❏ প্রশ্ন-১৯৩: আসহাবে কাহাফের কুকুর জান্নাতে যাবে কিনা? এ ব্যাপারে ওলামাই কিরামের মতামত কি?


✍ উত্তর: আসহাবে কাহাফের কুকুর সম্পর্কে কোরআনে কারীম(ﷺ) কোন হুকুম পাওয়া যায়নি। সে সম্পর্কে কোরআন নীরব এবং হাদীস শরীফেও সে বিষয়ে উল্লেখ করেনি। হ্যাঁ! মুফাস্সিরীনে কিরামদের মধ্যে কেউ কেউ এমন কিছু পশুর কথা উল্লেখ করেছেন যেগুলো জান্নাতে যাবে। আসহাবে কাহাফের কুকুরও উক্ত সূচিক্রমে উল্লেখ করা হয়েছে। 

237. রুহুল বয়ান, খন্ড-৫, পৃষ্ঠা-২২৬; রুহুল মা‘আনী, খন্ড-১৫, পৃষ্ঠা-২২১; وكلبهم باسط :এর আলোচনার অধীনে; তাফসীরে জুমাল, খন্ড-৩, পৃষ্ঠা-১২;200. সূরা কাহাফ, باسط ذراعيه আয়াতের অধীনে।


❏ প্রশ্ন-১৯৪: বর্তমানে প্রচলিত ফাঁসির শাস্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে কিসাসের হুকুমের অন্তভুর্ক্ত হবে কি-না?


✍ উত্তর: শরীয়তে কিসাসের শাস্তি প্রদানের জন্য যে শর্তসমূহ নির্ধারণ করা হয়েছে, তা নিম্নরূপ। কিসাসের মধ্যে মৌলিক শর্ত তিনটিঃ


১. হত্যাকারী থেকে কিসাস লওয়া। বাস্তবিকপক্ষে হত্যাকৃত ব্যক্তির ওয়ারিশদের ওপর নির্ভর, তারা ইচ্ছে করলে কিসাস নিতে পারে, না হয় দিয়্যত বা রক্তপণ গ্রহণ করতে পারে। আর ইচ্ছে করলে ক্ষমাও করে দিতে পারে।


২. কিসাস লওয়ার সময় হত্যাকৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা উপস্থিত থাকা আবশ্যক। 


৩. হানাফিদের মতে একটি শর্ত এটাও যে, কিসাস তরবারি দ্বারা নিতে হবে। বর্তমানে ফাঁসির প্রচলিত নিয়মে উক্ত তিনটি শর্ত পাওয়া যায় না বিধায় শর্ত অনুপস্থিতির কারণে ওটাকে শরয়ী কিসাস না বলে তা‘যির বা শাস্তি বলা যেতে পারে। অবশ্য কিসাস বলা শুদ্ধ হবে না।


قال العلامة علاء الدين الكاسانى استبقاء القصاص تثبتُ باسباب . 


আল্লামা আলাউদ্দিন কাসানী (رحمه الله تعالي ) বলেন, قصاص বা বদলা নেয়ার কার্যকারিতা বিভিন্ন প্রদ্ধতিতে হতে পারে। 

238. বদায়েউস্ সানায়ে, জেনায়াত অধ্যায়, খন্ড-৭, পৃষ্ঠা- ২৪৩।


হ্যাঁ! অবশ্য হত্যাকারীকে শাস্তি দেয়ার জন্য ফাঁসি কার্যকরী একটি উত্তম কাজ। যদিও কিসাস না হয়। তবুও এটি বাস্তবায়ন করা জায়েয ও বৈধ।


❏ প্রশ্ন-১৯৫: বর্তমানে মানুষ গাছের পরিবর্তে ষ্টীল, লোহা ও পাষ্টিক ইত্যাদি দ্বারা ঘরের সরঞ্জামাদি ও অলংকার তৈরী করছে। এ জাতীয় সরঞ্জাম, খাট ও অলংকার ব্যবহার করা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয আছে কিনা? বর্ণনা কর।


✍ উত্তর: শরীয়তের পক্ষ থেকে মহিলাদের জন্য যে কোন প্রকারের সরঞ্জাম ও অলংকার ইত্যাদির ব্যবহার জায়েয রেখেছেন। কিন্তু পুরুষদের জন্য শুধু রৌপ্য ব্যবহার বৈধ করেছেন। এ ছাড়া অন্যান্য পদার্থের তৈরী জিনিস ব্যবহার মাকরূহ বলেছেন। অতএব এ জাতীয় জিনিস ব্যবহার না করাই উচিত। ফাতওয়া হিন্দিয়াতে আছে,


والتختم بالحديد والصفر والنحاس مكروه للرجال والنساء . 


অর্থ: লোহা, দস্তা ও তামা নির্মিত আংটি ব্যবহার পুরুষ ও মহিলা উভয়ের জন্যই মাকরূহ। 

239. ফাতওয়া হিন্দিয়া, দশম অধ্যায়: স্বর্ণ ও রৌপ্য ব্যবহার প্রসঙ্গে, খন্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩৩৫; অনুরূপ বায্যায়্যিাহ আলাল মু‘আমিশিল হিন্দিয়াহ, কারাহিয়া অধ্যায়, সপ্তম পরিচ্ছেদ: পোশাক প্রসঙ্গে, খন্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৬৮।


قال العلامة التمرتاشى ولا يتختم بغيرها، كحجر و ذهب وحديد وصفر ورصاص وزجاج وغيرها بمامر . 


‘আল্লামা তামরতাশী বলেন, রৌপ্য ছাড়া অন্যান্য ধাতব নির্মিত আংটি (পুরুষ) ব্যবহার করতে পারবে না। যেমন- পাথর, স্বর্ণ, লোহা, দস্তা, তামা ও শিশা ইত্যাদি যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।’ 

240. রদ্দুল মুহ্তার, কারাহিয়া অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: পোশাক প্রসঙ্গে, খন্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৬০; বাহরুর রায়েক্ব, কারাহিয়া অধ্যায়, পরিচ্ছেদ: পোশাক প্রসঙ্গে, খন্ড-৮, পৃষ্ঠা-১৯১; ফাতওয়া হক্কানীয়া, খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪১৯।

 
Top