চাপাবাজ আলবানীর উল্লেখযোগ্য চাপাবাজি সমূহ।

আলবানী তার সমগ্র জীবনে চাপাবাজি আর পবিত্রাত্মা সম্মানিত সালফে সালেহীন মুহাদ্দিসিনে ক্বিরাম, ফুকাহায়ে ক্বিরামের প্রতি বিষেদগারে নিয়োজিত ছিলো।
তার বিয়াদবী কেবল তার পিতা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে নি, সে সকল যুগের সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুহাদ্দিসিনে ক্বিরামের সাথেও বিয়াদবীতে লিপ্ত ছিলো।

নিম্নে কতিপয় উল্লেখ করা হল।

আলবানীর ফতোয়া ইমাম বোখারী (রহঃ) অমুসলিমঃ
মিথ্যুক, চাপাবাজ আলবানী ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করেছে।
ইমাম বোখারী (রহঃ) বোখারী শরীফের “কিতাবুত তাফসীর” এ সূরা কাসাস এর ৮৮ নং আয়াতের যে ব্যাখ্যা করেছেন, সে সম্পর্কে মিথ্যুক আলবানী লিখেছে,

ان هذا التأويل لا يقول به مؤمن مسلم وقال إن هذه التأويل هو عين التعطيل.

“এ ধরণের ব্যাখ্যা কোন মুমিন-মুসলমান দিতে পারে না। আলবানীর কথা হল, এ ধরণের ব্যাখ্যা মূলতঃ কুফরী মতবাদ “তা’তীলের” অন্তর্ভূক্ত” (নাউযুবিল্লাহ্)

ইমাম বোখারী (রহঃ) সূরা কাসাসের ৮৮ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন,

كُلُّ شَىْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ  إلا ملكه, ويقال: إلا ما أُريد به وجه الله

“আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে”
এখানে তিনি “ওয়াজ্হুন” শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন “মুলকুন” তথা আল্লাহর রাজত্ব। তখন অর্থ হবে, সবকিছু ধ্বংস হবে, তাঁর রাজত্ব ব্যতীত। অথবা “ওয়াজহুন” দ্বারা যা উদ্দেশ্য হবে, তা ব্যতীত সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।
[সূত্রঃ ফাতাওয়াশ শায়েখ আলবানী, পৃষ্ঠা-৫২৩, মাকতাবাতুত তুরাছিল ইসলামী, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৪ইং]।

ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করে সালাফীদের নিকট বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হওয়ার বিষয়টি আমাদের নিকট অস্পষ্ট; অথচ ডাঃ জাকির নায়েকও তাকে যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

যে মুহাদ্দিস ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম বলতে দ্বিধা করে না, ডাঃ জাকির নায়েক কিভাবে তার উপর নির্ভর করে তার লেকচার তৈরি করে এবং তার মতাদর্শ সমাজে প্রচার করে?

আর ইমাম বোখারী যদি সালাফীদের নিকট অমুসলিমই হয়ে থাকে, তবে তথাকথিত আহলে হাদীস বা সালাফী নামধারীরা কিভাবে ইমাম বোখারী (রহঃ) বর্ণিত হাদীস গ্রহণ করে?

হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের সাথে তুলনাঃ

চাপাবাজ মিথ্যুক আলবানী হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের সাথে তুলনা করে লিখেছে,

هذا صريح في أن عيسى عليه السلام يحكم بشرعنا ويقضي بالكتاب والسنة لا بغيرهما من الانجيل أو الفقه الحنفي و نحوه

“এ থেকে স্পষ্ট যে, হযরত ঈসা (আঃ) আমাদের শরীয়ত অনুযায়ী ফয়সালা দিবেন এবং কিতাব ও সুন্নাহের মাধ্যমে বিচার করবেন। তিনি ইঞ্জিল, হানাফী ফিকহ কিংবা এজাতীয় অন্য কিছু দ্বারা বিচার করবেন না”
[সূত্রঃ আল্লামা মুনযীরি (রহঃ) কৃত “মুখতাসারু সহিহীল মুসলিম” এর উপর আলবানী এর টিকা সংযোজন, তৃতীয় সংস্করণ, ১৯৭৭, আল-মাকতাবুল ইসলামি, পৃষ্ঠা-৫৪৮]।
এখানে আলবানী খুব সহজে হানাফী মাযহাবকে খ্রিস্টধর্মের বিকৃত ইঞ্জিলের সাথে তুলনা করেছে; অথচ তিনি এতটুকু চিন্তা করেননি যে, তাঁর নিজের পিতা একজন সুদৃঢ় হানাফী আলেম। আমরা সকলেই জানি, কেউ যদি ইঞ্জিল অনুযায়ী বিবাহ-শাদী করে, তবে ইসলামে তার বিবাহ বিশুদ্ধ হবে না।

আলবানী এর নিজের বক্তব্য অনুযায়ী তার পিতা এমন একটি মতবাদের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন, যা বিকৃত ইঞ্জিলের সমগোত্রীয়। এখন তিনি যদি হানাফী মাযহাবকে বিকৃত ইঞ্জিলের সাথে তুলনা করেন, তবে আমাদের কারও আপত্তি করার পূর্বে তাঁর নিজেরই সতর্ক হওয়া উচিৎ। কেননা একথা বলার দ্বারা তার নিজের পিতা-মাতারই বিবাহ বিশুদ্ধ হয় না।

এছাড়া আলবানী তার জীবনে দীর্ঘ একটি সময় নিজেও হানাফী ছিলো। তার জীবনীতে লেখা হয়েছে,

الحنفي (قديماً) ، ثم الإمام المجتهد بعد

[সূত্রঃ সাবাতু মুয়াল্লাফাতিল আলবানী, আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আশ্-শামরানী, পৃষ্ঠা-২, ১৬]।

“প্রথম জীবনে হানাফী, পরবর্তী জীবনে নিজেই মুজতাহিদ ইমাম”

আলবানী যদি হানাফী মাযহাবকে ইঞ্জিলের সমতুল্য মনে করে থাকে, তবে সে প্রথম জীবনের যে সময়টাতে হানাফী ছিলো সেসময়ে সে কি মুসলমান ছিলো?

উস্তাদের অবস্থা যদি হয় এই, তবে তার অনুসারীদের কী অবস্থা হবে?
ডাঃ জাকির নায়েক এমন এক ব্যক্তিকে অনুসরণীয় বানিয়েছেন, যিনি সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে এবং হককে বাতিলের সঙ্গে মিশ্রিত করতে সামান্যতম দ্বিধা করেন না!

আলবানী এর মত ডাঃ জাকির নায়েকও একই পথে অগ্রসর হয়েছে।
“ইমাম আবু হানীফা নতুন কোন হানাফী মাযহাব প্রতিষ্ঠার জন্য আগমন করেননি। ইমাম মালেক নতুন কোন মালেকী মাযহাব প্রতিষ্ঠার জন্য আগমন করেননি। ইমাম শাফেয়ী নতুন কোন শাফেয়ী মাযহাব প্রতিষ্ঠার জন্য আগমন করেননি। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) হাম্বলী মাযহাব প্রতিষ্ঠার জন্য আগমন করেননি। এদের মাযহাব ছিল, রাসূল (সঃ) এর মাযহাব। বিষয়টি খ্রিস্টানদের মত অর্থাৎ খ্রিস্টানরা যেমন ভুল বুঝে থাকে যে, হযরত ঈসা (আঃ) খ্রিস্ট ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছিলেন; মূলতঃ তিনি এসেছিলেন ইসলাম প্রচারের জন্য।”

বর্তমান বিশ্বে ৯২.৫ ভাগ মুসলমান চার মাযহাবের কোন একটি অনুসরণ করে থাকে এবং অবশিষ্ট ৭.৫ ভাগ লোক শিয়া মতাবলম্বী। দীর্ঘ তের শ’ বছর যাবৎ মুসলিম উম্মাহ মাযহাবের অনুসরণ করে আসছে, তবে কি তিনি সব মুসলমানকে খ্রিস্টানদের মত পথভ্রষ্ট মনে করেন?

এখানে প্রতিপাদ্য বিষয় হল, ডাঃ জাকির নায়েক যাদের মতাদর্শে বিশ্বাসী, তারা মাযহাব মানাকে কুফুরী-শিরকী মনে করে থাকে। তাদের অনুসারী হয়ে ডাঃ জাকির নায়েকের পক্ষে এ ধরণের বক্তব্য উপস্থাপন করাটা অস্বাভাবিক নয়। আলবানী যেমন হানাফী মাযহাবকে খ্রিষ্টধর্মের সাথে তুলনা করেছে, তার অনুসারী হয়ে ডাঃ জাকির নায়েকও হুবহু তাই করেছে!


শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ  (রহঃ) এর প্রতি আলবানী কর্তৃক অভিশাপঃ
শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ সম্পর্কে মিথ্যুক আলবানী লিখেছে,

أشل الله يدك وقطع لسانك -يدعو على العلامة الشيخ عبد الفتاح أبي غدة-.
ويقول عنه: إنه غدة كغدة البعير
ثم يقول مستهزئا ضاحكا: أتعرفون غدة

“আল্লাহ তায়ালা তোমার হাত অবশ করে দিক এবং তোমার জিহ্বা কর্তন করুক।
[সূত্রঃ কাশফুন নিকাব, পৃষ্ঠা-৫২]।
তিনি আরও বলেন, সে হল উটের প্লেগ রোগের মত একটা মহামারী (গুদ্দাতুল বায়ীর)। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে উপহাস করে বললেন, তোমরা কি জানো, উটের প্লেগ কী?

ড. ইউসুফ আল-কারযাবী সম্পর্কে কাজ্জাব আলবানীর উক্তিঃ

ড. ইউসুফ আল-কারযাবী সম্পর্কে আলবানী বলেছে,

اصرف نظرك عن القرضاوي واقرضه قرضا

“তুমি ইউসুফ কারযাবী থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে রাখো এবং তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করো”

ড. ইউসুফ আল-কারযাবী সম্পর্কে আলবানী আরও বলেছে,
إن يوسف القرضاوي يفتي الناس بفتاوى مخالفة للشريعة و لهُ فلسفة خطيرة

“ইউসুফ আল-কারযাবী শরীয়ত বিরোধী ফতোয়া প্রদান করে, তার কাছে রয়েছে ভয়ঙ্কর সব দর্শন”

ইবনে তাইমিয়া সম্পর্কে আলবানীঃ
হাদীসুল গদীর সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে আলবানী ইবনে তাইমিয়া সম্পর্কে লিখেছে,

إنني رأيت شيخ الإسلام ابن تيمية ، قد ضعف الشطر الأول من الحديث ، وأما الشطر الآخر ، فزعم أنه كذب !وهذا من مبالغاته الناتجة في تقديري من تسرعه في تضعيف الأحاديث قبل أن يجمع طرقها ويدقق النظر فيها.والله المستعان

“আমি শায়খ ইবনে তাইমিয়াকে দেখেছি, তিনি হাদীসের প্রথম অংশকে দুর্বল বলেছেন এবং হাদীসের শেষ অংশকে তিনি মিথ্যা মনে করেছেন। আমার ধারণামতে “হাদীসকে যয়ীফ বলার ক্ষেত্রে এটি ইবনে তাইমিয়া এর বাড়াবাড়ি, যা তাঁকে হাদীসটি যয়ীফ বলতে উদ্বুদ্ধ করেছে; অথচ তিনি হাদীস বর্ণনার বিভিন্ন পরম্পরা খতিয়ে দেখেননি। এবং এ ব্যাপারে গভীর দৃষ্টিপাত করেননি।”
[সূত্রঃ সিলসিলাতুস সহীহা, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৩৪৩-৩৪৪, হা/ ১৭৫০]।

চাপাবাজ আলবানী পৃথিবী বিখ্যাত অধিকাংশ মুহাদ্দিস ও ফকীহের সমালোচনা করেছে।
সালাফী নামধারীরা ইবনে তাইমিয়া, ইবনুল কাইয়্যিম এবং আব্দুল ওহাব নজদী কে তাদের মাইলফলক মনে করে থাকে। কিন্তু আলবানী সমস্ত আলেমের ক্ষেত্রে সব ধরণের নিয়ম-কানুনের দেয়াল ভেঙ্গে দিয়েছে। এবং যেখানে যেভাবে ইচ্ছা তার সমালোচনা করেছে।

ইবনে তাইমিয়া “কালিমুত তাইয়্যিব” নামক বিখ্যাত একটি কিতাব রচনা করেছেন। আলবানী সে কিতাবের হাদীসগুলো বিশ্লেষণ করে একটি কিতাব লিখেছে, সহীহুল কালিমিত তাইয়্যিব।
এ কিতাবে আলবানী লিখেছে-

أنصح لكل من وقف علي  هذا الكتاب ( الكلم الطيب لإبن تيمية) و غيره: أن لا يبادر إلي العمل بما فيه من الأحاديث، إلا بعد التأكيد من ثبوتها، و قد سهلنا له السبيل إلي ذلك بما علقنا عليه ، فما كان ثابتا منها عمل به ...وإلا تركه، ( صحيح الكلم الطيب-ص-৪)

“যারা আল্লামা ইবনে তাইমিয়া এর এ কিতাবটি সম্পর্কে অবগত রয়েছে, তাদেরকে নসীহত করব, এ কিতাবে যে সমস্ত হাদীস রয়েছে, সেগুলোর প্রতি তারা যেন আমল করতে অগ্রসর না হয়, যতক্ষণ না হাদীসগুলো শক্তিশালীভাবে প্রমাণিত হয়। আমি এর উপর যে টিকা সংযোজন করেছি, এর মাধ্যমে প্রত্যেকের জন্য বিষয়টি সহজ করে দিয়েছি। সুতরাং যে সমস্ত হাদীস প্রমাণিত হবে, সেগুলোর উপর আমল করা হবে, নতুবা সেটি পরিত্যাগ করা হবে”
[সূত্রঃ সহীহুল কালিমিত তাইয়্যিব, পৃষ্ঠা-৪]।
আলবানীর এ কথা উল্লেখ করে আল্লামা হাবীবুর রহমান আজমী (রহঃ) লিখেছেন,

و ليس يعني الألباني بذلك إلا أنه يجب علي الناس أن يتخذوه إماما و يقلدوه تقليدا أعمي، ولا يعتمدوا علي إبن تيمية و لا علي غيره من الثقات الأثبات من المحدثين، في ثبوت الأحاديث حتي يسألوا الألباني و يرجعوا إلي تحقيقاته!

“অর্থাৎ নাসীরুদ্দিন আলবানীর একথা বলার দ্বারা মূল উদ্দেশ্য হল, মানুষ যেন আবশ্যকভাবে তাঁকে ইমাম বানায় এবং তাঁর অন্ধ অনুকরণ করে। এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আলবানীকে জিজ্ঞেস না করবে এবং তার বিশ্লেষণকে গ্রহণ না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লামা ইবনে তাইমিয়াসহ অন্য কোন বিশ্বস্ত ও গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী মুহাদ্দিসের হাদীসের উপরও নির্ভর করবে না।”

মূলতঃ আলবানী পৃথিবী বিখ্যাত অধিকাংশ  মুহাদ্দিসের হাদীসের সমালোচনা করেছে। এবং এ সমালোচনার ক্ষেত্রে তিনি হাদীসশাস্ত্রের কোন মূলনীতিরও তোয়াক্কা করেননি। বড় বড় মুহাদ্দিসগণ যে সমস্ত হাদীসকে সহীহ বলেছেন, সেগুলোকে তিনি যয়ীফ বলেছেন, আবার তারা যেটাকে যয়ীফ বলেছেন, আলবানী নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে সেগুলোকে সহীহ বলেছে।

আলবানী একটি হাদীসকে এক কিতাবে সহীহ বলেছে, অন্য কোথাও সেটিকে আবার যয়ীফ বলেছে। এ ধরণের হাদীসের সংখ্যা একটি দু’টি  নয়। অসংখ্য হাদীসের ক্ষেত্রে আলবানী এ ধরণের স্ববিরোধীতার আশ্রয় নিয়েছে; অথচ ডাঃ জাকির নায়েক আলবানীকে বর্তমান যুগের শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস মনে করে থাকে। তিনি এমন ব্যক্তির হাদীসের উপর নির্ভর করেছেন, যিনি হাদীস শাস্ত্রের কোন মুহাদ্দিসকে তার সমালোচনা থেকে মুক্তি দেননি। এবং হাদীস গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁর সুপ্রমাণিত কোন সনদ নেই।

জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) সম্পর্কে আলবানী লিখেছে,

فيا عجباً للسيوطي كيف لم يخجل من تسويد كتابهِ الجامع الصغير بهذا الحديث

“কী আশ্চর্য! জালালুদ্দিন সূয়ূতী তাঁর জামে সগীরে কিভাবে এ হাদীস উল্লেখ করতে একটু লজ্জাবোধ করলেন না! 
আলবানী জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) সম্পর্কে আরও লিখেছে-
وجعجع حولهُ السيوطي
অর্থাৎ জালালুদ্দিন সূয়ূতী (রহঃ) হাঁক-ডাক ছেড়ে থাকেন।
[সূত্রঃ সিল-সিলাতুজ জয়িফা, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৮৯]।

ইমাম হাকেম, ইমাম যাহাবী এবং আল্লামা মুনযিরি (রহঃ) সম্পর্কে আলবানীর উক্তিঃ
আলবানীর দৃষ্টিতে একটা হাদিস সহীহ নয়, অথচ অন্যান্য মুহাদ্দিস তাকে সহীহ বলায় আলবানী হাদীসের বিখ্যাত তিন মুহাদ্দিস ইমাম হাকেম, ইমাম যাহাবী, ইমাম মুনযিরি (রহঃ) সম্পর্কে বলেছে,

وقال الحاكم : " صحيح الاسناد " ! ووافقه الذهبي ! وأقره المنذري في " الترغيب " ( ৩ / ১৬৬ ) ! وكل ذلك من إهمال التحقيق ، والاستسلام للتقليد ، وإلا فكيف يمكن للمحقق أن يصحح مثل هذا ا لاسناد

“হাকেম বলেছেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। ইমাম যাহাবী তাঁর সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন। ইমাম মুনযিরি (রহঃ) “তারগীব ও তারহীব” নামক কিতাবে তার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর এটি হয়েছে, তত্ত্ব-বিশ্লেষণের প্রতি উদাসীনতা, তাকলীদের প্রতি আত্মসমর্পণ (অন্ধানুকরণ), নতুবা একজন বিশ্লেষণধর্মী আলেম কিভাবে একে সহীহ বলতে পারেন”

হাফেয তাজুদ্দিন সুবকী (রহঃ) সম্পর্কে আলবানী মন্তব্য করেছে-

ولكنه دافع عنه بوازع من التعصب المذهبي ، لا فائدة كبرى من نقل كلامه وبيان ما فيه من التعصب. .
মাযহাব অনুসরণের গোঁড়ামি তাঁকে প্ররোচিত করেছে। তাঁর কথা উল্লেখ করে এবং তাঁর গোঁড়ামির কথা আলোচনা করে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন উপকারিতা নেই।
[সূত্রঃ সিল-সিলাতুজ যয়িফা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮৫]।


শায়খ হাবীবুর রহমান আজমী (রহঃ) তাঁর সম্পর্কে লিখেছেন,

الشيخ ناصر الدين الالباني شديد الولوع بتخطئة الحذاق من كبار علماء الاسلام ولا يحابى في ذلك أحدا كائنا من كان ، فتراه يوهم البخاري ومسلما ، ومن دونهما ، ويغلط ابن عبد البر وابن حزم والذهبي وابن حجر والصنعانى ، ويكثر من ذلك حتى يظن الجهلة والسذج من العلماء ان الالباني نبغ في هذا العصرنبوغا يندر مثله

“শায়েখ নাসীরুদ্দিন আলবানী পৃথিবী বিখ্যাত গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী আলেমদের ভুল ধরার ব্যাপারে চরম বেপরোয়া। এ পথে তিনি কাউকেই মুক্তি দেননি। আপনি দেখবেন! সে ইমাম বোখারী (রহঃ), ইমাম মুসলিমসহ অপরাপর ইমামদের ব্যাপারে বিরূপ মন্তব্য করে। তিনি যুগশ্রেষ্ঠ আলেম ইবনে আব্দুল বার (রহঃ), ইবনে হাযাম (রহঃ), ইমাম যাহাবী (রহঃ) ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ), ইমাম সানআনী (রহঃ) সহ আরও অনেককে ভুল সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছেন। অথচ অনেক অজ্ঞ এবং সাধারণ আলেম তাঁকে বর্তমান যুগের বিরল ব্যক্তিত্ব মনে করে থাকেন।”
বর্তমান বিশ্বের যে সমস্ত আলেম আলবানীর এসমস্ত ভ্রান্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন এবং এ সম্পর্কে কিতাব লিখেছেন তাদের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হল-
০১. শায়খ হাবীবুর রহমান আজমী (রহঃ)। তাঁর রচিত কিতাবের নাম-
الألباني شذوذه وأخطاؤه
০২. উত্তর আফ্রিকার বিখ্যাত মুহাদ্দিস আব্দুল্লাহ আল-গুমারী (রহঃ)। তাঁর কিতাবের নাম হল-
"القول المقنع في الرد على الألباني المبتدع"
০৩. শায়েখ আব্দুল আযীয গুমারী-
"بيان نكث الناكث المقعدي بتضعيف الحارث"
০৪. শায়েখ মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আল-খাজরাযী
"الألباني تطرفاته"
০৫. উস্তাদ বদরুদ্দিন হাসান দিয়াব দামেশকী-
"أنوار المصابيح على ظلمات الألباني في صلاة التراويح"
০৬. শামের বিখ্যাত মুহাদ্দিস আব্দুল্লাহ আল-হারারী,
التعقب الحثيث على من طعن فيما صح من الحديث
০৭. শায়েখ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ)
"أينَ يضع المصلي يده في الصلاة بعد الرفع من الركوع"
০৮. শায়েখ ইসমাইল বিন মুহাম্মাদ আনসারী (রহঃ)
"تصحيحُ حديث صلاة التراويح عشرين ركعة والردّ على الألباني في تضعيفه"
০৯. শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ (রহঃ)
"كلماتٌ في كشف أباطيل وافتراءات"
১০. শায়েখ হাসান বিন আলী আস-সাক্কাফ
قاموس شتائم الألباني وألفاظه المنكرة في حق علماء الأمة وفضلائها وغيرهم
১১. শায়েখ হাসান বিন আলী আস-সাক্কাফ,
"البشارةُ والإتحاف فيما بين ابن تيمية والألباني في العقيدة من الاختلاف"

আমরা এখানে সামান্য কয়েকটি কিতাবের নাম উল্লেখ করেছি।
চাপাবাজ নাসীরুদ্দিন আলবানীর ভ্রান্ত বিষয়গুলির সম্পর্কে যুগশ্রেষ্ঠ অধিকাংশ আলেম স্বতন্ত্র কিতাব লিখেছেন। “সাবাতু মুয়াল্লাফাতিল আলবানী” এর গ্রন্থকার এ ধরণের ৫৭ টি কিতাবের নাম উল্লেখ করেছেন। এ সমস্ত গ্রন্থে কাজ্জাব নাসীরুদ্দিন আলবানীর ভ্রান্তিগুলো আলোচনা করা হয়েছে।

বিখ্যাত সালাফী আলেমদের মধ্যে যারা নাসীরুদ্দিন আলবানী এর এ সমস্ত  ভ্রান্ত বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করেছেন, তাদের কয়েকজনের নাম নিচে উল্লেখ করা হল-
০১. শায়েখ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ)।
০২. শায়েখ হামুদ বিন আব্দুল্লাহ (রহঃ)।
০৩. ড. বকর বিন আব্দুল্লাহ আবু যায়েদ।
০৪. শায়েখ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আদ-দাবীশ (রহঃ)
০৫. সফর বিন আব্দুর রহমান।
০৬. মুহাদ্দিস আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান সা’আদ।
০৭. শায়েখ আব্দুল্লাহ বিন মা’নে আল-উতাইবি।
০৮. শায়েখ ফাহাদ বিন আব্দুল্লাহ আস-সুনাইদ।
০৯. আবু আব্দুল্লাহ মুস্তফা আল-আদাবী।
জামেয়াতুল ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ এর দাওয়া বিভাগের প্রধান ড.আব্দুল আযীয আল-আসকার আলবানী এবং তার অনুসারীদের সম্পর্কে লিখেছেন,

الألباني واتباعه ليسوا سلفية

“আলবানী এবং তার অনুসারীরা মূলতঃ সালাফী নয়”

অর্থাৎ এরা সালাফী (পূর্ববর্তীদের অনুসারী) হওয়ার দাবী করে কিন্তু বাস্তবে এরা সালাফী নয়।

সুতরাং ডাঃ জাকির নায়েক যাদেরকে অনুসরণ করছে, যাদের মতাদর্শ সমাজে প্রচার করছে, তাদের গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে যেমন সমগ্র বিশ্বের মানুষের নিকট সংশয় রয়েছে, তেমনি কেউ যদি তাদের মতাদর্শ প্রচার করে, তবে তার গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারেও প্রশ্ন থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।

অতএব, সর্বশেষ কথা হল, তাবেয়ী ইবনে সিরিন (রহঃ) বলেছেন,

إنَّ هذا العلم دين ؛ فانظروا عمَّن تأخذون دينكم
“নিশ্চয় এই ইলম, দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং লক্ষ্য রেখো! কার নিকট থেকে তুমি তোমার দ্বীন গ্রহণ করছো”
__________________
পিতার ত্যাজ্যপুত্র শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1946164649032304
___________
আলবানীর হাদিস বিষয়ক তদন্ত তাহকিক অগ্রহণযোগ্য কেন তার আলোচনা।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1985528301762605
_______________
কানারে হাইকোর্ট দেখায় কাজী ইব্রাহিম, জাকির নায়েক, আলবানী, আর আব্দুর রাজ্জাকেরা।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1984900578492044
_______________
▆ "সালাফী" দাবীটি ভূঁয়া (Bogus)।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1686609804987791
_______________

Top