১৬- সালাত আদায়ের পদ্ধতিতে পুরুষ ও মহিলার বিধান এক নয়
▆ আহলে হাদীসদের মতে :
সালাত আদায়ের পদ্ধতিতে পুরুষ ও মহিলার বিধান সমান।
দলীলঃ ��
عن أبي سليمان مالك بن الحويرث، قال: أتينا النبي صلى الله عليه وسلم، ونحن شببة متقاربون، فأقمنا عنده عشرين ليلة، فظن أنا اشتقنا أهلنا، وسألنا عمن تركنا في أهلنا، فأخبرناه، وكان رفيقا رحيما، فقال: ارجعوا إلى أهليكم، فعلموهم ومروهم، وصلوا كما رأيتموني أصلي (رواه البخاري- ١/٢٢٦)
وقال النخعي تفعل المرأة في الصلاة كما يفعل الرجل (مصنف إبن أبي شيبة)
عن مكحول وكانت أم الدرداء تجلس في صلاتها جلسة الرجل (البخاري- ١/٢٨٤)
তারা বলে পুরুষ ও মহিলা সকলেই এই হাদীসের হুকুমের আওতাভূক্ত। এখানে নারী পুরুষের মাঝে কোন পার্থক্য করা হয় নি। তাই নামাযের  বিধানের ক্ষেত্রে সকলেই সমান। 
��আহনাফের মতে :
সালাতের পদ্ধতিগত ক্ষেত্রে মহিলাদের আমল পুরুষের আমলের অনুরূপ নয়। তা সরাসরি প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  এঁর হাদীস থেকেই প্রমাণিত যে, দুজন মহিলা সালাত আদায় করছিলেন তাদের সেজদা করার পদ্ধতি দেখে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  তাদেরকে সংশোধন করে বললেন, “নিশ্চয় নামাযের বিধানের ক্ষেত্রে মহিলারা পুরুষের মতো নয়”।
দলীলঃ ��
عن يزيد بن أبي حبيب، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم مر على امرأتين تصليان فقال: إذا سجدتما فضما بعض اللحم إلى الأرض فإن المرأة ليست في ذلك كالرجل (رواه أبو داود في مراسيله- ٨، رواه البيهقي في سننه -٢/٢٢٣)
عن أبي هريرة رضي الله عنه، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: التسبيح للرجال، والتصفيق للنساء (رواه البخاري- ١/٤٠٣، إبن ماجة، رقم الحديث-١٠٣٤، أبو داود، رقم الحديث- ٩٣٩، سنن النسائي، رقم الحديث-١٢٠٧، صحيح إبن خزيمة، رقم الحديث-٨٩٤)
মহিলাদের নামাযের কিছু পার্থক্য তুলে ধরা হলো
১- মহিলারা আযান দিতে পারে না। যদি দেয় তাহলে পুরুষের মাধ্যমে দোহরাতে হবে। (ই’লাউস সুনান ২/১২৪, বাইহাক্বী ১/৭৯)
২- মহিলাদের জন্য মসজিদে গিয়ে জামাতে শরীক হওয়া নিষেধ। (ফাতহুল বারী ২/২৯০)
৩- শুধু মহিলাদের জামাত করা মাকরুহে তাহরীমী। (ই’লাউস সুনান ৪/২২১)
৪- কোন পুরুষের জন্য মহিলা ইমামের ইক্তেদা করা জায়েজ নয়। এবং মহিলার জন্যও কোন পুরুষের ইমাম হওয়া জায়েজ নয়।
৫- মহিলা তাহরীমা বাঁধার সময় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে এবং চাদরের ভেতর থেকে হাত বের করবে না।
৬- মহিলারা সীনার উপর হাত বাঁধবে।
৭-মহিলারা রুকুতে পুরুষের তুলনায় কম ঝুকবে।
৮- মহিলারা রুকুতে উভয় বাহু পাঁজরের সঙ্গে পরিপুর্ণভাবে মিলিয়ে রাখবে।
৯- মহিলারা রুকুতে হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিয়ে রাখবে।
১০- মহিলারা সংকুচিত হয়ে সেজদা করবে এবং কনুইদ্বয় পুরুষের মতো খোলা ও ছড়িয়ে রাখবে না।
১১- মহিলারা সেজদায় উভয় উরুকে পেটের সাথে মিলিয়ে রাখবে।
১২- বৈঠকের সময় উভয় পা ডান দিকে বের করে দিয়ে বাম নিতম্বের উপর বসবে।
এসব বিষয়গুলো হাদীস দ্বারা অকাট্টভাবে প্রমাণিত।

��আহলে হাদীসদের দলীলের জবাব :
১)
صلوا كما رأيتموني أصلي
বস্তুত এই হাদীসটিতে একটি মূলনীতি প্রদান করা হয়েছে।
আর তা হলো প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  যেভাবে সালাত আদায় করেছেন সেভাবে সালাত আদায় করতে হবে।
উক্ত মূলনীতি পুরুষ নারী সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। তবে তা নামাযের পদ্ধতিগত বিষয়ে নয়।
বরং নামাযের হুকুম-আহকাম ও রোকন সমূহের ক্ষেত্রে নারী পুরুষ সমান।
সুতরাং উক্ত হাদীস দলীল হিসাবে উল্লেখ করা বুদ্ধিমানের পরিচায়ক নয়।

২) মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাতে ইবরাহিম নাখয়ী থেকে এই ধরনের কোন বর্ননা উল্লেখ নেই।
বরং "নাসীরুদ্দীন আলবানী" তার নামে চালিয়ে দিয়েছেন।
অথচ ইবরাহিম নাখয়ী রহ. থেকে একাধিক সনদে এর ব্যতিক্রম মত বর্নিত হয়েছে।
৩) ইবনে হাজার আসকালানী বলেন, মাকহুলের রিওয়ায়েতে বর্নিত উম্মে দারদা ছিলেন একজন তাবেয়ী। যিনি ৮০ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন। (ফাতহুল বারী ২/৩০৬)
দেওবন্দী শায়খ যাকারিয়া বলেন, একজন মাত্র তাবেয়ীর আমল দলীল হিসাবে গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। (লামেউদ দারারী আলা জামিউল বুখারী ১/৩৩১)

অন্য সকল তাবেয়ীগনের আমল পুরুষের মতো ছিলো না। উম্মে দারদা ব্যতীত।
সুতরাং সামগ্রিক আমলের বিপক্ষে একজনের আমল গ্রহনযোগ্য হবে না।

 
Top