরুষদের মধ্যে কোন কালেই নিম্ন পুরুষদের সৃষ্টি মাদ্দা বা ধাতু থাকে না এবং স্থানান্তরিতও হয় না। তাদের মাদ্দা যখন পিতা হতে মায়ের গর্ভে যায় তখন এতে একটি আকৃতি প্রদান করা হয় এবং তাতে কিছুদিন পর রূহ্ দেওয়া হয়। আর মানুষের মাদ্দা মা-বাবার মিলিত মনি বা বীর্য। যেমন, ইরশাদ হয়েছে-<br />فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ خُلِقَ مِن مَّاء دَافِقٍ يَخْرُجُ مِن بَيْنِ الصُّلْبِ وَالتَّرَائِبِ<br />‘মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃষ্টি হয়েছে সবেগে সংখলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষ পাজরের মধ্যে থেকে।’ (সূরা তারিক: ৫-৭)<br /><br />অনুরূপ আরও ইরশাদ হয়েছে-<br />مِنْ أَيِّ شَيْءٍ خَلَقَهُ مِنْ نُطْفَةٍ خَلَقَهُ فَقَدَّرَهُ<br />‘তিনি তাকে কি বস্তু হতে সৃষ্টি করেছেন? শুক্র থেকে তাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর সুপরিমিত করেছেন।’ (সূরা আবাছা: ১৮-১৯)<br /><br />অনুরূপ অন্য আয়াতে এসেছে-<br />فَإِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ<br />‘আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি মাটি হতে অতঃপর বীর্য হতে।’ (সূরা হাজ্জ্ব: ৫)<br /><br />কিন্তু হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সৃষ্টি তথ্য সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম এবং স্বতন্ত্র। কেননা তিনি না মাটি হতে, না বীর্য হতে, বরং তাঁর মাদ্দা হল নূর যা প্রথমে আদম আলাইহিস সালামের মাঝে আমানত রাখা হয়েছিল। অতঃপর তাঁর থেকেই স্থানান্তর হতে হতে শেষ পর্যন্ত মা আমেনার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সুতরাং তিনি আদম আলাইহিস সালামের মাঝে স্থাপন করার পূর্বেও বিদ্যমান ছিলেন- কখনও তারকার আকৃতিতে, কখনও বা ময়ূরের আকৃতিতে, কখনও অন্যকোন আকৃতিতে; এমনকি সর্ব প্রথম সৃষ্টি হয়েই তিনি সেজদা করে মাথা উত্তোলন করেছিলেন। অবশেষে বাবা আব্দুল্লাহ এবং মা আমেনার মাধ্যম হয়ে মানব আকৃতিতে মানবীয় পূর্ণ গুণাবলীসহ আগমন করেন। তাঁর মাদ্দাও পিতা-মাতার মনি ছিলনা, ছিল নূর তা-ই পূর্বোক্ত সকল বর্ণনা হতে প্রমাণিত হয়।<br /><br />*** এখন উপর্যুক্ত সকল আলোচনা হতে যে বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, তা হলো-<br /><br />১. হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই হলেন আল্লাহ তা‘আলার সর্বপ্রথম সৃষ্টি। এমনকি ফেরেশতা জিব্রাঈল ও মানব জাতীর প্রথম মানব হযরত আদম আলাইহিস সালাম এরও অনেক পূর্বে নবীজীর সৃষ্টি।<br /><br />২. হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা এর যাতী নূর থেকে সৃষ্টি। আর ‘যাতী নূর’ বলার দ্বারা আল্লাহর যাতের অংশ বা আইনে যাত কিংবা টুকরা হওয়াও আবশ্যক হয় না। (আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা)<br /><br />৩. নূরে মুহাম্মদী সৃষ্টি হয়েই বিশেষ আকৃতি নিয়ে সিজদা করেছেন এবং সিজদা হতেই মাথা উত্তোলন করে ‘আল-হামদু লিল্লাহ’ বলেছেন। আর সে নূরের নামই আল্লাহ ‘মুহাম্মদ’ রেখেছেন।<br /><br />৪. অতঃপর সে নূর কখনো ময়ূর আকৃতিতে, কখনো তারকার আকৃতিতে ছিলেন, আবার তা কখনো ফেরেশতার রূপেও ছিলেন এবং সর্বশেষ সে নূরই মানব আকৃতিতে এ পৃথিবীতে আগমন করেছেন। আর কুরআনের আয়াত قل انما انا بشرمثلكم (বলুন, আমি তোমাদের মত মানুষ) এর অর্থও তাই যেমনটি রুহুল বায়ানে বলা হয়েছে।<br /><br />৫. কুরআন প্রমান করে মানবজাতী সৃষ্টির মাদ্দাহ বা ধাতু পিতা-মাতার মিলিত মনী এবং তা পিতা-মাতার শরীরেই তৈরী হয়, পূর্বে এর অস্তিত্ব থাকেনা এবং পূর্ব পুরুষ হতেও স্থানান্তরিত হয়ে আসেনা।<br /><br />৬. আর হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সৃষ্টির মাদ্দাহ বা উপাদান হল নূর। সে নূর আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করতঃ তাঁর মধ্যে আমানত রাখা হয়েছে এবং পরবর্তীতে তা পবিত্র নসলে স্থানান্তরিত হয়ে সর্বশেষ মানব রূপে পৃথীবিতে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।<br /><br />এখন, কুরআন প্রমান করে মানব জাতী (জিনসে বাশার) সৃষ্টির ধাতু হলো পিতা মাতার মিলিত বীর্য এবং তা পিতা মাতার শরীরেই অনস্তিত্ব (عدم) থেকে অস্তিত্বে (وجود) আসে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রকৃত যাত বা সত্ত্বাও যদি মূলতঃ ‘জাতীতে মানুষ তথা জিনসে বাশার’ হয় তাহলে কুরআন অনুযায়ী নবীজীর সৃষ্টির ধাতুও পিতা-মাতার মিশ্রিত নাপাক মনী ধরতে হবে এবং তাঁর ‘হযরত আদম থেকে মা আমেনা পর্যন্ত স্থানান্তর হওয়া’কে অস্বীকার করতে হবে। (নাউযুবিল্লাহ!) আর এখানে ঈসা আলাইহিস সালাম এর সৃষ্টির স্বতন্ত্র বিষয়টিকে এক্ষেত্রে কিয়াস করার অবকাশ নাই এজন্য যে, তাঁর পবিত্র শরীরও সৃষ্টি হয়েছে মা মরিয়মের গর্ভেই জিব্রাইলের ফুৎকারের মাধ্যমে, পূর্ব পুরুষ হতে স্থানান্তর বা প্রত্যাবর্তন হয়ে আসেনি। এটি আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ এক কুদরতের প্রমান এবং বিশেষ কিছু বিরোদ্ধবাদীদেরকে আল্লাহ প্রদত্ত জবাব মাত্র।<br />অতএব একথা নির্দিধায় মানতে হবে যে, নবীজীর হাকীকত বা প্রকৃত সত্ত্বা মানব জাতীর অর্ন্তভূক্ত নয় তথা হাকীকতে মুহাম্মদী ‘জাতীতে মানুষ (জিনসে বাশার)’ নন। তাঁর প্রকৃত সত্ত্বা কি, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না । যেমন নবীজী হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন-<br />يا ابا بكر والذي بعثني بالحق لم يعلمني حقيقة غير ربي<br />‘হে আবু বকর, ঐ সত্ত্বার কসম! যিনি আমাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমার হাকীকত (আমার প্রকৃত জাত-جنس এবং সত্ত্বা-ذات) আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। (ইমাম ফাসী, মাতালিউল মাসরাত: ১২৯; আল্লামা ইউসূফ নাবহানী, জাওয়াহিরুল বিহার: ২/১৫; শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেছে দেহলভী, শারহু ফাতহিল গায়ব: ১/৩৪০, আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা: ৯)<br /><br />যেখানে নবীজীর প্রকৃত সত্ত্বা সর্ম্পকে হযরত আবু বকরকে নবীজী বলেন যে- আল্লাহ ছাড়া কেহ জানেন না, সেখানে আমরা কে যে- নবীজীর হাকীকী জিনস বা জাত কে মানুষ বলতে পারব?<br /><br />চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ‘লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বলেন-<br />ﻋﺎﻟﻢ ﻣﯿﮟ ﺫﺍﺕ ﺭﺳﻮﻝ ﮐﻮ ﺗﻮ ﮐﻮئى ﭘﮩﭽﺎﻧﺘﺎ ﻧﮩﯿﮟ<br />‘সৃষ্টিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার সত্ত্বা বা যাতকে তো কেউই চিনে না।’ (আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা)<br /><br /><br /></div>

হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাকীকত কি

হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাকীকত কি!! ---------------------- এছাড়াও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘তারকা’র আকৃতিতে দী...

Read more »

আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন --- দেওবন্দীদের কিতাব থেকে

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন --- দেওবন্দীদের কিতাব থেকে<br /><br />==============================================<br /><br />ফতওয়ায়ে দেওবন্দ - ২খন্ড ১০৬ ও ১০৭ পৃষ্ঠা<br />سوال : اذان می بوقت شھادتین انگوھے کو بوسہ دینا کیساھے جو شخص اس سے منع کرے اس کی اقتدا نماز میی جائز جو انگو ھون کو بوسہ نہ ھے یا نھی اور دے وہ گنھگار ھے یا نہ اگر بو سہ دینا مستحب یا سنت ھے تو اس کی دلیل کیا ھے مستحب یا سنت ھے تو اس کی دلیل کیا ھے<br />================<br />: استحیاب تقبیل ابھامین کی دلیل الجواب سمی کی یہ عبارت ھے یستحب ان یقال عند سمع الاولی من الشھادتین صلی اللہ علیک یا رسول اللہ و عند الثانیۃ منھا قرۃ عینی بك یا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم ثم یقول اللھم متعنی بالسمع و البصر بعد وضع ظفری الابھا مین علی العینین فانہ علیہ السلام یقون قاعد الہ فی الجنۃ کذافی کنذ العباد و قھستا نی و نحوہ فی الفتاوی الصوفیۃ و فی کتاب الفردوس من قبل ظفری ابھا میہ عند سماع اشھد ان محمدا رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم فی لاذ ان انا قائدہ ومدخلہ فی صفوف الجنۃ وتمامہ فی حواشی الجر الرملی عن المقاصد اغسنۃ للسخاوی و ذکر ذلک الجراحی و اطال ثمے قال و لم یصح فی المرفوع من کل ھذا شئی-<br />اخر عبارت شامی سے یہ بھی واضح ھوا کہ کوئی مفوع حدیث صحیح اس باے مین نھیی ھے غیات بہ کہ ضعیف حدیث پر بھی فضائل اعمال مین عمل کرنا درست ھے مگر اس کی شرط یہ ھے کہ اس فعل کو مسنون نہ سمجہ- کذا فی الدرالمختار پس چونکے بعض عوام کو اس مین غلو ھوگیا اور اس کو سنت سمجہ کر گرتے ھین اور تارک- پر طعن و ملامت کر تے ھین اس لئے ترک اس کا علماء محققین احوط سمچہ ھین اور رہ شخص گناہ گار<br />نھیی اقتدائی اس کی درست ھے-<br /><br />আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন করা কি? যে ব্যক্তি উহা হতে কাউকে ফিরিয়ে রাখে তার পিছনে নামাযের ইত্তেদা করা কী জায়িয অথবা না? এবং যে ব্যক্তি অঙ্গুলী চুম্বন না করে ঐ ব্যক্তি কী গুনাহগার হবে অথবা না? অঙ্গুলী চুম্বন করা যদি মুস্তাহাব বা সুন্নাত হয় তাহলে ইহার দলীল কিরূপ?<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-YNAjTsbs8J4/XRxBeoY3-SI/AAAAAAAAGbI/Woq55vMDOYIUKFV644PBCGoB4MufbvX5gCLcBGAs/s1600/FB_IMG_1562132727847.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="800" data-original-width="450" height="320" src="https://1.bp.blogspot.com/-YNAjTsbs8J4/XRxBeoY3-SI/AAAAAAAAGbI/Woq55vMDOYIUKFV644PBCGoB4MufbvX5gCLcBGAs/s320/FB_IMG_1562132727847.jpg" width="180" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-y0yEwEf8BGE/XRxBiOBglGI/AAAAAAAAGbM/k8aBsK6KfLYzrK8RKiughXuCKm0wPJhugCLcBGAs/s1600/FB_IMG_1562132734758.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="800" data-original-width="450" height="320" src="https://1.bp.blogspot.com/-y0yEwEf8BGE/XRxBiOBglGI/AAAAAAAAGbM/k8aBsK6KfLYzrK8RKiughXuCKm0wPJhugCLcBGAs/s320/FB_IMG_1562132734758.jpg" width="180" /></a></div><br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-AhWR11wMbLc/XRxBmJCtrfI/AAAAAAAAGbQ/B0goNLzPy38Pq8pw3JH01lgwsLeZ9k-FgCLcBGAs/s1600/FB_IMG_1562132739699.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="800" data-original-width="450" height="320" src="https://1.bp.blogspot.com/-AhWR11wMbLc/XRxBmJCtrfI/AAAAAAAAGbQ/B0goNLzPy38Pq8pw3JH01lgwsLeZ9k-FgCLcBGAs/s320/FB_IMG_1562132739699.jpg" width="180" /></a></div><br /><br />উত্তর: উভয় বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন দেয়া মুস্তাহাব। ইহার দলীল হলো শামী কিতাবের এই ইবারত। আযানের সময় শাহাদাতে ছানিয়া অর্থাৎ আশহাদুআন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ প্রথমবার শুনে<br />صلى الله عليك يا رسول الله বলা এবং দ্বিতীয়বার শুনে قرة عينى بك يا رسول الله বলা মুস্তাহাব; তৎপর দৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখ চুম্বন করে।<br />اللهم متعنى بالسمع والبصر বলা মুস্তাহাব এরূপ আমলকারীকে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে টেনে বেহেশতে নিয়ে যাবেন। ইহা ইমাম কাহেসতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কানযুল ইবাদে উল্লেখ আছে। অনুরূপভাবে ফতওয়ায়ে সুফীয়াতে ও কিতাবুল ফিরদাউসে উল্লেখ আছে, যে ব্যক্তি আযানে<br />اشهد ان محمدا رسول الله শুনে আপন বৃদ্ধাঙ্গুলীর নখ চুম্বন করে তার সম্পর্কে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি তাকে টেনে বেহেশতের কাতারে প্রবেশ করাবো। উহার বিশদ বিবরণ ইমাম সাখাবীর মাকাসিদুল হাসনাহ হতে বাহরুর রায়েকের হাশিয়ায়ে মলীতে বর্ণনা করা হয়েছে। ইসমাইল জারাহী অনুরূপ তা পোষন করেছেন, তবে তিনি বাড়িয়ে ইহাও বলেছেন যে, এ ব্যাপারে বর্ণিত কোন মরফু হাদীছ শরীফ ও সহীহ ....... প্রমাণিত হয় নাই। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ২খন্ড ১০৬ ও ১০৭ পৃষ্ঠ)<br /><br />শামী কিতাবের শেষোক্ত এবারতে ইহাও বর্ণনা করা হয়েছে যে, এ ব্যাপারে কোন মরফু সহীহ হাদীছ নেই দ্বঈফ হাদীছ শরীফও ফজিলতের আমলসমূহে আমল করা যায়েয, কিন্তু শর্ত হলো উক্ত কাজকে সুন্নাত অর্থাৎ সুন্নতে মুয়াকাদা মনে করা যাবে না। ইহা দররুল মোখতার কিতাবে উল্লেখ আছে। সুতরাং যেহেতু কোন কোন ক্ষেত্রে এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ী হয়ে গেছে আর ইহাকে সুন্নত অর্থাৎ সুন্নতে মোয়াক্কাদাও মনে করে থাকে এবং ইহার তরককারীকে তিরষ্কৃত ধিকৃত করে থাকে এজন্য এই আমল হতে বিরত থাকাকে ওলামায়ে মোকাক্কেকীন নাবধানতা অবলম্বন মনে করে থাকেন আর তরককারী গুনাহগার হবে না, আর এ ব্যক্তির পিছনে এক্তেদা করা জায়িয। (ফতওয়ায়ে দেওব্দ ২খন্ড ১০৬ ও ১০৭ পৃষ্ঠা।<br /><br /><br /></div>

আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন --- দেওবন্দীদের কিতাব থেকে

আযানে আশহাদু আন্না মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ উচ্চারণের সময় অঙ্গুলী চুম্বন --- দেওবন্দীদের কিতাব থেকে ============================================...

Read more »

মুনাফিক কারা?

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥<br /><br />মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প্রতারণা ইত্যাদি।<br /><br />মুনাফিকি তথা ভন্ডামী বা কপটতা একটি মারাত্মক রোগ। বিশ্বাসগত দিক থেকে কুফরির নিকৃষ্টতম দিক হলো মুনাফিকি। মুনাফিকদের বিষয়ে পবিত্র কোরআনে শতাধিক আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে এবং মুসলিমদের জন্য অমুসলিম শত্রুর তুলনায় মুনাফিকরা অধিকতর বেশি বিপজ্জনক শত্রু।<br /><br />মুনাফিকরা মূলত দুমুখো সাপ যার অন্তরে কুফরি থাকে এবং মুখে নিজেকে মুমিন বলে দাবি করে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এরা কাফিরও না আবার মুমিনও না বরং এর মাঝামাঝিতে এদের অবস্থান। এরা ইসলাম তথা পুরো মানবসমাজের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ।<br /><br />মুনাফিক সম্পর্কে পবিত্র কোরআন মাজীদের সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক বলেছেন যে, ‘হে প্রিয় নবী! জিহাদ করুন অবিশ্বাসী ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে, আর কঠোর হন তাদের প্রতি। তাদের শেষ আবাসস্থল হচ্ছে জাহান্নাম এবং মন্দ সেই গন্তব্যস্থান!’<br /><br />( সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত – ৭৩)<br /><br />প্রথমত, ‘মুনাফিক’ শব্দটির উৎপত্তি ‘নিফাক’ শব্দমূল থেকে, যার অর্থ হচ্ছে ভেতরে কোনো কিছু গোপন রেখে বিপরীত কথা বা কাজের প্রকাশ। ইসলামী পরিভাষায় মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি এবং মুখে ও প্রকাশ্যে ইসলাম প্রকাশ করে বেড়ায়। মুনাফিকদের এই কাজের ব্যাখ্যায় পবিত্র কোরআনে এক আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা আল্লাহ ও মুমিনদের ধোঁকা দিতে চায়, তারা আসলে নিজেদের সঙ্গেই প্রতারণা করছে, কিন্তু উপলব্ধি করতে পারছে না।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-৯)<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-u6f1ACkQNLQ/XRxAreQATEI/AAAAAAAAGbA/tXg6ZtS0L8oWwwteb0dlOWPrrwNJYVZUwCLcBGAs/s1600/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="832" data-original-width="1600" height="166" src="https://1.bp.blogspot.com/-u6f1ACkQNLQ/XRxAreQATEI/AAAAAAAAGbA/tXg6ZtS0L8oWwwteb0dlOWPrrwNJYVZUwCLcBGAs/s320/PicsArt_07-03-11.42.35.jpg" width="320" /></a></div><br />দ্বিতীয়ত, মুনাফিক শব্দটির উদ্ভব হয়েছে নফক শব্দ থেকে যার অর্থ- ছিদ্র, গর্ত, বের হওয়া, সুড়ঙ্গ, খরচ করা, ব্যয় করা। কারো কারো মতে, ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বা পাহাড়ি ইঁদুর থেকে মুনাফিক শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। পাহাড়ি ইঁদুরকে ‘নাফেকুল ইয়ারবু’ বলা হয়। কারণ এরা উভয় অত্যন্ত ধূর্ত হয়, এদের সহজে চিন্হিতক করা যায় না। মুনাফিক দুই ধরনের হয় যথা:<br /><br />(১) বিশ্বাসগত মুনাফিকি,<br />(২) কর্মগত মুনাফিকি।<br /><br />যে মুনাফিকরা অন্তরে কুফরি রেখে নিজেকে মুসলমান বলে দাবি করে তারা হলো বিশ্বাসগত মুনাফিকি।<br /><br />এবং কর্মগত মুনাফিক হচ্ছে তারা যারা -আমানতের খিয়ানত করে, মিথ্যা বলে, ওয়াদা ভঙ্গ করে, ঝগড়ার সময় গালিগালাজ করে ইত্যাদি ।<br /><br />প্রিয়নবী হজরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, চারটি স্বভাব যার মধ্যে আছে সে খাঁটি মুনাফিক। আর যার মধ্যে এই চারটির একটি স্বভাবও থাকবে সেও মুনাফিকের কাতারে থাকবে। স্বভাব চারটি হলো:<br />(১) আমানতের খিয়ানতকারী,<br />(২) মিথ্যাবাদী,<br />(৩) ওয়াদা ভঙ্গকারী,<br />(৪) ঝগড়ার সময় গাল-মন্দ কারী।<br /><br />(সহীহ বুখারি, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)<br /><br />এগুলো ছাড়াও মুনাফিকদের আরো কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদের চলাফেরা, কথা-বার্তার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। নিচে বৈশিষ্ট্যগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো:<br /><br />(১) মুনাফিকরা মহান আল্লাহ’র মুমিন বান্দাদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ, হাসি তামাশা করে,<br /><br />(২) মুনাফিকরা অহংকারী হয় যা তাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়,<br /><br />(৩) মিথ্যা বলতে বলতে এদের হ্রদয় মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়,<br /><br />(৪) মুমিনদের মূর্খ আখ্যা দেয়া এবং ইসলামের পথে ব্যয়ে বাধা দান করে,<br /><br />(৫) পবিত্র কোরআনে আয়াত সমূহ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে,<br /><br />(৬) অন্যের সম্পদ হরণ করে,<br /><br />(৭) মানুষের সঙ্গে বিনা কারণে বিবাদের জড়ায়,<br /><br />(৮) কাফেরদের সঙ্গে সখ্যতা থাকে,<br /><br />(৯) মহান আল্লাহ’র সঙ্গে বিদ্রোহ করে এবং ইবাদতের অলসতা করে,<br /><br />(১০) অনিশ্চয়তা বা দোটানায় ভোগে এবং মুমিন দের সঙ্গে ধোঁকাবাজী করে,<br /><br />(১১) ভীত, কাপুরুষতা, অস্থিরতা ইত্যাদি এদের মধ্যে লক্ষনীয়।<br /><br />মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদীস সমূহতে কঠিন বর্ণনা দেয়া আছে। ইহকালে মুনাফিকরা সম্মানের অধিকারী হতে পারেনা, সাড়াজীবন অপবাদ, ঘৃণা, অসম্মান, এইসব নিয়েই বেঁচে থাকে হয় এবং মৃত্যুর পরেও ভোগ করতে হয় জাহান্নামের কঠিন আযাব। মুনাফিকদের শাস্তি সম্পর্কে ইসলামের পবিত্র ধর্মীয় কিতাব পবিত্র আল কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন-<br /><br />‘নিশ্চয়ই মুনাফিকদের অবস্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তর।’ (সুরা: নিসা, আয়াত: ১৪৫)<br /><br />এছাড়াও সূরা আত-তাওবাহতে মহান আল্লাহ পাক ওয়াদা করেছেন যে, ‘মুনাফিক পুরুষ, নারী এবং কাফেরদের জন্য রয়েছে দোজগের আগুন এবং সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। সেটাই তাদের জন্যে যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে রয়েছে চিরস্থায়ী আযাব।’<br /><br />(সূরা: আত-তাওবাহ, আয়াত: ৬৮)<br /><br />মুনাফিকদের মৃত্যুর পরে তাদের জানাযা পড়া নিয়ে রাসূল  ﷺ এর একটি হাদীসও বর্ণিত আছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন যে- আব্দুল্লাহ বিন উবাই নামক মুনাফিক নেতা যখন মৃত্যু বরণ করলেন তখন তার ছেলে আব্দুল্লাহ রাসূলুল্লাহ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বলল যে, হে রাসূল আপনার পরিধেয় কাপড়টি চাই আমার পিতার কাফনের কাপড় হিসেবে এবং আপনি আমার পিতার জানাযার নামাজ পড়াবেন ও তার আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করবেন।<br /><br />এ কথা শুনে রাসূল তার কাপড় দিলেন এবং জানাযার নামাজ পড়ানোর জন্য যথা সময়ে প্রস্তুতি নিলেন। এই কথা হজরত ওমর (রা.) শোনা মাত্র এসে রাসূলুল্লাহর জামা টেনে ধরলেন এবং বললেন হে রাসূল, মুনাফিকদের জানাযা পড়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে নিষেধ করেননি কি? তখন রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন দোয়া পড়া না পড়া উভয় আমার ইচ্ছা, আল্লাহ পাক এই ব্যাপারে আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এই কথা বলে রাসূল আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের জানাযা পড়ালেন।<br /><br />এই ঘটনার পরে মহান আল্লাহ পাকের তরফ থেকে রাসূল  ﷺ  এর কাছে ওহী নাজিল হলো যে, ‘হে রাসূল  ﷺ , মুনাফিকদের কেউ মারা গেলে আপনি তাদের জানাযার নামাজ আদায় করবেন না এমনকি তাদের কবরের পাশেও দাঁড়াবেন না।’<br /><br />(সূরা: আত -তাওবাহ, আয়াত: ৮৪)<br /><br />মুনাফিক নামক এই ব্যাধি দূর হলে একটি সুন্দর ও আদর্শ সমাজ এবং রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হবে।<br /><br />পরিশেষে মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা থাকবে যেনো তিনি আমাদের সকলকে হেদায়েত করেন এবং মুনাফিকি সকল কাজ থেকে আমাদের হেফাজত করেন।<br /><br /></div>

মুনাফিক কারা?

🌀 মুনাফিকের পরিচিতি ও পরিণতি 👥 মুনাফিক শব্দটি এসেছে আরবি থেকে যার বহু বচন হচ্ছে মুনাফিকুন। ইসলামী পরিভাষায় এর অর্থ হচ্ছে কপটতা, ভন্ডামী, প...

Read more »

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">بسم الله الرحمن الرحيم<br /><br />চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান<br /><br />ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত্যন্ত যৌক্তিক ও বাস্তবমুখী। চির সুন্দর,সহজ-সরল ও সর্বোপযোগী।<br /><br />ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে, নামাজ। আল্লাহপাক যা নবীজী (সা.) কে মেরাজের রাতে পুরস্কার হিসেবে দিয়েছিলেন। নামাজ মহান প্রভুর দরবারে দীনতা, নিয়ামতরাজির প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং তাঁর শাহী দরবারে বান্দার নানাবিদ চাহিদা পূরণের মিনতি জানানোর মাধ্যম। ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। তাই ঈমানের পরে, সকল ইবাদতের ঊর্ধ্বে তার স্থান। যে নামাজ কায়েম করল, সে দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করল। আর যে নামাজ ধ্বংস করল, সে দ্বীন ধ্বংস করল। অর্থাৎ যার নামাজ ঠিক তার দ্বীন ঠিক। আর যার নামাজ বরবাদ তার দ্বীন বরবাদ। অতএব, যে ব্যক্তির নামাজ যত সুন্দর হবে, তার দুনিয়া-আখেরাতের জিন্দেগীও তত সুন্দর ও সফল হবে।<br /><br />তবে নামাজের এ অসীম গুরুত্বের পাশাপাশি শরীয়তের আরেকটি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। আর তা হচ্ছে, সকল ক্ষেত্রে সহজীকরণ। আল্লাহ পাক সাধ্যাতীত নির্দেশ দেন না, বরং যা সহজ তাই আল্লাহর নিকট প্রিয়।<br /><br />ইরশাদ হয়েছে,<br /> لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا<br />অর্থাৎ- “আল্লাহতাআলা সাধ্যের বাহিরে কোন দায়িত্ব কারও উপর চাপিয়ে দেন না”। -সূরা বাকারা : ২৮৬<br /><br />ইরশাদ হয়েছে, <br />يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ<br />অর্থাৎ “আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান, তোমাদের জন্য  কঠিন করতে চান না”। -সূরা বাকারা : ১৮৫<br /><br />অতএব, অবহেলা প্রদর্শন না করে নামাজের প্রতি পূর্ণ মর্যাদা ও গুরুত্ব উপলব্ধি করা যেমন আবশ্যক, তার সাথে নামাজকে সাধ্যাতীত না করে, বরং সহজ করে দেখাও আবশ্যক। এ দুয়ের মাঝেই রয়েছে সীরাতে মুস্তাকীম। এই মৌলিক আলোচনার পর চেয়ারে বসে নামাজ আদায়ের কয়েকটি বিধান নিচে তুলে ধরা হলো—<br /><br />১. কিয়াম, রুকু ও সিজদা- নামাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়; যা নামাজের রুকন বা ফরযের অন্তর্ভুক্ত। কেউ যদি এই রুকনগুলো সঠিকভাবে আদায় করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও অবহেলা করে ছেড়ে দেয় বা চেয়ারে বসে ইশারায় নামাজ আদায় করে, তার নামাজ আদায় হবে না। আর কেউ যদি কোন রুকন প্রকৃতপক্ষেই আদায় করতে সক্ষম না হয় বরং শরীয়তের দৃষ্টিতে সে মাযুর (অক্ষম) সাব্যস্ত হয়, তাহলে সে এ রুকনটি ইশারার মাধ্যমে আদায় করে নিবে। এতে তার নামাজ পরিপূর্ণ বলে গণ্য হবে এবং সে পূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। -রদ্দুল মুহতার : ১/৪৪২<br /><br />হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) বলেন-<br /><br />كانت بي بواسير فسألت النبي صلى الله عليه وسلم عن الصلاة فقال صل قائما فإن لم تستطع فقاعدا فإن لم تستطع فعلى جنب<br /> -সহিহ বোখারি; হাদিস নং- ১১১৭)<br /><br />২. সুতরাং কেউ যদি দাঁড়াতে সক্ষম না হয়, কিন্তু মাটিতে বসে সিজদা করতে সক্ষম, তাহলে তাকে মাটিতে বসে সিজদা করে নামাজ আদায় করতে হবে। চেয়ারে বসে ইশারা করে রুকু সিজদা করলে তার নামাজ আদায় হবে না।<br /><br />আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (রাহ.) বলেন-<br /><br />ولايصح الإيماء بهما – ( الركوع والسجود) –  مع القدرة عليهما، بل شرطه تعذرهما۔<br /><br />-রদ্দুল মুহতার ২/৯৯, এইচ. এম. সাঈদ<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-bCq7lzz8xVk/XRw6qezsZ6I/AAAAAAAAGa0/45jT_ZBs5Rs8_DHRO7EJK09x8OpFG7d0gCEwYBhgL/s1600/images-1.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="350" data-original-width="564" height="198" src="https://1.bp.blogspot.com/-bCq7lzz8xVk/XRw6qezsZ6I/AAAAAAAAGa0/45jT_ZBs5Rs8_DHRO7EJK09x8OpFG7d0gCEwYBhgL/s320/images-1.jpg" width="320" /></a></div><br /><br /> ৩. তবে যে ব্যক্তি দাঁড়াতেও সক্ষম না এবং জায়নামাজে বসে সিজদা করতেও সক্ষম না, চেয়ার বা নীচে বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা করা ছাড়া তার উপায় নেই, এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিধান হল, যথাসম্ভব জায়নামাজে বসেই ইশারা করার চেষ্টা করবে। এটাই উত্তম। কারণ বৈঠকে অধিক বিনয় প্রকাশ পায় এবং বৈঠক সিজদার নিকটবর্তী অবস্থান। তবে কেউ যদি নীচে বসতে সক্ষম না হয়, কিংবা এতে তার অধিক কষ্ট হয়, এমন ব্যক্তির জন্যে চেয়ারে বসে ইশারায় নামায আদায় করতে কোনো বাধা নেই। নিঃসন্দেহে তার নামাজ বিশুদ্ধভাবে আদায় হয়ে যাবে।<br /><br />ইমাম আল মারগীনানী (রাহ.) বলেন- <br />والأفضل هو الإيماء قاعدا ، لأنه أشبه بالسجود<br />(আল-হিদায়া- ১/১৬২)।<br /><br />হযরত ইবনে আবী লায়লা (রাহ.) রর্ণনা করেন-<br /> عن عطاء قال في صلاة القاعد يقعد كيف شاء<br />(মুসান্নাফু ইবনি আবী শায়বা ৬/৬৬, হাদীস নং- ৮৮৭৩)।<br /><br />ইমাম সারাখসী (রাহ.) বলেন-<br /><br />والمصلى قاعدا تطوعا أو فريضة بعذر يتربع ويقعد كيف شاء من غير كراهة إن شاء محتبيا وإن شاء متربعا لأنه لما جاز له ترك أصلالقيام فترك صفة القعود أولى. (جـ 1 صـ 902)<br /><br />৪. যে ব্যক্তি দাঁড়াতে এবং বসতে সক্ষম কিন্তু সিজদা করতে সক্ষম না, সিজদা তাকে ইশারায় করতে হয়। এমন ব্যক্তির জন্য কিয়ামের ফরয আদায়ের লক্ষ্যে দাঁড়ানো আবশ্যক, না বসে নামাজ পড়লেও নামায আদায় হবে। এতে দু’টি মত রয়েছে।<br /><br />আমাদের হানাফি মাজহাবের প্রসিদ্ধ মত হল, তার জন্য দাঁড়ানো আবশ্যক নয়; বসে পড়লেও তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে অনেকের অভিমত হচ্ছে, যতটুকু সম্ভব দাঁড়িয়ে কিয়ামের ফরয আদায় করতে হবে। তারপর সম্ভব হলে রুকু করবে। তারপর তার জন্য দুটি পন্থা রয়েছে, যে কোন একটি অবলম্বন করতে পারবে-<br />এক. বসে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। এটা উত্তম।<br />দুই. দাঁড়িয়ে ইশারার মাধ্যমে সিজদা আদায় করা। তখন সিজদার জন্য মাথাকে রুকুর চেয়ে একটু বেশি নিচু করবে।<br /><br />ইমাম আইনী (রাহ.) উল্লেখ করেন-<br /><br />وعن أبي جعفر الطحاوي : ولو قدر على بعض القيام ولو قدر آية أو تكبيرة يقوم ذلك القدر وإن عجز عن ذلك قعد، وإن لم يفعل ذلك خفتأن تفسد صلاته، هذا هو المذهب، ولا يروى عن أصحابنا خلافه، وكذا إذا عجز عن القعود وقدر على الاتكاء أو الاستناد إلى إنسان أو حائطأو وسادة لا يجزئه إلا كذلك. ولو استلقى لا يجزئه <br /><br />-আল বেনায়া- ২/৬৩৫, মাকতাবা নাঈমিয়া<br /><br />উভয় মতানুসারে বসার ক্ষেত্রে জায়নামায বা নীচে বসা আবশ্যক, নাকি চেয়ারে বসতে পারবে? এ বিধানটি তিন নম্বরে উল্লেখ করা হয়েছে। -রদ্দুল মুহতার- ২/৯৮, ইলাউস সুনান; ৭/১৯৮ দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা<br /><br />৫. এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কে সক্ষম, কে অক্ষম, কে মাজুর বা কতটুক মাজুর এবং কে মাজুর না, সে বিষয়টি নির্ণয় করা। এ ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত কথা হচ্ছে, বয়স্ক এবং প্রকাশ্যে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজেদের অপারগতা সম্পর্কে অনেকটা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যদি এ সংক্রান্ত মাসআলা তাদের জানা থাকে। তবে এমন অভিজ্ঞ ব্যক্তি খুবই কম রয়েছেন। তাই উত্তম পন্থা হচ্ছে, নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিজ্ঞ-অভিজ্ঞ মুফতি সাহেবদের শরণাপন্ন হয়ে জেনে নেয়া।<br /><br />আর যারা বাহ্যিকভাবে সুস্থ, কিন্তু বিশেষ রোগের কারণে বিশেষজ্ঞ বিশ্বস্ত ডাক্তার তাদেরকে রুকু সিজদা করতে নিষেধ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রেও মাজুরের হুকুম প্রযোজ্য হবে। তবে তাদের জন্যও উচিত হবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বিজ্ঞ মুফতিদের শরণাপন্ন হওয়া।<br /><br />৬. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যারা সঠিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার অনুমতি পেয়েছেন বা চেয়ার ব্যতীত যাদের কোনো বিকল্প নেই, তারা মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়বেন, নাকি মসজিদের শোভা নষ্ট হবে এই অজুহাতে মসজিদ ছেড়ে ঘরে নামায আদায় করবেন?<br /><br />এ ক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিতে সঠিক মত হলো- তারা মসজিদে গিয়েই জামাতে শরীক হয়ে নামাজ আদায় করবেন, যদিও তারা চেয়ার ব্যবহার করতে বাধ্য। কারণ, ফরয নামাজ আদায় করার আসল রূপই হচ্ছে, মসজিদে গিয়ে সবাই মিলে জামাত করে নামাজ আদায় করা। সম্মিলিতভাবে বন্দেগি করা ও দাসত্ব প্রকাশ করা আল্লাহর নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয়। তাই মসজিদের জামাতের গুরুত্ব অপরিসীম। এ বিষয়ে একাধিক আয়াত ও অসংখ্য হাদীস রয়েছে। যেমন- <br />وَارْكَعوا مَعَ الرَّاكِعِينَ<br />(সূরা বাকারা: ৪৩)<br />وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ<br /> -সূরা শুআরা- ২১৯<br /><br />عن أبي هريرة : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: والذي نفسي بيده لقد هممت أن آمر بحطب، فيحطب، ثم آمر بالصلاة، فيؤذن لها،ثم آمر رجلا فيؤم الناس، ثم أخالف إلى رجال، فأحرق عليهم بيوتهم، والذي نفسي بيده لو يعلم أحدهم، أنه يجد عرقا سمينا، أو مرماتينحسنتين، لشهد العشاء<br />(সহিহ বোখারি : হাদিস নং-৬৪৪<br /><br />عن أبي هريرة، قال : أتى النبي صلى الله عليه وسلم رجل أعمى، فقال: يا رسول الله، إنه ليس لي قائد يقودني إلى المسجد، فسأل رسول اللهصلى الله عليه وسلم أن يرخص له، فيصلي في بيته، فرخص له، فلما ولى، دعاه، فقال: هل تسمع النداء بالصلاة؟ قال: نعم، قال: فأجب <br /><br />সহিহ মুসলিম : হাদিস নং- ৬৫৩<br /><br />তাই যারা জামাতে উপস্থিত হতে পারে, তাদের জন্য এর বিকল্প নেই। কেননা মসজিদের নামাজে যে প্রাণ থাকে, ঘরের নামাজে সেটা থাকে না। তাছাড়া এ ধরণের বয়োবৃদ্ধ অসুস্থ রোগীর কষ্ট করে জামাতে উপস্থিত হওয়া, অন্যদেরকে মসজিদে গিয়ে জামাতে শরীক হতে উৎসাহী করবে এবং গাফেল লোকদের মসজিদমুখী হতে প্রেরণা যোগাবে। তাই এমন লোকদের মসজিদের জামাতে উপস্থিতি আল্লাহ তাআলা, ফেরেশতা ও সকল সৃষ্টির কাছে পছন্দনীয়।<br /><br /><br />তবে যারা আন্তরিকতার সাথে এ ধরনের লোকদের মসজিদে গিয়ে চেয়ারে বসে নামায পড়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন তাদের আলোচনা থেকে বোঝা যায়, তাদের অপছন্দের উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্য। যা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।<br /><br />এর উত্তরে বলব, অপারগতা ও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য অবৈধতার কারণ নয়। অর্থাৎ- মানুষ যা করতে বাধ্য, যা না হলে মানুষের জন্য কষ্টের কারণ হবে, এমন বিষয়ে সাদৃশ্যের বিধান প্রযোজ্য নয়। কারণ এ সকল বিষয় কারো সাদৃশ্য গ্রহণের জন্য করা হয় না, বরং প্রয়োজনে করা হয়। তাই এগুলোকে সাদৃশ্যের কারণে হারাম বলা যাবে না। তাছাড়া মূল রহস্য বা কারণ না বুঝে শুধু সাদৃশ্য দেখেই যদি ঢালাওভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়গুলিকে হারাম বলে দেওয়া হয়, তাহলে খাওয়া-দাওয়াসহ জীবন ধারণের অনেক মৌলিক বিষয়ও তার আওতায় চলে আসবে। কারণ, এসব বিষয় মৌলিকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ। আর এ সব হারাম হয়ে গেলে মানব জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়বে। তাই যে সকল বিষয় আবশ্যক, প্রয়োজনীয় ও উপকারী নয় বা যে সকল মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পথ ও পন্থা একাধিক হতে পারে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সাদৃশ্যপূর্ণ রূপরেখা বর্জন করে সাদৃশ্যহীন<br />পন্থা অবলম্বনের নির্দেশ করা হয়। আল্লামা ইবনে নুজাইম (রাহ.) বলেন-<br /><br />و(يكفّر) بوضع قلنسوة المجوسي على رأسه على الصحيح إلا لضرورة دفع الحر أو البرد، وبِشدّ الزنار في وسطه إلا إذا فعل ذلك خديعةفي الحرب وطليعة للمسلمين<br />(আল-বাহরুর রায়েক ৫/২০৮)<br /><br /> হযরত থানভী  বলেন-<br /><br />كفار كی وضع بلا ضرورت قويہ حسيہ كدفع الحر والبرد يا شرعيہ كخدع اهل الحرب والتجسس للمسلمين افعال كفر سے ہے<br />বাওয়াদিরুন নাওয়াদের- ৪৫৪)।<br /><br />পূর্বের আলোচনায় এ কথা স্পষ্ট হয়েছে যে, নামাজে চেয়ার শুধু প্রয়োজনের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করতে পারবে। আর এটি তখন শরীয়তের দৃষ্টিতে ওজরের অন্তর্ভুক্ত হবে। অতএব, চেয়ারের এই বৈধ ও প্রয়োজনীয় ব্যবহারকে শুধু সাদৃশ্যের অজুহাতে অবৈধ বলা যাবে না।<br /><br />তবে যারা প্রয়োজন ছাড়া নামাজে চেয়ার ব্যবহার করে জেনে না-জেনে এটাকে ফ্যাশনে পরিনত করতে চলেছেন, তাদেরকে এ থেকে বিরত রাখার জন্য এ বিষয়ে সঠিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। ইমাম ও খতিব সাহেবগণ যদি এ বিষয়ে সঠিক মাসআলা তুলে ধরে সময়ে সময়ে আলোচনা করেন, তাহলে চেয়ারের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার আশা করি, বন্ধ হয়ে যাবে। আর যারা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন, তারাও মসজিদে এসে জামাতে শরীক হয়ে আল্লাহর বন্দেগী করার সুযোগ লাভ করবেন।<br /><br />والله اعلم بالصواب<br /><br /><br /></div>

চেয়ারে বসে নামাজ আদায়

بسم الله الرحمن الرحيم চেয়ারে বসে নামায আদায়- মূলনীতি ও কিছু বিধান ইসলাম শাশ্বত, সত্য, স্বভাবজাত ও বাস্তববাদী ধর্ম। ইসলামের প্রতিটি বিধান অত...

Read more »

মদিনা শরীফ যেয়ারতের আদব!

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on">মদিনা শরিফে অবস্থানের আদবসমূহ<br />-লেখক Rabiul Alam<br />মদিনা শরিফে অবস্থানকালে যথাযথ আদব রক্ষা<br />করা প্রয়োজন। সেখানে অবস্থানকালে সংগঠিত<br />ক্ষুদ্রতর বেয়াদবিও ঈমান হরণের কারণ হতে পারে ।<br />কারণ সেখানে অবস্থান করছেন সরকারে দোআলম<br />সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এ সম্পর্কে<br />প্রখ্যাত মুহাদ্দিস হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দেস<br />দেহলভি আলাইহির রাহমাহ বলেন-“এ পবিত্র শহরে<br />অবস্থানকে অবস্থানকারী সৌভাগ্য মনে করবে,<br />মসজিদে নববিতে যথাসাধ্য ইতিকাফে মগ্ন থাকবে।<br />যতদিন অবস্থান করবে,ততদিন সর্বপ্রকার সৎকাজ<br />যেমন দান-খায়রাত,রোযা-নামাজ , দরূদ শরিফ পাঠে<br />মশগুল থাকবে। মসজিদে নববিতে অবস্থানকালে<br />রওজা শরিফ থেকে দৃষ্টি সরাবে না। মসজিদের<br />বাইরে অবস্থান করলে সবুজ গম্বুজের প্রতি<br />বিনয়াবনত দৃষ্টি নিবন্ধ রাখবে,যা বিধানগতভাবে<br />কাবা শরিফের দিকে দৃষ্টিপাতের অনুরূপ। যথাসম্ভব<br />এক রাত হলেও মসজিদে নববিতে ইবাদতের মাধ্যমে<br />রাত জাগরণ করবে ; কেননা এ রাতের মর্যাদা শবে<br />কদরের চেয়েও কম নয়;বরং বেশি। মদিনা শহরের<br />বাসিন্দা নি¤œ স্তরের হোক কিংবা উচ্চ স্তরের<br />হোক সকলকে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখবে একং<br />তাঁদের সাথে কোনরূপ অশোভন আচরণ করবে না;<br />কেননা তাঁরা সর্বাবস্থায় মহান দরবারের সাথে<br />সম্পর্কশীল। মসজিদে প্রবেশ করার পর বের হওয়া<br />পর্যন্ত অন্তর ও বাহ্যিক অঙ্গ-পত্যঙ্গকে অপছন্দনীয় ও<br />শিষ্টাচার বিরোধী কার্যকলাপ থেকে বিরত<br />রাখবে। কেউ অশালীন আচরণ করতে উদ্যত হলে<br />নিজেকে সুকৌশলে সরিয়ে নিবে। একবার হলেও<br />কুরআন শরিফ খতম করতে সচেষ্ট হবে। সম্ভব হলে<br />রাসূলে করিরেম জীবনী গ্রন্থ পাঠ করবে অথবা কেউ<br />পাঠ করলে তা শুনবে ও রওজা শরিফ যিয়ারতের পর<br />জান্নাতুল বাকিতে যিয়ারত করবে।”[আব্দুল হক্ব<br />মুহাদ্দেস দেহলভি, আব্দুল হক মুহাদ্দিস<br />দেহলভি,জযবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবুব.উর্দু<br />অনুবাদ,সাইয়িদ হাকিম ইরফান আলি,(ভারত ঃ<br />রিজভি কুতুবঘর),পৃ.২৫৩-২৫৪]<br /><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://1.bp.blogspot.com/-ME9gENtjaOo/XRuAonJs3rI/AAAAAAAAGaY/FTWLYDgrAy06ReLKx9V5-uG1_CtCDciZQCLcBGAs/s1600/PicsArt_06-30-11.26.24.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="1350" data-original-width="1080" height="320" src="https://1.bp.blogspot.com/-ME9gENtjaOo/XRuAonJs3rI/AAAAAAAAGaY/FTWLYDgrAy06ReLKx9V5-uG1_CtCDciZQCLcBGAs/s320/PicsArt_06-30-11.26.24.jpg" width="256" /></a></div><br />মদিনা সফরের অধিকাংশ<br />সময় হুজুরে করিমের প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠে মশগুল<br />থাকবে এবং অন্তরের অদম্য আগ্রহ পোষণ করবে।<br />মদিনা শরিফে হাঁটা ও চলাফেরার সময় পূর্ণ স্থিরতা<br />ও গাম্ভীর্য সহকারে পা রাখবে ও তুলবে। মদিনা<br />শরিফে প্রবেশ করার পূর্বে উত্তমরূপে গোসল ও<br />মিসওয়াক করা ,সুগন্ধি লাগানো ও উৎকৃষ্ট কাপড়<br />পরিধান করা মুস্তাহাব। সেখানে প্রবেশ করার পর<br />সর্ব প্রথম রওজা শরিফ যিয়ারত করবে। যিয়ারতের<br />উদ্দেশে মসজিদে নববিতে প্রবেশকালে অত্যন্ত<br />বিনয়,স্থিরতা,গম্ভীরতা ও তাজিম বজায় রাখবে<br />এবং বিশ্বাস রাখবে যে,রাসূলে করিম জীবিত<br />রয়েছেনে আর তিনি যিয়ারতকারীর অবস্থা<br />দেখছেন এবং তার কথাবার্তা শুনছেন।<br />যিয়ারতকালে নামাযের মত দাঁড়াবে। রওজা শরিফ<br />থেকে কমপক্ষে তিন / চার হাত দূরে থাকবে। রওজা<br />শরিফে সাজদাহ করা ও উচ্চস্বরে সালাম দেওয়া<br />ইত্যাদি থেকে বিরত থাকবে । কেননা এগুলো<br />শরিয়তবিরোধী কাজ। মসজিদে নববিতে<br />এক মুহূর্তের জন্য প্রবেশ করলেও,প্রবেশকালে (নফল)<br />ইতিকাফের নিয়ত করবে। কোন কোন আলেমের মতে<br />সওয়াব ও ফযিলত হাসিল করার জন্য এটাই<br />যথেষ্ট।” [আব্দুল হক্ব মুহাদ্দেস দেহলভি,প্রাগুক্ত,<br />পৃ.২৪৩-২৫২; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া,(বৈরুত : দারুল<br />ফিকর,১৪১১ হি,) ,খ.১,পৃ.২৬৫] রওজা শরিফের<br />আশেপাশে উচ্চ আওয়াজে কথা বলা নিষিদ্ধ । কারণ<br />আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-<br />ﻳَﺎﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍ ﻟَﺎ ﺗَﺮْﻓَﻌُﻮﺍ ﺃَﺻْﻮَﺍﺗَﻜُﻢْ ﻓَﻮْﻕَ ﺻَﻮْﺕِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﻭَﻟَﺎ ﺗَﺠْﻬَﺮُﻭﺍ ﻟَﻪُ<br />ﺑِﺎﻟْﻘَﻮْﻝِ ﻛَﺠَﻬْﺮِ ﺑَﻌْﻀِﻜُﻢْ ﻟِﺒَﻌْﺾٍ ﺃَﻥْ ﺗَﺤْﺒَﻂَ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟُﻜُﻢْ ﻭَﺃَﻧْﺘُﻢْ ﻟَﺎ ﺗَﺸْﻌُﺮُﻭﻥَ “<br />হে ঈমানদারগণ,তোমরা তোমাদের কণ্ঠস্বর নবি<br />করিম’র কণ্ঠস্বরের চেয়ে উঁচু করো না আর নিজেদের<br />মধ্যে যেভাবে উচ্চস্বরে কথা বল,সেভাবে তাঁর<br />সাথে উচ্চস্বরে কথা বলো না। কারণ এতে<br />তোমাদের আমল নষ্ট হয়ে যাবে,যা তোমরা<br />উপলব্দিও করতে পারবে না।”(আল-কুরআন,সূরা হুজুরাত<br />,আয়াত নং :২) এ আয়াতের হুকম রাসূলে করিমের<br />ওফাতের পরও বহাল থাকবে। এ প্রসঙ্গে ইমাম<br />মালিক ও খলিফা আবু জাফর মনসূরের একটি<br />কথোপকথন প্রণিধানযোগ্য। মসজিদে নববিতে তাঁদের<br />মধ্যে একটি বিষয়ে বিতর্ককালে এক পর্যায়ে<br />খলিফা উচ্চস্বরে কথা বলতে শুরু করলে,ইমাম মালিক<br />বলেন,আমিরুল মুমিনিন,আপনি এ মসজিদে উচ্চস্বরে<br />কথা বলবেন না। কেননা এটি রাসূলে করিমের রওজা<br />শরিফের সন্নিকটে। তারপর তিনি উপরিউক্ত<br />আয়াতসহ অন্য একটি আয়াত উল্লেখ করে বলেন,মনে<br />রাখুন,রাসূলে করিমের সম্মান ওফাতের পরও তেমনি<br />রয়েছে,যেমন জীবদ্দশায় ছিলো। তারপর খলিফা<br />নম্রভাবে জিজ্ঞেস করল,আমি যিয়ারতকালে কাবা<br />শরিফের দিকে মুখ করে দাঁড়াবো নাকি রাসূলে<br />করিমের দিকে ? ইমাম মালিক আলাইহির রাহমাহ<br />বলেন,আপনি তাঁর থেকে মুখ ফিরাবেন না ; বরং তাঁর<br />দিকে মুখ করে দাঁড়াবেন। কেননা তিনি আপনি ও<br />আপনার পিতা আদম আলাইহিস সালামের ওসিলা।<br />[কাজী ইয়াজ ,শিফা শরিফ,(বৈরুত : দারুল ফিকর,১৪০৯<br />হি.) খ.২,পৃ.৪১; মুল্লা আলি ক্বারি,শরহুশ শিফা,(বৈরুত<br />: দারু কুতুবিল ইলমিয়্যাহ,১ ম সংস্করণ,১৪২১<br />হি.) ,খ.২,পৃ.৭২]<br />[বি:দ্র: নফল ইতিকাফের নিয়ম হল- মসজিদে<br />প্রবেশকালে এভাবে নিয়ত করবেন, আমি যতক্ষণ এ<br />মসজিদে অবস্থান করব, ততক্ষণের জন্য আল্লাহর<br />ওয়াস্তে নফল ইতিকাফের নিয়ম করলাম। উল্লেখ্য,<br />নফল ইতিকাফের জন্য রোযা শর্ত নয়।]<br />اللهم صل علي سيدنا محمد و علي ال سيدنا محمد و بارك و سلم.</div>

মদিনা শরীফ যেয়ারতের আদব!

মদিনা শরিফে অবস্থানের আদবসমূহ -লেখক Rabiul Alam মদিনা শরিফে অবস্থানকালে যথাযথ আদব রক্ষা করা প্রয়োজন। সেখানে অবস্থানকালে সংগঠিত ক্ষুদ্রতর বেয়...

Read more »

হজরত তাহির কুর্দি (রহঃ) এর মাজারের বাহিরে পা বের করা

<div dir="ltr" style="text-align: left;" trbidi="on"> <div style="font-family: sans-serif; text-align: left;"> <div dir="ltr"> <div style="text-align: justify;"> <b><a href="http://www.sunnipedia.ml/2019/12/islami-bisswakos.html">ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স </a>ডাউনলোড করুন </b></div> </div> </div> <div style="font-family: sans-serif; text-align: left;"> <div dir="ltr"> <div style="text-align: justify;"> 🌍<b> </b><b><a href="http://bit.ly/35NKDBr">ইসলামী বিশ্বকোষ</a></b><b> Apps Download</b></div> </div> </div> <div style="font-family: sans-serif; text-align: left;"> <div dir="ltr"> <div style="text-align: justify;"> <b> </b><b><a href="http://bit.ly/35NKDBr">http://bit.ly/35NKDBr</a></b><b> [2.6 MB]</b></div> </div> </div> <div dir="ltr" style="font-family: sans-serif;"> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> </div> <div style="font-family: sans-serif; text-align: left;"> <div dir="ltr"> <div style="text-align: justify;"> <img height="200" src="https://lh3.googleusercontent.com/-I89tFCAiWB0/Xf59dkxF_zI/AAAAAAAAAig/0Q6KkdkwK-YImuKNqqlvFN5rOQlpB7WUgCLcBGAsYHQ/s200/PicsArt_12-22-12.52.09.jpg" style="max-width: 90%; padding: 4px;" width="200" /></div> </div> </div> <div style="-webkit-text-stroke-width: 0px; background-color: #ececec; color: #666666; font-family: "Cherry Cream Soda"; font-size: 12px; font-style: normal; font-variant-caps: normal; font-variant-ligatures: normal; font-weight: 700; letter-spacing: normal; orphans: 2; text-align: left; text-decoration-color: initial; text-decoration-style: initial; text-indent: 0px; text-transform: none; white-space: normal; widows: 2; word-spacing: 0px;"> <div class="entry-content clr" itemprop="text" style="-webkit-text-stroke-width: 0px; background-color: white; border: 0px; box-sizing: border-box; color: black; font-family: "open sans", sans-serif; font-size: medium; font-stretch: inherit; font-style: normal; font-variant-caps: normal; font-variant-ligatures: normal; font-weight: 700; letter-spacing: normal; line-height: inherit; margin: 0px 0px 20px; orphans: 2; outline: 0px; padding: 0px; text-align: left; text-decoration-color: initial; text-decoration-style: initial; text-indent: 0px; text-transform: none; vertical-align: baseline; white-space: normal; widows: 2; word-spacing: 0px;"> <div class="elementor elementor-3656 elementor-bc-flex-widget" data-elementor-id="3656" data-elementor-settings="[]" data-elementor-type="post" style="border: 0px; box-sizing: border-box; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; vertical-align: baseline;"> <div class="elementor-inner" style="border: 0px; box-sizing: border-box; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; vertical-align: baseline;"> <div class="elementor-section-wrap" style="border: 0px; box-sizing: border-box; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; vertical-align: baseline;"> <br /> <section class="elementor-element elementor-element-4d7ea513 elementor-section-boxed elementor-section-height-default elementor-section-height-default elementor-section elementor-top-section" data-element_type="section" data-id="4d7ea513" style="border: 0px; box-sizing: border-box; display: block; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; position: relative; vertical-align: baseline;"><div class="elementor-container elementor-column-gap-default" style="border: 0px; box-sizing: border-box; display: flex; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px auto; max-width: 1140px; outline: 0px; padding: 0px; position: relative; vertical-align: baseline;"> <div class="elementor-row" style="border: 0px; box-sizing: border-box; display: flex; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; vertical-align: baseline; width: 353.688px;"> <div class="elementor-element elementor-element-20070d30 elementor-column elementor-col-100 elementor-top-column" data-element_type="column" data-id="20070d30" style="border: 0px; box-sizing: border-box; display: flex; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; min-height: 1px; outline: 0px; padding: 0px; position: relative; vertical-align: baseline; width: 353.688px;"> <div class="elementor-column-wrap elementor-element-populated" style="border: 0px; box-sizing: border-box; display: flex; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 10px; position: relative; vertical-align: baseline; width: 353.688px;"> <div class="elementor-widget-wrap" style="border: 0px; box-sizing: border-box; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; position: relative; vertical-align: baseline; width: 333.688px;"> <div class="elementor-element elementor-element-7cfc6130 elementor-position-left elementor-vertical-align-middle elementor-widget elementor-widget-image-box" data-element_type="widget" data-id="7cfc6130" data-widget_type="image-box.default" style="border: 0px; box-sizing: border-box; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; position: relative; vertical-align: baseline; width: 333.688px; z-index: 0;"> <div class="elementor-widget-container" style="border: 0px; box-shadow: rgba(0, 0, 0, 0.5) 0px 0px 16px 3px; box-sizing: border-box; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; transition: all 0.3s ease 0s, all 0.3s ease 0s, all 0.3s ease 0s, all 0.3s ease 0s, all 0.3s ease 0s, all 0.3s ease 0s; vertical-align: baseline;"> <div class="elementor-image-box-wrapper" style="border: 0px; box-sizing: border-box; font-family: inherit; font-stretch: inherit; font-style: inherit; font-variant: inherit; font-weight: inherit; line-height: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; text-align: center; vertical-align: baseline;"> <div style="color: #020202; font-size: 14px; margin: 0px;"> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> </div> <ul style="font-family: sans-serif; line-height: 1.4; margin: 0.5em 0px; padding: 0px 2.5em; text-align: start;"> <li style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><span style="color: red;"><span style="background-color: #fcfcfc; border: 0px; font-family: "helvetica neue" , "helvetica" , "arial" , sans-serif; font-style: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; vertical-align: baseline;"><span style="color: red; font-size: small;"><a href="http://sdfile.esy.es/Saddam/Book/islahe%20%20bahisti%20jior%201.pdf" rel="nofollow" style="background-color: white; border: 0px; color: #c00901; font-family: inherit; font-style: inherit; margin: 0px; outline: 0px; padding: 0px; text-decoration: none; vertical-align: baseline;" title="Link: http://sdfile.esy.es/Saddam/Book/islahe%20%20bahisti%20jior%201.pdf"><img alt="" src="https://www.sunniduniya.in/uploads/editor/5d/ctq2euxwfo1i.gif" style="background-color: white; border: 0px; cursor: move; font-family: inherit; font-style: inherit; height: auto; margin: 0px; max-width: 100%; outline: 0px; padding: 0px; position: relative; transition: all 0.2s ease-out 0s; vertical-align: baseline;" title="Image: http://www.sunniduniya.in/uploads/editor/5d/ctq2euxwfo1i.gif" /></a></span></span>ইসলামিক PDF লাইব্রেরী</span></span></li> <li style="color: black; margin: 0px 0px 0.25em; padding: 0px; text-align: justify;"><span style="font-weight: bolder;"><a href="https://sunni-encyclopedia.blogspot.com/p/pdf-founded-by-masum-billah-sunny-click.html?m=1" style="background-color: transparent; color: #c00901; text-decoration: none;"><span style="background-color: black; color: yellow; font-size: medium;">লেখকভিত্তিক কিতাব</span></a></span></li> <li style="color: black; margin: 0px 0px 0.25em; padding: 0px; text-align: justify;"><a href="https://sunni-encyclopedia.blogspot.com/p/blog-page_70.html?m=1" style="background-color: transparent; color: #c00901; text-decoration: none;"><span style="font-weight: bolder;"><span style="background-color: black; color: yellow; font-size: medium;">বিষয়ভিত্তিক কিতাব</span></span></a></li> </ul> <div style="color: #020202; font-size: 14px; margin: 0px;"> </div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> </div> </div> </div> </div> </div> </div> </div> </div> </section></div> </div> </div> </div> </div> <div style="text-align: justify;"> হযরত আইয়ুব তাহির কুর্দি (রহ.)'র পায়ের কিছু অংশ আজও মাজারের বাহিরে অক্ষত অবস্থায় দেখা যায়, যেটা এক বিয়াদব গভর্নরকে লাথি মারার জন্য বের করেছিলেন!</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <span style="color: #38761d;">সিরিয়ার দামেস্কেরর মাউন্ট কাশিওনের পাদদেশে "আক্রাদে আইয়ুবিয়া" নামে একটি গ্রামে হযরত বাবা শেখ আইয়ুব তাহির কুর্দি (রহ.)'র মাজার শরীফ অবস্থিত। তিনি একজন সত্যিকারে মহান আল্লাহর মকবুল বান্দা ছিলেন, যিনি হযরত সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী (রহ.)'র সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে শহীদ হয়েছিলেন। মাযারের পাশে তাঁর ছোটভাই হযরত শেখ সালেহ (রহ.)'র মাজারও অবস্থিত। তিনিও একজন সাদাতে আইয়ুবিয়া ছিলেন।</span></div> <div class="separator" style="clear: both; text-align: justify;"> <a href="https://1.bp.blogspot.com/-MqaASXpgYXs/XRrulCRdPyI/AAAAAAAAGZg/wezR9vOaXc8izRLYsmY-yi_jDjT1zkXGgCLcBGAs/s1600/FB_IMG_1562046017532.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="712" data-original-width="534" height="320" src="https://1.bp.blogspot.com/-MqaASXpgYXs/XRrulCRdPyI/AAAAAAAAGZg/wezR9vOaXc8izRLYsmY-yi_jDjT1zkXGgCLcBGAs/s320/FB_IMG_1562046017532.jpg" width="240" /></a></div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> <b><span style="color: red;">মাজার থেকে পা বের করার কারণঃ</span></b></div> <div style="text-align: justify;"> <b><span style="color: red;"><br /></span></b></div> <div style="text-align: justify;"> সিরিয়ার জনগণের কাছ থেকে জানা যায়, তুর্কিরা যখন সিরিয়া আক্রমণ করেছিল তখন "মিদহাত পাশা" নামে জনৈক ব্যক্তি গভর্নর হিসাবে নিযুক্ত হন। একবার সে দামেস্কের বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন করতে বের হন। যখন গভর্নর মিদহাত পাশা পরিদর্শন করতে করতে,  হযরত আইয়ুব তাহির কুর্দি (রহ.)'র মাজারে প্রবেশ করে পায়ের কাছাকাছি অংশে দাঁড়িয়ে বলত লাগল, "কুর্দি ডাকাত ও চোর, তাঁকে কে ওলী বানায়ছে?" এই বিয়াদবী মূলক কথাটি বলার সাথে সাথে হযরত আইয়ুব কুর্দি (রহ.)  কবর থেকে ডান পা বের করে লাথি মারলে গভর্নর সেখানেই মৃত্যুর বরণ করে। এই ঘটনার পর সিরিয়ার জনগণ কবরেরর ভিতরে পা ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে পায়ের পাতা মোটা পশম দিয়ে ঢেকে রাখেন। আল্লাহর ওলীর এই জলন্ত কারামত নবী ওলী বিদ্ধেষীদের জন্য শাস্তির নিদর্শন এবং নবী-রাসুল ও আল্লাহর খাস বান্দাগণ যে, কবরে জীবিত তার প্রমাণ স্বরূপ আজও হযরত আইয়ুব তাহির কুর্দি (রহ.)'র পা  টি শতাধিক বছর পরও একিবারে সতেজ অবস্থায় অক্ষত রয়েছে। সুবহানআল্লাহ!</div> <div style="text-align: justify;"> <br /></div> <div style="text-align: justify;"> সূত্রঃ</div> <div style="text-align: justify;"> <span style="color: red;">সফর নামা (উর্দূ/১৯৬৬) পৃঃ ৫৪ (অনলাইন)</span></div> <div style="text-align: justify;"> সংগ্রহঃ তাহের হোসাইন</div> </div>

হজরত তাহির কুর্দি (রহঃ) এর মাজারের বাহিরে পা বের করা

ইসলামী বিশ্বকোষ এপ্স  ডাউনলোড করুন  🌍   ইসলামী বিশ্বকোষ  Apps Download   http://bit.ly/35NKDBr  [2.6 MB] ...

Read more »