❏ প্রশ্ন-১৯২: হযরত আদম (عليه السلام) এর সন্তানদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদের কারণ কি ছিল? এবং তাদের মধ্যে ভাই-বোনের পার্থক্যের নিয়ম কি ছিল? বর্ণনা কর।


✍ উত্তর: হযরত আদম (عليه السلام)-এর সন্তানদের মাঝে ঝগড়ার কারণ সম্পর্কে অধিকাংশ মুফাস্সিরীনে কিরামের অভিমত হচ্ছে, হযরত আদম (عليه السلام)-এর যখনই কোন সন্তান জন্মগ্রহণ করত, এক ছেলে ও এক মেয়ে জোড়া হিসেবে জন্মগ্রহণ করতো। কেননা আদম (عليه السلام) ছিলেন পৃথিবীতে প্রথম মানব এবং তার বংশধারা অবশিষ্ট থাকুক, এটাই ছিল আল্লাহ তা‘আলার ঐকান্তিক ইচ্ছা। তাই আল্লাহ তা‘আলা একটি নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে, প্রত্যেক জোড়া পরস্পর বিবাহ জায়েয হবে না, বরং এক জোড়া অপর জোড়ার সঙ্গে বিবাহ জায়েয হবে। তাই প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে গর্ভের ভিন্নতা, বংশের ভিন্নতা হিসেবে গণ্য হতো। অনুরূপ হযরত আদম (عليه السلام)-এর ছেলে কাবিলের সাথে একই গর্ভে যে মেয়েটি জন্মেছিল তার নাম আকলিমা এবং সে পরমা সুন্দরী ছিল। পরবর্তী গর্ভে যে ছেলেটি জন্মেছিল তার নাম ছিল হাবিল এবং তার বোনের নাম ছিল লুবাদা। এখন শরীয়তের বিধান মোতাবেক যখন বিবাহের সময় হলো, তাই আকলিমার বিবাহ হাবিলের সঙ্গে হচ্ছে। তখন কাবিল তা অস্বীকার করে বলতে লাগলো, তার জন্ম যেহেতু আমার সঙ্গে হয়েছে বিধায় আমিই তার হকদার। আকলিমা ছিল লুবাদার চেয়ে অধিক সুন্দরী এবং সুশ্রীও। এ ব্যাপারে হযরত আদম (عليه السلام) কাবিলকে বুঝানোর অনেক চেষ্টা করেন কিন্তু সে তা মানতে রাজি হয়নি। অতঃপর হযরত আদম (عليه السلام) হাবিল ও কাবিল উভয়কে মানত করার হুকুম দিলেন যে, যার মানত কবুল হবে, তার পক্ষে ফয়সালা দেয়া হবে। দেখা গেল- হাবিলের মানতই কবুল হলো। এতে কাবিল আরো অধিক ক্ষিপ্ত বা ক্রোধান্বিত হলো। পরিশেষে সে হাবিলকে অন্যায়ভাবে হত্যা করল। 

236. তাফসীরে তাবারী, খন্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৮৮,200. সূরা মায়েদা; তাফসীরে ইবনে কাসীর, খন্ড-২, পৃষ্ঠা-৪১।

 
Top