২০-তারাবীহ বিশ রাকাত পড়া সুন্নাত
▆ আহলে হাদীসদের মতে :
তারাবী নামায আট রাকাত। প্রথমে তাদের অনেকেই বিশ রাকাত তারাবীহ পড়ে গেছেন।
সর্বপ্রথম ১২৮৪ হিজরীতে ভারতের আকবরাবাদ থেকে এদের একজন আট রাকাত তারাবীহের ফতোয়া দেন।
তীব্র প্রতিবাদের কারণে সেই ফতোয়া টিকতে পারে নি।
এরপর ১২৮৫ হিজরীতে পাঞ্জাব সীমান্তে মাওলানা মুহাম্মদ হুসাইন বাটালবী নামে এদের অপর একজন ফতোয়া দেন যে, আট রাকাত তারাবীহ পড়া সুন্নাত। বিশ রাকাত পড়া বিদ’আত।
এরপর হাফেজ আব্দুল্লাহ ও মাওলানা আব্দুর রহমান মোবারকপূরী সহ এদের আরো কিছু আলেম জোড়ালোভাবে ঐ ফতোয়া প্রচার করতে থাকেন।
এভাবে আট রাকাতের প্রচলন তাদের মধ্যে চালু হয়।
দলীলঃ
عن أبي سلمة بن عبد الرحمن، أنه سأل عائشة رضي الله عنها، كيف كانت صلاة رسول الله صلى الله عليه وسلم في رمضان؟ فقالت: ما كان يزيد في رمضان ولا في غيره على إحدى عشرة ركعة، يصلي أربعا، فلا تسل عن حسنهن وطولهن، ثم يصلي أربعا، فلا تسل عن حسنهن وطولهن، ثم يصلي ثلاثا (رواه البخاري- ١/١٥٤)
আহনাফের মতে :
তারাবীহ নামায বিশ রাকাত। আর এই বিশ রাকাত পড়ার নিয়ম প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর যুগে ও খুলাফায়ে রাশেদীন ও তাবেয়ীদের যুগে চালু ছিলো।
এবং এই ব্যাপারে ইজমায়ে সাহাবা রয়েছে। এবং চার ইমাম বিশ রাকাতের ব্যাপারে একমত।
চৌদ্দশ বছর যাবৎ বিশ রাকাতের আমল মক্কা ও মদীনায় চালু রয়েছে।
দলীলঃ
عن ابن عباس، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يصلي في رمضان عشرين ركعة والوتر(مصنف إبن أبي شيبة- ٢/٢٨٦)
عن ابن عباس، أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يصلي في رمضان عشرين ركعة سوى الوتر (المعجم الأوسط، رقم الحديث- ٧٩٨)
عن يزيد بن رومان؛ أنه قال: كان الناس يقومون في زمان عمر بن الخطاب، في رمضان، بثلاث وعشرين ركعة (المؤطأ لمالك، رقم الحديث- ٣٨٠)--------------- فتح الباري لإبن حجر، رقم الحديث- ٢٠١٢، الأذكار للنبوي-ص٨٣، نصب الراية-٢/١٥٤)
আহলে হাদীসদের দলীলের জবাব :
তাদের উত্থাপিত হাদীসে তাহাজ্জুদ নামাযের কথা বলা হয়েছে।
তারাবীহের কথা বলা হয় নি। কেননা উক্ত হাদীসে এগারো রাকাত নামায প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর রমযান এবং রমযানের বাহিরের আমল হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর থেকে সুস্পষ্ট হয় যে, উক্ত হাদীসে তারাবিহের কথা বলা হয় নি।
বরং তাহাজ্জুদের কথা বলা হয়েছে।
এবং মুহাদ্দিসীনে কেরাম যাঁরা হাদীসের কিতাব লিপিবদ্ধ করেছেন তাদের কেউ এই হাদীসকে তারাবীহের অধ্যায়ে উল্লেখ করেন নি।
বরং কিয়ামুল লাইল তথা তাহাজ্জুদ নামাযের অধ্যায়ে উক্ত হাদীসকে উল্লেখ করেছেন।
যদি আলোচ্য হাদীসটি তারাবীহ সংক্রান্ত মেনেও নেয়া হয় তাহলেও এই কথা প্রমাণ করা যাবে না যে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم) আট রাকাতই পড়তেন, বেশি পড়তেন না।
কেননা হযরত আয়েশা রাযি. হতে অপর একটি হাদীস বর্নিত হয়েছে যে, প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم) ১৩ রাকাত পড়তেন। (মিশকাত ১/১১১) উভয় হাদীসই সহীহ।
সুতরাং প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم) কখনো ১১ রাকাত পড়তেন আবার কখনো ১৩ রাকাত পড়তেন।
এখন লা মাযহাবীদের নিকট প্রশ্ন হলো তারা ১৩ রাকাত কোনদিন পড়ে না কেন?
যদি উক্ত হাদীস তাহাজ্জুদের ব্যাপারে মেনেও নেয়া হয় তাহলেও লা মাযহাবীদের নিকট প্রশ্ন থেকে যায় যে, তাদের উল্লেখিত হাদীসে প্রিয় নাবী রাসূলুন কারীম (صلى الله عليه و آله و سلم) তো চার রাকাত পর পর সালাম ফিরিয়েছেন তারা কেন দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরায়?