১৮- ফরয নামাযের পর মুনাজাত করার প্রমাণ
▆ আহলে হাদীসদের মতে :
ফরয নামাযের পর মুনাজাত করা বিদ’আত। এটি আল্লামা ইবনে তাইমিয়া এবং আল্লামা হাফেজ ইবনুল কায়্যিম এরও মত।
দলীলঃ ��
হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাযি. যখন ফরয  নামাযের  সালাম ফিরাতেন তখন এত তাড়াতাড়ি উঠে পড়তেন যে, মনে হতো তিনি উত্তপ্ত পাথরের উপর উপবিষ্ট আছেন। (উমদাতুল ক্বারী- ৬/১৩৯)
��আহনাফের মতে :
ফরয নামাযের পর মুনাজাত করা একটি মুস্তাহাব আমল, বিদ’আত নয়।
কারণ বিদ’আত বলা হয় ঐ আমলকে শরীয়তে যার কোন ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় না।
অথচ উক্ত মুনাজাত বহু নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা সুপ্রমানিত।
তাই
��  যারা মুনাজাতকে একেবারেই অস্বীকার করে তারাও ভুলের মধ্যে রয়েছেন।
��  আর যারা ইমাম মুক্তাদীর সম্মিলিত মুনাজাতকে সর্বাবস্থায় বিদ’আত বলেন তাদের দাবীও ভিত্তিহীন।
��  আর যারা মুনাজাতকে জরুরী মনে করেন এবং এই ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করেন এবং কেউ না করলে তাকে কটাক্ষ করেন তারাও ভুলের মধ্যে আছেন।

আহনাফের দলীলঃ ��
✴ হযরত আবু উমারা রাযি. হতে বর্নিত আছে যে, প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  কে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন সময় দোয়া কবুল হওয়ার বেশি সম্ভাবনা রয়েছে? প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  উত্তরে বললেন, শেষ রাতে এবং ফরয নামাযের পর। (তিরমিযী ৩/১৬৭ )
✴ হযরত ইবনে আব্বাস রাযি. বলেন, যখন তুমি ফরয  নামায হতে ফারেগ হও তখন দোয়ায় মশগুল হয়ে যাবে। (তাফসীরে ইবনে আব্বাস পৃষ্ঠা-৫১৪)
✴ হযরত কাতাদা, যাহহাক ও কালবী রহ. হতে বর্নিত আছে যে, তারা বলেন, ফরয  নামায সম্পাদন করার পর দোয়ায় লিপ্ত হবে। (তাফসীরে মাযহারী ১০/২৯)
✴ ইবনে হাজার আসক্বালানী রহ. বলেন, যে সকল ফরয  নামাযের পর সুন্নাত নেই সে সকল নামাযের  পর ইমাম ও মুক্তাদীগন আল্লাহর যিকিরে মশগুল হবেন। অতঃপর ইমাম কাতারের ডান দিকে মুখ করে দু’আ করবেন। তবে সংক্ষিপ্তভাবে মুনাজাত করতে চাইলে কিবলার দিকে মুখ করেও করতে পারেন। (ফাতহুল বারী ২/৩৩৫)
✴ আল্লামা নববী রহ. বলেন, সকল ফরয  নামাযের পরে ইমাম, মুক্তাদী, ও মুনফারিদের জন্য দোয়া করা মুস্তাহাব। এই ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। (শরহে মুসলিম লিন নববী)
✴ আল্লামা আনওয়ার শাহ কাশ্মিরী বলেন, নামাযের পরে হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা বিদ’আত নয়। কারণ এই ব্যাপারে প্রচুর ক্বাওলী রিওয়ায়েত বিদ্যমান। ফে’লী রিওয়ায়েতের মধ্যে রাসূল সা. মাঝে মধ্যে এ মুনাজাত করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। আর এটাই সকল মুস্তাহাবের নিয়ম। (ফায়জুল বারী ২/১৬৭-৪৩১-৪/৪১৭)

��আহলে হাদীসদের দলীলের জবাব :
হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাযি. এঁর উল্লেখিত আমলের এই অর্থ নয় যে, তিনি সালাম ফিরানোর পর মাসনুন দোয়া, যিকির না করেই দাঁড়িয়ে যেতেন।
কেননা তিনি প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  এঁর বিরুদ্ধাচরন কখনোই করতে পারেন না।
কারণ প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم)  হতে সালাম ফিরানোর পর বিভিন্ন দোয়া যিকির হাদীসে বর্নিত আছে।
এবং তিনি ফরয ও সুন্নাতের মাঝখানে কিছু সময় ব্যবধান করার যে হুকুম হাদীস শরীফে পাওয়া যায় তার খেলাফ করতে পারেন না।
উক্ত রিওয়ায়েতের মর্ম হলো, হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাযি. সালাম ফিরানোর পর দোয়া যিকির পাঠের জন্য অধিক সময় বসে থাকতেন না।

 
Top