জুতাসহ বিভিন্ন বস্ত্রাদি পরিধানের সুন্নত তরিকা
=================
পায়ে জুতা মোজা পরিধানের সময়, প্রথমে ডান পায়ে জুতা-মোজা পরিধান করবেন এবং খোলার সময় বাম পা থেকে শুরু করবেন। পায়জামা পরিধানের সময় বসা অবস্থায় প্রথমে ডান পা ঢুকাবেন। খোলার সময় প্রথমে বাম পা খোলবেন।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার বিতরনের সুন্নত তরিকা
============
মিলাদশরীফ বা কোন নেকমাহফিলের অনুষ্ঠানের পর শিরনি- তাবারোক ও খাবার বিতরণকালে বন্টনকারী তার ডানদিক থেকে শুরু  করে বামদিকে অগ্রসর হবেন। এভাবে খাবার বিতরণ করা সুন্নতে রাসূল।

পানাহার করার সুন্নত তরিকা ও দোয়া পাঠ করা
===============
কোন কিছু গ্রহণ ও প্রদানের সময় ডান হাতে গ্রহণ ও প্রদান করবেন এবং খাওয়ার সময়ও ডান হাত ব্যবহার করবেন অর্থাৎ ডান হাত দ্বারা খাদ্যদ্রব্য মুখে দিবেন। খাদ্যদ্রব্য ও পানীয়দ্রব্য গ্রহণের সময় ডানহাতে পাত্র ধরে পানাহার করবেন। ডান হাত অপরিচ্ছন্ন থাকলে বামহাতে পাত্র ধরে তাতে ডান হাতের সংযোগ স্থাপন করে পান করতে হবে।  শরবত, দুধ ইত্যাদি পান করাকালে সবটুকু পান না করে কিছু  অংশ রেখে দেওয়া কবিরা গোনাহ। খাওয়া-দাওয়ার পর খাবার পাত্র মুছে খাওয়া সুন্নত। দাঁড়িয়ে পানাহার কারা যাবে না। পানাহারের সময় পা থেকে জুতা খুলে নিতে হবে এবং এই দোয়া পাঠ করবেন, بسم الله على براكة الله ‘বিছমিল্লাহি আ’লা বারাকাতিল্লাহ’।

পানাহার শেষ করে পাঠ করবেন,
الحمد لله الذى اطعمنى وسقانى وجعلنى من المسلمين

উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লা হিল্লাজি আত্বআমানি ওয়া ছাক্বানি ওয়াজাআ’লানি মিনাল মুছলিমীন। অথবা পাঠ করবেন,
الحمد لله حمدا كثيرا طيبا مباركا فيه غير مكفى ولا مودع ولا مستغنى عنه ربنا

উচ্চারণ:  আল হামদু লিল্লাহি  হামদান কাছিরান তায়্যিবান মোবারাকান ফিহি গায়রা মাকফিয়্যিন ওয়ালা মুয়াদ্দায়িন ওয়ালা মুছতাগনা আনহু  রাব্বানা।  (বুখারীশরীফ)

দাওয়াত খাওয়ার পর এই দোয়া পাঠ করবেন,
اطعم من اطعمنى واسقى من سقانى
উচ্চারণ: আত্বয়িম মান আত্বয়ামানি  ওয়াছক্বি মান ছাক্বানি।

খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে সুন্নত তরিকা
================
আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

عن ابى جحيفة قال: كنت عند النبى صلى الله عليه وسلم فقال: ما اكلت؟ قلت خبز ولحم حتى شبعت فقال لا تفعل فان اطول الناس جوعا يوم القيامة اطولهم شبعا فى الدنيا-

হযরত আবু জুহাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নূর   নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে ছিলাম, হাবিবে খোদা এরশাদ করলেন, তুমি কি খাচ্ছ? উত্তরে আমি বললাম রুটি ও গোশ্ত পেট ভরে খাওয়া-দাওয়া করেছি।  ছরকারে কায়েনাত আলাইহিস সালাম নূরানী এরশাদ করলেন, لاتفعل তুমি তা কর না (পেট ভরে খাওয়া-দাওয়া কর না)।  কেননা নিঃসন্দেহে যারা দুনিয়াতে পেট ভরে খাওয়া-দাওয়া করবে,  তারা  পরকালে উপবাস থাকবে। (আত তারিখুল কবির লিল বুখারি ৮/৩৪৩ পৃষ্ঠা)

উক্ত হাদিসের দ্বারা  প্রমাণিত হলো একেবারে পেট ভরে খাওয়া দাওয়া না করে অল্প পানাহার  করা সুন্নত। এতে স্বাস্থ্য ও তরিকতের উন্নতি রয়েছে।

নখ কাটার ব্যাপারে সতর্কতা
==============
বুধবারে নখ কাটা সম্পর্কে আ’লা হযরত শাহ আহমদ রেজাখাঁন  বেরলভী আলাইহির রহমত এক প্রশ্নের উত্তরে লিখেন,  বুধবারে নখ কাটতে   নেই, হাদিসশরীফে বুধবারে নখ কাটতে নিষেধ এসেছে। কেননা এতে কুষ্টরোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলিল হিসেবে আল্লামা শিহাবুদ্দিন খুফফাজী আলাইহির  রহমত এর ‘নাছিমুর রিয়াজ শরহে শিফা কাজী আয়াজ’ নামক গ্রন্থের এবারত উল্লেখ করেছেন,
قص الاظفار وتقليمها سنة وورد النهى عنه فى يوم الاربعاء وانه يورث البرص-

অর্থাৎ নখ কাটা সুন্নত, তবে বুধবারে  নখ কাটার ব্যাপারে নিষেধ এসেছে, কেননা এত কুষ্টরোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরো উল্লেখ করেছেন,
علامة طحطاوى حاشیہ در مختار میں فرماتے ہیں- ورد فی بعض الاثار النهى قص الاظفار يوم الاربعاء فان يورث البرص-

অর্থাৎ আল্লামা তাহতাভী আলাইহির রহমত ‘হাশিয়ায়ে দুররে মুখতার’ গ্রন্থে বলেন, কতক আছারে (হাদিসের এক বিশেষ প্রকার) উল্লেখ রয়েছে যে, বুধবারে নখ কাটা নিষেধ কেননা এতে কুষ্ঠরোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যদি এ নিষেধ হওয়াটা তানযিহি পর্যায়ের। তবে এর উপর আউলিয়ায়ে কেরাম ও উলামায়ে  কেরামের আমল রয়েছে যে, তাঁরা বুধবার দিনে হাত-পায়ের নখ কাটা হতে বিরত থাকতেন। এ  জন্য এ ব্যাপারে আমাদেরও  সতর্ক থাকা প্রয়োজন। (ফতওয়ায়ে রেজভীয়া ১০/৬৩ পৃষ্ঠা)

কল্পনাতীত রিযিক পাওয়ার দোয়া
==================
জুমুয়ার নামাযের পর নিম্নের দোয়া ৭০বার  পাঠ করলে  আল্লাহতা’য়ালা কল্পনাতীত রিজিক প্রদান করবেন,

اللهم ياغنى  ياحميد يامبدئ يامعيد يارحيم ياودود اغننى بحلالك عن حرامك وبفضلك عمن سواك-

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা  ইয়া গানিয়্যু ইয়া হামিদু ইয়া মুবদিউ ইয়া মুয়িদু ইয়া রাহিমু ইয়া ওয়াদুদু আগনিনী বিহালালিকা আন হারামিকা ওয়া বিফাদ্বলিকা আম্মান সিওয়াক। (তাফছীরে রুহুল বয়ান ৮/৫২৯ পৃষ্ঠা)

 
Top