পরষ্পর বিরোধী হাদিসের ক্ষেত্রে করণীয় বা বোখারী মুসলিমে থাকলেই হাদীস প্রাধান্য পাবে কিনা তার আলোচনা।
একজন প্রাথমিক স্তরের তালিবুল ইলমও অবগত রয়েছে, শরিয়তের অনেক মাসআলায় পরস্পর বিরোধী একাধিক হাদিস থাকে। কখনও একই বিষয়ে দু’য়ের অধিক অর্থের সম্ভাবনা থাকে।
এই বিরোধ নিরসনে উলামায়ে কেরাম নীচের পদ্ধতিগুলো আলোচনা করেছেন,
প্রথম পদ্ধতি:
১. পরস্পর বিরোধী হাদিস দু’টির মাঝে এমনভাবে সমন্বয় করা যে উভয়টার উপর আমল করা সম্ভব হয়।
২. অথবা উভয়টা ব্যাখ্যা করা।
৩. অর্থের মাঝে সমন্বয় করার চেষ্টা করা।
দ্বিতীয় পদ্ধতি: উভয়টার মাঝে সমন্বয় সাধন সম্ভব না হলে একটিকে রহিত সাব্যস্ত করা।
তৃতীয় পদ্ধতি: আর যদি একটাকে রহিত প্রমাণ করা সম্ভব না হয় এবং রহিত হওয়ার দলিল না পাওয়া যায়, তবে দু’টোর যে কোন একটাকে প্রাধান্য দেয়া।
আলেমদের মাঝে কেউ কেউ তৃতীয় পদ্ধতিকে দ্বিতীয় পদ্ধতির উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। অর্থাৎ প্রথমে সমন্বয় সাধন এরপর, প্রাধান্য দান অত:পর, রহিতকরণ।
এই মাসলাক বা পদ্ধতিগুলোর বিস্তারিত বিবরণ বেশ দীর্ঘ।
নীচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলঃ
১. দু’টি বিরোধপূর্ণ হাদিসের মাঝে সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে মানুষের বুঝশক্তি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
পরস্পর বিরোধী দু’টি হাদিসের ক্ষেত্রে কিছু আলেম দাবি করতে পারেন, এদের মাঝে সমন্বয় সাধন অসম্ভব, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা অন্য কোন আলেমের নিকট বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়ে থাকেন। ফলে তিনি উভয়ের মাঝে সমন্বয় সাধনের উপযুক্ত কারণ বিশ্লেষণ করেন। একারণে বাহ্যিকভাবে পরস্পর বিরোধী দু’টি হাদিসের মাঝে সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে উলামায়ে কেরাম খুবই সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই ফয়সালা দিতে বলেছেন।
২. বিরোধপূর্ণ হাদিস দু’টির মাঝে সমন্বয় সাধন সম্ভব না হলে ইমাম যেকোন একটা রহিত হওয়ার দিকে মনোনিবেশ করেন। সুনির্দিষ্ট দলিল ছাড়া রহিত হওয়ার দাবি গ্রহণযোগ্য নয়। রহিত হওয়ার প্রমাণগুলোকে মুয়াররিফাতুন নসখ বা রহিত হওয়ার পরিচয়ক বলা হয়।
রহিত হওয়ার পরিচয়ক চারটি,
এক. রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্পষ্ট বর্ণনার দ্বারা রহিত হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হওয়া। যেমন, মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদিস,
كنت نهيتكم عن زيارة القبور، فزوروها
অর্থ: আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। এখন তোমরা কবর যিয়ারত করো।
দুই. কোন সাহাবির বক্তব্য দ্বারা রহিত হওয়া সম্পর্কে অবগত হওয়া।
যেমন, আবু দাউদ ও নাসায়ী শরীফে বর্ণিত হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. এর হাদিস,
كان آخر الأمرين من رسول الله صلي الله عليه وسلم ترك الوضوء مما مست النار
অর্থ: আগুনে স্পর্শকৃত বস্তু আহারের ক্ষেত্রে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সর্বশেষ আমল ছিলো ওজু না করা।
তিন. তারিখ বা সময়ের ব্যবধানের মাধ্যমে রহিত হওয়া সম্পর্কে অবগত হওয়া।
যেমন, হজরত শাদ্দাদ ইবনে আওস রা. থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
أفطر الحاجم و المحجوم
অর্থ: যে শিঙা লাগায় এবং যাকে শিঙা লাগানো হয়, উভয়ের রোজা ভেঙ্গে যাবে।
কোন কোন বর্ণনায় রয়েছে, এটি অষ্টম হিজরীতে বর্ণিত হাদিস। এটি হযরতত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হাদিস দ্বারা রহিত হবে।
হজরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন,
إحتجم النبي صلي الله عليه وسلم وهو محرم صائم
অর্থ: রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রেখে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শিঙা লাগিয়েছেন।
এটি বিদায় হজের সময়কার ঘটনা।
বিদায় হজ হয়েছিলো দশম হিজরীতে।
অনেক ক্ষেত্রে সময়ের ব্যবধান নির্দেশক কিছু প্রমাণ দ্বারা রহিত হওয়ার বিষয়টি অবগত হওয়া যায়। যেমন, বর্ণনাকারী সাহাবি পূর্বে বর্ণিত হাদিসের পরে ইসলাম গ্রহণ করেছন এবং তিনি সরাসরি হাদিসটি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে শোনার বিষয়টিও স্পষ্ট করেছেন। সুতরাং পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবির হাদিসটি পূর্বে ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবির হাদিস রহিত করবে।
এছাড়াও অনেক সূক্ষ্ম ও তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত রয়েছে, যার মাধ্যমে রহিত হওয়ার বিষয়টি নির্ণয় করা সম্ভব। তবে এর উপর খুবই তাত্ত্বিক ও বিশ্লেষণমূলক গবেষণা হওয়া আবশ্যক।
চার. হাদিস রহিত হওয়ার বিষয়টি এর বিপরীতে সঙ্ঘঠিত ইজমা দ্বারা সুস্পষ্ট হওয়া। কিন্তু ইজমা সঙ্ঘঠিত হওয়ার ব্যাপারটি প্রমাণ করা এবং কেউ এর বিরোধিতা করেনি এটা নিশ্চিত হওয়া কঠিন।
৩. যদি কোন একটি হাদিস রহিত প্রমাণ করা করা সম্ভব না হয়, তবে ইমামগণ দু’টির যে কোন একটিকে প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা করেন। দু’টি হাদিসের একটিকে প্রাধান্য দেয়া খুবই জটিল।
বিরোধপূর্ণ হাদিসের প্রথম ধাপ তথা উভয়ের মাঝে সমন্বয় সাধনের জন্য বিশেষ বুঝ ও উপযুক্ত আকল প্রয়োজন।
দ্বিতীয় ধাপ তথা কোন একটা হাদিসকে রহিত প্রমাণের জন্য উক্ত হাদিস সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা থাকা জরুরি।
তৃতীয় ধাপ তথা একটিকে প্রাধান্য দেয়ার ক্ষেত্রে বর্ণিত হাদিসের সম্পর্কে রেওয়াত ও দিরায়াত উভয় পদ্ধতির জ্ঞান থাকতে হবে। দিরায়াত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো হাদিসটি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান, ফিকাহ ও প্রখর বুঝ।
আর রিওয়াতের জ্ঞান হলো, হাদিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় সম্পর্কে সম্যক অবগত হওয়া অর্থাৎ হাদিসের সনদ বিশ্লেষণ।
সনদ বিশ্লেষণের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি কষ্টকর। অত:পর, বর্ণনাকারী সাহাবিদের জীবনী, তাদের ইতিহাস, বর্ণনাকারীদের গুণাগুন, হাদিসে বর্ণিত শব্দ ইত্যাদি বিশ্লেষণ করা আবশ্যক।
নিম্নে একটি উদাহরণ পেশ করা হল।
কোন পাত্রে কুকুর মুখ দিলে তা পবিত্র করার পদ্ধতির ব্যাপারে অধিকাংশ ইমাম হজরত আবু হুরাইরা রা. এর হাদিসের উপর আমল করে থাকেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إذا ولغ الكلب في إناء أحدكم فليغسله سبع مرات
অর্থ: তোমাদের কারও পাত্রে কুকুর মুখ দিলে সে যেন তা সাতবার ধৌত করে।
হানাফীগণ বলেন, তিনবার ধৌত করার দ্বারা পাত্র পবিত্র হয়ে যাবে। হাদিসের বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত আবু হুরাইরা রা. এর উপরই আমল করেছেন এবং ফতোয়া দিয়েছেন।
হানাফীদের মূলনীতি হলো, হাদিসের বর্ণনাকারী যদি বর্ণিত হাদিসের বিপরীত আমল করে, তবে উক্ত হাদিসের উপর আমল করা বিশুদ্ধ নয়।
কেননা এক্ষেত্রে হাদিসে মা’লুল বা অভিযুক্ত হয়ে যায়।
বিশিষ্ট গবেষক ও মুহাদ্দিস আল্লামা যাহেদ আল-কাউসারি রহ. লেখেন,
إن التسبيع أي غسل الإناء سبع مرات هو المنسوخ، دون التثليث لتدرجه في أمر الكلاب من التشدد إلي التخفيف دون العكس ، فأمر بقتلها مطلقا لقلع عادة الناس في الألف بها، ثم بقتل الأسود البهيم خاصة، ثم بالترخيص في كلب الصيد و الماشية و الزرع ونهوها. فالتسبيع هو المناسب لأيام التشدد، و التثليث هو المناسب لأيام التخفيف وهو آخر الأمرين
অর্থ: সাতবার ধৌত করার বিষয়টি রহিত (মানসুখ)। কিন্তু তিনবার ধৌত করার বিষয়টি রহিত নয়। কেননা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের ক্ষেত্রে কঠোর বিধান থেকে ধীরে ধীরে সহজ বিধান গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি এর উল্টো নয়। অর্থাৎ সহজ থেকে কঠোরতার দিকে যাননি। প্রথম দিকে সব কুকুর হত্যার নির্দেশ দেন। ফলে কুকুরের প্রতি মানুষের হৃদ্যতা ও দুর্বলতা শেষ হয়ে যায়। অত:পর ঘন কালো কুকুর গুলো হত্যার নির্দেশ দেন। এরপর ক্ষেত, পাহারা বা শিকারের জন্য কুকুর রাখার অনুমতি দেন। সুতরাং সাতবার ধৌত করার বিধানটি কঠোরতার সময় আরোপকৃত বিধানের সাথে সংশ্লিষ্ট। এবং তিনবার ধৌত করার বিধানটি শিথিলতার সময়ের। আর এটি ছিেেলা সর্বশেষ আমল। সুতরাং পূর্বেরটি রহিত সাব্যস্ত হবে।
এর থেকে স্পষ্ট, বিষয়টি শুধু সাতবার ধৌত করা এবং অষ্টম বার মাটি দ্বারা পরিষ্কার করার মাঝে সীমাবদ্ধ নয় এবং এটি আবু হুরাইরা রা. এর ফতোয়া ও আমলের মাঝেও সীমাবদ্ধ নয়; বরং এখানে প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, কুকুরের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিধানে সহজতা আরোপ করা হয়েছে। পরবর্তীতে কুকুর হত্যা থেকেও নিষেধ করেছেন। সুতরাং এখানে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উদ্দেশ্যও স্পষ্ট যে তিনি কী চান, সহজতা নাকি কঠোরতা? যখন মূল উদ্দেশ্যটি জানা গেলো, তখন উদ্দেশ্যের আলোকে হুকুমের মাঝেও পরিবর্তন হবে।
ইমামগণ দু’টি পরস্পর বিরোধী হাদিসের মাঝে সমন্বয় সাধনের জন্য যেসব পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন, সেগুলোর বাস্তব প্রয়োগ খুবই কঠিন। ইমামরা তাঁদের কিতাবে এগুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
এই বিষয়ে সর্বপ্রথম কলম ধরেছেন, ইমাম শাফেয়ি রহ.। তিনি তাঁর আর-রিসালা -তে এক আলোচকের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে বলেছেন,
إن أصل ما نبني نحن و أنتم عليه : أن الأحاديث إذا اختلفت لم نذهب إلي واحد منها دون غيره إلا بسبب يدل علي أن الذين ذهبنا إليه أقوي من الذين تركنا. قال محاوره: وما ذلك السبب؟ قلت-الشافعي : أن يكون أحد الحديثين أشبه بكتاب الله ، فإذا أشبه كتاب الله كانت فيه الحجة..فإن لم يكن فيه نص كتاب الله كان أولاهما بنا الأثبت منهما، وذلك أن يكون من رواه أعرف إسنادا و أشهر بالعلم وأحفظ له. أو يكون روي الحديث الذي ذهبنا إليه من وجهين أو أكثر، و الذي تركنا من وجه ، فيكون الأكثر أولي بالحفظ من الأقل .أو يكون الذي ذهبنا إليه أشبه بمعني كتاب الله أو أشبه بما سواهما من سنن رسول الله ، أو أولي بما يعرف أهل العلم ، أو أصح في القياس ، و الذي عليه الأكثر من أصحاب رسول الله صلي الله عليه وسلم.
অর্থ: হাদিসের গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের সবার মূলনীতি হলো, কয়েকটি হাদিস যখন পরস্পর বিরোধী হয়, তখন আমরা একটাকে ছেড়ে অন্যটাকে গ্রহণ করি না। একটা ছেড়ে অন্যটা গ্রহণের উপযুক্ত কারণ পেলেই শুধু দ্বিতীয়টা গ্রহণ করি। আমাদের দ্বিতীয় হাদিসটা প্রমাণ করে যে, সেটি পরিত্যক্ত হাদিস থেকে মজবুত ও শক্তিশালী।
প্রশ্নকারী জিজ্ঞাসা করলো, একটা হাদিস প্রাধান্য দেয়ার কারণ কী কী? ইমাম শাফেয়ি রহ. বললেন, দু’টি হাদিসের মাঝে একটির বক্তব্য যখন কুরআনের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ হবে, তখন অন্যটির উপর একে প্রাধান্য দেয়া হবে। যদি পবিত্র কুরআন থেকে এধরণের কোন প্রমাণ না পাওয়া যায়, তবে হাদিস দু’টির মাঝে যেটি শক্তিশালী সেটি গ্রহণ করা হবে। হাদিসটি অধিক শক্তিশালী হওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, উক্ত হাদিসের বর্ণনাকারীগণ মুহাদ্দিসদের নিকট গ্রহণযোগ্য ও প্রসিদ্ধ হবে। ইলম ও স্মরণশক্তির ক্ষেত্রেও তারা অন্যের চেয়ে অগ্রগামী হবে। সুতরাং বর্ণনাকারীর মুখস্থশক্তি প্রাধান্য দেয়ার অন্যতম কারণ। একইভাবে ইলমের ক্ষেত্রে উচ্চ মর্যাদার অধিকারী হওয়াটাও প্রাধান্য দেয়ার একটা বিশেষ ভিত্তি। এভাবে যে হাদিসটি দুই বা দু’য়ের অধিক সনদে বর্ণিত হয়েছে, সেটি এক সনদে বর্ণিত হাদিসের উপর প্রাধান্য পাবে। সুতরাং অধিক সংখ্যক ব্যক্তি কম সংখ্যকের উপর হেফজ বা মুখস্থের দিক থেকে প্রাধান্য পাবে।
সুতরাং
১. কুরআনের অর্থের সঙ্গে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ ও নিকটবর্তী হওয়ার কারণে একটি প্রাধান্য পাবে।
২. বিরোধপূর্ণ হাদিসগুলির যেটি অন্যান্য হাদিসের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হবে, সেটি প্রাধান্য পাবে।
৩. মুজতাহিদ ইমাম নিজের অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতার আলোকে একটিকে অপরটির উপর প্রাধান্য দেবে।
৪. যেটা কিয়াস ও যুক্তির অধিক নিকটবর্তী সেটা প্রাধান্য পাবে।
৫.একটা হাদিসের উপর অধিকাংশ সাহাবিদের আমল রয়েছে, কিন্তু অপরটির উপর আমল কম, তবে যেই হাদিসের উপর অধিকাংশ সাহাবির আমল রয়েছে, সেটি প্রাধান্য পাবে।
[সূত্রঃ আর-রিসালা, পৃ.২৮৪]।
ইমাম শাফেয়ি রহ. এর পরে ইমাম হাযিমি রহ. পরস্পর বিরোধী নসের মাঝে প্রাধান্য দেয়ার বিষয়ে তার আল-ই’তেবার ফিন নাসিখি ওয়াল মানসুখি মিনাল আসার-এ প্রাধান্য দেয়ার পঞ্চাশটি পদ্ধতি আলোচনা করেছেন এবং এগুলোর অধিকাংশ পদ্ধতির উদাহরণ উল্লেখ করেছেন।
আলোচনার শেষে তিনি লিখেছেন,
وثم وجوه كثيرة أضربنا عن ذكرها كيلا يطول بها هذا المختصر
অর্থ: এছাড়াও প্রাধান্য দেয়ার অনেক কারণ রয়েছে। সংক্ষিপ্ত কিতাবের কলেবর বড় হওয়ার আশঙ্কায় এগুলোর আলোচনা থেকে বিরত থেকেছি।
[সূত্রঃ ইমাম হাযিমী রহ. কৃত আল-ই’তেবার ফিন নাসিখি ওয়াল মানসুখি মিনাল আসার, পৃ.৯-২৩]।
অত:পর, হাফেজ ইরাকী রহ. ইবনুস সালাহ এর মুকাদ্দামার টীকায় ইমাম হাযিমি রহ. উক্ত বক্তব্যটি উল্লেখ করে লিখেছেন,
وجوه الترجيحات تزيد علي المأة ، و قد رأيت عدها مختصرا فأبدا بالخمسين التي عدها الحازمي، ثم أسرد بقيتها علي الولاء
অর্থ: প্রাধান্য দেয়ার কারণ ও পদ্ধতি একশ’ এর বেশি। ইমাম হাযিমি রহ. যে পঞ্চাশটি উল্লেখ করেছেন সেগুলো সংক্ষেপে উল্লেখ করে অবশিষ্টগুলো তিনি ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করেছেন। হাফেজ ইরাকী রহ. একশ’ দশটি পদ্ধতি উল্লেখ করে লিখেছেন, প্রাধান্য দেয়ার আরও পদ্ধতি রয়েছে। তবে এর কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে বিতর্ক রয়েছে।
[সূত্রঃ ইবনুস সালাহ এর উপর আল্লামা ইরাকীর হাশিয়া, পৃ.২৪৫]।
আল্লামা কাজি শাওকানি ইরশাদুল ফুহুলে প্রাধান্য দেয়ার কারণগুলিকে বারটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করেছেন। এবং এই বারটির অধীনে মোট একশ’ ষাটটি পদ্ধতি সম্পর্র্কে আলোচনা করেছেন। প্রত্যেক প্রকারের আলোচনার শেষে তিনি লিখেছেন, এক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়ার আরও পদ্ধতি রয়েছে।
[সূত্রঃ ইরশাদুল ফুহুল, পৃ.২৭৬-২৮৪]।
উক্ত আলোচনা থেকে বর্তমানে কিছু লোকের অজ্ঞতা ও উদাসীনতা স্পষ্ট। এদের সামনে বাহ্যিকভাবে পরস্পর বিরোধী দু’টি হাদিস পেশ করা হলে এরা বোখারি ও মুসলিমে বর্ণিত হাদিসকে অন্যান্য কিতাবের হাদিসের উপর প্রাধান্য দেয়। প্রাধান্য দেয়ার অন্যান্য কারণগুলোর দিকে মোটেও ভ্রুক্ষেপ করে না।
অথচ আল্লামা ইরাকী রহ. প্রাধান্য দেয়ার কারণগুলি ধারাবাহিকভাবে আলোচনার ক্ষেত্রে ১১০ টি পদ্ধতি বা কারণের মধ্যে ১০২ নং কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, বোখারি ও মুসলিমে বর্ণিত হাদিসটি অন্যের উপর প্রাধান্য পাবে। সুতরাং এই মূর্খরা হাদিস প্রাধান্য দেয়ার ১০১টি কারণ বাতিল করেছে। এটি হয়তো তারা অজ্ঞতাবশত করেছে, নতুবা ইচ্ছাকৃতভাবে অজ্ঞতার ভান করেছে। এই উভয় শ্রেণির বাহ্যিক সৌন্দর্যগুলোও পরিণামে তিক্ত হয়।
কাজি শাওকানি হাদিসের সনদের মাধ্যমে প্রাধান্য দেয়ার যে ৪২ টি পদ্ধতি আলোচনা করেছেন, তন্মধ্যে ৪১ নং কারণ হলো, বোখারি ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদিস অন্য কিতাবে বর্ণিত হাদিসের উপর প্রাধান্য পাবে। সুতরাং ধোঁকাবাজদের এই প্রতারণায় নিজেকে নিপতিত করবেন না যে, ইমাম ইবনুস সালাহ বোখারি ও মুসলিমে সমষ্টিগতভাবে বর্ণিত হাদিসকে সবচেয়ে সহিহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এবং একে বোখারির এককভাবে বর্ণিত হাদিসের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি বোখারির এককভাবে বর্ণিত হাদিসকে ইমাম মুসলিম রহ. এর এককভাবে বর্ণিত হাদিসের উপরও প্রাধান্য দিয়েছেন।
ইমাম ইরাকী প্রাধান্য দেয়ার অন্যান্য ১০০ টি পদ্ধতি আলোচনার পরে বোখারি ও মুসলিমে সমষ্টিগতভাবে বর্ণিত হাদিস প্রাধান্য দেয়ার কথা বলেছেন। এটি তিনি ইমাম ইবনুস সালাহ এর কিতাবের টীকায় উল্লেখ করেছেন।
সুতরাং ইবনুস সালাহ রহ. এর বক্তব্য ও প্রাধান্য দানের পদ্ধতি সম্পর্কে হাফেজ ইরাকী রহ. সম্যক অববগত ছিলেন। সুতরাং একথা বলা আদৌ সংগত হবে না যে, হাফেজ ইরাকী রহ. ইবনুস রহ. এর বক্তব্য সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন অথবা ভুলে গেছেন। এটি একটি অসম্ভব কথা। বরং ইমাম ইবনুস সালাহ রহ. এর বক্তব্যটি খুবই সীমাবদ্ধ ও সংকীর্ণ পরিসরের। পক্ষান্তরে হাফেজ ইরাকী রহ. ও উসুলবিদগণের বক্তব্যের পরিসর অত্যন্ত দীর্ঘ ও যথার্থ।
বোখারি ও মুসলিম শরীফে হাদিস উল্লেখের পদ্ধতি দ্বারাও বিষয়টি আমাদের সামনে স্পষ্ট হবে, তারা সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ে উল্লেখিত হাদিসগুলোর কোনটি গ্রহণ করছেন আবার কোনটি ছেড়ে দিয়েছেন। যেমন ইমাম মুসলিম রহ. মুসলিম শরীফে প্রথমে জানাযার উদ্দেশ্যে দন্ডায়মান হওয়ার হাদিস উল্লেখ করেছেন।
[সূত্রঃ মুসলিম শরীফ, খ.২, পৃ.৬৫৯]।
অত:পর এটি রহিত হওয়ার হাদিস উল্লেখ করেছেন।
[সূত্রঃ মুসলিম শরীফ, খ.২, পৃ.৬৬১]।
ইমাম কুরতুবী রহ. তাফসিরে কুরতুবী-তে লিখেছেন, ইমাম মুসলিম রহ. যেই হাদিসকে বিধান হিসেবে গ্রহণ করেন, সেটি অধ্যায়ের শেষে উল্লেখ করে থাকেন।
[সূত্রঃ তাফসীরে কুরতুবী, খ.৩, পৃ.২]।
এ বিষয়ে আমরা সবাই একমত যে, হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি যাচাইয়ে আমরা ইমাম মুসলিমের অনুসরণ করি, তবে কোন হাদীসের ফিকহ বা বুঝ নির্বাচনে আমরা তার অনুসরণ করি না।
ইমাম বোখারি রহ. শুধু জানাযার উদ্দেশ্যে দাঁড়ানোর হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। কিন্তু এটি রহিত হওয়ার হাদিসটি উল্লেখ করেননি।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে দৃষ্টি আকষর্ণ করতে চাই।
বিখ্যাত ফকিহ ও মুহাদ্দিস আল্লামা ইউসুফ বান-নূরী রহ. তিরমিযি শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ মায়ারিফুস সুনানে লিখেছেন,
وقد قلت قديما و أقول: هؤلاء الأئمة الكبار أربار الصحاح:من البخاري ومسلم و غيرهما قد إنحازوا إلي جهة: تفقها و إجتهادا، أو إتباعا لأئمتهم في دقائق الفقه و الإجتهاد و غوامض المسائل ، و اختاروا جانبا في الخلافيات، ثم لما ألفوا أخرجوا في في تآليفهم ما يوافق مذاهبهم الفقهية و سري فقههم إلي الحديث و تركوا ما عداها، حيث لم يذهبوا إليها، إلا من التزم إخراج أحاديث الفريقين، كالإمام الترمذي غالبا و كإبن شيبة و عبد الرزاق في مصنفيهما، و أحمد في مسنده..
অর্থ: আমি পূর্বেও বলেছি, এখনও বলছি, বোখারি ও মুসলিম রহ. সহ সহিহ হাদিস সমূহের সঙ্কলক বড় বড় ইমামগণ ফিকাহ ও ইজতেহাদের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট মতের দিকে ঝোঁক রাখতেন। ফিকাহের বিভিন্ন বিষয় ও সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মাস-আলার ক্ষেত্রে তাদের অনুসরণীয ইমামের মতাদর্শ গ্রহণ করেছেন। মতবিরোধপূর্র্ণ মাস-আলায় তাঁরা সুনির্দিষ্ট মাজহাবের অনুসারী ছিলন। এরপর তারা হাদিসের কিতাবসমূহ সংকলনের সময় তাদের ফিকহি মাজহাব অনুযায়ী সংকলন করেছেন। হাদিসের সংকলনের ক্ষেত্রে তারা নিজেদের ইজতেহাদও কাজে লাগাতেন। যেসব হাদিস তাদের ইজতিহাদ ও গৃহীত মাজহাবের অনুগামী হতো না, সেগুলো উল্লেখ থেকে বিরত থাকতেন। তবে অনেক মুহাদ্দিস উভয় পক্ষের হাদিস সংকলন করেছেন। যেমন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইমাম তিরমিযি রহ, ইমাম ইবনে আবি শাইবা, ইমাম আব্দুর রাজ্জাক এবং ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহ।
[সূত্রঃ মায়ারিফুস সুনান, খ.৬,পৃ.৩৭৯-৩৮০]।
হাদিস সংকলনের ক্ষেত্রে তাদের ফিকাহ ব্যবহারের একটি উদাহরণ পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ জানাযার উদ্দেশ্যে দাঁড়াবে কি না, এ বিষয়ে ইমাম মুসলিম রহ. এর হাদিস বর্ণনার পদ্ধতি আলোচনা করা হয়েছে।
ইমাম মুসলিম রহ. প্রথমে দন্ডায়মান হওয়ার হাদিস উল্লেখ করেছেন। অত:পর এটি রহিত হওয়ার হাদিস উল্লেখ করেছেন। একইভাবে ইমাম নাসায়ী রহ.ও রহিত হওয়ার হাদিস উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ইমাম বোখারি রহ. শুধু দন্ডায়মান হওয়ার হাদিস উল্লেখ করেছেন। ইমাম মুসলিম রহ. যে হাদিস দ্বারা এটি রহিত হওয়ার দলিল দিয়েছেন, সে হাদিস থেকে ইমাম বোখারি রহ. রহিত হওয়ার বিষয়টি বোঝেননি। একারণে তিনি হাদিসটি উল্লেখ করা থেকে বিরত থেকেছেন। সুতরাং ইমাম মুসলিম ও নাসায়ী রহ. তাদের ফিকাহ অনুযায়ী রহিত হওয়ার হাদিস উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ইমাম বোখারি রহ. রহিত হওয়ার মতটি গ্রহণ না করায় হাদিসটি উল্লেখ করেননি।
এবিষয়ে আরেকটি উদাহরণ হলো, হজরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
من صلي علي جنازة في المسجد فلا شيئ له
অর্থাৎ যে ব্যক্তি মসজিদে কারও জানাযা পড়লো, তার কোন সওয়াব নেই।
পূর্বে হাদিসটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। হাদিসটি ইমাম মুসলিম রহ. উল্লেখ করেননি। কিন্তু এ বিষয়ে হজরত আয়েশা রা. এর হাদিসটি উল্লেখ করেছেন, তিনি বলেন,
ما أسرع ما نسي الناس: ما صلي رسول الله صلي الله عليه وسلم علي سهيل بن البيضاء إلا في المسجد
অর্থ: “মানুষ কত দ্রুত ভুলে যায়! নিশ্চয় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুহাইল ইবনুল বায়যা এর জানাযা মসজিদে আদায় করেছেন।”
[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম শরীফ, খ.২, পৃ.৬৬৮]।
একইভাবে ইমাম নাসায়ী রহ. আয়েশা রা. এর হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।
[সূত্রঃ নাসায়ী শরীফ, খ.১, পৃ.৬৩৯]।
এটি হলো ইমাম মুসলিম ও নাসায়ী রহ. এর ফিকাহ। কিন্তু ইমাম আবু দাউদ রহ. প্রথমে হজরত আয়েশা রা. এর হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। অত:পর, তিনি হজরত আবু হুরাইরা রা. এর হাদিসের মাধ্যমে পরিচ্ছেদ শেষ করেছেন।
[সূত্রঃ আবু দাউদ শরীফ, খ.৩, পৃ.৫৩০-৫৩১]।
এটি হলো ইমাম আবু দাউদ রহ. এর ফিকাহ ও বুঝ। ইমাম ইবনে মাজা রহ. ঠিক এর উল্টো করেছেন অর্থাৎ তিনি প্রথমে হজরত আবু হুরাইরা রা. এর হাদিস উল্লেখ করেছেন, এরপর হজরত আয়েশা রা. এর হাদিস উল্লেখ করে লিখেছেন,
حديث عائشة أقوي
হজরত আয়েশা রা. এর হাদিসটি শক্তিশালী।
[সূত্রঃ ইবনে মাজা শরীফ, খ.১, পৃ. ৪৮৬]।
এটি ইমাম ইবনে মাজা রহ. ফিকাহ ও বুঝ। সুতরাং এসমস্ত হাদিসের ইমামদের বুঝ ও ফিকাহের অনুসরণ না করে বিখ্যাত ফকিহ ইমামগণের অনুসরণ উত্তম নয় কি? বরং তাঁদের অনুসরণের চেয়ে ফকিহ ইমামগণের অনুসরণ অধিক উত্তম।
পূর্বে ইমাম তিরমিযি রহ. এর বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি বলেছেন, ফকিহগণ হাদিসের অর্থ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। এটি এমন দ্ব্যর্থহীন বিষয়, যাতে কোন অস্পষ্টতা নেই।
ইমাম বোখারি রহ. একটা হাদিস বর্ণনা করলে তা থেকে একটি মাসআলা প্রমাণিত হয়। সুতরাং ইমাম বোখারি বর্ণিত হাদিস থেকে যে বিধান গ্রহণ করা হয়েছে একে ইমাম আবু দাউদ বর্ণিত হাদিস থেকে গৃহীত হুকুমের উপর প্রাধান্য দেয়া সঠিক নয়। কেননা, এর দ্বারা মূলত: ইমাম বোখারি রহ. এর ইজতিহাদ ও মাজহাবকে অন্য কোন মুহাদ্দিসের মাজহাবের উপর প্রাধান্য দেয়া হয়।
বাস্তব কথা হলো, ইমাম বোখারি রহ. সংশ্লিষ্ট মাস-আলায় যেই হাদিসটা তার মাজহাব অনুযায়ী পেয়েছেন, সেটা বর্ণনা করেছেন। সুতরাং প্রত্যেক ক্ষেত্রে বোখারি বর্ণিত হাদিসকে প্রাধান্য দেয়ার অর্থ হলো, ইমাম বোখারির মাজহাবকে অন্যদের উপর প্রাধান্য দেয়া। প্রত্যেক মাস-আলায় বোখারি বর্ণিত হাদিসকে প্রাধান্য দেয়ার যে রীতি সংশয় সৃষ্টিকারীরা তৈরি করেছে, বাস্তবতা এর সম্পূর্ণ বিপরীত।
হাদিসে বুঝ অর্জনের ক্ষেত্রে মুহাদ্দিসগণের পারস্পরিক ব্যাবধান ও মতবিরোধ খুবই বিস্তৃত।
তাদের মতবিরোধের এই বিস্তর পরিসর থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, একটি ফিকহি মাস-আলার বিধান আহরণ কতটা কষ্টসাধ্য। এর মাধ্যমে এটাও অনুধাবন করা যাবে যে, ইমামগণ ইলমের কতো উচ্চ শিখরে আরোহণ করেছিলেন।
যে বিষয়টি আলোচনা করা হল, এটি মূলত: ইজতেহাদের জন্য প্রয়োজনীয় ইলম সমূহের একটি ইলমের প্রাথমিক কিছু অংশ।