▆ তারাবীহ এর রাকাত সংখ্যা নিয়ে কথিত ওহাবী-খারেজী সম্প্রদায়ের মিথ্যাচারঃ একটি দলিল ভিত্তিক বিশ্লেষণ ▆
→ (Mahmud Hasan)
আমাদের দেশের ওহাবী বা আহলে হাদিস নামধারীরা তারাবীহের রাকাত সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে দীর্ঘদিন যাবত।
তাদের দাবী সহীহ হাদিসের ভিত্তিতে কেবল ৮ রাকাত তারাবীহ নামায প্রমাণিত।
তারা দলিল হিসেবে কিছু হাদিস পেশ করে যার কোনটিই স্পষ্ট তারাবীহকে বুঝায় না, বা হাদিসগুলি একেবারেই দুর্বল।
এরপরও বিশ রাকাত তারাবীহ যা হাদিস ও সাহাবায়ে কিরামের সর্ব সম্মত ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রমাণিত- একে অস্বীকার করে যায় নিতান্তই ঘাড়ত্যারামী করে। রামাযান মাসে জাতিকে সুন্নত আমল থেকে বিরত রাখে এক নিকৃষ্ট পন্থায়। সেই সকল ভ্রান্ত অনুসারীদের দাবি-যুক্তি খন্ডনের নিমিত্তে আমাদের এই প্রয়াস।
এখানে তাদের দলিলকৃত হাদিস উল্লেখ করে তার জবাব প্রদান করা হলো।
✨❄ ৮ রাকাত তারাবীহের পক্ষে কথিত আহলে হাদিসদের দলিলসমূহঃ
এক নং দলিল
হজরত আয়শা (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট) এর বর্ণিত তাহাজ্জুদের হাদিস দ্বারা রাফিউল ইয়াদাইনী পথহারাদের ৮ রাকাত তারবীহ প্রমান করার ব্যর্থ চেষ্টা।
عن أبي سلمة بن عبد الرحمن أنه أخبره : أنه سأل عائشة رضي الله عنها كيف كانت صلاة رسول الله صلى الله عليه و سلم في رمضان ؟ فقالت ما كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يزيد في رمضان ولا في غيره على إحدى عشرة ركعة يصلي أربعا فلا تسل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي أربعا فلا تسل عن حسنهن وطولهن ثم يصلي ثلاثا . قالت عائشة فقلت يارسول الله أتنام قبل أن توتر ؟ . فقال يا عائشة إن عيني تنامان ولا ينام قلبي (صحيح البخارى- أبواب التهجد، باب قيام النبي صلى الله عليه و سلم بالليل في رمضان وغيره1/154)
অনুবাদঃ হযরত আবু সালমা বিন আব্দুর রহমান থেকে বর্ণিত তিনি আয়েশা (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট) এঁর কাছে জানতে চান, রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম এঁর ছলাতকেমন হত রামাযান মাসে?
তিনি বললেন, রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম মাহে রমযান ও মাহে রমযান ছাড়া ১১ রাকাত থেকে বাড়াতেন না। তিনি ৪ রাকাত পড়তেন, তুমি এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জানতে চেওনা। তারপর পড়তেন ৪ রাকাত, তুমি এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা বিষয়ে জানতে চেওনা, তারপর পড়তেন ৩ রাকাত।
হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি সসন্তুষ্ট) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্'র রাসূল! আপনি কি বিতর পড়ার পূর্বে শুয়ে যান? তিনি বললেন, হে আয়েশা! নিশ্চয় আমার দু’চোখ ঘুমায় আমার ক্বালব ঘুমায়না।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ছহিহুল বুখারী, ১/১৫৪।]
জবাব —
১.
এই হাদিসে ইযতিরাব তথা অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা থাকায় এ হাদিস দিয়ে দলিল দেয়া ঠিক নয়।
আল্লামা কুরতুবী রহ. বলেন, আমি আম্মাজান আয়েশা ছিদ্দিকা (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট) এর এই বর্ণনাটি অনেক আহলে ইলমদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছি অনেকেই এতে অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা আছে বলে মত প্রকাশ করেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ফাতহুল বারী শরুহুল বুখারী-৩/১৭।]
২.
খোদ আম্মাজান হযরত আয়েশা ছিদ্দিকা (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট) থেকে ১৩ রাকাত তারবীহের কথা সহীহ সনদে বর্ণিত আছে।
সুতরাং হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. অস্পষ্টতা ও পরস্পর বিরোধিতা দূর করতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন, “সঠিক কথা হল, এ ব্যাপারে আমি যা উল্লেখ করেছি এগুলো সব ভিন্ন সময় ও ভিন্ন পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল”
অর্থাৎ নবীজী একেক সময় একেক রাকাত ছলাত পড়েছেন তারবীহের ক্ষেত্রে।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ফাতহুল বারী, ৩/১৭।]
এর মাধ্যমে কথিত আহলে হাদিসদের “৮ রাকাতের মাঝেই তারাবীহ সীমাবদ্ধ এরচেয়ে বেশী তারাবীহ নামায নেই” এই দাবিটি বাতিল হয়ে যাচ্ছে।
খোদ আহলে হাদিসদের আলেম মাওলানা আব্দুর রহমান মুবারকপুরী বলেন, নিশ্চয় একথা প্রমাণিত যে, রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম ১৩ রাকাত তারাবীহ পড়েছেন ফজরের দু’রাকাত সুন্নত ছাড়াই।
[গ্রন্থ সূত্রঃ তুহ্ফাতুল আহওয়াজী, ২/৩।]
৩.
এই হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হল নবীজী (صلى الله عليه و آله و سلم) এক সালামে ৪, ৪ রাকাত করে তারাবীহ আর শেষে এক সালামে ৩ রাকাত বিতর পড়েছেন, অথচ কথিত আহলে হাদিসদের আমল এর বিপরীত। তারা তারাবীহ দুই দুই রাকাত করে পড়েন। আর বিতর এক রাকাত বা তিন রাকাত দুই সালামে পড়েন।
সুতরাং যেই হাদিস দলিলদাতাদের কাছে আমলহীন এর দ্বারা দলিল দেয়া যায় না।
৪.
আসল কথা হল এই যে, এই হাদিসটি তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সংশ্লিষ্ট। এতে তারাবীহের কথা বর্ণিত নয়।
নিম্নে এ ব্যাপারে কিছু প্রমাণ উপস্থাপন করা হল।
“হাদিসে মূলত তাহাজ্জুদের বর্ণনা এসেছে” একথার দলিল
১.
হাদিসের শব্দ ما كان رسول الله صلى الله عليه و سلم يزيد في رمضان ولا في غيره
[নবীজী (صلى الله عليه و آله و سلم) রামাযান ও রামাযান ছাড়া অন্য সময় বাড়ান না] এটাই বুঝাচ্ছে যে, প্রশ্নটি করা হয়েছিল রামাযান ছাড়া অন্য সময়ে যে নামায নবীজী (صلى الله عليه و آله و سلم) পড়তেন তা মাহে রামযানে বাড়িয়ে দিতেন কিনা? এই প্রশ্নটি এজন্য করা হয়েছে যেহেতু বিভিন্ন বর্ণনায় এসেছে রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম মাহে রামাযানে আগের তুলনায় অনেক নামায পড়তেন ও ইবাদত করতেন, তাই এই প্রশ্নটি করাটা ছিল স্বাভাবিক।
আর মাহে রামযান ছাড়া যেহেতু তারাবীহ হয় না সেহেতু রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম মাহে রামাযানের আগেই তারাবীহ আর বিতর মিলিয়ে ১৩ রাকাত নবীজী পড়ার প্রশ্নের সুযোগ কোথায়? নাকি ওটা তাহাজ্জুদ? তাহাজ্জুদ হওয়াটাই কি সঙ্গত নয়?
সুতরাং এটাই স্পষ্ট বুঝা যায় যে, তারাবীহ নয় প্রশ্ন করা হয়েছে তাহাজ্জুদ নিয়ে যে, নবীজী তাহাজ্জুদের নামায মাহে রামাযান ছাড়া যে কয় রাকাত পড়তেন তা থেকে মাহে রামাযানে বাড়িয়ে পড়তেন কিনা?
এর জবাবে আম্মাজান আয়েশা ছিদ্দিকা (আল্লাহ্ তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট) বললেন, ১৩ রাকাত থেকে বাড়াতেন না তাহাজ্জুদ নামায।
২.
এই হাদিসের শেষাংশে এই শব্দ আছে যে قالت عائشة فقلت يارسول الله أتنام قبل أن توتر ؟ (তারপর আম্মাজান আয়েশা ছিদ্দিকা রা.বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি কি বিতর পড়ার আগে ঘুমান?) এই বিষয়টি তারাবীহ এর ক্ষেত্রে কল্পনাতীত যে, রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম তারাবীহ নামায পড়ে ঘুমিয়ে পড়েন আর সাহাবীরা বিতর পড়ার জন্য নবীর জন্য অপেক্ষমাণ থাকেন।
বরং এটি তাহাজ্জুদ এর ক্ষেত্রে হওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত।
৩.
মুহাদ্দিসীনে কিরাম এই হাদিসকে তারাবীহ এর অধ্যায়ে উল্লেখ করেননি। বরং ছলাতুত্ তাহাজ্জুদ অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন।
ইমাম মুহাম্মদ বিন নসর মারওয়াজী তাঁর কিতাব “কিয়ামুল লাইল” এর “عدد الركعات التى يقوم بها الامام للناس فى رمضان”(রামযানে ইমাম কত রাকাত তারাবীহ পড়বে) অধ্যায়ে অনেক হাদিস আনলেও আম্মাজান আয়েশা ছিদ্দিকা রা. থেকে বর্ণিত এই হাদিসটি সহীহ হওয়া সত্বেও তিনি আনেননি। সাথে এদিকে কোন ইশারাও করেননি।
৪.
মুহাদ্দিসীনে কিরাম এই হাদিসকে তারাবীহ এর রাকাত সংখ্যার অধ্যায়ের পরিবর্তে তাহাজ্জুদের অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন।
যেমন, ইমাম বুখারী রহ. তাঁর প্রণিত বুখারী শরীফে এই হাদিসটি নিম্ন বর্ণিত বাব / অধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন-
(ক) বিতর অধ্যায়-(১/১৩৫),
(খ) নবীজী ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম এর রাতে (নামাযের উদ্দেশ্যে) দান্ডয়মানতা রামযানে ও রামযান ছাড়া-(১/১৫৪),
(গ) রামযানে (নামাযের উদ্দেশ্যে) দান্ডয়মানতার ফযীলত অধ্যায়-(১/২৬৯),
(ঘ) রছুলে কারিম ছল্লাল্লহু আ'লাইহি ওয়া ছাল্লাম এর দু’চোখ ঘুমায় মন ঘুমায়না-(১/৫০৩)।
প্রথম অধ্যায়ে বিতরের রাকাত সংখ্যা আর দ্বিতীয় অধ্যায়ে তাহাজ্জুদ রামাযানে বেশি পড়তেন কিনা তা জানা আর তৃতীয় অধ্যায়ে রামাযানে বেশি বেশি নামাযের ফযীলত আর চতুর্থ অধ্যায়ে নবীজী ঘুমালে যে তার অযু ভাঙ্গেনা তার কারণ বর্ণনা জন্য হাদিস আনা হয়েছে।
তারাবীহের রাকাত সংখ্যা বুঝানোর জন্য কোথায় এসেছে এই হাদিস?
৫.
আল্লামা হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রহ.এই হাদিসের ব্যাক্ষায় বলেন, আর আমার কাছে এটি প্রকাশিত হয়েছে যে, ১১ রাকাতের থেকে না বাড়ানোর রহস্য এটি যে, নিশ্চয় তাহাজ্জুদ ও বিতরের নামায রাতের নামাযের সাথে খাস। আর দিনের ফরয যোহর ৪ রাকাত আর আসর সেটাও ৪ রাকাত আর মাগরীব হল ৩ রাকাত যা দিনের বিতর।
সুতরাং সাযুজ্যতা হল, রাতের নামায দিনের নামাযরের মতই সংখ্যার দিক থেকে সংক্ষিপ্ত ও বিস্তারিতভাবে। আর ১৩ রাকাতের ক্ষেত্রে সাযুজ্যতা হল, ফযরের নামায মিলানোর মাধ্যমে, কেননা এটি দিনের নামাযই তার পরবর্তী নামাযের জন্য।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ফাতহুল বারী শরহুল বুখারী, ৩/১৭।]
ইবনে হাজার রহ. এঁর এই রহস্য বা হিকমত বর্ণনা কি বলছেনা এই হাদিস দ্বারা তারাবিহ্ নয়, তাহাজ্জুদ উদ্দেশ্য? এই বক্তব্যে তাহাজ্জুদের কথা স্পষ্টই উল্লেখ করলেন ইবনে হাজার রহ.।
⭕ তাহাজ্জুদ ও তারাবীহের মাঝে পার্থক্যঃ
হাদিস অস্বিকারকারী কথিত আহলে হাদিসরা বলে “তাহাজ্জুদ আর তারাবীহ একই”; তাদের এই দাবিটি ভুল নিম্নবর্ণিত কারণেঃ
১.
তাহাজ্জুদের মাঝে ডাকাডাকি জায়েজ নয় তারাবীহতে জায়েজ।
২.
তারাবীহের সময় ঘুমানোর আগে তাহাজ্জুদের সময় নির্ধারিত নয় তবে উত্তম ঘুমের পর।
৩.
মুহাদ্দিসীনে কিরাম তাহাজ্জুদ ও তারাবীহের অধ্যায় ভিন্ন ভিন্ন লিখেছেন।
৪.
তাহাজ্জুদ নামাযের হুকুম কুরআন দ্বারা প্রমাণিত যথা সূরা ইসারার ৭৯ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَّكَ عَسَى أَن يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَّحْمُودًا অর্থাৎ আর রাতে তাহাজ্জুদ পড় এটি তোমার জন্য নফল, অচিরেই তোমাকে তোমার রব প্রশংসিত স্থানে অধিষ্ঠিত করবেন।
আর তারাবীহের ব্যাপারে আল্লাহর নবী বলেন-নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা রামযানের রোযা তোমাদের উপর ফরয করেছেন আর আমি তোমাদের উপর এতে কিয়াম করাকে সুন্নত করেছি।
[সূত্রঃ সুনানে নাসায়ী-১/৩০৮।]
সুতরাং বুঝা গেল তাহাজ্জুদ আল্লাহর আয়াত আর তারাবীহ নবীজী (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর বক্তব্য দ্বারা প্রমাণিত।
৫.
তাহাজ্জুদের হুকুম মক্কায় হয়েছে আর তারাবীহের হুকুম মদীনায় হয়েছে।
৬.
ইমাম আহমাদ রহঃ ও তারাবীহ তাহাজ্জুদ আলাদা বিশ্বাস করতেন (সূত্রঃ মাকনা’-১৮৪)।
৭.
ইমাম বুখারী রহঃ এঁর ক্ষেত্রে বর্ণিত তিনি রাতের প্রথমাংশে তার সাগরীদদের নিয়ে তারাবীহ পড়তেন আর শেষ রাতে একাকি তাহাজ্জুদ পড়তেন (সূত্রঃ ইমাম বুখারী রহঃ এঁর জীবনী)।
৮.
তাহাজ্জুদ এর নির্দিষ্ট রাকাত সংখ্যা রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত অর্থাৎ বিতরসহ বেশি থেকে বেশি ১৩ রাকাত আর কমপক্ষে ৭ রাকাত। আর তারাবীহ এর রাকাত সংখ্যার ক্ষেত্রে খোদ আহলে হাদিস ইমামদের স্বাক্ষ্য যে এর কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নবীজী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত নয়।
২ নং দলিল
عن جابر بن عبد الله قال : صلى بنا رسول الله صلى الله عليه و سلم في رمضان ثمان ركعات والوتر فلما كان من القابلة اجتمعنا في المسجد ورجونا أن يخرج إلينا فلم نزل في المسجد حتى أصبحنا فدخلنا على رسول الله صلى الله عليه و سلم فقلنا له : يا رسول الله رجونا أن تخرج إلينا فتصل بنا فقال : كرهت أن يكتب عليكم الوتر (قيام الليل-90)
অর্থাৎ : হযরত জাবের রাঃ থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে রামযানে ৮ রাকাত নামায ও বিতর নামায পড়লেন, তারপর যখন পরদিন হল আমরা মসজিদে একত্রিত হলাম এবং আকাংখা করলাম নবীজী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে আসবেন। আমরা মসজিদে অবস্থান করতে লাগলাম। প্রভাত হয়ে গেল। তখন আমরা গেলাম নবীজী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এঁর কাছে। তাকে বললাম-হে আল্লাহর রাসূল! আমরা আকাংখী ছিলাম আপনি আমাদের কাছে যাবেন এবং আমাদের নিয়ে নামায পড়বেন, তখন তিনি বললেন-আমি এটি পছন্দ করছিলামনা যে, তোমাদের উপর বিতর ফরয হয়ে যাক।
[সূত্রঃ কিয়ামুল লাইল-৯০।]
জবাব —
এই হাদিসটি নিয়ে কথিত আহলে হাদিসরা সবচে’ বেশি খুশি হতে দেখা যায়। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হল এই হাদিসটি অত্যন্ত দুর্বল।
শুধু একজন নয় এই হাদিসের তিনজন রাবীর ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসীনে কিরাম বলেছেন তারা গ্রহণযোগ্য নয়।
দেখুন মুহাদ্দিসীনে কিরাম কি বলে এই হাদিসের বর্ণনাকারীদের ব্যাপারে।
এক/ ইবনে হুমাইদ রাজীঃ
১. হাফেজ জাহাবী রহঃ বলেন-তিনি দুর্বল
২. ইয়াকুব বিন শি’বা রহঃ বলেন-তিনি অনেক অগ্রহণীয় হাদিস বর্ণনা করেন।
৩. ইমাম বুখারী রহঃ বলেন-এতে আপত্তি আছে।
৪. আবু জুরআ রহঃ বলেন-তিনি মিথ্যাবাদী।
৫. ইসহাক কু’সজ রহঃ বলেন-আমি স্বাক্ষ্য দিচ্ছি তিনি মিথ্যাবাদী।
৬. সালেহ জাযরাহ রহঃ বলেন-প্রত্যেক বিষয়ে সে হাদিস বর্ণনা করে। আল্লাহর উপর অধিক অপবাদ আরোপকারী আমি তাকে ছাড়া কাউকে দেখিনি। সে লোকদের হাদিস পরিবর্তন করে ফেলে।
৭. আল্লামা ইবনে খারাশ রহঃ বলেন-আল্লাহর কসম সে মিথ্যাবাদী
৮. ইমাম নাসায়ী রহঃ বলেন-সে গ্রহণযোগ্য নয়।
[গ্রন্থ সূত্রঃ মিযানুল ই’তিদাল-৩/৪৯-৫০।]
দুই/ ইয়াকুব বিন আব্দুল্লাহ আশআরীঃ
ইমাম দারা কুতনী রহঃ বলেন-সে শক্তিশালী নয়।
[গ্রন্থ সূত্রঃ মিযানুল ই’তিদাল-৩/৩২৪।]
তিন/ ঈসা বিন জারিয়াঃ
১. আল্লামা ইয়াহইয়া বিন মায়ীন রহঃ বলেন-তার কাছে অগ্রহণীয় হাদিস আছে।
২. ইমাম নাসায়ী বলেন-তার হাদিস অগ্রহণীয়।
৩. ইমাম নাসায়ী বলেন-তার হাদিস পরিত্যাজ্য।
৪. আবু দাউদ রহঃ বলেন-তার হাদিস অগ্রহণীয়।
৫. আল্লামা জাহাবী বলেন-তিনি দুর্বলদের মাঝে শামীল।
[গ্রন্থ সূত্রঃ মিযানুল ই’তিদাল-২/৩১১।]
এছাড়া এ হাদিসটি “বুলুগুল মারাম” কিতাবে হযরত জাবের রাঃ থেকেই বর্ণিত কিন্তু সেখানে রাকাত সংখ্যার কথা উল্লেখ নেই।
[দেখুন বুলুগুল মারাম-৪২-৪৩]
এছাড়াও এ হাদিসে আরেকটি সমস্যা আছে, তাহল-এই হাদিসে বিতর ফরয হবার আশংকার কথা বলা হয়েছে অথচ অন্য সহীহ হাদিসে তারাবীহ ফরয হয়ে যাবার আশংকা উল্লেখে করা হয়েছে।
[গ্রন্থ সূত্রঃ মিযানুল ই’তিদাল-২/৪২-৪৩।]
প্রিয় পাঠক/পাঠিকাদের হাতেই ছেড়ে দিলাম এই হাদিস দিয়ে হুকুম প্রমাণিত করার ভার।
এরকম দুর্বল হাদিস দিয়ে যেখানে তারা নিজেরাই সহীহ হাদীস বলে সারাদিন চিল্লাচিল্লি করে এরকম মতবিরোধপূর্ণ বিষয় কি প্রমাণিত হয়? এটা তো তাদের নিজেদেরই মতের বিপরীত।
৩ নং দলিল
و حدثني عن مالك عن محمد بن يوسف عن السائب بن يزيد أنه قال أمر عمر بن الخطاب أبي بن كعب وتميما الداري أن يقوما للناس بإحدى عشرة ركعة ( موطأ مالك-98)
অর্থাৎ : মুহাম্মদ বিন ইউসুফ সায়েব বিন ইয়াজীদ রহঃ থেকে বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয় ওমর রাঃ ওবাই বিন কাব রাঃ ও তামীমে দারী রাঃ কে মানুষের সাথে ১১ রাকাত নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ মুয়াত্তা মালিক-৯৮।]
জবাব —
এই হাদিস দিয়েও দলিল দেয়া ঠিক নয়। কারণ-
১. হাদিসটির শব্দে পরস্পর বিরোধীতা রয়েছে। যেমন এই হাদিসের সূত্রের একজন বর্ণনাকারী মুহাম্মদ বিন ইউসুফ তার সাগরীদ ৫ জন।
তার মধ্যে ৩জন ১১ রাকাত আর ১জন ১৩ রাকাত ও ১জন ২১ রাকাতের বর্ণনা নকল করেন।
এছাড়া যারা ১১রাকাতের কথা বর্ণনা করেছেন তাদের বর্ণনার শব্দেও রয়েছে বিস্তর ফারাক। যথা-
ক/ ইমাম মালিক এনেছেন ওমর রাঃ ওবাই বিন কাব রাঃ ও তামীমে দারী রাঃ কে মানুষের সাথ ১১ রাকাত নামায পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
খ/ হযরত ইয়াহইয়া আল কাত্তান বর্ণনা করেন-ওমর রাঃ ওবাই বিন কাব ও তামিমে দারী এর কাছে লোকদের একত্র করেন আর তারা দু’জন ১১ রাকাত নামায পড়াতেন।
গ/ আব্দুল আজীজ বিন মুহাম্মদ রহঃ এর বর্ণনায় এসেছে-আমরা হযরত ওমর রাঃ এর আমলে ১১ রাকাত নামায পড়তাম।
বর্ণনাকারীর বর্ণনার ঠিক নেই, সাথে সাথে যারা এক কথা বলেছেন তাদের বক্তব্যটিও পরস্পর বিরোধী এমন বর্ণনা পরিত্যাজ্য।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ইলাউস সুনান-৭/৪৮।]
২. এই বর্ণনাটি হযরত ওমর রাঃ থেকে আরেকটি সহীহ ও শক্তিশালী বর্ণনার বিপরিত। হযরত ওমর রাঃ থেকে ২০ রাকাত তারাবীহের কথা ইমাম মালিক রাহঃ তার মুয়াত্তার ৪০ নং পৃষ্ঠায় ও হাফেজ ইবনে হাজার ফাতহুল বারীর ৪ নং খন্ডের ২১৯ নং পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেন। সুতরাং বুঝা গেল এই বর্ণনাটি আমলযোগ্য নয়।
৩. ইমাম মালিক রাহঃ নিজেই এই বর্ণনাটি আমলযোগ্য মনে করেননি, তাই তিনি নিজে ৮ রাকাতের কথা বলেন নি।
৪. যদি হযরত ওমর রাঃ থেকে ১১ রাকাতের বর্ণনাটি সহীহ হত তাহলে পরবর্তীতে হযরত উসমান রাঃ ও আলী রাঃ থেকে এরকম বর্ণনা ও আমল প্রমাণিত হত, অথচ তাদের থেকে এরকম বর্ণনা প্রমাণিত নয়।
৫. এটাও হতে পারে যে, প্রথমে হযরত ওমর রাঃ এর কাছে নবীজী থেকে ৮ রাকাতের বর্ণনা এসেছিল কিন্তু পরবর্তীতে ২০ রাকাতের বর্ণনাটি পৌঁছলে তিনি ৮ রাকাতের বর্ণনাটি পরিত্যাগ করেন।
এই সকল কারণে এই হাদিসটি আমলযোগ্য হিসেবে বাকি থাকে না।
তারাবীহের রাকাত সংখ্যার ব্যাপারে বিভিন্ন অভিমতঃ
১. শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন-আর যারা ধারণা করে যে, নিশ্চয় রামযানের দন্ডায়মানতার নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রমাণিত আছে নবীজী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম থেকে যার উপর বাড়ানো কমানো যাবেনা সে ভুলের মাঝে আছে।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ফাতওয়া ইবনে তাইমিয়া-২/৪০১।]
২. আল্লামা ইবনে সুবকী রহঃ বলেন-জেনে রাখ! নিশ্চয় রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম কি বিশ রাকাত তারাবীহ পড়েছেন না তার চে’ কম পড়েছেন তা তার থেকে বর্ণিত নেই।
[গ্রন্থ সূত্রঃ শরহুল মিনহাজ।]
৩. আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহঃ বলেন-নিশ্চয় ওলামায়ে কিরাম মতান্যৈক্য করেছেন এর সংখ্যার ক্ষেত্রে, যদি তা নবীজী সাঃ থেকে প্রমাণিত বিষয় হত তাহলে তাতে মতবিরোধ হতনা।
[গ্রন্থ সূত্রঃ আল মিসবাহ-৭৪।]
৪. মাওলানা ওয়াহীদুজ্জামান বলেন-তারাবীহ নামাযের নির্দিষ্ট রাকাত নেই।
[গ্রন্থ সূত্রঃ নুজলুল আবরার-১/১২৬।]
৫. আবুল খায়ের নুরুল হাসান খাঁ বলেন-মোটকথা হল নির্দিষ্ট সংখ্যা নবী থেকে প্রমাণিত নয়।
[গ্রন্থ সূত্রঃ আল উরফুল জাদি-৮৪।]
৬. নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান বলেন-নিশ্চয় তারাবীহ নামায সুন্নত মৌলিকভাবে। যেহেতো নবীজী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম তা রাতে পড়তেন তার পর তা ছেড়ে দিয়েছেন উম্মতের প্রতি দরদে যেন তা ফরয না হয়ে যায়, আর এর কোন নির্দিষ্ট রাকাতের কথা সহীহ হাদিসে নেই, কিন্তু নবীজী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়াসাল্লাম এঁর একথা জানা যায় যে, তিনি রামাযানে এত ইবাদত করতেন যা অন্য সময়ে করতেননা।
[গ্রন্থ সূত্রঃ আল ইনতিকাদুর রাজী’-৬১।]
তারাবীহ নামায আট রাকায়াত হওয়ার দাবী খণ্ডনঃ
আমরা সাধারণ মুসলমানেরা গত ১৪০০ বছর ধরে ২০ রাক’আত তারাবীর নামায পড়ে আসছি।
প্রায় ২৫০ বছরের ব্রিটিশদের তৈরীকৃত ওহাবী-খারেজী মতবাদের অনুসারীরা আজ হঠাৎ করে বলে বেড়াচ্ছে তারাবীর নামায নাকি ৮ রাক’আত।
শুধু তাই নয় তাদের এই মিথ্যা দাবীকে সত্য বলে প্রমাণ করা জন্য এরা অনেক আলেমদের বই পর্যন্ত পরিবর্তন করেছে।
আমরা একটির উদাহরণ দিচ্ছি।
বড় পীর গাউসুল আযম আব্দুল ক্বাদীর জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এঁর একটি বিখ্যাত কিতাব “গুনিয়াতুত তালিবীন” এঁর কথা।
এই ওহাবী-খারেজী মতবাদের প্রচারকারীরা পাকিস্তান থেকে এই বইটি প্রকাশের সময় ২০ রাকা’আত এর স্থলে ১১ (তারাবীহ ৮+বিতর ৩) লিখে ছাপায়।
স্ক্যান কপিসহ নিচের লিঙ্কে দেখুন
http://www.islamieducation.com/ghinya-al-talibeen-and-wahabi-fabrication/
আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন, ইন্টারনেটে তাদের বিভিন্ন ওয়েবসাইটসমূহে যে ৮ রাক’আতের কথা বলা আছে, তা মূলত তাদের দ্বারা এই পরিবর্তিত বা নকল কিতাব থেকেই নেয়া। এই সম্পর্কে সকলে সাবধান থাকবেন।
এছাড়াও এই দাবীর পিছনে তারা যেই হাদীস উল্লেখ করে তা তাহাজ্জুদের নামায সম্পর্কে বলা হয়েছে।
যা ইতপূর্বে সংক্ষেপে আলাচনা করা হয়েছে।
⭕✨ তাহাজ্জুদের নামায হওয়ার বিস্তারিত জবাব প্রদান করা হলোঃ
প্রথমত যারা বলে তারাবীহ্ নামায আট রাকায়াত পড়া সুন্নত, তারা দলীল হিসাবে নিম্নোক্ত হাদীছ শরীফ পেশ করে থাকে।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফে আছে,
عن حضرة ابى سلمة بن عبدالر حـمن رضى الله تعالى عنه انه سأل حضرة عائشة عليها السلام كيف كان صلوة رسول الله صلى الله عليه وسلم فى رمضان؟ فقالت ماكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يزبد فى رمضان ولا فى غيره على احدى عشر ركعة يصلى اربعا.
অর্থাৎ : হযরত আবূ সালমাহ্ ইবনে আব্দুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার মধ্যে কত রাকায়াত নামায পড়তেন? তখন উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস ও পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত অন্য মাসে এগার রাকায়াতের অধিক নামায পড়তেন না। আর তিনি তা চার, চার রাকায়াত করে পড়তেন।”
[গ্রন্থ সূত্রঃ পবিত্র বুখারী শরীফ, ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৫৪।]
খণ্ডনমূলক জবাবঃ✨
কয়েকটি কারণে উপরোক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা কখনোই তারাবীহ্ নামায আট রাকায়াত প্রমাণিত হয়না।
*** ১নং কারণঃ ❄
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে فى رمضان (অর্থাৎ পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার মধ্যে) এর সাথে সাথে ولا فى غيره (অর্থাৎ পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত অন্য মাসে) একথাও উল্লেখ আছে। অর্থাৎ বলা হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অন্য মাসে এরূপ এগার রাকায়াত নামায পড়তেন তদ্রুপ পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার মধ্যেও এগার রাকায়াত নামায পড়তেন।
এখন প্রশ্ন হলো-
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার মধ্যে না হয় তারাবীহ্ নামায পড়েছেন কিন্তু গায়রে রমাদ্বান শরীফ অর্থাৎ পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস ব্যতীত অন্য মাসে তারাবীহ্ নামায পড়বেন কিভাবে? তারাবীহ নামায তো শুধু পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার মধ্যে পড়তে হয়।
মূলত এ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে তারাবীহ্ নামাযের কথা বলা হয়নি বরং তাহাজ্জুদ নামাযের কথা বলা হয়েছে।
কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সারা বছরই তাহাজ্জুদ নামায আদায় করতেন।
এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিছ, আল্লামা শায়খ শামসুদ্দীন কিরমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
اما الـمراد بـها صلوة الوتر- والسوال والـجواب واردان عليه.
অর্থ : “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার উক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা তাহাজ্জুদ নামাযকে বুঝানো হয়েছে। হযরত আবূ সালমাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার প্রশ্ন ও উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার জবাব তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।”
[গ্রন্থ সূত্রঃ কাওকাবুদ্ দুরারী শরহে বুখারী শরীফ।]
উক্ত হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যায় হযরত শাহ্ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহ্লভী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
رصیح انست کہ انپہ انحضرت صلی اللہ علیہ وسلم گزارد ھمہ تھجدوے بود کہ یازدہ رکعت باشد
অর্থ : “বিশুদ্ধ বা সহীহ্ মত এটাই যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিতরসহ যে এগার রাকায়াত নামায পড়েছেন, সেটা তাহাজ্জুদ নামায ছিল।”
[গ্রন্থ সূত্রঃ আশয়াতুল লুময়াত।]
এ প্রসঙ্গে শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিস দেহ্লভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
ان زوایت محمول بر نماز تھجداست کہ در رمضان وغیر رمضان یکسان بود
অর্থ : “উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার হতে বর্ণিত হাদীছ শরীফখানা তাহাজ্জুদ নামাযের সাথে সম্পর্কিত, যা পবিত্র রমাদ্বান শরীফ ও গায়রে রমাদ্বান শরীফ-এ একই সমান ছিল।”
[গ্রন্থ সূত্রঃ মুজমুয়ায়ে ফতওয়ায়ে আযীযী।]
আর হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উহার ব্যাখ্যায় বলেন,
وقد او تر رسول الله صلى الله عليه وسلم- بر كعة وهلاث وخـمس وهكذا با لاو تار الى احدى عشر ركعة والرواية مترودة فى ثلاث عشرة وفى حديث شاذ سبع عشرة وكان هذه الر كعات اعتسى ما سـمينا جـملتها وترأ صلاة لا لليل وهو التهجد.
অর্থ : “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক, তিন, পাঁচ, সাত, নয় এবং এগারো রাকায়াত বিতর আদায় করতেন। তেরো রাকায়াতের বর্ণনাটি (مترود) পরিত্যাজ্য, আর একখানা (شاذ) হাদীছ শরীফের মধ্যে সতরো রাকায়াতের কথাও উল্লেখ আছে। আর এসকল নামাযের রাকায়াত যার সাথে আমি বিতর শব্দটি ব্যবহার করেছি, তা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রাত্রি বেলায় আদায় করতেন। আর এটাই হলো তাহাজ্জুদ নামায।”
[গ্রন্থ সূত্রঃ ইহ্ইয়াউ উলুমুদ্দীন।]
উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, হযরত আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত বুখারী শরীফের উক্ত হাদীছ শরীফখানা তারাবীহ্ নামাযের পক্ষে মোটেও দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়, বরং সেটা তাহাজ্জুদ নামাযের দলীল হিসাবেই গ্রহণযোগ্য।
*** ২নং কারণঃ ❄
তাছাড়া উক্ত হাদীছ শরীফখানা যে তাহাজ্জুদ নামায সম্পর্কিত, তার আরো একটি অকাট্য দলীল হলো এই যে, হাদীছ শাস্ত্রের ইমামগণ উক্ত হাদীছ শরীফখানা উনাদের স্ব স্ব কিতাবে তাহাজ্জুদের অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন।
যেমন-
* হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মুয়াত্তায়ে মালিক’ উনার ৪৭ পৃষ্ঠায়;
* হযরত ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মুসলিম শরীফ’ উনার ১ম খণ্ড ২৫৪ পৃষ্ঠায়;
* হযরত ইমাম আবূ দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘সুনানে আবূ দাউদ’ উনার ১ম খণ্ড ১৯৬ পৃষ্ঠায়;
* হযরত ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তিরমিযী শরীফ’ উনার ১ম খণ্ড ৫৮ পৃষ্ঠায় ও
* হযরত ইমাম নাসায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘নাসায়ী শরীফ’ উনার ১ম খণ্ড ১৫৪ পৃষ্ঠায়-
উক্ত হাদীছ শরীফকে তাহাজ্জুদের অধ্যায়ে বর্ণনা করেন।
আর যদি কোন কিতাবে উক্ত হাদীছ শরীফকে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার ইবাদত হিসাবে তারাবীহর অধ্যায়ে বর্ণনা করেও থাকে, তথাপিও ওটা তারাবীহ নামাযের স্বপক্ষে দলীল হিসাবে পেশ করা শুদ্ধ বা গ্রহণযোগ্য হবেনা।
কারণ উছূল রয়েছে-
لـماجاء الا حتمال بطل الاستد لال.
অর্থাৎ যখন কোন (হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে) সন্দেহ্ বা মতবিরোধ দেখা দিবে, তখন ওটা দলীল হিসাবে পরিত্যাজ্য হবে।
*** ৩নং কারণঃ ❄
তাছাড়া উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত উক্ত হাদীছ শরীফকে হযরত মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা (مضطرب) সন্দেহযুক্ত বলেছেন।
এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে-
اشكلت روايات حضرة عائشة عليها السلام على كثير من اهل العلم حتى نسب بعضهم حديثهاالى الاصطراب.
অর্থ : “অধিকাংশ আলিমগণ উক্ত হাদীছ শরীফ উনার ব্যাপারে মতভেদ করেছেন। এমন কি কেউ কেউ উক্ত হাদীছ শরীফকে (مضطرب) সন্দেহযুক্ত বলে আখ্যায়িত করেন।”
[গ্রন্থ সূত্রঃ ফতহুল বারী শরহে বুখারী শরীফ।]
কারণ, স্বয়ং উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম থেকে ছহীহ্ সনদে তেরো রাকায়াতের বর্ণনাও রয়েছে।
কাজেই مضطرب সন্দেহযুক্ত হওয়ার কারণে উক্ত হাদীছ শরীফকে তারাবীহ নামাযের দলীল হিসাবে পেশ করা হাদীছ শরীফের উছূল মুতাবিক সম্পূর্ণই অশুদ্ধ ও অগ্রহণযোগ্য।
কারণ, উছূল হলো (مضطرب) সন্দেহযুক্ত হাদীছ শরীফ (اضطراب) বা সন্দেহ যতক্ষণ পর্যন্ত দূর করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত উক্ত হাদীছ শরীফ দলীল হিসাবে গ্রহণযোগ্য হবেনা।
অতএব, উক্ত হাদীছ শরীফকে দলীল হিসাবে পেশ করতে হলে, প্রথমে উহার (اضطراب) বা সন্দেহ দূর করতে হবে।
*** ৪নং কারণঃ ❄
উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার কর্তৃক বর্ণিত হাদীছ শরীফখানা যে তাহাজ্জুদ নামায সম্পর্কিত, তার আরো একটি প্রমাণ হলো, উক্ত হাদীছ শরীফের মধ্যে (يصلى اربعا) অর্থাৎ তিনি তা চার চার রাকায়াত করে পড়তেন, একথা উল্লেখ আছে। এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সেটা তারাবীহ্ নামায নয়।
কারণ তারাবীহ্ নামায দুই-দুই রাকায়াত করে আদায় করা হয়।
মূলকথা হলো, উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই সাব্যস্ত হলো যে, ওহাবীরা তাহাজ্জুদ ও তারাবীর নামাযকে এক মনে করে দেখে আট রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের স্বপক্ষে এরা মূল দলীল হিসাবে ‘পবিত্র বুখারী শরীফ’ এর যে হাদীছ শরীফখানা পেশ করে থাকে, সেটা মোটেও তারাবীহ্ নামাযের দলীল নয় বরং সেটা তাহাজ্জুদ নামাযের দলীল।
কাজেই আট রাকায়াতের ব্যাপারে তাদের উক্ত দলীল মনগড়া, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত।
সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে, ছিহাহ্ সিত্তাহ এর মধ্যে আট রাকায়াত তারাবীহ্ নামাযের কোন বর্ণনা বা প্রমাণ নেই।
আর সবার শেষে আপনাদের অবাক করার মত এক তথ্য দেই। প্রায় ১৫০ বছর আগে এই ৮ রাক’আত তারাবীর দাবী যখন প্রথম উঠে তখন খোদ ওহাবীদের এক নেতাই প্রতিবাদ করেছিল
১২৮৪হিজরীতে দিল্লীর আকবারাবাদের জনৈক আলেম সর্বপ্রথম আট রাকাআত তারাবীর পক্ষে ফতোয়া প্রদান করে।
তখনকার হক্কানী ওলামায়ে কিরামের প্রতিবাদের মুখে ফতোয়াটি বাতিল হয়ে যায়।
পুনঃরায় ১২৮৫ হিজরীতে মাওলানা হুসাইন বাঠালবী নামক আলেম ৮ রাকাত তারাবীর ফতোয়া প্রদান করে।
তার প্রতিবাদে আহলে হাদীস ফেরকার প্রসিদ্ধ আলেম মাওলানা গোলাম রসূল সাহেব রিসালাতুত তারাবীহ নামক একটি পুস্তক রচনা করে এবং ১২৯০ হিজরীতে প্রকাশ করে।
ঐতিহাসিক এ আলোচনার দ্বারা প্রমাণ হল তথাকথিত আহলে হাদীসরাও প্রথমে বিশ রাকাত তারাবীর পক্ষে ছিলো।
পরবর্তীতে তারা কোন স্বার্থে আট রাকাতের মত অবলম্বন করলো তা তারাই ভাল জানে।
[গ্রন্থ সূত্রঃ রাসায়েলে আহলে হাদিস ৬/২৮।]
আল্লাহ তায়ালা আমাদের রামাযানের এই পবিত্র বিশেষ আমল কিয়ামু রামাযান বা তারাবীহ ২০ রাকাত নামায আদায় করে তার নৈকট্য হাসিল করার তৌফিক দান করুন।
________
▆ তারাবিহ ২০ রাকাআত; ৮ রাকাআত নয়।
নোট ০১.
আলবানীদের আলবানী (১৯১৪-১৯৯৯খ্রিস্টিয়)-র অদ্ভূত ফতোয়া।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1761420850840019
নোট ০২.
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1761424207506350
নোট ০৩.
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1761426690839435
নোট ০৪.
সউদী শায়েখ সালিহ বিন ফাউযানের ফতোয়া : তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ এর মধ্যে পার্থক্য।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1761428907505880
নোট ০৫.
▆ তারাবীহ নামায সম্পর্কিত আহলুস্ সুন্নাহ’র ফতোওয়া ▆
https://m.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1795069417475162
নোট ০৬.
▆ প্রশ্ন : কেউ কেউ বলেন যে, তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ নাকি একই নামায; তারা বলেন যে রমযানে রাতের শুরুভাগে এক নামায (তারাবীহ) আর শেষভাগে আরেক নামায (তাহাজ্জুদ) এটা কোনো দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়। রমযানে তারাবীহ পড়লে তাহাজ্জুদ পড়া লাগে না। কথাটা কি সঠিক?
উত্তরঃ
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1801971863451584
নোট ০৭.
প্রশ্নঃ (প্রশ্নটি FBOOK এর একটি Post এ Comment হিসেবে করা হয়েছে) প্রশ্নকারী বলেন, (তার ভাষায়) এখানে একটা হাদিস দেন যেখানে বলা হয়েছে ২০ রাকাতের কম পড়লে তারাবিহ হবে না। আবার ৮ রাকাত বা ৮ রাকাতের কম পরলে নামাজ হবে না তার দলিল দেন।
উত্তরঃ
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1802683020047135
▆ সলাতিল ক্বিয়ামু রমাদ্বন (তারাবীহ) এর রাকাআত-সংখ্যা ২০; ৮ নহে ▆
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1804320353216735
▆ তারাবিহ বিশ রাকাত নাকি আট রাকাত, প্রশ্ন সেটি নয়।
প্রশ্ন হচ্ছে তারাবিহ আছে কি নেই! ▆
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1804435026538601
▆ ৮ রাক‘আত তারাবীহ দাবীকারী রাফিউল ইয়াদাইনীদের দাবীকৃত দলিল সমুহের খন্ডন।
তাদের প্রথম দলীলঃ
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1803365319978905
রাফিউল ইয়াদাইনীদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দলীলঃ
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1803376936644410
রাফিউল ইয়াদাইনীদের চতুর্থ দলীলঃ
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1804234013225369
▆সলাতিল ক্বিয়ামু রমজান (তারাবীহ) ২০ রাকাআত : ইয়াজিদ বিন খুসায়ফা (রঃ) বর্ণিত হাদিস পাকের তাহকিক (Authentcation)▆
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1804218489893588
▆ মাসজিদুল হারামে তারাবিহ এর দু'টি জামাআত হয় না।
মাত্র 2.14MB ভিডও; সত্য উন্মোচন হয়ে গেলো........
উপমহাদেশীয় আ. রাজ্জাক শেখ, মোজাফ্ফর শেখ ও তাদের মুরিদ শায়খেরা কাজ্জাব।
প্রথমে তাদের মুখ থেকেই শুনুন।
অত:পর
শুনুন :
ডক্টর আব্দুল আজীজ আল-হাজ।
# মুসাইদুল ইমাম (সহকারী ইমাম) মসজিদুল হারাম;
# চেয়ারম্যানঃ হাদীস বিভাগ, মহাবিদ্যালয় মসজিদুল হারাম, মক্কা মুকাররামা।
এঁর সাক্ষাতকার।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1749721121973926
যারা Youtube লিংক থেকে শুনতে চান তাদের জন্যে : https://www.youtube.com/watch?v=Us8S3zTmbaw
▆ ইসলাম নতুন নয়; পুরাতন।
টাকা দ্বারা ‘‘ফিতরা’’ দেয়া হাদীস ও অগ্রজ যুগের সেরা সেরা শায়খগণের উক্তি দ্বারা হাজার বছর ধরে প্রমাণিত।
উপমহাদেশীয় আ. রাজ্জাক শেখ কাজ্জাবীর ধোঁকাবাজি।
https://mbasic.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1761482577500513
▆ প্রসঙ্গ : সহীহ্-যয়ীফ নির্ধারনে হাদিসের তাহকিক (Authentication) আসলে কী।
https://www.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1688604351455003
_____________
▆ হাদিস সম্পর্কে জরুরী জ্ঞাতব্য বিষয়ঃ
নোট ০১. দ্বয়ীফ হাদিসের উপর 'আমল করা মুস্তাহাব
https://mobile.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1697298063918965
নোট ০২. জাল হাদিসের হুকুম
https://mobile.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1697295443919227
নোট ০৩. ``হাদিসটি সহিহ্ নয়`` বলতে মুহাদ্দিসিনে ক্বিরাম কি বুঝিয়ে থাকেন!
https://mobile.facebook.com/hasan.mahmud/posts/1697290543919717
_________