রাসূল ( ﷺ‎‎)’র চেহারার নূরে মা আয়েশা (رضي الله عنه)’র সুই পাওয়া

<div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">রাসূল ( ﷺ‎‎)’র চেহারার নূরে মা আয়েশা (رضي الله عنه)’র সুই পাওয়া</div><div style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম ইবনু আসাকির ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সনদসহ বর্ণনা করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">عَن عَائِشَة قَالَت كنت أخيط فِي السحر فَسَقَطت مني الابرة فطلبتها فَلم أقدر عَلَيْهَا فَدخل رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فتبينت الإبرة بشعاع نور وَجهه </div><div style="text-align: justify;">-“হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি শেষ রাতে সাহরীর সময় কাপড় সেলাই করছিলাম, হঠাৎ আমার হাঁত থেকে সুঁই পড়ে গেল। অনেক খুজাখুজির পরেও সেটি পাওয়া গেলনা। অত:পর রাসূল ( ﷺ‎‎) আগমন করলেন এবং তাঁর মুখমন্ডলের নূরের আলোতে সেই সুইটি দৃষ্টিগোচর হল।”</div><div style="text-align: justify;">৬৪৬৪,  ইমাম আবু নুয়াইম: দালাইলুন নবুয়াত, ১ম খন্ড, ১১৩ পৃ: ১১৭ নং হাদিস; ইমাম ইবনু আসাকির: তারিখে ইবনে আসাকির, ৩য় খন্ড, ৩১০ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: খাছায়েছুল কুবরা, ১ম খন্ড, ১০৭ পৃ:; ইমাম খারকুশী: শরফুল মুস্তফা, ২য় খন্ড, ১০৩ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিস, হাদিস নং ৪৩১২২; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৩৫৪৯২; ইমাম ইবনু ছালেহী শামী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ২য় খন্ড, ৪০ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;">)</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">  হাদিসটির সনদ নিম্নরূপ-</div><div style="text-align: justify;">أَخْبَرَنَا أَبُو مُحَمَّدٍ الْحُسَيْنُ بْنُ أَحْمَدَ السَّمَرْقَنْدِيُّ الْحَافِظُ بِنَيْسَابُورَ أَنَا أَبُو إِبْرَاهِيمَ إِسْمَاعِيلُ بن عِيسَى بن عبد الله التَّاجِرُ السَّمَرْقَنْدِيُّ بِهَا ثَنَا أَبُو الْحَسَنِ عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يحيى بن الْفضل بن عبد الله الْفَارِسِيُّ ثَنَا أَبُو الْحَسَنِ مُحَمَّدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ الْجُرْجَانِيُّ الْحَافِظُ بِسَمَرْقَنْدَ ثَنَا مَسْعَدَةُ بْنُ بَكْرٍ الْفَرْغَانِيُّ بِمَرْوٍ وَأَنَا سَأَلْتُهُ فَأَمْلَى عَلَيَّ بَعْدَ جُهْدٍ ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي عَوْنٍ ثَنَا عَمَّارُ بْنُ الْحَسَنِ ثَنَا سَلَمَةُ بْنُ الْفَضْلِ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ يَزِيدَ بْنِ رَوْمَانَ وَصَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْৃ</div><div style="text-align: justify;">হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আবু নুয়াইম: দালাইলুন নবুয়াত, ১ম খন্ড, ১১৩ পৃ: ১১৭ নং হাদিসে। এই হাদিসের সনদ প্রসঙ্গে আল্লামা আব্দুল হাই লাখনভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَهَذَا، وَإِن كَانَ مَذْكُورا فِي معارج النُّبُوَّة وَغَيره من كتب السّير الجامعة للرطب واليابس فَلَا يسْتَند بِكُل مَا فِيهَا إِلَّا النَّائِم والناعس وَلكنه لم يثبت رِوَايَة ودراية.</div><div style="text-align: justify;">-“ইহা যদিও মাআরিজুন নবুয়াত সহ অন্যান্য সিরাতের কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইহার মধ্যে যা কিছু রয়েছে ইহা ঘুমন্ত ও অলস ব্যক্তিরা ব্যতীত কেউ নির্ভর করেনা। তবে ইহা রেওয়ায়েত ও দেয়ায়া কোনভাবেই ছাবিত নয়।” (লাখনভী: আছারুল মারফুয়া, ৪৬ পৃ:;)</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা আব্দুল হাই লাখনভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর দৃষ্টিতে হাদিসটি ছাবিত নয় তথা ছহীহ্ নয়। কেননা মুহাদ্দিছিনে কেরাম যখন কোন হাদিসকে لم يثبت বলেন তখন ইহা অর্থ হয় হাদিসটি ছহীহ্ নয়। যেমন হাফিজুল হাদিস ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনা করেছেন, বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ, হাফিজুল হাদিস, ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, </div><div style="text-align: justify;">وَذكر السخاوي عَنهُ أَن لفظ لَا يثبت لَا يلْزم مِنْهُ أَن يكون مَوْضُوعا فَإِن الثَّابِت يَشْمَل الصَّحِيح فَقَط والضعيف دونه. </div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাফিজ ইবনু হাজার ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয় لا يثبت এই শব্দটি হাদিসকে মওজু বলা আবশ্যক করেনা, কেননা ছাবিত শব্দটি শুধুমাত্র ছহীহ্ এর ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় জয়ীফের ক্ষেত্রে নয়।” ৬৬৬৬,  আল্লামা তাহের পাটনী: তাযকিরাতুল মওদ্বুআত, ৭৫ পৃষ্ঠা</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">অতএব, মুহাদ্দিছিনে কেরামের উসূল মোতাবেক এই হাদিস জয়ীফ। এছাড়া নির্ভরযোগ্য মুহাদ্দিছগণের লিখিত সিরাত গ্রন্থ সমূহের মধ্যে কোন মওজু বা জাল হাদিস উল্লেখ করা হয়না। যেমন বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা নূরুদ্দিন আলী হালভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) স্বীয় কিতাবের মুকাদ্দমায় বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">ولا يخفى أن السير تجمع الصحيح والسقيم والضعيف والبلاغ والمرسل والمنقطع والمعضل دون الموضوع</div><div style="text-align: justify;">-“আর ইহা গোপন নয় যে, নিশ্চয় সিরাত গ্রন্থে ছহীহ্, ছাক্বীম, দ্বায়িফ, বালাগ, মুরছাল, মুনকাতে, মু’দাল সবই বর্ণনার মাধ্যমে একত্রিত করা হয় তবে মওজু হাদিস ব্যতীত।” ৬৭৬৭,  আল্লামা হালভী: সিরাতে হালভিয়া, মুকাদ্দমা ৫ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">অতএব, এই নীতি মোতাবেক মা আয়েশা (رضي الله عنه) এর সূই হারানোর হাদিসটি মওজু নয় বরং জয়ীফ সনদের। কেননা বিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য তিনজন মুহাদ্দিছ এই হাদিসকে তিনাদের সিরাত গ্রন্থে সংকলন করেছেন। যেমন হাফিজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম খারকুশী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম ইবনু ছালেহী শামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎)। হাদিসের বর্ণনাকারী ‘মুসয়াদাহ ইবনু বাকর’ সম্পর্কে ইমাম দারা কুতনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) মিথ্যাবাদী বলেছেন যার ইঙ্গিত হিসেবে ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) মিযানের মধ্যে উল্লেখ করেছেন। তবে ইমাম খতিবে বাগদাদী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় তারিখের মধ্যে এই রাবী থেকে হাদিস বর্ণনা করে কোন সমালোচনা করেননি। আসমাউর রিজাল ও উসূলে সামগ্রীক বিষয় গুলো বিবেচনা করেই আল্লামা আব্দুল হাই লাখনভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটিকে لم يثبت বলেছেন, সরাসরি মওজু বা বাতিল বলেননি। এখানে আরেকটি বিষয় বলা উচিৎ। কোন কোন ইমাম বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قَالَ الْمِزِّيُّ كُلُّ حَدِيثٍ فِيهِ يَا حُمَيْرَاءُ فَهُوَ مَوْضُوعٌ إِلا حَدِيثًا عِنْدَ النَّسَائِيِّ</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম মিযযী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, প্রত্যেক ঐ হাদিস যে হাদিসে ‘ইয়া হুমাইরা’ শব্দ রয়েছে তা সবই মওজু শুধুমাত্র নাসাঈ এর একটি হাদিস ব্যতীত।”৬৮৬৮,  ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আল মাসনূ ফি মারিফাতিল হাদিসিল মাওজু;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">  এই অভিমতটি কিছু মুহাদ্দিছগণ বললেও অন্যান্য মুহাদ্দিছগণ বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَقَالَ بَعْضهمْ كُلُّ حَدِيثٍ وَرَدَ فِيهِ الْحُمَيْرَاء ضَعِيف -“প্রত্যেক ঐ হাদিস যে হাদিসে ‘ইয়া হুমাইরা’ শব্দ রয়েছে তা সবই জয়ীফ।” ৬৯৬৯,  ইমাম ছিয়তী: শারহু সুনানি ইবনে মাজাহ, ১ম খন্ড, ১৭৮ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"> যেমন শারিহে বুখারী, ইমাম বদরুদ্দিন আইনী হানাফী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">يَا حُمَيْرَاءُ أَتُحِبِّينَ أَنْ تَنْظُرِي إلَيْهِمْ فَقلت نعم إِسْنَاده صَحِيح قَالَ بَعضهم وَلم أر فِي حَدِيث صَحِيح ذكر الْحُمَيْرَاء إِلَّا فِي هَذَا (قلت) رُوِيَ من حَدِيث هِشَام بن عُرْوَة عَن أَبِيه عَن عَائِشَة قَالَت أَسْخَنْتُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ مَاءً فِي الشَّمْسِ فَقَالَ: لا تَفْعَلِي يَا حُمَيْرَاءُ، فَإِنَّهُ يُورِثُ الْبَرَصَ وَهَذَا الحَدِيث وَإِن كَانَ ضَعِيفا فَفِيهِ ذكر الْحُمَيْرَاء</div><div style="text-align: justify;">-“হে হুমাইরা! তোমরা কি পছন্দ করো আমি তাদের দিকে তাকিয়ে থাকি? আমি বললাম, হ্যাঁ। ইহার সনদ ছহীহ্। কোন কোন মুহাদ্দিছগণ বলেছেন, হুমাইরা শব্দ উল্লেখ রয়েছে এরুপ কোন ছহীহ্ হাদিস দেখিনি ইহা ছাড়া। আমি আইনী বলি, হিশাম ইবনু উরওয়া তার পিতার সূত্রে হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎)’র জন্য সূর্যের আলোতে গরম করতাম। আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বললেন, হে হুমাইরা! তুমি আমার জন্য এরুপ করোনা, নিশ্চয় ইহা বারাছের উত্তারাধিকার। জয়ীফ হলেও ইহা হাদিস, ইহার মধ্যে ‘হুমাইরা’ শব্দ রয়েছে।”৭০৭০,  ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৭০ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"> </div><div style="text-align: justify;">এখানে ইমাম বদরুদ্দিন আইনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ‘হুমাইরা’ শব্দ থাকার পরেও হাদিসটি জয়ীফ বলেছেন, মওজু বলেননি। এ ব্যাপারে হাফিজুল হাদিস ইমাম বায়হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قَالَ الشَّيْخُ أَحْمَدُ رَحِمَهُ اللَّهُ: قُلْتُ: وَأَمَّا مَا رُوِيَ عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مِنْ قَوْلِهِ فِي ذَلِكَ: يَا حُمَيْرَاءُ لَا تَفْعَلِي، فَإِنَّهُ يُورِثُ الْبَرَصَ، لَا يَثْبُتُ الْبَتَّةَ، قَدْ بَيَّنَّا ضَعْفَهُ فِي كِتَابِ السُّنَنِ</div><div style="text-align: justify;">-“শায়েখ আহমদ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, আমি বললাম, যে সকল হাদিস হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে রাসূলে আকরাম ( ﷺ‎‎) বর্ণিত হয়েছে এবং ইহা মধ্যে রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎)’ বাণী ‘হে হুমাইরা! তুমি আমার জন্য এরুপ করোনা, নিশ্চয় ইহা বারাছের উত্তারাধিকার। ইহা ছাবিত নয়, অবশ্যই আমরা ইহার দুর্বল হওয়ার বিষয়টি কিতাবুস সুনানের মধ্যে বর্ণনা করেছি।” ৭১৭১,  ইমাম বায়হাক্বী: মারেফাতুস সুনান ওয়াল আছার, হাদিস নং ৫১৩;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এখানেও ইমাম বায়হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) يَا حُمَيْرَاءُ ‘ইয়া হুমাইরা’ শব্দ থাকার পরেও হাদিসকে জয়ীফ বলেছেন, মওজু বলেননি। এ বিষয়ে ইমাম ইসমাঈল আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وأقول فيه إن الحديث الذي رواه البيهقي والدارقطني وغيرهما عن عائشة في الْمَاءِ الْمُشَمَّسِ أن النبي صلى الله عليه وسلم قال لها لا تفعلي يا حميراء، فإنه يورث البرص ليس بكذب مختلق بل ضعيف،</div><div style="text-align: justify;">-“সূর্যের তাপে গরমকৃত পানি সম্পর্কীত হাদিস সম্পর্কে আমি বলি যা ইমাম বায়হাক্বী, ইমাম দারা কুতনী ও অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) আয়েশা (رضي الله عنه) কে বললেন, ‘হে হুমাইরা! তুমি আমার জন্য এরুপ করোনা, নিশ্চয় ইহা বারাছের উত্তারাধিকার। ইহা মিথ্যা ও নিকৃষ্ট নয় বরং জয়ীফ সনদের।” ৭২৭২,  ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১১৯৮ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এখানেও ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) يَا حُمَيْرَاءُ ‘ইয়া হুমাইরা’ শব্দ থাকার পরেও হাদিসকে জয়ীফ বলেছেন, মওজু বলেননি। এ ব্যাপারে ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قَالَ ابْنُ حَجَرٍ: نُقِلَ عَنِ الْإِمَامِ جَمَالِ الدِّينِ يُوسُفَ الْمُزَنِيِّ أَنَّهُ قَالَ: كُلُّ حَدِيثٍ فِيهِ يَا حُمَيْرَاءُ فَهُوَ مَوْضُوعٌ وَاللَّهُ تَعَالَى أَعْلَمُ هَذِهِ الْمَقَالَةُ لَا تَصِحُّ عَلَى عُمُومِهَا لِأَنَّ مُجَرَّدَ اشْتِمَالِ الْحَدِيثِ عَلَى " يَا حُمَيْرَاءُ " لَا يَدُلُّ عَلَى الْوَضْعِ، نَعَمْ إِنْ وُجِدَ مَعَهُ أَسْبَابٌ أُخَرُ تَدُلُّ عَلَى الْوَضْعِ يُحْكَمُ بِهِ وَإِلَّا فَلَا </div><div style="text-align: justify;">-“হাফিজ ইবনু হাজার ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ইমাম জামালুদ্দিন ইউসূফ মুজানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে নকল করেছেন, নিশ্চয় তিনি বলেছেন: প্রত্যেক ঐ হাদিস যার মধ্যে ইয়া হুমাইরা শব্দ রয়েছে ইহা মওজু, আল্লাহই সর্বোজ্ঞ। এই কথা আমভাবে বিশুদ্ধ নয়। কেননা এককভাবে ইয়া হুমাইরা শব্দ ব্যবহার করা হাদিস বানোয়াট হওয়ার দলিল নয়। হ্যাঁ যদি ইহার সাথে বানোয়াট হওয়ার অন্য কোন কারণ খুজে পাওয়া যায় তাহলে মওজু হওয়ার হুকুম দেওয়া হবে অন্যথায় নয়।” ৭৩৭৩,  ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৩০০৭ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এখানে ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) স্পষ্ট করে বলেছেন, ইয়া হুমাইরা শব্দ থাকলেই হাদিস জাল বিষয়টি এরুপ নয়, বরং হাদিস হওয়ার জন্য অন্য কারণ থাকতে হবে। এবার একটি হাদিস লক্ষ্য করুন যেটার মধ্যে يَا حُمَيْرَاءُ ইয়া হুমাইরা শব্দ রয়েছে অথচ মুহাদ্দিছ হাদিসটিকে ছহীহ্ বলেছেন। ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেছেন, হযরত তাঊস ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনা করেছেন, হাদিসের শেষে হাদিসটিকে ছহীহ্ বলা হয়েছে। যেমন,</div><div style="text-align: justify;">عن طاوس: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لنسائه أيتكن التى تنبحها كلاب كذا وكذا أباك يا حميراء (نعيم بن حماد فى الفتن وسنده صحيح)</div><div style="text-align: justify;">হাদিসটি উল্লেখ রয়েছে ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর ‘জামেউল আহাদিছ, গ্রন্থের হাদিস নং ৪৪২৭৭। এখানে স্পষ্ট করেই ইমাম ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎)/মুহাক্কিক يَا حُمَيْرَاءُ ইয়া হুমাইরা থাকার পরেও হাদিসটিকে ছহীহ্ বলেছেন।</div><div style="text-align: justify;">মেসকাত শরীফের, হাদিস নং ৩০০৭-এ يَا حُمَيْرَاءُ ‘ইয়া হুমাইরা’ থাকার পরেও তাহকিক করতে গিয়ে লা-মাজহাবী আলবানী জয়ীফ বলেছে। </div><div style="text-align: justify;">ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর ‘জামেউছ ছাগীর, হাদিস নং ১৪৫২৮; ইহার মধ্যেও يَا حُمَيْرَاءُ ‘ইয়া হুমাইরা’ থাকার পরেও জয়ীফ বলা হয়েছে।</div><div style="text-align: justify;">ইমাম নূরুদ্দিন হায়ছামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) يَا حُمَيْرَاءُ ইয়া হুমাইরা থাকার পরেও হাদিসকে বাতিল বলেননি।  ৭৪৭৪,  ইমাম হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, হাদিস নং ১৫১৯৭;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ইমাম শিহাবুদ্দিন বুয়ূছিরী কেনানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় ‘মিসবাহুস যুজাযা, গ্রন্থের ৩য় খন্ড, ৮১ পৃষ্টায় হাদিসের মধ্যে يَا حُمَيْرَاءُ ‘ইয়া হুমাইরা’ থাকার পরেও হাদিসটিকে জয়ীফ বলেছেন।</div><div style="text-align: justify;">ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর ‘জামেউল আহাদিছ, গ্রন্থের  হাদিস নং ২৫৯০৬, ২৫৯০৭, সেখানে يَا حُمَيْرَاءُ ইয়া হুমাইরা শব্দ থাকার পরেও হাদিসটিকে জয়ীফ বলা হয়েছে, মওজু বলেনি।</div><div style="text-align: justify;">অতএব, ঢালাওভাবে يَا حُمَيْرَاءُ ‘ইয়া হুমাইরা’ থাকলেই হাদিসটি জাল বিষয়টি এরুপ নয়। মুহাদ্দিছিনে কেরামগণ যাচাই বাছাই করেই হাদিস তিনাদের কিতাবে সংকলন করেন ও হাদিসের হুকুম বয়ান করেন। সুতরাং সার্বিক বিচারে হাদিসটির নূন্যতম স্তর হবে জয়ীফ। তবে এই হাদিসের সমর্থনে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়,</div><div style="text-align: justify;">أَخْبَرَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ الزُّهْرِيُّ، حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ ابْنُ أَخِي مُوسَى، عَنْ عَمِّهِ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُمَا قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَفْلَجَ الثَّنِيَّتَيْنِ إِذَا تَكَلَّمَ رُؤِيَ كَالنُّورِ يَخْرُجُ مِنْ بَيْنِ ثَنَايَاهُ.</div><div style="text-align: justify;">-“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন, যখন আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) কথা বলতেন তখন তাঁর সামনের দুই দাঁতের ফাক দিয়ে নূর বের হয়ে যেত।” ৭৫৭৫,  সুনানে দারেমী শরীফ, ১ম খন্ড, ৫৮ পৃ:; ইমাম তিরমিজি: শামায়েলে মুহাম্মাদীয়া, হাদিস নং ১৪ পৃষ্টা নং ১৭; ইমাম বায়হাক্বী: দালায়েলুন্নবুয়াত ১ম খন্ড, ২১৫ পৃ:; ইমাম হায়ছামী: মাজমুয়ায়ে জাওয়াইদ, ৮ম খন্ড, ৪৯৭ পৃ:; তাবারানী তাঁর কবীর ও আওছাতে; ইমাম ছিয়তী: খাছায়েছুল কোবরা, ১ম খন্ড, ১০৬ পৃ:; ইমাম কাস্তালানী: মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া, ২য় খন্ড, ১৯ পৃ:; তারিখুল খামিছ, ১ম খন্ড, ১০৬ পৃ:; ইমাম ইবনে হাজার মক্কী: আশরাফুল অছায়েল, ১ম খন্ড, ৬৬ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">সুতরাং আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) চেহারা মুবারক থেকে নূর বের হত এবং সেই নূরের আলোতেই রাতের বেলায় আম্মাজান আয়েশা সিদ্দিকা (رضي الله عنه) হারিয়ে যাওয়া সূই খুজে পেয়েছেন।</div><div style="text-align: justify;">--------------------------------</div>

রাসূল ( ﷺ‎‎)’র চেহারার নূরে মা আয়েশা (رضي الله عنه)’র সুই পাওয়া

রাসূল ( ﷺ‎‎)’র চেহারার নূরে মা আয়েশা (رضي الله عنه)’র সুই পাওয়াহাফিজুল হাদিস ইমাম আবু নুয়াইম ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম ইবনু আসাকির ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সনদসহ বর্ণনা করেছেন,عَن عَائِشَة قَالَت كنت أخيط فِي السحر فَسَقَطت مني الابرة فطلبتها فَلم أقدر عَلَيْهَا فَدخل رَسُول الله صلى ا…

Read more »

রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস, রমজান আমার উম্মতের মাস

<div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস, রমজান আমার উম্মতের মাস</div><div style="text-align: justify;">ইমাম ইসমাঈল ইবনু মুহাম্মদ ইবনে ফাদ্বল ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৫৩৫ হিজরী বর্ণনা করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">أخبرنا عبد الواحد بن علي بن فهد ببغداد، ثنا أبو الفتح بن أبي الفوارس، ثنا عبد الله بن محمد بن جعفر، ثنا عبد الله بن محمد بن زكريا، ثنا يوسف بن إسحاق البابي وكان ثقة، ثنا محمد بن بشير البغدادي، ثنا قران بن تمام، عن يونس، عن الحسن، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: رجب شهر الله عز وجل وشعبان شهري، ورمضان شهر أمتي</div><div style="text-align: justify;">-“হযরত হাছান বছরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলে আকরাম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: রজব মহান আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস এবং রমজান আমার উম্মতের মাস।” ৫৪৫৪,  ইমাম ইসমাঈল ইস্পাহানী: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, হাদিস নং ১৮৫৭;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قُلْتُ أَمَّا صَدْرُ الْحَدِيثِ وَهُوَ قَوْلُهُ رَجَبُ شَهْرُ اللَّهِ وَشَعْبَانُ شَهْرِي وَرَمَضَانُ شَهْرُ أُمَّتِي فقد ذكره أَبُو الْفَتْح ابْن أَبِي الْفَوَارِسِ فِي أَمَالِيهِ عَنِ الْحَسَنِ مُرْسَلًا كَمَا ذَكَرَهُ السُّيُوطِيُّ فِي جَامِعِهِ الصَّغِيرِ</div><div style="text-align: justify;">-“আমি (মোল্লা আলী ক্বারী) বলছি, হাদিসের প্রথম অংশটি অর্থাৎ ‘রজব মহান আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস এবং রমজান আমার উম্মতের মাস।’ ইহা বর্ণনা করেছেন ইমাম আবুল ফাতাহ ইবনু আবীল ফাওয়ারিছ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ‘আমালী’ গ্রন্থে। যেমনটা ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেছেন।”৫৫৫৫,  ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফুয়া, ১ম খন্ড, ৪৬০ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"> </div><div style="text-align: justify;">আর ইমাম ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর ‘জামেউছ ছাগীর’ গ্রন্থে কোন মাওজু হাদিস উল্লেখ নেই। যেমনটা ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় কাশফুল খাফা গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।</div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস সম্পর্কে আল্লামা মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল ইবনে ছিলাহ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১১৮২ হিজরী উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">(أبو الفتح بن أبي الفوارس في أماليه عن الحسن مرسلاً) قال الحافظ العراقي في شرح الترمذي: حديث ضعيف جداً،</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম আবুল ফাতাহ ইবনু আবীল ফাওয়ারিছ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ‘আমালী’ গ্রন্থে হযরত হাছান বছরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে মুরছালরূপে বর্ণনা করেছেন। হাফিজ ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় শারহু তিরমিজি গ্রন্থে বলেছেন ইহা নিতান্ত দুর্বল সনদের হাদিস।” ৫৬৫৬,  আত তানভীর শরহে জামেইছ ছাগীর, ৪৩৯৫ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম আব্দুর রউফ মানাভী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">أَبُو الْفَتْح بن أبي الفوارس فِي أَمَالِيهِ عَن الْحسن الْبَصْرِيّ مُرْسلا وَرَوَاهُ عَنهُ أَيْضا الْأَصْفَهَانِي فِي ترغيبه وَهُوَ شَدِيد الضعْف</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম আবুল ফাতাহ ইবনু আবীল ফাওয়ারিছ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ‘আমালী’ গ্রন্থে হযরত হাছান বছরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে মুরছালরূপে বর্ণনা করেছেন। অনুরূপ ইমাম আসবাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার ‘তারগীব’ গ্রন্থে ইহা বর্ণনা করেছেন। আর ইহা খুবই দুর্বল সনদের হাদিস।” ৫৭৫৭,  ইমাম মানাভী: আত তাইছির বি’শারহি জামেইছ ছাগীর, ২য় খন্ড, ২৯ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা দরবেশ হুত বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">ضعيف ولم يصح في رجب حديث كما قاله ابن رجب وغيره</div><div style="text-align: justify;">-“ইহা দুর্বল হাদিস, রজবের ব্যাপারে কোন হাদিস ছহীহ্ নেই যেমনটি বলেছেন ইমাম ইবনু রজব হাম্বলী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও অন্যান্যরা।” ৫৮৫৮,  আছানিল মাতালিব, হাদিস নং ৭০২;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন, ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী, ইমাম মানাভী, আল্লামা মুহাম্মদ ইবনু ইসমাঈল, আল্লামা দরবে হুত ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) প্রমূখের মতে এই হাদিসের সনদের মান ضعيف جداً । কিন্তু কওমীদের বড় আলেম জনাব জুনায়েদ বাবুনগরীর তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় লিখা ‘প্রচলিত জাল হাদিস’ নামক বইয়ের চতুর্থ প্রকাশের ১০৪ পৃষ্টায় ইমাম ছিয়তীর নাম উল্লেখ করে মওজু বলে দিলেন! </div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসের সমর্থনে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়। ইমাম বায়হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনা করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَأَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْكَرَابِيسِيُّ، بِبُخَارَى، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ نُصَيْرٍ، حَدَّثَنِي جَدِّي نُصَيْرُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ مُوسَى، عَنْ نُوحِ بْنِ أَبِي مَرْيَمَ، عَنْ زَيْدٍ الْعَمِّيِّ، عَنْ يَزِيدَ الرَّقَاشِيِّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: خِيرَةُ اللهِ مِنَ الشُّهُورِ شَهْرُ رَجَبٍ وَهُوَ شَهْرُ اللهِ، مَنْ عَظَّمَ شَهْرَ اللهِ رَجَبٍ فَقَدْ عَظَّمَ أَمْرَ اللهِ، وَمَنْ عَظَّمَ أَمْرَ اللهِ أَدْخَلَهُ جَنَّاتِ النَّعِيمِ، وَأَوْجَبَ لَهُ رِضْوَانَهُ الْأَكْبَرَ، وَشَعْبَانُ شَهْرِي فَمَنْ عَظَّمَ شَهْرَ شَعْبَانَ فَقَدْ عَظَّمَ أَمْرِي، وَمَنْ عَظَّمَ أَمْرِي كُنْتُ لَهُ فَرَطًا وَذُخْرًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَشُهِرُ رَمَضَانَ شَهْرُ أُمَّتِي فَمَنْ عَظَّمَ شَهْرَ رَمَضَانَ، وَعَظَّمَ حُرْمَتُهُ وَلَمْ يَنْتَهِكْهُ، وَصَامَ نَهَارَهُ، وَقَامَ لَيْلَهُ، وَحَفِظَ جَوَارِحَهُ خَرَجَ مِنْ رَمَضَانَ وَلَيْسَ عَلَيْهِ ذَنْبٌ يَطْلُبُهُ اللهُ بِهِ. قَالَ الْإِمَامُ أَحْمَدُ: هَذَا إِسْنَادٌ مُنْكَرٌ بِمَرَّةٍ،</div><div style="text-align: justify;">-“হযরত আনাস ইবনু মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: মাস সমূহের মধ্যে রজব মাস আল্লাহর কাছে অধিক উত্তম মাস। যে ব্যক্তি আল্লাহর মাস রজবকে সম্মান করবে সে যেন আল্লাহর নির্দেশকে সম্মান করল আর যে ব্যক্তি আল্লাহর নির্দেশকে সম্মান করল আল্লাহ তাকে জান্নাতুন নাঈমে প্রবেশ করাবেন এবং তার জন্যে সবচেয়ে বড় রেদ্বওয়ান আবশ্যক করবেন। শাবান আমার মাস, যে ব্যক্তি আমার মাস শাবানকে সম্মান করবে সে যেন আমার নির্দেশকে সম্মান করল, আর যে ব্যক্তি আমার নির্দেশকে সম্মান করবে আমি তার জন্যে কেয়ামতের দিন সবচেয়ে অধিক বান্ধব হব। রমজান আমার উম্মতের মাস, যে ব্যক্তি রমজানকে সম্মান করবে, ইহার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোকেও সম্মান করবে ও ইহার ব্যাপারে কোন অসম্মান করবেনা, যে ব্যক্তি ইহার দিনের বেলায় রোজা রাখবে ও রাতে নামাজ আদায় করবে ও আশেপাশের বিষয় গুলোকে সংরক্ষণ করবে, এই অবস্থায় রজমাস মাস থেকে বের হবে তার যেন কোন গোনাহ থাকল না, এই অবস্থায় আল্লাহ তাকে উঠাবেন। ইমাম আহমদ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: ইহার সনদ মুনকার।” ৫৯৫৯,  ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াবুল ঈমান, হাদিস নং ৩৫৩২; ইমাম বায়হাক্বী: ফাদ্বাইলুল আওকাত, হাদিস নং ১০; ইমাম ছিয়তী: তাফছিরে দুর্রে মানছুর, ৪র্থ খন্ড, ১৮৬ পৃ:; ইমাম হিন্দী: কানজুল উম্মাল, হাদিস নং ৩৫২১৭;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসের মধ্যেও পূর্বের হাদিসের মাআনা প্রমাণিত হল। পূর্বের হাদিসটি জয়ীফ এবং এই হাদিসটি মুনকার। সর্বোপরি বিষয়টি একাধিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। শারিহে মুসলীম ইমাম শারফুদ্দিন নববী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন-</div><div style="text-align: justify;">قد اتفق العلماء على جواز العمل بالحديث الضعيف فى فضائل الاعمال:مقدمة المؤلف</div><div style="text-align: justify;">-“উলামায়ে কেরাম এই বিষয়ে সবাই ঐক্যমত পোষণ করেছেন দুর্বল হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য।” ৬০৬০ . ইমাম নববী: আরবাঈন: ১/২০ পৃ. এবং ইমাম ইবনে দাকিকুল ঈদ, শরহে আরবাঈনুন নববিয়্যাহ, ১/২০ পৃ.</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">সুতরাং হাদিসটি দুর্বল সনদের হলেও সর্বসম্মতিক্রমে ফাদ্বায়েলের বেলায় গ্রহণযোগ্য। হযরত হাছান বছরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর মুরছাল ক্বাবী হয়না তবে ইমাম যুরকানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: وَمَرَاسِيلُهُ ضَعِيفَةٌ -“হাছান বছরীর মুরছাল গুলো দুর্বল পর্যায়ের।”৬১৬১,  ইমাম যুরকানী: শারহু মুয়াত্তা, ৩য় খন্ড, ২৩২ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">  সামগ্রীকভাবে ‘মুরছাল’ সনদ প্রসঙ্গে আল্লামা ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) একটি হাদিসের সনদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন-</div><div style="text-align: justify;">وَقَالَ أَبُو دَاوُدُ: هَذَا مُرْسَلٌ: أَيْ: نَوْعٌ مُرْسَلٌ وَهُوَ الْمُنْقَطِعُ لَكِنَّ الْمُرْسَلَ حُجَّةٌ عِنْدَنَا وَعِنْدَ الْجُمْهُورِ</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম আবু দাউদ বলেন সনদটি মুরছাল, আর মুরছাল হলো মুনকাতে‘ঈ এর প্রকার। তবে জমহুর মুহাদ্দিছীনে কেরামের নিকট মুরছাল হুজ্জাত বা দলিলের উপযুক্ত।”  ৬২৬২,  মিরকাতুল মাফাতিহ, ১/৩৬৮ পৃ. হা/৩২৩, কিতাবুত ত্বহারাত;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">শারিহে বুখারী আল্লামা আনোওয়ার শাহ কাশ্মীরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেন-</div><div style="text-align: justify;">وقال النسائي: إنه مرسل، أقول: إن المرسل حجة عند الجمهور</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম নাসাঈ (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, এ হাদিসটি মুরছাল, আমি বলি, তবে জমহুর মুহাদ্দিছীনে কেরামের নিকট মুরছাল হুজ্জাত বা দলিলের উপযুক্ত।”  ৬৩৬৩,  আরফুয মাযী, ১/৪৩৭ পৃ.;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">অতএব, উসূল মোতাবেক ফাদ্বায়েলের বিষয় বিধায় হাদিসটি গ্রহণযোগ্য।</div>

রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস, রমজান আমার উম্মতের মাস

রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস, রমজান আমার উম্মতের মাসইমাম ইসমাঈল ইবনু মুহাম্মদ ইবনে ফাদ্বল ইস্পাহানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৫৩৫ হিজরী বর্ণনা করেছেন,أخبرنا عبد الواحد بن علي بن فهد ببغداد، ثنا أبو الفتح بن أبي الفوارس، ثنا عبد الله بن محمد بن جعفر، ثنا عبد الله بن محمد بن زكريا، ثنا يوسف بن إ…

Read more »

উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীর সমতুল্য

<div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীর সমতুল্য</div><div style="text-align: justify;">قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إِسْرَائِيلَ</div><div style="text-align: justify;">-“রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত (সম্মানীয়)।”(ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৬০৮৭ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; শরহে বুখারী লিস সাফারী, ২য় খন্ড, ২৭৫ পৃ:; ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী: তাফছিরে কবীর, ২৭তম খন্ড, ১১১ পৃ:; তাফছিরে নিছাপুরী, ১ম খন্ড, ৩৩০ পৃ:; তাফছিরে সিরাজুম মুনীর, ৩য় খন্ড, ২৫৩ পৃ:; আল্লামা ঈমাম ইসমাঈল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ১৮৪ পৃ:; ৪র্থ খন্ড, ৭৬ পৃ:; আল লুভাব ফি উলুমিল কিতাব, ১৮তম খন্ড, ৩৮২ পৃ:; বাহরুল মাদিদ ফি তাফছিরে কুরআনিল মাজিদ, ২য় খন্ড, ৩৫ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ৬০ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, ২৮৬ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">প্রখ্যাত মুফাচ্ছির, ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত ৬০৬ হিজরী} তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেন,</div><div style="text-align: justify;">أَجْمَعْتِ الْأُمَّةُ عَلَى أَنَّ بَعْضَ الْأَنْبِيَاءِ أَفْضَلُ مِنْ بَعْضٍ، وَعَلَى أَنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَفْضَلُ مِنَ الْكُلِّ،</div><div style="text-align: justify;">-“উম্মতের ইজমা হয়েছে যে, কতক নবীগণ কতেক নবীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আর নিশ্চয় মুহাম্মদ ( ﷺ‎‎) তাঁদের সকলের চেয়েও সর্বশ্রেষ্ঠ।”(তাফছিরে কবীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৫২১ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;">এ সম্পর্কে আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত ১২৫২ হি.} বলেন,</div><div style="text-align: justify;">أَجْمَعَتْ الْأُمَّةُ عَلَى أَنَّ الْأَنْبِيَاءَ أَفْضَلُ الْخَلِيقَةِ وَأَنَّ نَبِيَّنَا عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ أَفْضَلُهُمْ وَأَنَّ أَفْضَلَ الْخَلَائِقِ بَعْدَ الْأَنْبِيَاءِ الْمَلَائِكَةُ الْأَرْبَعَةُ وَحَمَلَةُ الْعَرْشِ وَالرُّوحَانِيُّونَ وَرَضْوَانُ وَمَالِكٌ؛ وَأَنَّ الصَّحَابَةَ وَالتَّابِعِينَ وَالشُّهَدَاءَ وَالصَّالِحِينَ أَفْضَلُ مِنْ سَائِرِ الْمَلَائِكَةِ.</div><div style="text-align: justify;">-“উম্মতের ইজমা হয়েছে যে, সৃষ্টি জগতে শ্রেষ্ঠ হল নবীগণ, আর আমাদের নবী ( ﷺ‎‎) হলে তাঁদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। নবীগণের পরে শ্রেষ্ঠ হল আরশ বহনকারী ৪ ফেরেস্থা ও রুহানিউন, রেদ্বওয়ান ও মালেক ফেরেস্থা। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈগণ, শোহাদায়ে কেরাম ও ছালেহীনগণ সাধারণ ফেরেস্থাদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।”(ফাতওয়ায়ে শামী, ১ম খন্ড, ৫২৭ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;">তাই সমগ্র সৃষ্টি জগতে যা কিছু রয়েছে রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) এই সব কিছুর চেয়েও সর্বশ্রেষ্ঠ, এমনকি কোন নবী-রাসূল ও আরশ বহনকারী ফেরেস্থারাও রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) এর সমতুল্য নয়। সৃষ্টি জগতে তিনি বেমেছাল বা তুলনাহীন এবং তিনার পরেও কোন নবী  রাসূল নেই। এই আকিদাকে সামনে রেখেই নিম্ন উল্লেখিত হাদিসখানার আলোচনা করা হল। প্রথমেই লক্ষ্য করুন কোন কোন ইমামগণ ও মুহাদ্দিছগণ ইহাকে হাদিস বলে আখ্যায়িত করেছেন।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">যেমন হিজরী ১১শ শতাব্দির অন্যতম মুজাদ্দিদ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১০১৪ হিজরী তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَأَمَّا حَدِيثُ: عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إِسْرَائِيلَ -“আর হাদিস শরীফে আছে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৬০৮৭ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৬০৬ হিজরী তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন, </div><div style="text-align: justify;">قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إِسْرَائِيلَ  </div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহর নবী ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(তাফছিরে কবীর, ১৭তম খন্ড, ২৬৭ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা আবুল হাফছ সিরাজুদ্দিন উমর হাম্বলী দামেস্কী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৭৭৫ হিজরী বলেন, </div><div style="text-align: justify;">الإشارة إليه بقوله عَلَيْهِ الصَّلَاة وَالسَّلَام ُ: عُلَمَاءُ أمَّتِي كأنْبِيَاءِ بَنِي إسْرائِيْلَ</div><div style="text-align: justify;">-“আর এদিকেই রাসূল ( ﷺ‎‎) এর বানী ঈশারা করেছেন যে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।” (আল লুভাব ফি উলুমিল কিতাব, ১৮তম খন্ড, ৩৮২ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা নাজিমুদ্দিন হুছাইন ইবনে মুহাম্মদ নিছাপুরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮৫০ হিজরী বলেন, </div><div style="text-align: justify;">قال صلى الله عليه وسلم علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل </div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।” (তাফছিরে নিছাপুরী, ১ম খন্ড, ৩৩০ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা ইব্রাহিম ইবনে উমর ইবনে হুছাইন বাক্বাঈ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮৮৫ হিজরী তদীয় কিতাবে বলেন, </div><div style="text-align: justify;">كما روي في بعض الآثار علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل </div><div style="text-align: justify;">-“যেমনটি কোন কোন আছারে বর্ণিত আছে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(নাজমুদ দুরার, ১৫তম খন্ড, ৩৬৬ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা শামছুদ্দিন মুহাম্মদ ইবনে আহমদ শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৯৭৭ হিজরী বলেন, </div><div style="text-align: justify;">كما روي في بعض الآثار: علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل </div><div style="text-align: justify;">-“যেমনটি কোন কোন আছারে বর্ণিত আছে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”  (তাফছিরে সিরাজুম মুনীর, ৩য় খন্ড, ২৫৩ পৃ:;)</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা ইসমাঈল হাক্বী বরুছয়ী হানাফী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১১২৭ হিজরী তদীয় কিতাবে এভাবে বলেন, </div><div style="text-align: justify;">كما قال عليه السلام علماء أمتي كانبياء بنى إسرائيل -“যেমনটি আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৩য় খন্ড, ২৫৫ পৃ:;)</div><div style="text-align: justify;">  </div><div style="text-align: justify;">আল্লামা আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে মাহদী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১২২৪ হিজরী তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قال عليه السّلام: علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل -“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(বাহরুল মুদিদ ফি তাফছিরে কুরআনিল মাজিদ, ৫ম খন্ড, ৩৫ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা তক্বীউদ্দিন মুকরিজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮৪৫ হিজরী এভাবে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وقد جاء في الحديث: علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل. -“হাদিস শরীফে এসেছে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(ইমতাউল আসমা, ৪র্থ খন্ড, ২০৮ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসটি সম্পর্কে ইমাম আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, ইহার কোন (সনদগত) ভিত্তি নেই। কিন্তু এই হাদিসটি ‘রেওয়ায়েত বিল মাআনা’ হিসেবে ব্যাখ্যা সাপেক্ষ গ্রহণযোগ্য হাদিস। যেমন আল্লামা ইসমাঈল ইবনে মুহাম্মদ আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১১৬২ হিজরী তদীয় কিতাবে বলেন,</div><div style="text-align: justify;">الأخذ بمعناه التفتازاني، وفتح الدين الشهيد، وأبو بكر الموصلي، والسيوطي في الخصائص، وله شواهد</div><div style="text-align: justify;">-“আল্লামা তাফতাজানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম ফাতহুদ্দিন শহীদ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম আবু বকর মুছেলী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম ছিয়তী (رضي الله عنه) তাঁর ‘খাছায়েছে’ এই হাদিসের মাআনা গ্রহণ করেছেন এবং হাদিসের ‘মাআনার’ শাওয়াহিদ উল্লেখ করেছেন।”(ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ২য় খন্ড, ৬০ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">লা-মাজহাবী মুহাম্মদ ইবনে ছালেহ ইবনে মুহাম্মদ উছাইমিন মৃত্যু ১৪২১ হিজরী তদীয় গ্রন্থে এভাবে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">ولهذا جاء في حديث لكنه ضعيف: عُلَمَاءُ أُمَّتِيْ كَأَنْبِيَاءِ بَنِيْ إِسْرَائِيْل معناه صحيح</div><div style="text-align: justify;">-“এ কারণেই হাদিসে এসেছে কিন্তু ইহা দুর্বল: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত (সম্মানীয়), এর মাআনা বা অর্থ বিশুদ্ধ।”(শরহে আরবাইনা নববিয়া, ১ম খন্ড, ৪৫ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">তাই এই হাদিস ‘রেওয়ায়েত বিল মাআনা’ হিসবে হাদিস। কারণ আইম্মায়ে কেরাম ইহার মাআনাকে হাদিস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর অন্যতম কারণ হল, হাশরের দিন আখেরী নবীর উম্মতের মর্যাদার আসন দেখে অন্য নবীগণ ও শহিদগণ ঈর্ষা করবে, যার এবারত এরূপ,</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَا: حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ لَأُنَاسًا مَا هُمْ بِأَنْبِيَاءَ، وَلَا شُهَدَاءَ يَغْبِطُهُمُ الْأَنْبِيَاءُ وَالشُّهَدَاءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، بِمَكَانِهِمْ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى....  </div><div style="text-align: justify;">-“হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় আল্লাহর বান্দাগণের মধ্যে এমন লোক রয়েছে যারা নবী কিংবা শহীদ নয়, কিন্তু মাকাম দেখে নবীগণ ও শহীদগণ ঈর্ষা করবেন।”(সুনানে আবী দাউদ শরিফ, ইবনে উমর (রাঃ) হতে, হাদিস নং ৩৫২৭; তাফছিরে মাজহারী, ৪র্থ খন্ড, ৩৪৭ পৃ: সূরা ঈউনূসের ৬২ নং আয়াতের তাফছির; ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াইবুল ঈমান, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৯৯০ পৃ:; ইমাম আবু নুয়াইম: হিলিয়াতুল আউলিয়া, ১ম খন্ড, ৫ পৃ:; তাফছিরে দূর্রে মানছুর;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস সকল ইমামের দৃষ্টিতে ছহীহ্। বলুন এই হাদিস দ্বারা কি আখেরী নবী ( ﷺ‎‎) এর উম্মতের মর্যাদা ঐরূপ প্রমাণিত হয়না? </div><div style="text-align: justify;">আপনারা সকলেই জানেন, অন্য নবীগণ আমাদের নবীর উম্মত হওয়ার জন্য আকাঙ্খা করতেন। এর মাঝে হযরত ঈসা (عليه السلام)-ই শেষ যুগে আমাদের নবীর উম্মত হবেন। তাহলে বলুন! আমাদের নবীর উম্মত বনী ঈসরাইলের মত হবে কিনা? যদিও তাঁরা নবী নয়। এই নবীর উম্মতের মর্যাদা মহান আল্লাহ নবীদের সমান দিবেন তার আরো প্রমাণিত হয় এই হাদিস দ্বারা, যেমন:-</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا الْمُقْرِئُ، عَنْ حَيْوَةَ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ مِشْرَحِ بْنِ هَاعَانَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَوْ كَانَ نَبِيٌّ بَعْدِي لَكَانَ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ. </div><div style="text-align: justify;">-“হযরত উকবা ইবনে আমের (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন তাহলে খাত্তাবের পুত্র উমর (رضي الله عنه)’ই হইতেন।”</div><div style="text-align: justify;">(ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল: ফাদ্বাইলুস সাহাবা, হাদিস নং ৫১৯; মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ১৭৪০৫; তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ৩৬৮৬; ইমাম তাবারানী: মু’জামুল কবীর, হাদিস নং ৪৭৫; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৪৪৯৫; ইমাম বায়হাক্বী: মাদখাল, হাদিস নং ৬৫; মেসকাত শরীফ, ৫৫৮ পৃ: হাদিস নং ৬০৪৭; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১১তম খন্ড;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ইমাম হাকেম নিছাপুরী ও ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটিকে ছহীহ্ বলেছেন এবং ইমাম তিরমিজি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও আলবানী হাদিসটিকে হাছান বলেছেন। হযরত উমর (رضي الله عنه) যদিও নবী নয় এবং আর কোন নবী হবেও না, কিন্তু তরিকতের ভাষায় ‘কামালতে নবুয়ত’ তাঁর মাঝে রয়েছে। সুতরাং এই নবীর অনেক উম্মতের মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীদের মত। তাফছিরে রুহুল বয়ানে উল্লেখ আছে: নবী করিম ( ﷺ‎‎)</div><div style="text-align: justify;"> عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إسْرَائِيلَ-এই হাদিসের সত্যতা প্রমাণের জন্য মেরাজের রাতে ইমাম গাজ্জালী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে হযরত মুসা (عليه السلام) এর সামনে হাজির করালেন। মুসা (عليه السلام) বললেন: আপনার নাম কি?  উত্তরে ইমাম গাজ্জালী নিজের নাম, পিতার নাম, দাদার নাম, পৈর দাদার নাম এমনিভাবে ছয় পুরুষের নাম বললেন। আমি শুধু আপনার নাম জিজ্ঞাসা করেছি আপনি এত নামের তালিকা পেশ করলেন কেন? ইমাম গাজ্জালী আদবের সাথে জবাব দিলেন, আড়াই হাজার বছর পূর্বে আপনিও তো আল্লাহ তা’আলার ছোট্ট একটি প্রশ্নের জবাবে দীর্ঘ উত্তর দিয়েছিলেন। অর্থাৎ, আল্লাহ আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিল আপনার হাঁতে কি? উত্তরে আপনি বলেছিলেন, আমার হাঁতে লাঠি, ইহা দ্বারা গরু রাখি, গাছের পাতা পারি, এই সেই ইত্যাদি। হুজুর এত কথা বলার দরকার ছিল কি? </div><div style="text-align: justify;">হযরত মুসা (عليه السلام) এই নবীর উম্মতের এলেম ও প্রজ্ঞা দেখে আশ্চয্য হয়ে এই নবীর উম্মতের মর্যাদা মেনে নিলেন।</div><div style="text-align: justify;">(তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ২৮৪ পৃ: সূরা বাকারার ১৪৩ নং আয়াতের তাফছিরে; প্রিন্সিপ্যাল আব্দুল জলীল সাহেব র: এর ‘নূর নবী দ:’, ৯৬ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এই ঘটনার মূল সূত্র সম্পর্কে আল্লামা ইসমাঈল হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন:-</div><div style="text-align: justify;">وذكر الراغب الاصفهانى في المحاضرات انه قال الامام الشاذلى صاحب حزب البحر اضطجعت فى المسجد الأقصى فرأيت في المنام</div><div style="text-align: justify;">-“আল্লামা রাগিব ইস্পাহানী তার ‘মুহাদারাব’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হিজবুল বাহারের অধিকারী ইমাম শাজালী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) মসজিদে আকছায় ঘুমিয়ে সপ্নে দেখেছেন।”</div><div style="text-align: justify;">(তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ২৮৪ পৃ: সূরা বাকারার ১৪৩ নং আয়াতের তাফছিরে;)  </div><div style="text-align: justify;">---------------------------------</div>

উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীর সমতুল্য

উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীর সমতুল্যقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إِسْرَائِيلَ-“রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত (সম্মানীয়)।”(ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৬০৮৭ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়…

Read more »

আলিমের চেহারার দিকে নজর করলে ৬০ বছর নফল বন্দেগীর সওয়াব

<div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আলিমের চেহারার দিকে নজর করলে ৬০ বছর নফল বন্দেগীর সওয়াব</div><div style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস, ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম ইসমাঈল আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">عن أنس مرفوعا نَظْرَةٌ فِي وَجْهِ الْعَالِمِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ عِبَادَةِ سِتِّينَ سنة صياما وقياما</div><div style="text-align: justify;">-“হযরত আনাস (رضي الله عنه) মারফূ সূত্রে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেন: আলিমের চেহারার দিকে তাকানো ৬০ বছর নফল সালাত ও নফল রোজার চেয়ে আল্লাহর কাছে উত্তম।”(ছাময়ান ইবনে মাহদী তাঁর নুছখায় হাদিসটি হযরত আনাস রাঃ থেকে মারফূ সনদে উল্লেখ করেছেন; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৪৪৬ পৃ: হাদিস নং ১২৫১; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ২৮৫ পৃ:; তাজকিরাতুল মাওজুয়াত লিল ফাতানী, ১ম খন্ড, ২১ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসের সম্পর্কে ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">فِي نُسْخَةٍ سَمْعَانَ وَغَيْرِهِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ مَرْفُوعًا بِهِ وَبِمَعْنَاهُ وَلَا يَصِحُّ قَالَهُ السَّخَاوِيُّ</div><div style="text-align: justify;">-“ছামআন ও অন্যান্যদের নূছখার মধ্যে হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে মারফূভাবে ইহা ও ইহা আমার মাআনা বর্ণিত রয়েছে। ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন: ইহা ছহীহ্ নয়।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারুল মারফূয়া, হাদিস নং ৫৬২;) </div><div style="text-align: justify;">যেমন হাফিজুল হাদিস, ইমাম শামছুদ্দিন ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وكذا أورده الديلمي بلا سند عن أنس مرفوعا بلفظ: النظر إلى وجه العالم عبادة، وكذا الجلوس معه والكلام والأكل، ولا يصح.</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) সনদবিহীন অনুরূপ হাদিস হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন: আলিমের চেহারার দিকে তাকানো ইবাদত। এমনিভাবে তাদের সাথে বসা, কথা বলা ও খাওয়া দাওয়া করাও এবাদত। ইহা ছহীহ্ নয়।”(ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৪৪৬ পৃ: হাদিস নং ১২৫১;) </div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস উল্লেখ করে আল্লামা ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও আল্লামা ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: وَلَا يَصِحُّ -“ইহা ছহীহ্ হাদিস নয়।”(ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৪৪৬ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ২৮৫ পৃ:;)  ইমাম ইসমাঈল আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">ولا يصح شئ من ذلك كله كما سبق ذلك، -“এ বিষয়ে কোনটাই ছহীহ্ নয় যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে।”(ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ২৮১১ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;)  </div><div style="text-align: justify;">মুহাদ্দেছিনে কেরামের ভাষায় কোন হাদিসকে وَلَا يَصِحُّ বললেই ইহাকে মওজু বা বাতিল বুঝায়না, বরং হাছান অথবা দ্বায়িফ হতে পারে। যেমন আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, </div><div style="text-align: justify;">قَوْلَ السَّخَاوِيِّ لَا يَصِحُّ لَا يُنَافِي الضَّعْفَ وَالْحُسْنَ -“ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র বক্তব্য হাদিসটি ‘ছহীহ নয়’ নিষেধ দ্বারা হাদিসটি ‘হাছান’ ও দ্বায়িফ হওয়াকে নিষেধ করে না।” (আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী: আসরারূল মারফূআ-১ম খন্ড, ৩৪৯ পৃ. হাদিস নং ৫০২;) </div><div style="text-align: justify;">অনুরূপ আল্লামা আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় ‘কাশফুল খাফা’ কিতাবের ২৫২৫ নং হাদিসের তাহকিকে বলেছেন। আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) আরো বলেন-</div><div style="text-align: justify;">وَقَالَ ابْنُ الْهَمَّامِ: وَقَوْلُ مَنْ يَقُولُ فِي حَدِيثٍ أَنَّهُ لَمْ يَصِحَّ إِنْ سَلِمَ لَمْ يُقْدَحْ ; لِأَنَّ الْحُجَّةَ لَا تَتَوَقَّفُ عَلَى الصِّحَّةِ، بَلِ الْحَسَنُ كَافٍ،– فصل الثانى من باب: ما يجوز من العمل فى الصلاة.</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম কামালুদ্দীন মুহাম্মদ ইবনে হুমাম ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: কোন হাদিস সম্পর্কে কোন মুহাদ্দিছ যদি বলেন যে এ হাদিসটি ছহীহ্ (বিশুদ্ধ) নয়, তাদের কথা সত্য বলে মান্য করা হলেও কোন অসুবিধা নেই, যেহেতু (শরীয়তের) দলীল বা প্রমাণ হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার জন্য শুধু (হাদিস) ছহীহ্ বা বিশুদ্ধ হওয়া নির্ভরশীল নয়। সনদ বা সূত্রের দিক দিয়ে ‘হাছান’ হলেও (হাদিসটি শরীয়তের দলীল হিসেবে সাব্যস্ত হওয়ার জন্য) যথেষ্ট।”(আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী: মিরকাত: ৩য় খন্ড, ৭৭ পৃ, হাদিস: ১০৮, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন;)  হাফিজ ইবনে হাজার মক্কী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার কিতাবে লিখেন-</div><div style="text-align: justify;">وَقَول أَحْمد إِنَّه حَدِيث لَا يَصح أَي لذاته فَلَا يَنْفِي كَونه حسنا لغيره وَالْحسن لغيره يحْتَج بِهِ كَمَا بَين فِي علم الحَدِيث- (الصواعق المحرقة على أهل الرفض والضلال والزندقة:  خاتمة الفصل الاول من الباب: الحادى عشر:২২৮)</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম ইবনে হাজার মক্কী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎)‘র একটি হাদিস প্রসঙ্গে বক্তব্য হাদিসটি  لَا يَصح বিশুদ্ধ নয় এর অর্থ হবে ছহীহ্ লিজাতিহী তথা জাতি বা প্রকৃত অর্থে ছহীহ্ নয় উক্ত হাদিসটি (সনদের দিক দিয়ে) হাছান লিজাতিহী বা অন্য সনদে হাছান লিগায়রিহী (জাতিগত ছহীহ্ না হওয়া; সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ছহীহ’র কারণে নিজে ছহীহ্ হওয়া।) হওয়াকে মানা (নিষেধ) করে না। আর হাছান লিগায়রিহীও (শরিয়তের) প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যায়। যা ইলমে হাদিস তথা হাদিসশাস্ত্র হতে জানা যায়।”  (ইমাম ইবনে হাজার মক্কী: আস-সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, ২য় খন্ড, পৃ-৫৩৬, মুয়াস্সাতুর রিসালা, বয়রুত, লেবানন;)</div><div style="text-align: justify;">সুতরাং وَلَا يَصِحُّ হাদিসটি ছহীহ্ নয়, তবে নিশ্চয় ‘হাছান’ অথবা ‘দ্বায়িফ’ সনদের হাদিস, কারণ ইহা সনদযুক্ত ও মারফ‚ হাদিস। অতএব, এই হাদিসটি মারফূ এবং হাছান অথবা দ্বায়িফ । প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন, ইমামগণের কেউ এই হাদিসকে জাল হাদিস বলেননি, কিন্তু কওমীদের গুরু জনাব আব্দুল মালেক সাহেব তিনার ‘প্রচলিত জাল হাদিস’ নামক বইয়ের প্রথম প্রকাশের ৯২ পৃষ্টায় বলে দিলেন- “লোকমুখে প্রসিদ্ধ উপরোক্ত কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস নয়।” দেখুন তারা ইমামদের নামে এভাবেই মিথ্যাচারিতা করেছে।</div><div style="text-align: justify;">কওমীদের আরেকজন গুরুজন জনাব জুনায়েদ বাবু নগরীর তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় লিখিত “প্রচলিত জাল হাদিস” গ্রন্থের ১৭৬ পৃষ্টায় বলেছেন- “উপরোক্ত দুটি বাক্যের কোনটিই হাদীস নয়। হাদীস গবেষক ওলামারা এ দুটিকে মাওজু তথা বানোয়াট হাদীস বলে উল্লেখ করেন। আল্লামা সাখাবী বলেন: وَلَا يَصِحُّ অর্থাৎ এ বর্ণনা শুদ্ধ নয়।” </div><div style="text-align: justify;"><u>কি মিথ্যাচারিতা দেখুন! কোন ইমাম হাদিসটিকে মাওজু বা বানোয়াট বলেননি। ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) وَلَا يَصِحُّ বলেছেন, কিন্তু ইহার মাআনা বা ব্যাখ্যা কি সে ব্যাপারে আপনাদেরকে আমি ডকুমেন্টসহ বলেছি যে, ইহা হাছান অথবা দ্বায়িফ হবে, মাওজু নয়।</u></div><div style="text-align: justify;">------------------------------</div>

আলিমের চেহারার দিকে নজর করলে ৬০ বছর নফল বন্দেগীর সওয়াব

আলিমের চেহারার দিকে নজর করলে ৬০ বছর নফল বন্দেগীর সওয়াবহাফিজুল হাদিস, ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম ইসমাঈল আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেছেন,عن أنس مرفوعا نَظْرَةٌ فِي وَجْهِ الْعَالِمِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ مِنْ عِبَادَةِ سِتِّينَ سنة صياما وقياما-“হযরত আনাস (رضي الله عنه) মা…

Read more »

যে ব্যক্তি হজ্ব করল কিন্তু আমার যিয়ারত করলনা সে যেন আমার প্রতি যুলুম করল।

<div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">যে ব্যক্তি হজ্ব করল কিন্তু আমার যিয়ারত করলনা সে যেন আমার প্রতি যুলুম করল।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম ইবনু আদী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনা করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا على بن إسحاق، حَدَّثَنا مُحَمد بْنُ مُحَمد بْنِ النُّعْمَانِ بْنِ شِبْلٍ، حَدَّثني جَدِّي، حَدَّثني مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ، عنِ ابْنِ عُمَر، قَال: قَال رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ حَجَّ الْبَيْتَ فلم يزرنى فقد جفانى</div><div style="text-align: justify;"> -“হজরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যে ব্যক্তি হজ্ব করল কিন্তু আমার যিয়ারত করল না সে যেন আমার উপর যুলুম করল।”(ইমাম ইবনে ছালেহী; সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১২তম খন্ড, ৩৭৯; ইমাম ইবনে আদী: আল-কামিল, ৮ম খন্ড, ২৪৮ পৃ:; ইমাম ইবনে হিব্বান: মাজরুহীন, হাদিস নং ১১২৮; কাজী শাওকানী: নাইলুল আওতার, ৫ম খন্ড, ১১৪ পৃ: ২০৭৩ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়)</div><div style="text-align: justify;">  </div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসর গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে হাফিজুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">ابن عدي، والدار قطني في العلل وابن حبان في الضعفاء. والخطيب في رواة مالك بسند ضعيف جدا عن ابن عمر.</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম ইবনু আদী, দারা কুতনী তার ইলালে, ইবনু হিব্বান তার দ্বোয়াফা গ্রন্থে, খতিব তার ‘রেওয়ায়েতে মালেক’ গ্রন্থে হযরত ইবনু উমার (رضي الله عنه) থেকে অত্যান্ত দুর্বল সনদে বর্ণনা করেছেন।”(ইমাম ছিয়তী: আদ দুররুল মুনতাশিরা ফি আহাদিছিল মুশতাহিরাহ, ১ম খন্ড, ১৯ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসের সনদের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে হাফিজুল হাদিস ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قلت ولابن عدي في الكامل وابن حبان في الضعفاء والدارقطني في العلل وغرائب مالك وآخرين كلهم عن ابن عمر مرفوعا من حج ولم يزرني فقد جفاني ولا يصح</div><div style="text-align: justify;">-“আমি (ছাখাবী) বলছি, ইমাম ইবনু আদী তার আল কামিল গ্রন্থে, ইবনু হিব্বান তার দ্বোয়াফা গ্রন্থে, দারা কুতনী তার ইলালে ও গারাইবুল মালেক গ্রন্থে এবং অন্যন্য সকলেই হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে মারফূরূপে বর্ণনা করেছেন, যে ব্যক্তি হজ্ব করবে কিন্তু আমার যিয়ারত করবেনা সে যেন আমার প্রতি যুলুম করল। ইহা ছহীহ্ নয়।”(ইমাম ছাখাভী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ১১৭৮;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কোন হাদিসকে ولا يصح বললে হাদিসটি নূন্যতম দ্বায়িফ বুঝায়। এ বিষয়ে পূর্বে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।</div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসের সনদ প্রসঙ্গে হাফিজুল হাদিস, ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَذَكَرَهُ ابْنُ عَدِيٍّ وَابْنُ حِبَّانَ فِي تَرْجَمَةِ النُّعْمَانِ وَالنُّعْمَانُ ضَعِيفٌ جِدًّا</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম ইবনু আদী ও ইমাম ইবনু হিব্বান ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনাকারী নুমানের তরজমায় ইহা উল্লেখ করেছেন। আর বর্ণনাকারী নুমান অত্যান্ত দুর্বল।”(ইমাম আসকালানী: তালখিছুল হাবীর, ২য় খন্ড, ৫৬৯ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর দৃষ্টিতে হাদিসটি দুর্বল সনদের তবে মাওজু নয়।</div><div style="text-align: justify;">বিশ্বখ্যাত মুহাদ্দিছ, ইমাম আসকালানীর শশুর, ইমাম ইবনু মুলাক্কিন ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এই হাদিসের সনদ প্রসঙ্গে বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَمن ضَعِيف الْبَاب: حَدِيث مَنْ حَجَّ وَلم يَزُرْني فقد جفاني -“এ বিষয়ে দুর্বল হাদিস হচ্ছে, যে ব্যক্তি হজ্ব করবে কিন্তু আমার যিয়ারত করবেনা সে যেন আমার প্রতি যুলুম করল।”(ইমাম ইবনু মুলাক্কিন: বদরুল মুনীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৯৯ পৃ:;)   </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা তাহের পাতনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এই হাদিস সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قال الزركشي هو ضعيف -“ইমাম যারকাশী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, এই হাদিস দুর্বল।”(তাহের পাতনী: তাজকেরাতুল মওজুয়াত) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসের বর্ণনাকারী مُحَمد بْنُ مُحَمد بْنِ النُّعْمَانِ بْنِ شِبْلٍ সম্পর্কে ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">أتهمه الدارقطني وضعفه جدا -“ইমাম দারা কুতনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তার উপর অভিযোগ দিয়েছেন এবং তাকে অত্যান্ত দুর্বল বলেছেন।”(ইমাম আসকালানী: তাহজিবুত তাহজিব, রাবী নং ৭১০;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এছাড়া অন্য কোন ইমাম এই রাবী সম্পর্কে চরম পর্যায়ের সমালোচনা করেছেন বলে আমি পাইনি। উল্লেখযোগ্য সকল মুহাদ্দিছ তাবকার ইমামগণ হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন, কেউ মওজু বা জাল হাদিস বলেননি। শুধুমাত্র ইবনু তাইমিয়া এবং এ বিষয়ে তার হিতাকাংখিরাই হাদিসটিকে মওজু বলেছেন। কেননা ইবনে তাইমিয়াই রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) এর যিয়ারতের বিরুদ্ধে ছিল। মূলত হাদিসটি মওজু হওয়ার কোন কারণ নেই। এ হাদিসের মাআনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়,</div><div style="text-align: justify;">وعن علي بن أبي طالب رضي الله عنه قال: قال النبي صلى الله عليه وسلم: من زار قبري بعد موتي فكأنما زارني في حياتي، ومن لم يزر قبري فقد جفاني.</div><div style="text-align: justify;">-“হজরত আলী (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যারা আমার ওফাতের পরে যিয়ারত করবে সে যেন আমার জিবদ্দশায় যিয়ারত করল। যে আমার যিয়ারত না করবে সে যেন আমার উপর যুলুম করল।”(ইমাম খারকুশী: শরফুল মুস্তফা, হাদিস নং ৮৬২, ৩য় খন্ড, ১৭২ পৃ:; ইবনে ছালেহী: সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১২তম খন্ড, ৩৭৭ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অতএব, হাদিসটি দ্বায়িফ পর্যায়ের।</div><div style="text-align: justify;">প্রিয় পাঠক, আল্লামা ইবনু র্আরাক ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর তানজিহুশ শারিয়াহ, গ্রন্থের হাদিস নং ৮ এর ব্যাখ্যায়; আল্লামা তাহের পাতনীর তাজকেরাতুল মওজুয়াত, ১ম খন্ড ৭৬ পৃষ্টায় উল্লেখ রয়েছে قَالَ الزَّرْكَشِيّ هُوَ ضَعِيف </div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম যারকাশী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটিকে দ্বায়িফ বলেছেন।” কিন্তু লা-মাজহাবী কাজী শাওকানী তার ‘ফাওয়াইদ’ গ্রন্থে ও তিনার অনুসরণে কওমী আলেম জুনায়েদ বাবুনগরী তদীয় “প্রচলিত জাল হাদীস” বইয়ের ১২৬ পৃষ্টায় ইমাম যারকাশী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর নামে হাদিসটি জাল বানিয়ে দিলেন। কি আশ্চর্য জালিয়াতী! এমনকি ইমাম জালালুদ্দিন ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) নিজের কিতাবে হাদিসটিকে ضَعِيف দ্বায়িফ বলেছেন যা কিছুক্ষণ পূর্বে আপনাদেরকে দেখিয়েছি। অথচ কওমী আলেম জুনায়েদ বাবুনগরীর তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় লিখিত “প্রচলিত জাল হাদীস” বইয়ের ১২৬ পৃষ্টায় বলেছেন ইমাম ছিয়তী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটিকে জাল বলেছেন। (নাউজুবিল্লাহ) কি জালিয়াতী দেখুন! ছাগানী ইবনে তাইমিয়ার মতাদর্শী তাই সে হাদিসটিকে কোন কারণ ছাড়াই জাল বলেছে। কিন্তু হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটিকে জাল বলেননি বরং দ্বায়িফ বলেছেন।</div>

যে ব্যক্তি হজ্ব করল কিন্তু আমার যিয়ারত করলনা সে যেন আমার প্রতি যুলুম করল।

যে ব্যক্তি হজ্ব করল কিন্তু আমার যিয়ারত করলনা সে যেন আমার প্রতি যুলুম করল।ইমাম ইবনু আদী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনা করেছেন,حَدَّثَنَا على بن إسحاق، حَدَّثَنا مُحَمد بْنُ مُحَمد بْنِ النُّعْمَانِ بْنِ شِبْلٍ، حَدَّثني جَدِّي، حَدَّثني مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ، عنِ ابْنِ عُمَر، قَال: قَال رَسُولُ اللَّه…

Read more »

প্রিয় নবীজি আল্লাহর নূর থেকে, সকল কিছু নবীর নূর থেকে

<div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">প্রিয় নবীজি আল্লাহর নূর থেকে, সকল কিছু নবীর নূর থেকে</div><div style="text-align: justify;">قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا مِنْ نُورِ اللَّهِ وَالمُؤْمِنُونَ مِنْ نوري</div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমি আল্লাহর নূর থেকে আর মু’মীনগণ আমার নূর থেকে।” (আল্লামা ঈসমাইল হাক্বী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ২য় খন্ড, ৩৭১, ৪২৯ পৃ:; ৪র্থ খন্ড, ২৪১ পৃ:; মতায়েলুল মুর্সারাত র্শহে দালায়েলুল খায়রাত; গাউছে পাক: ছেররুল আছরার, ৪৯ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মুওজুয়াতুল কবীর, ৪০ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী: মাওজুয়াতুল কোবরা, ৭২ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১ম খন্ড, ১৮৫ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৯৮ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হাদিসটি উল্লেখ করে হাফিজুল হাদিস, ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَقَالَ السَّخَاوِيُّ هُوَ عِنْدَ الدَّيْلَمِيِّ بِلَا إِسْنَادٍ عَنْ عَبْدِ بْنِ جَرَادٍ مَرْفُوعًا أَنَا مِنَ اللَّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ مِنِّي </div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: এই হাদিস ইমাম দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় কিতাবে সনদবিহীন এভাবে উল্লেখ করেছেন: ‘আমি আল্লাহ (নূর) হতে আর সকল কিছু আমার (নূর) হতে।”(ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১ম খন্ড, ১৮৬ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কোবরা, ৭২ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৯৮ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস, ইমাম শামছুদ্দিন ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম মুহাম্মদ ইবনু আব্দিল্লাহ যারকাশি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও হাফিজ ইবনু তাইমিয়া وَالْمُؤْمِنُونَ مِنِّي কথাটি প্রমাণ করার জন্য কয়েকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করে বলেছেন। যেমন ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قال شيخنا إنه كذب مختلق وقال بعض الحفاظ لا يعرف هذا اللفظ مرفوعا لكن ثبت في الكتاب والسنة أن المؤمنين بعضهم من بعض وفي السنة قوله لحي الأشعريين هم مني وأنا منهم وقوله لعلي أنت مني وأنا منك وللحسين هذا مني وأنا منه وكله صحيح </div><div style="text-align: justify;">-“আমাদের শায়েখ বলেছেন: নিশ্চয় ইহা মিথ্যা ও কল্পিত। কোন কোন হাফিজ বলেছেন, ইহা মারফুভাবে এই শব্দ গুলোকে চিনিনা, তবে ইহা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ দ্বারা ইহা প্রমাণিত। নিশ্চয় মু’মীনগণ একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত। সুন্নাহ’র মধ্যে রয়েছে, আশআরী সম্পর্কীয় সেই বাণী, তোমরা আমার থেকে আমি তোমাদের থেকে। হযরত আলী (رضي الله عنه) সম্পর্কীয় বাণী, তুমি আমার থেকে, আমি তোমার থেকে। হুসাইন (رضي الله عنه) সম্পর্কীয় বাণী, সে আমার থেকে আমি তাঁর থেকে। প্রত্যেকটিই ছহীহ্।”(ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ১৯০ এর ব্যাখ্যায়; ইমাম যারকাশী: আল লাআলীল মানছুরাহ ফি আহাদিছিল মাশহুরাহ, ১ম খন্ড, ১৮৯ পৃ:; ইবনে তাইমিয়া: আহাদিছুল কাছাছ, ১ম খন্ড, ৭০ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) অন্যান্য হাদিস থেকে দায়লামীর হাদিসটির মাআনা ছহীহ্ প্রমাণ করেছেন। এছাড়াও ইমাম দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) প্রতি আস্থা রেখে হাদিসটি গ্রহণ করা যায়, কেননা বুখারী শরীফেও এরূপ অনেক সনদবিহীন “তা’লিক হাদিস” রয়েছে যে গুলোকে মুছান্নিফের উপর নির্ভর করে গ্রহণ করা হয়। ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎)সহ অন্যান্য ইমামগণ ইমাম দায়লামীর উপর নির্ভর করেই অন্যান্য হাদিসের সাথে সাদৃশ্য বিধায় হাদিসটির মাআনা গ্রহণ করেছেন ও বয়ান করেছেন।</div><div style="text-align: justify;">--------------------------------</div>

প্রিয় নবীজি আল্লাহর নূর থেকে, সকল কিছু নবীর নূর থেকে

প্রিয় নবীজি আল্লাহর নূর থেকে, সকল কিছু নবীর নূর থেকেقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا مِنْ نُورِ اللَّهِ وَالمُؤْمِنُونَ مِنْ نوري-“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমি আল্লাহর নূর থেকে আর মু’মীনগণ আমার নূর থেকে।” (আল্লামা ঈসমাইল হাক্বী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ২য় খন্ড, ৩৭১, ৪২৯ …

Read more »

মু’মীনের ক্বাল্ব আল্লাহর ঘর

<div>মু’মীনের ক্বাল্ব আল্লাহর ঘর<br></div><div>الْقَلْبُ بَيْتُ الرَّبِّ </div><div>-“মু’মিনের ক্বাল্ব আল্লাহর ঘর।”</div><div>(আল্লামা ঈমাম ঈসমাইল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৩য় খন্ড, ১৬১ পৃ:; তাফছিরে বাহরুল মাদিদ, ৭ম খন্ড, ২৮০ পৃ:; গাউছে পাক: সেররুল আছরার; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১ম খন্ড, ৬০ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কোবরা, ১৭০ পৃ:; আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ৯১ পৃ:; ক্বারী: মওজুয়াতুল কবীর, ৮৭ পৃ:;) </div><div><br></div><div>এই হাদিসটি ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (رضي الله عنه) الْقَلْبُ بَيْتُ الرَّبِّ </div><div>-“ক্বাল্ব আল্লাহর ঘর।” হাদিসটি উল্লেখ করে বলেছেন ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম যারকাশী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইবনে তাইমিয়া বলেছেন: ইহার কোন (সনদগত) ভিত্তি নেই। তবে ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, </div><div>والقلب بيت الإيمان ومعرفته ومحبته -“ক্বাল্ব হল ঈমান, আল্লাহর প্রতি মহব্বত ও তাঁর মারেফত হাছিলের ঘর।”</div><div>(ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ৭৭৬;)  </div><div><br></div><div>অনুরূপ বলেছেন ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় কিতাবে,</div><div>ليس له أصل في المرفوع، والقلب بيت الإيمان بالله ومعرفته ومحبته إلى غير ذلك </div><div>-“মারফূরূপে ইহার কোন ভিত্তি নেই। ক্বাল্ব হল আল্লাহর প্রতি ঈমানের ঘর, তাঁর মারেফত, তাঁর প্রতি মহব্বত অনুরূপ অন্যান্য কিছুর ঘরও ক্বাল্ব।”</div><div>(ইমাম আজলুনী, কাশফুল খাফা, হাদিস নং ১৮৮৫;)  </div><div><br></div><div>ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এই হাদিস সম্পর্কে বলেছেন,</div><div>أَقُولُ لَكِنَّ لَهُ مَعْنًى صَحِيحٌ -“আমি বলি এই হাদিসের অর্থ ছহীহ্।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কবীর, ৮৭ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ৯১ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী: মওজুয়াতুল কোবরা, ১৭০ পৃ:;)  </div><div><br></div><div>এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) আরো বলেছেন,</div><div>قلت رواه ابن ماجه عن أبي عنبسة بلفظ إن لله آنية من أهل الأرض، وآنية ربكم قلوب عباده الصالحين،</div><div>-“আমি (আজলুনী) বলি: ইমাম ইবনু মাজাহ এই শব্দে ইহা বর্ণনা করেছেন যে, জমীনবাসীর জন্য পাত্র রয়েছে, তোমার প্রভ‚র (মহব্বত ধারণের) পাত্র হল নেক বান্দাগণের ক্বাল্ব বা অন্তর। আমাকে (মহব্বতের দৃষ্টিতে) ধারণ করেছে আমার প্রিয় পূন্যবান বান্দাদের ক্বাল্ব বা অন্তর।”(মাম আজলুনী, কাশফুল খাফা, হাদিস নং ১৮৮৪;)  </div><div><br></div><div>হাদিসটি ইমাম তাবারানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এভাবে বর্ণনা করেছেন,</div><div>حَدَّثَنَا جَعْفَرُ الْفِرْيَابِيُّ، ثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ، ثَنَا بَقِيَّةُ بْنُ الْوَلِيدِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي عِنَبَةَ الْخَوْلَانِيِّ، يَرْفَعُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ لِلَّهِ آنِيَةً مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ وَآنِيَةُ رَبِّكُمْ قُلُوبُ عِبَادِهِ الصَّالِحِينَ </div><div>-“আবী ইনাবাহ খাওলানী (رضي الله عنه) প্রিয় নবীজির প্রতি মারফ‚ সূত্রে বর্ণনা করেনে, প্রিয় রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: জমীনবাসীর জন্য পাত্র রয়েছে, তোমার প্রভ‚র (মহব্বত ধারণের) পাত্র হল নেক বান্দাগণের ক্বাল্ব বা অন্তর। আমাকে (মহব্বতের দৃষ্টিতে) ধারণ করেছে আমার প্রিয় পূন্যবান বান্দাদের ক্বাল্ব বা অন্তর।”(ইমাম তাবারানী: মুসনাদে শামেঈন, হাদিস নং ৮৪০;)  </div><div><br></div><div>এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত ইমাম আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাফর খারাইতি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৩২৭ হিজরী তদীয় কিতাবে সনদসহ এভাবে বর্ণনা করেছেন,</div><div>حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ الْحَسَنِ قَالَ: حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ حَاتِمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا بَشِيرُ بْنُ مَنْصُورٍ قَالَ: حَدَّثَنَا ثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ قَالَ: وَإِنَّ آنِيَةَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فِي الْأَرْضِ قُلُوبُ عِبَادِهِ الصَّالِحِينَ</div><div>-“ছাওর ইবনে ইয়াজিদ বলেন: নিশ্চয় জমীনে আল্লাহ তা’আলার (মহব্বত ধারণের) পাত্র হল নেক বান্দাগণের ক্বাল্ব সমূহ।”(ইমাম খারাইতি: এ’তেলাউল কুলুব, হাদিস নং ৯;)  </div><div><br></div><div>এমনকি পবিত্র কোরআনে একটি আয়াতের সাথে এই হাদিসের অর্থটি মিল পাওয়া যায়। যেমন আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,</div><div>إِنَّا عَرَضْنَا الْأَمَانَة على السَّمَاوَات وَالأَرْضِ وَالْجِبَالِ فَأَبَيْنَ أَنْ يَحْمِلْنَهَا وأشفقن مِنْهَا وَحملهَا الْإِنْسَان</div><div>-“আমি আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এই আমানত পেশ করেছিলাম, অত:পর তারা ইহাকে বহন করতে অস্বীকার করল এবং এতে ভীত হল; কিন্তু মানুষ তা গ্রহণ করল।”(সূরা আহযাব: ৭২ নং আয়াত;) </div><div><br></div><div>অর্থাৎ মানুষের মধ্যে মু’মীনের ক্বাল্বে আল্লাহর আমানত, তাঁর প্রতি বিশ্বাস ও মহব্বত ধারণ করল। এই অর্থে ইহাকে হাদিস হিসেবে বয়ান করা যাবে। ইহার সমর্থনে আরেকটি হাদিস উল্লেখ করা যায়,</div><div>وعن ابن عباس رضى الله عنهما (ص) جبل بمكة كان عليه عرش الرحمن حين لا ليل ولا نهار أشار بالجبل الى جسد محمد صلى الله عليه وسلم. وبعرش الرحمن الى قلبه    </div><div>-“হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, (সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া ছাল্লাম) হল মক্কার পাঁহাড় যাতে রয়েছে রহমানের আরশ, যেখানে কোন রাত-দিন নেই। পাঁহাড় দ্বারা নবীজি নিজের দেহকে ঈশারা করেছেন। আর ‘আরশে রহমান’ দ্বারা ঈশারা করেছেন তাঁর ক্বাল্বের প্রতি।” (তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৩য় খন্ড, ১৬১ পৃ:; ইহার সনদ সম্পর্কেও আমি অবগত নই।) </div><div>এই হাদিস দ্বারাও প্রমাণিত হয়, মানব দেহে আল্লাহ পাকের আরশ রয়েছে, আর তা হল ক্বাল্ব। সুতরাং যে হাদিসের মায়ানা ছহীহ্ সে হাদিসকে হাদিস বলে বর্ণনা মোটেই দূষের কিছু নয়। আর এ ব্যাপারে চার মাজহাবের ইমামগণ ও ফকিহ্গণ সকলেই একমত।</div><div>--------------------------------</div>

মু’মীনের ক্বাল্ব আল্লাহর ঘর

মু’মীনের ক্বাল্ব আল্লাহর ঘরالْقَلْبُ بَيْتُ الرَّبِّ -“মু’মিনের ক্বাল্ব আল্লাহর ঘর।”(আল্লামা ঈমাম ঈসমাইল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৩য় খন্ড, ১৬১ পৃ:; তাফছিরে বাহরুল মাদিদ, ৭ম খন্ড, ২৮০ পৃ:; গাউছে পাক: সেররুল আছরার; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১ম খন্ড, ৬০ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী:…

Read more »

প্রিয় নবীজি আল্লাহর নূর থেকে, সকল কিছু নবীর নূর থেকে

<div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">প্রিয় নবীজি আল্লাহর নূর থেকে, সকল কিছু নবীর নূর থেকে</div><div style="text-align: justify;">قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا مِنْ نُورِ اللَّهِ وَالمُؤْمِنُونَ مِنْ نوري</div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমি আল্লাহর নূর থেকে আর মু’মীনগণ আমার নূর থেকে।” </div><div style="text-align: justify;">(আল্লামা ঈসমাইল হাক্বী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ২য় খন্ড, ৩৭১, ৪২৯ পৃ:; ৪র্থ খন্ড, ২৪১ পৃ:; মতায়েলুল মুর্সারাত র্শহে দালায়েলুল খায়রাত; গাউছে পাক: ছেররুল আছরার, ৪৯ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মুওজুয়াতুল কবীর, ৪০ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী: মাওজুয়াতুল কোবরা, ৭২ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১ম খন্ড, ১৮৫ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৯৮ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">হাদিসটি উল্লেখ করে হাফিজুল হাদিস, ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَقَالَ السَّخَاوِيُّ هُوَ عِنْدَ الدَّيْلَمِيِّ بِلَا إِسْنَادٍ عَنْ عَبْدِ بْنِ جَرَادٍ مَرْفُوعًا أَنَا مِنَ اللَّهِ وَالْمُؤْمِنُونَ مِنِّي </div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: এই হাদিস ইমাম দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তদীয় কিতাবে সনদবিহীন এভাবে উল্লেখ করেছেন: ‘আমি আল্লাহ (নূর) হতে আর সকল কিছু আমার (নূর) হতে।”</div><div style="text-align: justify;">(ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১ম খন্ড, ১৮৬ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কোবরা, ৭২ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৯৮ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস, ইমাম শামছুদ্দিন ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম মুহাম্মদ ইবনু আব্দিল্লাহ যারকাশি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও হাফিজ ইবনু তাইমিয়া وَالْمُؤْمِنُونَ مِنِّي কথাটি প্রমাণ করার জন্য কয়েকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করে বলেছেন। যেমন ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) লিখেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قال شيخنا إنه كذب مختلق وقال بعض الحفاظ لا يعرف هذا اللفظ مرفوعا لكن ثبت في الكتاب والسنة أن المؤمنين بعضهم من بعض وفي السنة قوله لحي الأشعريين هم مني وأنا منهم وقوله لعلي أنت مني وأنا منك وللحسين هذا مني وأنا منه وكله صحيح </div><div style="text-align: justify;">-“আমাদের শায়েখ বলেছেন: নিশ্চয় ইহা মিথ্যা ও কল্পিত। কোন কোন হাফিজ বলেছেন, ইহা মারফুভাবে এই শব্দ গুলোকে চিনিনা, তবে ইহা কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ দ্বারা ইহা প্রমাণিত। নিশ্চয় মু’মীনগণ একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত। সুন্নাহ’র মধ্যে রয়েছে, আশআরী সম্পর্কীয় সেই বাণী, তোমরা আমার থেকে আমি তোমাদের থেকে। হযরত আলী (رضي الله عنه) সম্পর্কীয় বাণী, তুমি আমার থেকে, আমি তোমার থেকে। হুসাইন (رضي الله عنه) সম্পর্কীয় বাণী, সে আমার থেকে আমি তাঁর থেকে। প্রত্যেকটিই ছহীহ্।”</div><div style="text-align: justify;">(ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ১৯০ এর ব্যাখ্যায়; ইমাম যারকাশী: আল লাআলীল মানছুরাহ ফি আহাদিছিল মাশহুরাহ, ১ম খন্ড, ১৮৯ পৃ:; ইবনে তাইমিয়া: আহাদিছুল কাছাছ, ১ম খন্ড, ৭০ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"> </div><div style="text-align: justify;">ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) অন্যান্য হাদিস থেকে দায়লামীর হাদিসটির মাআনা ছহীহ্ প্রমাণ করেছেন। এছাড়াও ইমাম দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) প্রতি আস্থা রেখে হাদিসটি গ্রহণ করা যায়, কেননা বুখারী শরীফেও এরূপ অনেক সনদবিহীন “তা’লিক হাদিস” রয়েছে যে গুলোকে মুছান্নিফের উপর নির্ভর করে গ্রহণ করা হয়। ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎)সহ অন্যান্য ইমামগণ ইমাম দায়লামীর উপর নির্ভর করেই অন্যান্য হাদিসের সাথে সাদৃশ্য বিধায় হাদিসটির মাআনা গ্রহণ করেছেন ও বয়ান করেছেন।</div><div style="text-align: justify;">--------------------------------</div>

প্রিয় নবীজি আল্লাহর নূর থেকে, সকল কিছু নবীর নূর থেকে

প্রিয় নবীজি আল্লাহর নূর থেকে, সকল কিছু নবীর নূর থেকেقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَا مِنْ نُورِ اللَّهِ وَالمُؤْمِنُونَ مِنْ نوري-“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমি আল্লাহর নূর থেকে আর মু’মীনগণ আমার নূর থেকে।” (আল্লামা ঈসমাইল হাক্বী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ২য় খন্ড, ৩৭১, ৪২৯ …

Read more »

আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া

<div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া</div><div style="text-align: justify;">قَالَ عَلَيْهِ السَّلَامُ: تَخَلَّقُوا بِأَخْلَاقِ اللَّهِ</div><div style="text-align: justify;">-“রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”</div><div><div style="text-align: justify;">(আল্লামা ইমাম ইসমাঈল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৫ম খন্ড, ৪৪৮ পৃ: ও ৫৪৪ পৃ:; আল্লামা মাহমুদ আলুছী বাগদাদী: তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ৩০ তম খন্ড, ৫০২ পৃ:; ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী: তাফছিরে কবির শরিফ, ৭ম খন্ড, ৬৬ পৃ:; ৯ম খন্ড, ৫৫ পৃ:; ২৪ তম খন্ড, ১৭৩ পৃ:; ১১তম খন্ড, ৫১ পৃ:; আল লুভাব ফি উলুমিল কিতাব, যার সাথে যার সাদৃশ্য তার তাথেই সে মিলিত হবে</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ ثَابِتٍ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي مُنِيبٍ الْجُرَشِيِّ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ</div><div style="text-align: justify;">-“হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যে জাতির সাথে সাদৃশ্য থাকবে সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত হবে।”  ৩০৩০,  সুনানে আবী দাউদ, হাদিস নং ৪০৩১; মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হাদিস নং ৩৩০১৬; ইমাম তাবারানী: মুজামুল আওছাত, হাদিস নং ৮৩২৭ হুজাইফা রা: এর সূত্রে; মুসনাদে বাজ্জার, হাদিস নং ২৯৬৬; ইমাম তাবারানী: মুসনাদে শামেঈন, হাদিস নং ১৮৬২; হাফিজ ইবনে কাছির: জামেউল মাসানিদ ওয়াস সুনান, হাদিস নং ২৩১৫;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস সম্পর্কে হাফিজুল হাদিস, ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইবনে তাইমিয়া এর অভিমত, </div><div style="text-align: justify;">قال ابن تيمية: سنده جيد وقال ابن حجر في الفتح: سنده حسن. </div><div style="text-align: justify;">-“ইবনে তাইমিয়া বলেন: এর সনদ অতিউত্তম। হাফিজ ইবনু হাজার ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থে বলেন: এর সনদ হাছান।”  ৩১৩১,  আল্লামা ছানআনী: আত তানভীর ফি শরহে জামেইছ ছাগীর, হাদিস নং ৮৫৭৪; আল্লামা মানাভী: ফায়জুল কাদীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১০৪ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস, ইমাম ইবনু হাজার আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন: </div><div style="text-align: justify;">قُلْتُ أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُدَ بِسَنَدٍ حَسَنٍ -“আমি বলি ইমাম আবু দাউদ হাছান সনদে বর্ণনা করেছেন।”  ৩২৩২,  ইমাম আসকালানী: ফাতহুল বারী শরহে বুখারী, ১০ম খন্ড, ২৭১ পৃ:;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস সম্পর্কে হাফিজুল হাদিস, ইমাম ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,</div><div style="text-align: justify;">قال العراقي: رواه أبو داود من حديث ابن عمر بسند صحيح </div><div style="text-align: justify;">-“হাফিজ ইরাকী বলেন: ইমাম আবু দাউদ ইহা বর্ণনা করেছেন এবং ইবনে উমর (رضي الله عنه) এর হাদিস ছহীহ্।”৩৩৩৩,  তাখরিজু আহাদিসু এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, হাদিস নং ৭৫৭;</div><div style="text-align: justify;">  </div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম বুয়ূছিরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,</div><div style="text-align: justify;">وَسَكَتَ عَلَيْهِ فَهُوَ عِنْدَهُ حَدِيثٌ صَالِحٌ لِلْعَمَلِ به والاحتجاج بِهِ. </div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম আবু দাউদ এই হাদিসের ব্যাপারে চুপ থেকেছেন কেননা তার কাছে ইহা গ্রহণযোগ্য এবং আমলের বিষয়ে নির্ভরযোগ্য।”  ৩৪৩৪,  ইত্তেহাফুল খাইরাতুল মিহরাত, হাদিস নং ৩৯৮১;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">وَصَححهُ ابْن حبَان. -“ইমাম ইবনে হিব্বান ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এই হাদিসকে ছহীহ্ বলেছেন।”  ৩৫৩৫,  আসানিল মাতালিক ফি আহাদিছি মুখতালিফিল মারাতিব, হাদিস নং ১৩৭৭;</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">---------------------------- খন্ড, ৩৯ পৃ:; তাফছিরে নিছাপুরী, ১ম খন্ড, ৪০৪ পৃ:; তাফছিরে মারাগী, ১৮তম খন্ড, ৮৬ পৃ:; গাউছে পাক: ছেররুল আছরার, ১২৩ পৃ:;) </div></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ইহা মূলত কোন সনদ দ্বারা প্রমাণিত নয় বরং পূর্বসূরী আইম্মায়ে কেরাম ইহাকে হাদিসে রাসূল হিসেবে স্ব স্ব কিতাবে উল্লেখ করেছেন। অনেকে ইহার মাআনাকে ছহীহ্ বলেছেন। তবে হাফিজ ইবনু তাইমিয়া ইহার অর্থকে ব্যাখ্যা সাপেক্ষে ছহীহ্ বলেছেন। যেমন লক্ষ্য করুন,</div><div style="text-align: justify;">تخلقوا بأخلاق الله وهذا اللفظ لا يعرف عن النبي صلى الله عليه وسلم في شيء من كتب الحديث ولا هو معروف عن أحد من أهل العلم بل هو من باب الموضوعات عندهم وإن كان قد يفسر بمعنى صحيح يوافق الكتاب والسنة</div><div style="text-align: justify;">-“তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও’ এই শব্দে আমি ইহাকে রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) থেকে হাদিসের গ্রন্থ সমূহে কিছুই জানিনা এবং আহলে ইলিমদের কাছ থেকেও ইহা প্রসিদ্ধ নয়। বরং ইমামদের কাছে ইহা মওজু একটি বিষয়। যদি ইহা ব্যাখ্যা করা হয় তাহলে ইহার অর্থ ছহীহ্ হবে এবং কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ’র অনুগামী হবে।” (ইবনে তাইমিয়া: বয়ানু তালবিছিল জাহমিয়্যা, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৫১৮ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">হাফিজ ইবনে তাইমিয়া তার কিতাবেও বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وقال صلى الله عليه وسلم تخلقوا بأخلاق الله </div><div style="text-align: justify;">-“রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(হাফিজ ইবনে তাইমিয়া: বায়ানু তালবিছুল জাহমিয়া, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৩৬৪ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;">তিনি আরেক জায়গায় বলেন, <br /></div><div style="text-align: justify;">وقد استدل أبو حامد بحديث ذكره مرفوعا إلى النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: تخلَّقوا بأخلاق الله </div><div style="text-align: justify;">-“আবু হামিদ এই হাদিস দ্বারা দলিল পেশ করেন, তিনি নবী করিম ( ﷺ‎‎) এর প্রতি মারফূ রেওয়াতের কথা উল্লেখ করেন যে, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(হাফিজ ইবনে তাইমিয়া: জামেউল মাসাঈল, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১২৪ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,</div><div style="text-align: justify;">قوله عليه الصلاة والسلام تخلقوا بأخلاق الله تعالى -“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) এর বাণী হল, তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: শরহে শিফা, ২য় খন্ড, ৫৩ পৃ:;) . </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">শারিহে বুখারী ইমাম শিহাবুদ্দিন কাস্তালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এভাবে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন, قال عليه السلام: تخلقوا بأخلاق الله -“রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(ইমাম কাস্তালানী: এরশাদুছ ছারী শরহে বুখারী, ৫ম খন্ড, ৩৪১ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা আবু আব্দুল্লাহ বদরুদ্দিন জারকাশী শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৭৯৪ হিজরী উল্লেখ করেন, فقد روي: تخلقوا بأخلاق الله </div><div style="text-align: justify;">-“অবশ্যই বর্ণিত আছে যে, তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।” (তাশনিফুল মাসামে’ বি’জামেইল জাওয়ামে, ৪র্থ খন্ড, ৯২৭ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা ইবনুল হাজ্জ মালেকী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এভাবে উল্লেখ করেন,</div><div style="text-align: justify;">قَوْلِهِ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ تَخَلَّقُوا بِأَخْلَاقِ اللَّهِ -“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) এর বাণী হচ্ছে, তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(আল্লামা ইবনুল হাজ্জ: মাদখাল, ১ম খন্ড, ২০০ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা আব্দুর রহমান ইবনে মুহাম্মদ আউদ জাযিরী উল্লেখ করেন,</div><div style="text-align: justify;">لأن النبي صلى الله عليه وسلم قال: تخلقوا بأخلاق الله -“কেননা আল্লাহর নবী ( ﷺ‎‎) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।” (ফিকহু আলা মাজাহিবিল আরবা, ১ম খন্ড, ১৫৯ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা মাহমুদ ইবনে ইসমাঈল খায়রাবাতী (ওফাত ৮৪৩ হি.) বলেন,</div><div style="text-align: justify;">كَمَا قَالَ عَلَيْهِ السَّلَام: تخلقوا بأخلاق الله -</div><div style="text-align: justify;">“যেমনটি আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(র্দুরাতু গারাঈ ফি নাছিহাতি ছালাতিন, ১ম খন্ড, ১৫২ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস ইমাম ইবনে হাজার মক্কী হায়তামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এভাবে উল্লেখ করেন,</div><div style="text-align: justify;">هَذَا الحَدِيث الصَّحِيح عَن عَائِشَة رَضِي الله تَعَالَى عَنْهَا كَانَ صلى الله عليه وسلم خلقه الْقُرْآن وَحَدِيث تخلقوا بأخلاق الله تَعَالَى</div><div style="text-align: justify;">-“এই হাদিস ছহীহ্ যে, হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) এর চরিত্র হল কোরআন। আর হাদিস হচ্ছে, তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(হাফিজ ইবনে হাজা হায়তামী: ফাতওয়ায়ে হাদিছিয়া, ১ম খন্ড, ২০৮ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;">-------------------------------</div>

আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া

আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হওয়াقَالَ عَلَيْهِ السَّلَامُ: تَخَلَّقُوا بِأَخْلَاقِ اللَّهِ-“রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: তোমরা আল্লাহর চরিত্রে চরিত্রবান হও।”(আল্লামা ইমাম ইসমাঈল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৫ম খন্ড, ৪৪৮ পৃ: ও ৫৪৪ পৃ:; আল্লামা মাহমুদ আলুছী বাগদাদী: তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ৩০ তম খন্ড, ৫০২ পৃ:…

Read more »

আল্লাহ গুপ্ত ভান্ডার ছিল

<div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">আল্লাহ গুপ্ত ভান্ডার ছিল (হাদিসে কুদছী)</div><div style="text-align: justify;">كَمَا رَوَى فِي الْحَدِيثِ الْقُدْسِيِّ: كُنْتُ كَنْزًا مَخْفِيًّا، فَأَحْبَبْتُ أَنْ أُعْرَفَ، فَخَلَقْتُ الْخَلْقَ لِأُعْرَفَ</div><div style="text-align: justify;">-“যেমনটি হাদিসে কুদসীতে আছে:- ‘আল্লাহ তা’আলা বলেন: আমি গুপ্ত ধণভান্ডার ছিলাম অত:পর আমার ভিতর পরিচিত হইবার প্রেম জাগল অত:পর সৃষ্টিকে সৃষ্টি করার মাধ্যমে পরিচিত হইলাম।” (মেরকাত)(ক্বাজী ইবনে মুহাম্মদ ইবনে মোস্তফা হানাফী: তাফছিরে আবু ছাউদ, ২য় খন্ড, ২০৫ পৃ:; ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী: তাফছিরে কবীর, ২৮তম খন্ড, ২১৫ পৃ:; তাফছিরে নিছাপুরী, ১ম খন্ড, ২৬৯ পৃ: ও ২য় খন্ড, ১৪৬ পৃ:; তাফছিরে মাজহারী, ১০ খন্ড, ৩০৩ পৃ:; তাফছিরে মারাগী, ২০তম খন্ড, ১৪৫ পৃ:; আল্লামা মাহমুদ আলুছী বাগদাদী আল হানাফী: তাফছিরে রুহুল মাআনী, ২৭তম খন্ড, ৩০ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১ম খন্ড, ১৯৮ পৃ: এবং ৫৮৩৫ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; গাউছে পাক: ছেররুল আছরার, ৫৪ পৃ:; আল্লামা ইমাম ইসমাঈল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ১২৯ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী: মউজুয়াতুল কবীর, ৯৩ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;">ইহা মূলত সরাসরি সনদ দ্বারা প্রমাণিত নয় তবে হিজরী ১১শ শতাব্দির মুজাদ্দেদ, আল্লামা ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এবং আল্লামা মুহাম্মদ ইবনে খলিল ইবনে ইব্রাহিম আবুল মুহাছিন কাওয়াকিজী হানাফী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটি উল্লেখ করে বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;"> لَكِنَّ مَعْنَاهُ صَحِيحٌ-“কিন্তু এর মাআনা বা অর্থ ছহীহ্।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কবীর, ৯৩ পৃ:; আল লু’উ লু’উ মারছু, হাদিস নং ৪১৬;)  </div><div style="text-align: justify;">পাশাপাশি “কাশফুল খফা, ২য় খন্ড” কিতাবেও আল্লামা ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটি উল্লেখ করে লিখেছেন, </div><div style="text-align: justify;"> لَكِنَّ مَعْنَاهُ صَحِيحٌ-“ইহার মাআনা ছহীহ্।” এরপর ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,</div><div style="text-align: justify;">قَوْلِهِ تَعَالَى {وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْس إِلَّا ليعبدون} أَيْ لِيَعْرِفُونِ كَمَا فَسَّرَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا </div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহ তা’আলার বানী: ‘আমি জিন ও মানুষ জাতিকে আমার ইবাদতের তথা আমার পরিচয় লাভের জন্য সৃষ্টি করেছি’ অর্থাৎ আমার পরিচয় লাভের জন্য যেমন তাফছিরে করেছেন হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১২২ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কবীর, ৯৩ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, হাদিস নং ২০১৬; আল লু’উ লু’উ মারছু, হাদিস নং ৪১৬;)  </div><div style="text-align: justify;">সুতরাং এই হাদিসের ‘মাআনা’ বা অর্থ হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এর তাফছিরের সাথে মিল রয়েছে। ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর বর্ণনা মোতাবেক ইহার মাআনা ছহীহ্। তথাপিও বিশ্বনন্দিত ইমাম ও মোফাচ্ছেরগণ যারা আহ্লে ক্বাশ্ফের আলিম ছিলেন তাঁদের কিতাবে ইহাকে হাদিস বলে উল্লেখ করেছেন। আর ওলীগণের কাশ্ফ পবিত্র কোরআন দ্বারা ঈশারাতান প্রমাণিত। এজন্যই এই হাদিসের ব্যাপারে ‘তাফছিরে রুহুল মাআনীতে’ আল্লামা মাহমুদ আলুছী বাগদাদী হানাফী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) উল্লেখ করেন,</div><div style="text-align: justify;">إنه ثابت كشفا، وقد نص على ذلك الشيخ الأكبر قدس سره في الباب المذكور،</div><div style="text-align: justify;">-“নিশ্চয় ইহা ক্বাশফের দ্বারা প্রমাণিত। সর্বজন স্বীকৃত, শায়খুল আক্বার ইমাম মহিউদ্দিন ইবনুল আরাবী (কু: ছে:) এ ব্যাপারে نص ‘নছ’ তৈরী করেছেন।”(আল্লামা মাহমুদ আলুছী: তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ২৭ তম খন্ড, ৩০ পৃ:; আল মাসনু, ১৪২ পৃ: হাশিয়া;)  </div><div style="text-align: justify;">যখন ‘ক্বাশফের দ্বারা’ ইহা প্রমাণিত হয়ে গেছে এবং ইমামগণ ইহা গ্রহণ করেছেন তখন এর উপর ‘হাদিস নয়’ এরকম কটুক্তি করা যুগের ইমামগণের কটুক্তির নামান্তর, আর হাদিস শরিফে রয়েছে: </div><div style="text-align: justify;">فَمَنْ أَهَانَ الْعَالِمَ فقد أَهَانَ اللَّهَ أَهَانَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ -“যারা আলিমগণকে তিরস্কার করে তারা যেন আল্লাহ তা’আলাকে তিরস্কার করল, আল্লাহ তাদেরকে কিয়ামতের দিন তিরস্কৃত করবেন।”(তাফছিরে কবির, ২য় খন্ড, ১৮৯ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;">--------------------------------</div>

আল্লাহ গুপ্ত ভান্ডার ছিল

আল্লাহ গুপ্ত ভান্ডার ছিল (হাদিসে কুদছী)كَمَا رَوَى فِي الْحَدِيثِ الْقُدْسِيِّ: كُنْتُ كَنْزًا مَخْفِيًّا، فَأَحْبَبْتُ أَنْ أُعْرَفَ، فَخَلَقْتُ الْخَلْقَ لِأُعْرَفَ-“যেমনটি হাদিসে কুদসীতে আছে:- ‘আল্লাহ তা’আলা বলেন: আমি গুপ্ত ধণভান্ডার ছিলাম অত:পর আমার ভিতর পরিচিত হইবার প্রেম জাগল অত:পর সৃষ্টিকে সৃ…

Read more »

মু’মীনের ক্বাল্বে আল্লাহর গুঞ্জায়েশ হয়

<div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">মু’মীনের ক্বাল্বে আল্লাহর গুঞ্জায়েশ হয়</div><div style="text-align: justify;">مَا وَسِعَنِي أَرْضِي وَلَا سَمَائِي وَلَكِنْ وَسِعَنِي قَلْبُ عَبْدِي الْمُؤْمِنِ</div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহ তা’আলা বলেন: আসমান ও জমীনে আমার সংকুলান হয়না মু’মিন বান্দারদের ব্যতীত।”</div><div style="text-align: justify;">(আল্লামা ঈসমাঈল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ৪৪৬ পৃ:; ২য় খন্ড, ৩১৬ পৃ:; ৪র্থ খন্ড, ৫২০ পৃ:; হুজুর গাউছে: ছেররুল আছরার, ১১৪ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ৯১ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কোবরা, ২০৬ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৩৭৩ পৃ:; আল মাসনূ, হাদিস নং ২৯৩;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস সস্পর্কে ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), হাফিজ ইরাকী ও হাফিজ ইবনে তাইমিয়া, বলেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَلَيْسَ لَهُ إِسْنَادٌ مَعْرُوفٌ عَنِ النَّبِيِّ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ -“এর কোন মারুফ বা পরিচিত সনদ রাসূল ( ﷺ‎‎) থেকে নেই। অত:পর তাঁরা আরো বলেছেন: قَالَ وَمَعْنَاهُ وَسِعَ قَلْبُهُ الْإِيمَانَ بِي وَبِمَحَبَّتِي </div><div style="text-align: justify;">-“এই হাদিসের অর্থ হল: মুমীনের ক্বাল্ব হল আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান ও আমার প্রতি মুহাব্বতের এবং আমার মারেফাতের স্থান।”</div><div style="text-align: justify;">(ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানা, ৩৭৩ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ১৭৫ পৃ:; ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মওজুয়াতুল কোবরা, ২০৬ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তাই এই হাদিসের মাআনা ব্যাখ্যা সাপেক্ষ্য গ্রহণযোগ্য, উড়িয়ে দেওয়ার কোন রাস্তা নেই যেহেতু ইবনে তাইমিয়া এর মত লোক ও সর্বজনমান্য ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ব্যাখ্যা সাপেক্ষ্যে এর মাআনা বা অর্থ গ্রহণ করেছেন। এই হাদিসসের মাআনাকে ‘হাদিস’ বলে সম্বোধন করেছেন হিজরী ১১শ শতাব্দির মুজাদ্দেদ, ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী (رضي الله عنه), অন্য একটি হাদিসের আলোচনা করতে গিয়ে ইহাকে হাদিস বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমন তিনি বলেন:</div><div style="text-align: justify;">أَقُولُ لَكِنَّ لَهُ مَعْنًى صَحِيحٌ كَمَا سَيَأْتِي فِي الحَدِيث مَا وسعتي أَرْضِي</div><div style="text-align: justify;">-“আমি বলছি এই হাদিসের মাআনা বা অর্থ ছহীহ্ যেমনিভাবে হাদিসে এসেছে “মা ওয়াছয়ানী আরদ্বী.....”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মাওজুয়াতুল কবীর, ৮৭ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইহাকে আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ‘হাদিস’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং ইমাম ছাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম আজলুনী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর মাআনাকে তথা অর্থকে ব্যাখ্যা সাপেক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তাই ইহাকে ‘হাদিস বলে’ ব্যাখ্যা সাপেক্ষ্য গ্রহণ করা যেতেই পারে। যেমন এর সমর্থনে একটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়,</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ، حَدَّثَنِي أبِي، أَخْبَرَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ عُبَيْدٍ، أَنَّهُ سَمِعَ وَهْبَ بْنَ مُنَبِّهٍ يَقُولُ: إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ فَتَحَ السَّماَوَاتِ لِحِزْقِيلَ حَتَّى نَظَرَ إِلَى الْعَرْشِ أَوْ كَمَا قَالَ فَقَالَ حِزْقِيلُ: سُبْحَانَكَ، مَا أَعْظَمَكَ، يَا رَبِّ، فَقَالَ اللَّهُ: إِنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَمْ تُطِقْ أَنْ تَحْمِلَنِي، وَضِقْنَ مِنْ أَنْ تَسَعَنِي، وَسِعَنِي قَلْبُ الْمُؤْمِنِ الْوَارِعِ اللَّيِّنِ</div><div style="text-align: justify;">-“ওহাব ইবনে মুনাব্বাহ (رضي الله عنه) বলেছেন: নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা হিযকীল ফেরেস্থার জন্য আসমান সমূহের দরজা খুলে দিলেন। তিনি আরশ পর্যন্ত দেখতে পেলেন এবং বললেন আল্লাহ তুমি পাক ও পবিত্র, তোমার শান কত মহান। অত:পর আল্লাহ তা’আলা বললেন: নিশ্চয় আসমান সমূহ ও আরশ দুর্বলতা প্রকাশ করেছে আমাকে স্থান দিতে কিন্তু মু’মীনের দিল বা অন্তর নম্রতা প্রকাশ করে আমাকে গ্রহণ করেছে।”</div><div style="text-align: justify;">(ইমাম আহমদ : আয যুহুদ, হাদিস নং ৪২৩; ইমাম ছিয়তী : আদ দুরারুল মুনতাশিরা ফি আহাদিছিল মুশতাহিরা, ৩৬৩ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; ইমাম ছাখাবী : মাকাছিদুল হাছানাহ, ৯৯০ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসের সনদে কোন বিতর্কীত রাবী নেই। সুতরাং বিষয়টি রেওয়াতের দ্বারা সমর্থিত হল। এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়। ইমাম তাবারানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনা করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا جَعْفَرُ الْفِرْيَابِيُّ، ثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ، ثَنَا بَقِيَّةُ بْنُ الْوَلِيدِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي عِنَبَةَ الْخَوْلَانِيِّ، يَرْفَعُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِنَّ لِلَّهِ آنِيَةً مِنْ أَهْلِ الْأَرْضِ وَآنِيَةُ رَبِّكُمْ قُلُوبُ عِبَادِهِ الصَّالِحِينَ </div><div style="text-align: justify;">-“আবী ইনাবাহ খাওলানী (رضي الله عنه) প্রিয় নবীজির প্রতি মারফ‚ সূত্রে বর্ণনা করেনে, প্রিয় রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: জমীনবাসীর জন্য পাত্র রয়েছে, তোমার প্রভ‚র (মহব্বত ধারণের) পাত্র হল নেক বান্দাগণের ক্বাল্ব বা অন্তর। আমাকে (মহব্বতের দৃষ্টিতে) ধারণ করেছে আমার প্রিয় পূন্যবান বান্দাদের ক্বাল্ব বা অন্তর।”(ইমাম তাবারানী: মুসনাদে শামেঈন, হাদিস নং ৮৪০;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত ইমাম আবু বকর মুহাম্মদ ইবনে জাফর খারাইতি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৩২৭ হিজরী তদীয় কিতাবে সনদসহ এভাবে বর্ণনা করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ الْحَسَنِ قَالَ: حَدَّثَنَا سَيَّارُ بْنُ حَاتِمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا بَشِيرُ بْنُ مَنْصُورٍ قَالَ: حَدَّثَنَا ثَوْرُ بْنُ يَزِيدَ قَالَ: وَإِنَّ آنِيَةَ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فِي الْأَرْضِ قُلُوبُ عِبَادِهِ الصَّالِحِينَ</div><div style="text-align: justify;">-“ছাওর ইবনে ইয়াজিদ বলেন: নিশ্চয় জমীনে আল্লাহ তা’আলার (মহব্বত ধারণের) পাত্র হল নেক বান্দাগণের ক্বাল্ব সমূহ।”(ইমাম খারাইতি: এ’তেলাউল কুলুব, হাদিস নং ৯;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এমনকি পবিত্র কোরআনে একটি আয়াতের সাথে এই হাদিসের অর্থটি মিল পাওয়া যায়। যেমন আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,</div><div style="text-align: justify;">إِنَّا عَرَضْنَا الْأَمَانَة على السَّمَاوَات وَالأَرْضِ وَالْجِبَالِ فَأَبَيْنَ أَنْ يَحْمِلْنَهَا وأشفقن مِنْهَا وَحملهَا الْإِنْسَان</div><div style="text-align: justify;">-“আমি আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতমালার সামনে এই আমানত পেশ করেছিলাম, অত:পর তারা ইহাকে বহন করতে অস্বীকার করল এবং এতে ভীত হল; কিন্তু মানুষ তা গ্রহণ করল।”(সূরা আহযাব: ৭২ নং আয়াত;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">অর্থাৎ মানুষের মধ্যে মু’মীনের ক্বাল্বে আল্লাহর আমানত, তাঁর প্রতি বিশ্বাস ও মহব্বত ধারণ করল। সুতরাং মু’মীন বান্দার ক্বাল্ব ইহা আল্লাহর মহব্বত হাছিলের জন্য অথবা আল্লাহর মারেফত লাভের উপযুক্ত পাত্র বা স্থান।</div><div style="text-align: justify;">------------------------------</div>

মু’মীনের ক্বাল্বে আল্লাহর গুঞ্জায়েশ হয়

মু’মীনের ক্বাল্বে আল্লাহর গুঞ্জায়েশ হয়مَا وَسِعَنِي أَرْضِي وَلَا سَمَائِي وَلَكِنْ وَسِعَنِي قَلْبُ عَبْدِي الْمُؤْمِنِ-“আল্লাহ তা’আলা বলেন: আসমান ও জমীনে আমার সংকুলান হয়না মু’মিন বান্দারদের ব্যতীত।”(আল্লামা ঈসমাঈল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ৪৪৬ পৃ:; ২য় খন্ড, ৩১৬ পৃ:; ৪র্থ খন্ড, ৫২০ পৃ:; …

Read more »

হুজুরী ক্বাল্ব ছাড়া নামাজ হবেনা’ প্রসঙ্গে

<div style="text-align: justify;">‘</div><div style="text-align: justify;">‘হুজুরী ক্বাল্ব ছাড়া নামাজ হবেনা’ প্রসঙ্গে</div><div style="text-align: justify;">قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا صَلَاةَ إِلَّا بحضور القلب</div><div style="text-align: justify;">-“রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: হুজুরী দেল ব্যতীত নামাজ হবে না।”(আল্লামা ইমাম ইউছূফ ইবনে মূছা ইবনে মুহাম্মদ জামালুদ্দিন হানাফী (রঃ) ওফাত ৮০৩ হিজরী: আল মু’তাছার মিনাল মুখতাছার মিন মুশকিলিল আছার, المعتصر من المختصر من مشكل الآثار হযরত আম্মার ইবনে ইয়াছার রাঃ থেকে, ১ম খন্ড, ৪২ পৃষ্ঠা; গাউছে পাক: ছেররুল আছরার, ১১৯ পৃ:; মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী: জায়াল হক্ব, তৃতীয়াংশে; হাজী এমদাদুল্লাহ মোহাজেরে মক্কী: যিয়াউল কুলুব, ৮৬ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইহা মূলত সনদবিহীন হাদিস। যাকে ‘রেওয়ায়েত বিল মাআনা’ বলা হয়। অন্য একাধিক মারফূ, মাওকুফ, মুরছাল রেওয়ায়েত ও আছার দ্বারা বিষয়টি প্রমাণিত আছে। যেমন এই হাদিসের সমর্থনে আরো গ্রহণযোগ্য হাদিস রয়েছে। যেমন,</div><div style="text-align: justify;">عن أبى سعيد قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا صَلَاة لمن لَا يتخشع فِي صلَاته</div><div style="text-align: justify;">-“হযরত আবু ছাইদ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: যে ব্যক্তির নামাজে খুশু তথা হুজুরী ক্বাল্ব নেই তার নামাজ হবেনা।”(ইমাম ছিয়তী: জামেউল আহাদিছ, ৮ম খন্ড, ২৯১ পৃ: হাদিস নং ১৭১৫৩; দায়লামী শরীফ, হাদিস নং ৭৯৩৫; ইমাম হিন্দী: কান্জুল ঊম্মাল, ৭ম খন্ড, ২১৩ পৃ: হাদিস নং ২০০৮৮;) </div><div style="text-align: justify;"> </div><div style="text-align: justify;">দায়লামীর এই হাদিসটি সম্পর্কে নাছিরুদ্দিন আলবানী বলেন,</div><div style="text-align: justify;">أخرجه الديلمي في"مسنده" من طريق النضر بن سلمة: حدثنا ابن أبي أويس عن طلحة بن محمد بن سعيد بن المسيب عن أبيه عن جده مرفوعاً.</div><div style="text-align: justify;">-“ইমাম দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর মুসনাদ গ্রন্থে ‘নদ্বর ইবনে সালামা’ এর সূত্রে হাদিস বর্ণনা করেছেন। সূত্রটি হল: হাদিস বর্ণনা করেছেন ইবনু আবী আইয়ুছ, তিনি ত্বলহা ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সা’দ ইবনে মুছাইব হতে, তিনি তার পিতা হতে, তিনি তার দাদা হতে মরফূ সূত্র বর্ণনা করেছেন।”  (আলবানী: সিলসিলায়ে জয়ীফা, হাদিস নং ৬৯৪২;)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সার্বিক বিচারে হাদিসটি দ্বায়িফ হবে যা ফজিলত বর্ণনার ক্ষেত্রে যথেষ্ঠ। সর্বোপরি আলবানীর বক্তব্য দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হয় ইহার সনদ বিদ্যমান। অতএব, নামাজে খুশু তথা হুজুরী ক্বাল্ব না থাকলে নামাজ কবুল হবেনা, এই কথাকেই বলা হয় </div><div style="text-align: justify;"> لا صلاة إلا بحضور القلب-“হুজুরী ক্বাল্ব ব্যতীত নামাজ হবেনা।” এ সম্পর্কে অপর হাদিসে উল্লেখ আছে,</div><div style="text-align: justify;">عَن أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يُقْبَلُ مِمَّنْ عَمِلَ عَمَلًا حَتَّى يَشْهَدَ قَلْبُهُ مَعَ بَدَنِهِ </div><div style="text-align: justify;">-“হযরত উবাই ইবনে কাব (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আল্লাহ তা’আলা ঐ নামাজের দিকে নজর করেন না যে ব্যক্তির নামাজে দেহের সাথে ক্বাল্ব হাজির থাকেনা।” (মুসনাদে ফেরদৌছ, হাদিস নং ৭৯৩৫; হাফিজ যায়নুদ্দিন ইরাকী: শরহু তাছরীব ফি শরহে তাকরীব, ২য় খন্ড, ৩৭২ পৃ:; মুহাম্মদ ইবনে নছর তাঁর কিতাবুছ ছালাতে, হাদিস নং ১৫৭; এহইয়াই উলুমুদ্দিন, ১ম খন্ড, ২০১ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে নাছার ইবনে হাজ্জার মারওয়াজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ২৯৪ হিজরী, সনদ সহ উল্লেখ করেন:-</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمٍ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي دَهْرَشٍ، قَالَ: بَلَغَنِي أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى صَلَاةً جَهَرَ فِيهَا بِالْقِرَاءَةِ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ قَالَ:ৃৃ هَكَذَا خَرَجَتْ عَظَمَةُ اللَّهِ مِنْ قُلُوبِ بَنِي إِسْرَائِيلَ فَشَهِدَتْ أَبْدَانُهُمْ وَغَابَتْ قُلُوبُهُمْ، وَلَا يَقْبَلُ اللَّهُ مِنْ عَبْدٍ عَمَلًا حَتَّى يَشْهَدَ بِقَلْبِهِ مَعَ بَدَنِهِ</div><div style="text-align: justify;">-“হযরত উসমান ইবনে আবী দাহরাশ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত তিনি বলেন: আমার কাছে হাদিস পৌছেছে যে, নিশ্চয় আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) উচ্চ আওয়াজে কেরাতে সালাত পড়ছিলেন। যখন তিনি নামাজ থেকে বের হলেন,..... এমনিভাবে বনী ইসরাইলের অন্তর থেকে আল্লাহর বড়ত্বের কথা বের করে দিয়েছেন, কেননা (নামাজে) তাদের দেহ উপস্থিত থাকে কিন্তু অন্তর উপস্থিত থাকেনা। আর আল্লাহ পাক তার বান্দার আমলের মধ্যে ঐ আমলসমূহ কবুল করেন না যে আমলে তার দেহের সাথে ক্বাল্ব হাজির থাকেনা।” (তাজিমে কাদরিস সালাত, تَعْظِيمِ قَدْرِ الصَّلَاةِ ১ম খন্ড, ১৯৮ পৃ: হাদিস নং ১৫৭;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসের আরেকটি সনদ বিদ্যমান,</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عُثْمَانَ بْنِ أَبِي دَهْرَشٍ، عَنْ رَجُلٍ مِنْ آلِ الْحَكَمِ بْنِ أَبِي الْعَاصِ قَالَ: صَلَّى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَৃ</div><div style="text-align: justify;">-“ছাদাক্বা ইবনে ফুদ্বাইল হাদিস বর্ণনা করেছেন, তিনি ইবনে উয়াইনা থেকে, তিনি উছমান ইবনে আবী দাহরিশ (رضي الله عنه) হতে, তিনি হাকিম ইবনে আবীল আস এর পরিবারের একজন থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: পূর্বের হাদিসের অনুরূপ।” (তাজিমে কাদরিস সালাত, ১ম খন্ড, ১৯৮ পৃ: হাদিস নং ১৫৮;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস, ইমাম মুনজিরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,</div><div style="text-align: justify;">وَعَن عُثْمَان بن أبي دَهْرَشٍ رَضِي الله عَنهُ عَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ لَا يُقْبَلُ مِمَّنْ عَمِلَ عَمَلًا حَتَّى يَشْهَدَ قَلْبُهُ مَعَ بَدَنِهِ </div><div style="text-align: justify;">رَوَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ نَصْرٍ الْمَرْوَزِيِّ فِي كِتَابِ تَعْظِيمِ قَدْرِ الصَّلَاةِ هَكَذَا مُرْسلا وَوَصله أَبُو مَنْصُور الديلمي فِي مُسْند الفردوس بِأبي بن كَعْب والمرسل أصح</div><div style="text-align: justify;">-“হযরত উছমান ইবনে আবী দাহরিশ (رضي الله عنه) নবী করিম ( ﷺ‎‎) হতে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তির আমলকে কবুল করেন না যতক্ষন না তার দেহের সাথে ক্বালব হাজির না থাকে।” </div><div style="text-align: justify;">ইমাম মুহাম্মদ ইবনে নাছর মারওয়াজী তাঁর ‘কিতাবু তাজিমু কাদরিস সালাত’ গ্রন্থে মুরছাল রূপে বর্ণনা করেছেন, আবু মানছুর দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর ‘মুসনাদে ফেরদৌস’ গ্রন্থে উবাই ইবনে কা’ব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন। মুরছাল রেওয়ায়েতটি অধিক ছহীহ্।”  (ইমাম মুনজেরী: আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব, হাদিস নং ৭৬৯;)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম গাজ্জালী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বর্ণনাটি উল্লেখ করেছেন এভাবে,</div><div style="text-align: justify;">وَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم لا ينظر الله إلى صلاة لا يحضر الرجل فيها قلبه مع بدنه</div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আল্লাহ ঐ নামাজের দিকে দৃষ্টি দেননা যে ব্যক্তির নামাজে দেহের সাথে ক্বাল্ব বা অন্তর হাজির থাকেনা।”  (ইমাম গাজ্জালী: এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, ১ম খন্ড, ১৫০ পৃ:;)</div><div style="text-align: justify;">হাফিজুল হাদিস, ইমাম যায়নুদ্দিন ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন,</div><div style="text-align: justify;">وَرَوَى مُحَمَّد بن نصر فِي كتاب الصَّلَاة من رِوَايَة عُثْمَان بن دهرش مُرْسلا لَا يقبل الله من عبد عملا حَتَّى يشْهد قلبه مَعَ بدنه وَرَوَاهُ أَبُو مَنْصُور الديلمي فِي مُسْند الفردوس من حَدِيث أبي بن كَعْب وَإِسْنَاده ضَعِيف.</div><div style="text-align: justify;">-“মুহাম্মদ ইবনে নাছর ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর ‘কিতাবুস সালাত’-এ হযরত উসমান ইবনে দাহরিশ (رضي الله عنه) এর মুরছাল রেওয়ায়েত বর্ণনা করেছেন: আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তির আমলকে কবুল করেন না যতক্ষন না তার দেহের সাথে ক্বালব হাজির না থাকে। আবু মানছুর দায়লামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর ‘মুসনাদে ফেরদৌস’ গ্রন্থে উবাই ইবনে কা’ব (رضي الله عنه) থেকে হাদিসটি বর্ণিত আছে আর ইহার সনদ দ্বায়িফ ।”(হাফিজ যায়নুদ্দিন ইরাকী: তাখরিজু আহাদিসুল এহ্ইয়া, হাদিস নং ৭;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা আহমদ ইবনে আব্দুর রাহিম ইবনে হুছাইন আবু যুরাআ ইবনে ইরাকী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮২৬ হিজরী বলেন,</div><div style="text-align: justify;">رَوَاهُ مُحَمَّد بن نصر فِي تَعْظِيم قدر الصَّلَاة وَهُوَ مُرْسل لِأَن عُثْمَان هَذَا ذكره ابْن حبَان فِي الثِّقَات فِي أَتبَاع التَّابِعين</div><div style="text-align: justify;">-“মুহাম্মদ ইবনে নাছর তাঁর ‘তাজিমে কাদরিস সালাত’ গ্রন্থে ইহা বর্ণনা করেছেন আর ইহা মুরছাল। কেননা উসমান ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে ইবনে হিব্বান ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) তাঁর কিতাবুস ছিক্বাত-এ উল্লেখ করেছেন এবং তিনি তাবেঈ।”  (তুহফাতু তাহছিল ফি জিকরী রেওয়াতিল মারাছিল, ১ম খন্ড, ২২৩ পৃ:;)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">হাদিসটি দুইটি সূত্রে বর্ণিত আছে যা পূর্বেই উল্লেখ করেছি তাই ইহা আরো শক্তিশালী হবে। সুতরাং নিজেকে ক্বাল্বে হাজির রেখে নামাজ পড়াকেই বলা হয় ‘হুজুরী ক্বাল্ব’। একেই বলা হল </div><div style="text-align: justify;"> لا صلاة إلا بحضور القلب-“হুজুরী ক্বাল্ব ব্যতীত নামাজ হবেনা।” এরই প্রেক্ষিতে আল্লাহর নবী ( ﷺ‎‎) বলেন: </div><div style="text-align: justify;">أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ هِلَالٍ الْحِمْصِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حِمْيَرٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ سَلَّامٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ عَمَّارٍ، عَنْ شَدَّادٍ أَبِي عَمَّارٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللهَ لَا يَقْبَلُ مِنَ الْعَمَلِ إِلَّا مَا كَانَ لَهُ خَالِصًا </div><div style="text-align: justify;">-“হযরত আবু উমামা (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: ঐ আমল আল্লাহ তা’আলা কবুল করেন না, যা তাঁর জন্য খালেছ ভাবে না করা হয়।”(ইমাম নাসাঈ: সুনানে কুবরা, হাদিস নং ৪৩৩৩; নাসাঈ শরীফ, কিতাবুয জিহাদ, হাদিস নং ৩১৪০; তাফছিরে মাজহারী, ৪র্থ খন্ড, ২৯৯ পৃ:; তাফছিরে রুহুল মাআনী, ১৬তম জি: ৫২৪ পৃ:; ইমাম ছিয়তী: জামেউছ ছাগীর, ১ম জি: ১১৪ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লাহর জন্য খালেছ ভাবে আমলের আরেক নাম হল ‘হুজুরী ক্বাল্বের’ নামাজ। অপর হাদিসে উল্লেখ আছে: </div><div style="text-align: justify;">أَن تعبد الله كَأَنَّك ترَاهُ فَإِن لم تكن ترَاهُ فَإِنَّهُ يراك -“এমন ভাবে আল্লাহর বন্দেগী কর যেন আল্লাহকে দেখতে পাও, যদি তাঁকে না দেখ তাহলে বিশ্বাস রাখ তিনি তোমাকে দেখতেছেন।”  (ছহীহ্ বূখারী শরীফ, ১ম খন্ড, ১২ পৃ: হাদিস নং ৫০;)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লাহকে দেখতে পাওয়ার চেষ্টা করে নামাজ পড়াই হল হুজুরী ক্বাল্বের নামাজ। এরই প্রেক্ষিতে ‘আছারে’ আরো উল্লেখ আছে:</div><div style="text-align: justify;">عَنْ أَبِي طَالِبٍ الْمَكِّيِّ عَنْ بِشْرٍ الْحَافِي أَنَّهُ قَالَ: مَنْ لَمْ يَخْشَعْ فَسَدَتْ صَلَاتُهُ.</div><div style="text-align: justify;">-“আবী তালেব মক্কী হযরত বিশর হাফি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণনা করেন (তিনি ইমাম আহমদ র: এর পীর ও ইমাম বুখারীর দাদা উস্তাদ এবং একজন সু-প্রসিদ্ধ তাবেঈ) বলেন: যার খুশু তথা হুজুরী দেল নেই তার নামাজ ফাছেদ বা বাতিল।”</div><div style="text-align: justify;">(তাফছিরে কবির শরিফ, ২৩ তম খন্ড, ৭৪ পৃ:; ইমাম কাস্তালানী: এরশাদুস ছারী শরহে বুখারী, ১ম খন্ড, ৪৮৫ পৃ:; তাফছিরে নিছাপুরী, ৫ম খন্ড, ১০৮ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়ায়েত উল্লেখ করা যায়,</div><div style="text-align: justify;">وروى عن سفيان الثوري أنه قال: من لم يخشع فسدت صلاته. </div><div style="text-align: justify;">-“হযরত সুফিয়ান ছাওরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন: যার খুশু তথা হুজুরী দেল নেই তার নামাজ ফাছেদ বা বাতিল।” </div><div style="text-align: justify;">(মেরআত শরহে মেসকাত, ২য় খন্ড, ২৭৬ পৃ:; তাবকাতুল কুবরা লিশ শারানী, ১ম খন্ড, ৩০ পৃ:; এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, ১ম খন্ড, ৩১২ পৃ:; কুওয়াতুল কুলুব লি’আবী তালেব মক্কী, ২য় খন্ড, ১২ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এ বিষয়ে আরেকটি আছার রয়েছে,</div><div style="text-align: justify;">وَعَنِ الْحَسَنِ رَحِمَهُ اللَّه: كُلُّ صَلَاةٍ لَا يَحْضُرُ فِيهَا الْقَلْبُ فَهِيَ إِلَى الْعُقُوبَةِ أَسْرَعُ.</div><div style="text-align: justify;">-“বিশিষ্ট তাবেঈ হযরত হাছান বছরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হতে বর্ণিত, প্রত্যেক ঐ নামাজ যার মধ্যে হুজুরী ক্বাল্ব নেই তা যেন পন্ডশ্রমের মধ্যেই নিক্ষিপ্ত।”</div><div style="text-align: justify;">(তাফছিরে কবির শরিফ, ২৩ তম খন্ড, ৭৪ পৃ:; ইমাম কাস্তালানী: এরশাদুস ছারী শরহে বুখারী, ১ম খন্ড, ৪৮৫ পৃ:; তাফছিরে নিছাপুরী, ৫ম খন্ড, ১০৮ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">সুতরাং তাবেঈ বিশর হাফী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), হাছান বছরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও সুফিয়ান ছাওরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) এর কউল তথা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় খুশু বা হুজুরী ক্বাল্ব ব্যতীত নামাজ হবেনা। একেই বলা হয়, </div><div style="text-align: justify;">لا صلاة إلا بحضور القلب “লা ছালাতা ইল্লা বে’হুজুরীল ক্বাল্ব” তথা হুজুরী দেল ব্যতীত নামাজ (কবুল) হবেনা। </div><div style="text-align: justify;">--------------------------------</div>

হুজুরী ক্বাল্ব ছাড়া নামাজ হবেনা’ প্রসঙ্গে

‘‘হুজুরী ক্বাল্ব ছাড়া নামাজ হবেনা’ প্রসঙ্গেقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا صَلَاةَ إِلَّا بحضور القلب-“রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: হুজুরী দেল ব্যতীত নামাজ হবে না।”(আল্লামা ইমাম ইউছূফ ইবনে মূছা ইবনে মুহাম্মদ জামালুদ্দিন হানাফী (রঃ) ওফাত ৮০৩ হিজরী: আল মু’তাছার মিনাল মুখতাছার ম…

Read more »

উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীর সমতুল্য

<div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীর সমতুল্য</div><div style="text-align: justify;">قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إِسْرَائِيلَ</div><div style="text-align: justify;">-“রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত (সম্মানীয়)।”(ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৬০৮৭ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়; শরহে বুখারী লিস সাফারী, ২য় খন্ড, ২৭৫ পৃ:; ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী: তাফছিরে কবীর, ২৭তম খন্ড, ১১১ পৃ:; তাফছিরে নিছাপুরী, ১ম খন্ড, ৩৩০ পৃ:; তাফছিরে সিরাজুম মুনীর, ৩য় খন্ড, ২৫৩ পৃ:; আল্লামা ঈমাম ইসমাঈল হাক্কী: তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ১৮৪ পৃ:; ৪র্থ খন্ড, ৭৬ পৃ:; আল লুভাব ফি উলুমিল কিতাব, ১৮তম খন্ড, ৩৮২ পৃ:; বাহরুল মাদিদ ফি তাফছিরে কুরআনিল মাজিদ, ২য় খন্ড, ৩৫ পৃ:; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খফা, ২য় খন্ড, ৬০ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, ২৮৬ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">প্রখ্যাত মুফাচ্ছির, ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত ৬০৬ হিজরী} তদীয় কিতাবে উল্লেখ করেন,</div><div style="text-align: justify;">أَجْمَعْتِ الْأُمَّةُ عَلَى أَنَّ بَعْضَ الْأَنْبِيَاءِ أَفْضَلُ مِنْ بَعْضٍ، وَعَلَى أَنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَفْضَلُ مِنَ الْكُلِّ،</div><div style="text-align: justify;">-“উম্মতের ইজমা হয়েছে যে, কতক নবীগণ কতেক নবীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ, আর নিশ্চয় মুহাম্মদ ( ﷺ‎‎) তাঁদের সকলের চেয়েও সর্বশ্রেষ্ঠ।”(তাফছিরে কবীর, ৬ষ্ঠ খন্ড, ৫২১ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এ সম্পর্কে আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) {ওফাত ১২৫২ হি.} বলেন,</div><div style="text-align: justify;">أَجْمَعَتْ الْأُمَّةُ عَلَى أَنَّ الْأَنْبِيَاءَ أَفْضَلُ الْخَلِيقَةِ وَأَنَّ نَبِيَّنَا عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ أَفْضَلُهُمْ وَأَنَّ أَفْضَلَ الْخَلَائِقِ بَعْدَ الْأَنْبِيَاءِ الْمَلَائِكَةُ الْأَرْبَعَةُ وَحَمَلَةُ الْعَرْشِ وَالرُّوحَانِيُّونَ وَرَضْوَانُ وَمَالِكٌ؛ وَأَنَّ الصَّحَابَةَ وَالتَّابِعِينَ وَالشُّهَدَاءَ وَالصَّالِحِينَ أَفْضَلُ مِنْ سَائِرِ الْمَلَائِكَةِ.</div><div style="text-align: justify;">-“উম্মতের ইজমা হয়েছে যে, সৃষ্টি জগতে শ্রেষ্ঠ হল নবীগণ, আর আমাদের নবী ( ﷺ‎‎) হলে তাঁদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। নবীগণের পরে শ্রেষ্ঠ হল আরশ বহনকারী ৪ ফেরেস্থা ও রুহানিউন, রেদ্বওয়ান ও মালেক ফেরেস্থা। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈগণ, শোহাদায়ে কেরাম ও ছালেহীনগণ সাধারণ ফেরেস্থাদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ।”(ফাতওয়ায়ে শামী, ১ম খন্ড, ৫২৭ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তাই সমগ্র সৃষ্টি জগতে যা কিছু রয়েছে রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) এই সব কিছুর চেয়েও সর্বশ্রেষ্ঠ, এমনকি কোন নবী-রাসূল ও আরশ বহনকারী ফেরেস্থারাও রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) এর সমতুল্য নয়। সৃষ্টি জগতে তিনি বেমেছাল বা তুলনাহীন এবং তিনার পরেও কোন নবী  রাসূল নেই। এই আকিদাকে সামনে রেখেই নিম্ন উল্লেখিত হাদিসখানার আলোচনা করা হল। প্রথমেই লক্ষ্য করুন কোন কোন ইমামগণ ও মুহাদ্দিছগণ ইহাকে হাদিস বলে আখ্যায়িত করেছেন।</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">যেমন হিজরী ১১শ শতাব্দির অন্যতম মুজাদ্দিদ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১০১৪ হিজরী তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وَأَمَّا حَدِيثُ: عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إِسْرَائِيلَ -“আর হাদিস শরীফে আছে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(ইমাম মোল্লা আলী ক্বারী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৬০৮৭ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম ফখরুদ্দিন রাজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৬০৬ হিজরী তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন, </div><div style="text-align: justify;">قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إِسْرَائِيلَ  </div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহর নবী ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(তাফছিরে কবীর, ১৭তম খন্ড, ২৬৭ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"> </div><div style="text-align: justify;">আল্লামা আবুল হাফছ সিরাজুদ্দিন উমর হাম্বলী দামেস্কী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৭৭৫ হিজরী বলেন, </div><div style="text-align: justify;">الإشارة إليه بقوله عَلَيْهِ الصَّلَاة وَالسَّلَام ُ: عُلَمَاءُ أمَّتِي كأنْبِيَاءِ بَنِي إسْرائِيْلَ</div><div style="text-align: justify;">-“আর এদিকেই রাসূল ( ﷺ‎‎) এর বানী ঈশারা করেছেন যে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।” (আল লুভাব ফি উলুমিল কিতাব, ১৮তম খন্ড, ৩৮২ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা নাজিমুদ্দিন হুছাইন ইবনে মুহাম্মদ নিছাপুরী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮৫০ হিজরী বলেন, </div><div style="text-align: justify;">قال صلى الله عليه وسلم علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل </div><div style="text-align: justify;">-“আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।” (তাফছিরে নিছাপুরী, ১ম খন্ড, ৩৩০ পৃ:;)</div><div style="text-align: justify;"> </div><div style="text-align: justify;">আল্লামা ইব্রাহিম ইবনে উমর ইবনে হুছাইন বাক্বাঈ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮৮৫ হিজরী তদীয় কিতাবে বলেন, </div><div style="text-align: justify;">كما روي في بعض الآثار علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل </div><div style="text-align: justify;">-“যেমনটি কোন কোন আছারে বর্ণিত আছে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(নাজমুদ দুরার, ১৫তম খন্ড, ৩৬৬ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা শামছুদ্দিন মুহাম্মদ ইবনে আহমদ শাফেয়ী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৯৭৭ হিজরী বলেন, </div><div style="text-align: justify;">كما روي في بعض الآثار: علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل </div><div style="text-align: justify;">-“যেমনটি কোন কোন আছারে বর্ণিত আছে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”  (তাফছিরে সিরাজুম মুনীর, ৩য় খন্ড, ২৫৩ পৃ:;)</div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা ইসমাঈল হাক্বী বরুছয়ী হানাফী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১১২৭ হিজরী তদীয় কিতাবে এভাবে বলেন, </div><div style="text-align: justify;">كما قال عليه السلام علماء أمتي كانبياء بنى إسرائيل -“যেমনটি আল্লাহর রাসূল ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(তাফছিরে রুহুল বয়ান, ৩য় খন্ড, ২৫৫ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে মাহদী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১২২৪ হিজরী তদীয় কিতাবে এভাবে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">قال عليه السّلام: علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل -“আল্লাহর রাসূল (ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(বাহরুল মুদিদ ফি তাফছিরে কুরআনিল মাজিদ, ৫ম খন্ড, ৩৫ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">আল্লামা তক্বীউদ্দিন মুকরিজী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ৮৪৫ হিজরী এভাবে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">وقد جاء في الحديث: علماء أمتي كأنبياء بني إسرائيل. -“হাদিস শরীফে এসেছে, আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত।”(ইমতাউল আসমা, ৪র্থ খন্ড, ২০৮ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিসটি সম্পর্কে ইমাম আসকালানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেছেন, ইহার কোন (সনদগত) ভিত্তি নেই। কিন্তু এই হাদিসটি ‘রেওয়ায়েত বিল মাআনা’ হিসেবে ব্যাখ্যা সাপেক্ষ গ্রহণযোগ্য হাদিস। যেমন আল্লামা ইসমাঈল ইবনে মুহাম্মদ আজলুনী (رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ওফাত ১১৬২ হিজরী তদীয় কিতাবে বলেন,</div><div style="text-align: justify;">الأخذ بمعناه التفتازاني، وفتح الدين الشهيد، وأبو بكر الموصلي، والسيوطي في الخصائص، وله شواهد</div><div style="text-align: justify;">-“আল্লামা তাফতাজানী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম ফাতহুদ্দিন শহীদ ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎), ইমাম আবু বকর মুছেলী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও ইমাম ছিয়তী (رضي الله عنه) তাঁর ‘খাছায়েছে’ এই হাদিসের মাআনা গ্রহণ করেছেন এবং হাদিসের ‘মাআনার’ শাওয়াহিদ উল্লেখ করেছেন।”(ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ২য় খন্ড, ৬০ পৃ:;) </div><div style="text-align: justify;"> </div><div style="text-align: justify;">লা-মাজহাবী মুহাম্মদ ইবনে ছালেহ ইবনে মুহাম্মদ উছাইমিন মৃত্যু ১৪২১ হিজরী তদীয় গ্রন্থে এভাবে উল্লেখ করেছেন,</div><div style="text-align: justify;">ولهذا جاء في حديث لكنه ضعيف: عُلَمَاءُ أُمَّتِيْ كَأَنْبِيَاءِ بَنِيْ إِسْرَائِيْل معناه صحيح</div><div style="text-align: justify;">-“এ কারণেই হাদিসে এসেছে কিন্তু ইহা দুর্বল: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত (সম্মানীয়), এর মাআনা বা অর্থ বিশুদ্ধ।”(শরহে আরবাইনা নববিয়া, ১ম খন্ড, ৪৫ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">তাই এই হাদিস ‘রেওয়ায়েত বিল মাআনা’ হিসবে হাদিস। কারণ আইম্মায়ে কেরাম ইহার মাআনাকে হাদিস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এর অন্যতম কারণ হল, হাশরের দিন আখেরী নবীর উম্মতের মর্যাদার আসন দেখে অন্য নবীগণ ও শহিদগণ ঈর্ষা করবে, যার এবারত এরূপ,</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَعُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَا: حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِي زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ لَأُنَاسًا مَا هُمْ بِأَنْبِيَاءَ، وَلَا شُهَدَاءَ يَغْبِطُهُمُ الْأَنْبِيَاءُ وَالشُّهَدَاءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، بِمَكَانِهِمْ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى....  </div><div style="text-align: justify;">-“হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: নিশ্চয় আল্লাহর বান্দাগণের মধ্যে এমন লোক রয়েছে যারা নবী কিংবা শহীদ নয়, কিন্তু মাকাম দেখে নবীগণ ও শহীদগণ ঈর্ষা করবেন।”</div><div style="text-align: justify;">(সুনানে আবী দাউদ শরিফ, ইবনে উমর (রাঃ) হতে, হাদিস নং ৩৫২৭; তাফছিরে মাজহারী, ৪র্থ খন্ড, ৩৪৭ পৃ: সূরা ঈউনূসের ৬২ নং আয়াতের তাফছির; ইমাম বায়হাক্বী: শুয়াইবুল ঈমান, ৬ষ্ঠ খন্ড, ২৯৯০ পৃ:; ইমাম আবু নুয়াইম: হিলিয়াতুল আউলিয়া, ১ম খন্ড, ৫ পৃ:; তাফছিরে দূর্রে মানছুর;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই হাদিস সকল ইমামের দৃষ্টিতে ছহীহ্। বলুন এই হাদিস দ্বারা কি আখেরী নবী ( ﷺ‎‎) এর উম্মতের মর্যাদা ঐরূপ প্রমাণিত হয়না? </div><div style="text-align: justify;">আপনারা সকলেই জানেন, অন্য নবীগণ আমাদের নবীর উম্মত হওয়ার জন্য আকাঙ্খা করতেন। এর মাঝে হযরত ঈসা (عليه السلام)-ই শেষ যুগে আমাদের নবীর উম্মত হবেন। তাহলে বলুন! আমাদের নবীর উম্মত বনী ঈসরাইলের মত হবে কিনা? যদিও তাঁরা নবী নয়। এই নবীর উম্মতের মর্যাদা মহান আল্লাহ নবীদের সমান দিবেন তার আরো প্রমাণিত হয় এই হাদিস দ্বারা, যেমন:-</div><div style="text-align: justify;">حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ شَبِيبٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا الْمُقْرِئُ، عَنْ حَيْوَةَ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ بَكْرِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ مِشْرَحِ بْنِ هَاعَانَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَوْ كَانَ نَبِيٌّ بَعْدِي لَكَانَ عُمَرَ بْنَ الخَطَّابِ. </div><div style="text-align: justify;">-“হযরত উকবা ইবনে আমের (رضي الله عنه) বলেন, রাসূলে পাক ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার পরে যদি কেউ নবী হতেন তাহলে খাত্তাবের পুত্র উমর (رضي الله عنه)’ই হইতেন।”</div><div style="text-align: justify;">(ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল: ফাদ্বাইলুস সাহাবা, হাদিস নং ৫১৯; মুসনাদে আহমদ, হাদিস নং ১৭৪০৫; তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ৩৬৮৬; ইমাম তাবারানী: মু’জামুল কবীর, হাদিস নং ৪৭৫; মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস নং ৪৪৯৫; ইমাম বায়হাক্বী: মাদখাল, হাদিস নং ৬৫; মেসকাত শরীফ, ৫৫৮ পৃ: হাদিস নং ৬০৪৭; ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ১১তম খন্ড;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">ইমাম হাকেম নিছাপুরী ও ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) হাদিসটিকে ছহীহ্ বলেছেন এবং ইমাম তিরমিজি ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) ও আলবানী হাদিসটিকে হাছান বলেছেন। হযরত উমর (رضي الله عنه) যদিও নবী নয় এবং আর কোন নবী হবেও না, কিন্তু তরিকতের ভাষায় ‘কামালতে নবুয়ত’ তাঁর মাঝে রয়েছে। সুতরাং এই নবীর অনেক উম্মতের মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীদের মত। তাফছিরে রুহুল বয়ানে উল্লেখ আছে: নবী করিম ( ﷺ‎‎)</div><div style="text-align: justify;"> عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إسْرَائِيلَ-এই হাদিসের সত্যতা প্রমাণের জন্য মেরাজের রাতে ইমাম গাজ্জালী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) কে হযরত মুসা (عليه السلام) এর সামনে হাজির করালেন। মুসা (عليه السلام) বললেন: আপনার নাম কি?  উত্তরে ইমাম গাজ্জালী নিজের নাম, পিতার নাম, দাদার নাম, পৈর দাদার নাম এমনিভাবে ছয় পুরুষের নাম বললেন। আমি শুধু আপনার নাম জিজ্ঞাসা করেছি আপনি এত নামের তালিকা পেশ করলেন কেন? ইমাম গাজ্জালী আদবের সাথে জবাব দিলেন, আড়াই হাজার বছর পূর্বে আপনিও তো আল্লাহ তা’আলার ছোট্ট একটি প্রশ্নের জবাবে দীর্ঘ উত্তর দিয়েছিলেন। অর্থাৎ, আল্লাহ আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিল আপনার হাঁতে কি? উত্তরে আপনি বলেছিলেন, আমার হাঁতে লাঠি, ইহা দ্বারা গরু রাখি, গাছের পাতা পারি, এই সেই ইত্যাদি। হুজুর এত কথা বলার দরকার ছিল কি? </div><div style="text-align: justify;">হযরত মুসা (عليه السلام) এই নবীর উম্মতের এলেম ও প্রজ্ঞা দেখে আশ্চয্য হয়ে এই নবীর উম্মতের মর্যাদা মেনে নিলেন।</div><div style="text-align: justify;">(তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ২৮৪ পৃ: সূরা বাকারার ১৪৩ নং আয়াতের তাফছিরে; প্রিন্সিপ্যাল আব্দুল জলীল সাহেব র: এর ‘নূর নবী দ:’, ৯৬ পৃ:;)  </div><div style="text-align: justify;"><br></div><div style="text-align: justify;">এই ঘটনার মূল সূত্র সম্পর্কে আল্লামা ইসমাঈল হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) বলেন:-</div><div style="text-align: justify;">وذكر الراغب الاصفهانى في المحاضرات انه قال الامام الشاذلى صاحب حزب البحر اضطجعت فى المسجد الأقصى فرأيت في المنام</div><div style="text-align: justify;">-“আল্লামা রাগিব ইস্পাহানী তার ‘মুহাদারাব’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হিজবুল বাহারের অধিকারী ইমাম শাজালী ( رَحْمَةُ الله عليه‎‎) মসজিদে আকছায় ঘুমিয়ে সপ্নে দেখেছেন।”(তাফছিরে রুহুল বয়ান, ১ম খন্ড, ২৮৪ পৃ: সূরা বাকারার ১৪৩ নং আয়াতের তাফছিরে;)  </div><div style="text-align: justify;">---------------------------------</div>

উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীর সমতুল্য

উম্মতে মুহাম্মদীর মর্যাদা বনী ঈসরাইলের নবীর সমতুল্যقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: عُلَمَاءُ أُمَّتِي كَأَنْبِيَاءِ بَنِي إِسْرَائِيلَ-“রাসূলে করিম ( ﷺ‎‎) বলেছেন: আমার উম্মতের আলিমগণ বনী ঈসরাইলের নবীদের মত (সম্মানীয়)।”(ইমাম মোল্লা আলী: মেরকাত শরহে মেসকাত, ৬০৮৭ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়…

Read more »