দোয়া কবুলের পূর্বশর্ত

❏ হাদিস ১: 
দোয়া আসমান ও জমীনের মাঝখানে ঝুলন্ত থাকে

“হযরত আমিরুল মু'মিনিন ফারুকে আযম (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দোয়া আসমান ও জমীনের মাঝখানে ঝুলন্ত থাকে, তা উপরে উঠে না যতক্ষণ না হুযূর নবী কারিম (ﷺ) উপর দরূদ পাঠ করা হয়।” 

তথ্যসূত্রঃ
১.ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, ১/৬১৪ পূ, হা/৪৮৬, 
২.ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ৩/১৮৭ পৃ. হা/৬৭৯, ৫/২০৫ পৃ. হা/১৪০১, 
৩.খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/২৯৬-পৃ. হা/৯৩৮, 
৪.মুনযিরী, তারগীব ওয়াত তারহীব, ২/৩৩০, পৃ. হা/২৫৯০, 
৫.ইবনে কাসির, মুসনাদে আমিরুল মু'মিনীন উমর ইবনুল খাত্তাব, ১/১৭৬, ইমাম ইবনে কাসির (رحمة الله) বলেন- “এ হাদিসটির সনদ শক্তিশালী।"
৬.তুহফাতুল আশরাফ, ৮/২৫ পৃ. হা/১০৪৪৯, 
৭.ইমাম ইবনে আছির, জামিউল উসূল, ৩৫৫ পৃ. হা/২১২১, 
৮.মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ২/২৬৮ পৃ. হা/৩৯৮৪ ও ২/২৬৯ পৃ: হা/৩৯৮৬ এ হাদিসটি তিনি মারফু সূত্রে সংকলন করেছেন।
৯.মুফতি আমজাদ আলী আযমী (رحمة الله), বাহারে শরিয়ত (তৃতীয় খণ্ড), পৃ ১৮১, সাকলাইন প্রকাশনী।

❏ হাদিস ২:
প্রত্যেক দো'আ পর্দাবৃত থাকে

হযরত আলী  (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, 
"প্রত্যেক দো'আ পর্দাবৃত থাকে; যতক্ষণ না রাসূল (ﷺ) এবং তার আহলে বায়তের উপর দরূদ পড়া হয়।"

তথ্যসূত্রঃ
(১) তাবরানী, মুজামুল আওসাত, ১: ২২০, নং: ৭২১। 
(২) বাইহাকী, শুআবুল ঈমান, ২:২১৬, নং-১৫৭৫। 
(৩) দাইলামী, মুসনাদুল ফিরদাউস, ৩:২৫৫, নং-৪৭৫৪। 
(৪) মুনযিরী, তারগীব ওয়াত্তারহীব, ২:৩৩০, নং-২৫৮৯। 
(৫) হাইছামী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ, ১০:১৬০। 

▪ ইমাম তাবরানী ও ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) এ হাদীসকে উত্তম (যাইয়্যিদ) সনদে বর্ণনা করেন। 
▪ ইমাম হাইছামী (رحمة الله) বলেন, এ হাদীসের বর্ণনাকারীরা ‘সিকাহ’ বা বিশ্বাসযােগ্য।
▪ ইমাম মুনযিরী, বাইহাকী ও তাবরানীর বর্ণিত হাদীসের সকল রাবীকে সিকাহ বলেছেন।

গোলাম আযাদ, হজ্জ্ব ও জিহাদের সমপরিমাণ সাওয়াব

❏ হাদিস ৩: 

হযরত আলী মুরতজা (رضي الله عنه) হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন যে, 
"নবীজী (ﷺ)-এর ওপর দরূদ শরীফ পাঠের ফলে গুনাহ এমনিভাবে মুছে যায়, যেমনিভাবে পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়। গােলাম আযাদ করা থেকে নবীজী (ﷺ)-এর ওপর দরূদ শরীফ প্রেরণ করা উত্তম। আর আল্লাহর পথে তরবারি উত্তোলন করা থেকে তাঁর ভালােবাসা উত্তম।" 

তথ্যসূত্রঃ
(১) আবুল কাসিম আল-আস্পাহানী (رحمة الله) এ রিওয়ায়তটি বর্ণনা করেছেন। 
(২) হাফিয আবু নুআইম (رحمة الله) তার হিলয়াতুল আউলিয়া নামক কিতাবে এ রিওয়াতটি বর্ণনা করেছেন।
(৩) আস-সাখাভী (رحمة الله), আল-কওলুল বদী ফিস সালাত আলাল হাবীবিশ শফী; পু, ১২৬ 
৩৫৭ 
(৪) শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) : হৃদয়ের টানে মদিনার পানেঃ পৃষ্ঠা ৩৫৭, গাজী প্রকাশনী।

❏ হাদিস ৪: 

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, 
যে আমার উপর একবার দরূদ শরীফ পাঠ করে সে ১০ জন গোলাম আজাদ ও ২০টি ইসলামী যুদ্ধে অংশগ্রহণের মতো সওয়াব দেয়া হয়।
[ইমাম আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভীঃ হৃদয়ের টানে মদিনার পানে, ৩৪৯, জযবুল কুলুব ও ফায়জানে সুন্নাত]

❏ হাদিস ৫: 

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, “ফরয হজ্ব আদায় করো, নিশ্চয় এটির সাওয়াব বিশটি যুদ্ধে (গাযওয়া) অংশগ্রহণ করার চেয়েও বেশি, আর আমার উপর এক বার দরূদ শরীফ পাঠ করা, এটার সমপরিমাণ সাওয়াব।” [ফিরদৌসুল আখবার, বিমাসুরিল খাত্তাব, ১ম খন্ড, ৩৩৯ পৃষ্ঠা, হাদীস- ২৪৮৪]

❏ হাদিস ৬: ৪০০ জিহাদের সওয়াব আর প্রত্যেক জিহাদ ৪০০ হজ্জের বরাবর

হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, একদিন নবীজী (ﷺ) ইরশাদ করলেন, “যে ব্যক্তি ইসলাম নির্দেশিত হজ্জ করার পর একটি ইসলামী জিহাদ করে, তবে তা ৪০০ হজ্জের বরাবর হবে। তার এ বাণী শ্রবণের পর যাদের হজ্জ করা এবং জিহাদ করার সামর্থ ছিল না তাদের অন্তর ভেঙে পরে, আল্লাহ তা'আলা তাদের সম্পর্কে নবী করীম (ﷺ)-এর নিকট অহী প্রেরণ করেন, যে ব্যক্তি আপনার ওপর দরূদ পাঠ করবে, তিনি ৪০০ জিহাদের সওয়াব পাবেন। আর প্রত্যেক জিহাদ ৪০০ হজ্জের বরাবর হবে।' 

তথ্যসূত্রঃ
(১) আবু হাফস ইবনে আবদুল মজীদ আল মাইয়ানিশী (رحمة الله), আল-মজালিসুল মক্কীয়া নামক কিতাবে রিওয়ায়তটি বর্ণনা করেছেন। 
(২) আস-সাখাভী (رحمة الله), আল-কওলুল বদী ফিস সালাত আলাল হাবীবিশ শফী; পৃষ্ঠা ১৩২।
(৩) শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) : হৃদয়ের টানে মদিনার পানেঃ পৃষ্ঠা ৩৫৮, গাজী প্রকাশনী।
(৪) জযবুল কুলুব উর্দূ- ২৬৭ পৃ:।

❏ হাদিস ৭:

রাসূলুল্লাহ  (ﷺ) ইরশাদ করেন,
যে ব্যক্তি জুমার দিন এ দরূদ শরীফটি এক হাজার বার পাঠ করবে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে বেহেশতের মধ্যে তাঁর স্থান প্রত্যক্ষ না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সে মৃত্যুবরণ করবে না। 
اللَّهُمَّ صَلّ وَسَلَّمَ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِهِ ألف ألف مَرَةٍ »
‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আ'লা মুহাম্মদীন ওয়া আলিহি আলফা আলফা মররতিন।' 
তথ্যসূত্রঃ
(১) ইমাম সাখাভী (رحمة الله),  আল-কওলুল বদী ফিস সালাত আলাল হাবীবিশ শফী; পৃ. ১৯৭; 
(২) ইবনে শাহান (رحمة الله), আত-তারগীব ফী ফাযায়িলিল আমাল ওয়া সাওয়াবি যালিক, পৃ. ১৪, হাদীস: ১৯; হযরত আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।
(৩) শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) : হৃদয়ের টানে মদিনার পানেঃ পৃষ্ঠা ৩৬৫।

❏ হাদিস ৮:

হযরত সায়ীদ ইবনে মুসাইব (رضي الله عنه)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে আরও বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ  (ﷺ) ইরশাদ করেছেন,  
"যে ব্যক্তি জুমাবারে আমার ওপর ৮০ বার দরূদ শরীফ পাঠ করবে, তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।"
তথ্যসূত্রঃ
(১) ইমাম সাখাভী (رحمة الله),  আল-কওলুল বদী ফিস সালাত আলাল হাবীবিশ শফী, পৃ. ১৯৮; 
(২) ইবনে শাহীন (رحمة الله), আত-তারগীব ফী ফাযায়িলিল আমাল ওয়া সাওয়াব মালিক, পৃ. ১৪, হাদীস: ২২; হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।
(৩) শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) : হৃদয়ের টানে মদিনার পানেঃ পৃষ্ঠা ৩৬৬। 

❏ হাদিস ৯:

হযরত হাসান (رضي الله عنه)-এর বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি জুমাবারে রাসূলুল্লাহ  (ﷺ)-এর ওপর এ দরূদ শরীফটি পাঠ করবে তার আশি বৎসরের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে: 
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সাল্লি আ'লা মুহাম্মাদীন আবদিকা ওয়া রাসূলিকান নবীয়্যিল উম্মীয়ি, ওয়া আলা আলিহি ওয়া আসহাবিহি ওয়া সাল্লাম তসলীমা।"
তথ্যসূত্রঃ
(১) ইমাম সাখাভী (رحمة الله), আল-কওলুল বদী ফিস সালাত আলাল হাবীবিশ শফী; পৃ. ৬৭
(২) শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (رحمة الله) : হৃদয়ের টানে মদিনার পানেঃ পৃষ্ঠা ৩৬৭।

❏ হাদিস ১০: 

হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি জুমআ'র দিন আমার প্রতি ৮০ বার দুরূদ শরীফ পড়বে তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার ৮০ বছরের (সগীরা) গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। সাহাবীরা বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ (ﷺ)! আপনার প্রতি দুরূদ শরীফ আমরা কিভাবে পড়বাে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ ফরমান,
اللهم صل على محمد عبدك ونبيك ورسولك النبي الأمي 
“আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন আবদিকা ওয়া নাব্যিয়িকা ওয়া রাসূলিকা আন-নাবিয়্যিল উম্মি’ এভাবে পড়বে।”

তথ্যসূত্রঃ
১. দারে কুতনী : আস সুনান : ২/১৫৪ পৃ:,
২. আল্লামা শায়খ ইউসূফ বিন নাবহানী : যাওয়াহিরুল বিহার : ৪/১৭৯পৃ.,
৩. খতিবে বাগদাদী : তারীখে বাগদাদ : ১৩/৪৮৯, তিনি হযরত আনাস বিন মালেক (رضي الله عنه) হতে,
৪. ইমাম সাখাভী : কওলুল বদী : ১৪৫ পৃ হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) এর সূত্রে,
৫. ইমাম সাখাভী : আল কাশেফ, ১/১৬৭.পূ.
৬. ইরাকী, তানযিহুল শারীয়াতুল কোবরা, ২/৩৩১পৃ. হাদিসঃ ৪৫, তিনি বলেন হাদিসটি হাসান’,
৭. ইরাকী, তাখরীযে ইহইয়াউল উলূম,১/২২০পৃ. ৩শ বলেন, "ইমাম ইবনে নুমান হাদিসটিকে হাসান বলেছেন ও ১/৪৪৫প, হাদিস ৫১১। তিনি বলেন ইমাম ইবনে কাত্তান হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।)
৮. ইবনুল যওজী, আল-ইল্ললুল মুতনাহিয়্যাত আহাদিসুল ওয়াহিয়্যাত, ১/৪৬৮পৃ. হাদিসঃ ৭৯৬, 
৯. আলুনী,কাশফুল খাফা, ১/১৮৯পৃ. হাদিস,৫০১, তিনি বলেন, ইমাম ইরাকি হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
১০. আবু তূলেব মক্কী,কুউয়াতুল কুলুব,১/১২১পৃ.দারুল। ইলমিয়্যাহ,বয়রুত,লেবানন,
১১. ইমাম গাযযালী, ইহইয়াউল উলুমুদ্দীন,১/১৮৬পৃ., 
১২. দারুল মা'রিফ বয়র, শায়খ খলিল (ওফাত-৮৬৯ হি.), 
১৩. বাশারাতুল মাহবুব বি তাকফীরুল যুনুব,১/৩৯পৃ. 
১৪. আবদুর রহমান সাফুরী, নুযহাতুল মাযালিস, ১/১৩৮পৃ. মাতবায়ে কাস্তালিয়া, কাহেরা, মিশর। 
১৫. প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানাের “স্বরূপ উন্মােচন”৪২২ পৃ।

❏ হাদিস ১১: 
জীবনের গোনাহ মাফ

হযরত সায়্যিদুনা আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্নিত আছে, তাজদারে মদিনা (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ
যে ব্যক্তি নিচের শরিফটি পড়বে? সে যদি! দাঁড়ানো থাকে তাহলে বসার পূর্বে, আর যদি বসা থাকে তাহলে দাঁড়ানোর পূর্বে তার জীবনের গুনাহ গুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। তা হলঃ "আল্লাহুম্মা ছল্লি আ'লা সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিও ওয়াআ'লা আলিহি ওয়া আসহাবিহি ওয়াসাল্লিম।"
[আফদ্বালুস সালাওয়াত আলা সায়্যিদিস সাদাত,৬৫পৃষ্টা]

❏ হাদিস ১২: 
ফেরেশতাগণ  ১০০০ দিন তার জন্য সওয়াব লিখতে থাকবে

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্নিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেনঃ
"যে ব্যক্তি একবারে নিম্নোক্ত দুরূদ একবার তিলাওয়াত করে, আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে তাঁর জন্য ১০০০ দিন সওয়াব লেখার জন্য নির্দেশ দেন। 
অপর বর্ণনায় আছে, এই দুরুদ একবার পাঠ করলে আগামী ১০০০ দিন নেকী লিখার জন্য আল্লাহর ফেরেশতাগণ ব্যস্ত হয়ে পড়েন। দুরুদটি হলঃ

 جَزَی اﷲُ عَنَّاسَيِّدِنَا مُحَمَّدًاﷺ مَا هُوَ أُهْلُهْ

“জাযাল্লাহু আন্না মুহাম্মাদান মা হুয়া আহলুহু”
“জাযাল্লাহু আন্না সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদান মা হুয়া আহলুহু”

অনুবাদঃ "আল্লাহ পাক হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) কে আমাদের পক্ষ থেকে তিনি (আমাদের উপর) যতটা হকদার (প্রাপ্য), সে সংখ্যানুপাতে তার প্রতিদান দিন।"
তথ্যসূত্রঃ
(১).ইমাম তাবরানী (رحمة الله): আল-মু’জামুল কবির, (হাদীস: ১১৫০৯),
(২).ইমাম আবু নুয়াইম (رحمة الله), হিলিয়াতুল আউলিয়া
(৩).ইমাম মুনাযিরী (رحمة الله): তারগীব, খণ্ড ২ পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা ৫০৪।
(৪).ইমাম হায়সামী  (رحمة الله): মাজমা’উজ জাওয়াইদ, খণ্ড ১০ পৃষ্ঠা, হাদিস ১৬৩,  
(৫).ইমাম সাখাবী  (رحمة الله): আল-কওলুল বদি, পৃষ্ঠা ১১৬।
(৬). ফাজাইলে আমল, খণ্ড  ১, পৃ ৪৩।

❏ হাদিস ১৩: 
হাজার দিনের নেকী অর্জন

উচ্চারণঃ জাযাল্লা-হু আন্না মুহাম্মাদান মা-হুয়া আহলুহ।
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সল্লি আ’লা সায়্যিদিনা- ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ'লা- আ-লি সায়্যিদিনা ওয়া মাওলানা মুহাম্মাদিন কামাতুহিব্দু ওয়া তারদ্বা-লাহ্।
ফযীলতঃ এ দুরূদ শরীফদ্বয় পাঠকারীর জন্য ৭০ জন ফিরিশতা ১ হাজার দিন পর্যন্ত নেকী লিখতে থাকেন।
(তাবরানী, মাযরাউল হাস্নাত) 

❏ হাদিস ১৪:
৭০ হাজার ফিরিশতা কিয়ামত পর্যন্ত ক্ষমা প্রার্থনা

উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহির রহমা-নির রহীম। আলহামদুলিল্লা হিল্লাযি তাওয়াদ্বাআ কুল্লা শাইয়িন লিআ’মাতিহী ওয়াল হামদুলিল্লা-হিল লাযি যাল্লা কুল্লা শাইয়িম বিইযতিহী ওয়াল হামদুলিল্লা-হিল লাযি নাফাআ কুল্লা শাইয়িন লিমুলকিহী ওয়াল হামদুলিল্লা-হিল লাযি ইসতাসলামা কুল্লা শাইয়িন লিকুদরাতিহী।
ফযীলতঃ হুযূর আকরম (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি এ বাক্যগুলাে পাঠ করবে এবং সেটার মাধ্যমে আল্লাহ্ তা'আলার নিকট (রহমত ও ক্ষমা) প্রত্যাশা করবে, আল্লাহ্ তা'আলা তার জন্য এক হাজার নেকী লিপিবদ্ধ করেন এবং তার এক হাজার পদ মর্যাদা উন্নীত করেন আর ৭০ হাজার ফিরিশতাকে তার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য নিয়ােজিত করেন। 
(ইমাম মুত্তাকী আল হিন্দীঃ কানযুল উম্মাল, খন্ড-২য়, পৃষ্ঠা-২২৮-২২৯)

❏ হাদিস ১৫:

হয়বত রুওয়াইফিঈ ইবনে সাবিত আনসারী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয় হুযূর (ﷺ) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর উপর দরূদ পাঠ করবে এবং বলবে “হে আল্লাহ! আপনি তাঁকে কিয়ামতের দিন তােমার সর্বাধিক নিকটবর্তী ও মর্যাদাপূর্ণ স্থানে অধিষ্ঠিত কর!" রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, “তার জন্য আমার সুপারিশ ওয়াজিব হবে।" 

তথ্যসূত্রঃ
১.ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ২৮/২০১ পৃ. হা/১৬৯৯১, 
২.ইমাম তাবরানী, মুজামুল আওসাত, ৩/২১ পৃ. হা/৩২৮৫, 
৩.ইমাম আবু বকর ইবনে খাল্লাল, আস-সুন্নাহ, ১/২৬০ পৃ. হা/৩১৫, 
৪.মুসনাদে বাযযার, ৬/২৯৯ পৃ. হা/২৩১৫, 
৫.ইমাম তাবরানী, মুজামুল কাবীর, ৫/২৫ পৃ. হা/৪৪৮০-৮১, 
৬.ইবনে কাসির, জামেউল মাসানীদ ওয়াল সুনান, ২/৭৭০ পূ, হা/৩০৯১,
৭.ইমাম মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১/৪৯৬৭. হা/২১৮৮-২১৮৯,
৮.ইমাম হাইসামী (রঃ) এ হাদিসটির সনদ প্রসঙ্গে বলেন, -“এ হাদিসটি ইমাম বাযযার, তাবরানী তার মুজামুল আওসাত ও মুজামুল কাবীরে এ সনদ্বয় হাসান সূত্রে বর্ণনা করেছেন।” 
(হাইসামী, মাযমাউয-যাওয়াইদ, ১০/১৬৩ পৃ. হা/১৭৩০৪) 
৯.মুফতি আমজাদ আলী আযমী (رحمة الله), বাহারে শরিয়ত (তৃতীয় খণ্ড), পৃ ১৮১, সাকলাইন প্রকাশনী।

❏ হাদিস ১৬:

হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। 
عَنِ  ابْنِ مَسْعُودٍ - رضي الله   عنه - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اَللَّهِ ﷺ إِنَّ أَوْلَى اَلنَّاسِ  بِي   يَوْمَ اَلْقِيَامَةِ,  أَكْثَرُهُمْ عَلَيَّ صَلَاةً.    (رواه الترمذي و ابن حبان) 
“কিয়ামতের দিবসে ঐ ব্যক্তি আমার সবচেয়ে অধিক নিকটবর্তী হবে যে ব্যক্তি (দুনিয়াতে) আমার প্রতি সর্বাধিক দরূদ শরীফ পাঠ করেছে।"

তথ্যসূত্রঃ
১.ইবনে আবি শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ, ১/২০৭পৃ. হাদিস,৩০৬, ও ৬/৩২৫পৃ. হাদিস.৩১৭৮৭, 
২.সুনানে তিরমিযী, আবওয়াবুল বিতির, বাবু মা জাআ ফি ফাদলিস সালামে আলান্নবী (ﷺ), ২/৩৫৪, নং: ৪৮৪।
৩.সহিহ ইবনে হিব্বান, ২: ১৯২, নং: ৯১১। 
৪.যাহাবী, মিযানুল ই'তিদাল : ৪/২০৯ পৃ: রাভী : ৯৪৪০,
৫.সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ১৬০ পৃ: হাদিস : ২৬৮,
৬.সাখাভী : আল কওলুল বদী : ২৪১ পৃ: 
৭.ইবনে হাজার হায়সামী : মাওরিদুয় যামান । ১৫৯৪পৃ.হাদিস : ২৩৮৯,
৮.ইবনে আছির,জামিউল উসূল, ৪/৪০৫পৃ. হাদিস,২৪৭৫, 
৯.নাওয়াবী খলাসাতল আহকাম, ১/৪৩৯পৃ. হাদিস,১৪৩৩, তিনি বলেন সনদটি হাসান।
১০.মিযী,তুহফাতুল আশরাফ বি মা'রিফাতুল আতরাফ, ৭/৬৯পৃ. হাদিস,৯৩৪০,

 
Top